নেতৃত্ব নিয়ে বিরোধের জেরে ‘বরিশাল সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ে’র শতবর্ষ পূর্তি উৎসব উদযাপন অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। গত বছর তৎকালীন ক্ষমতাসীন অওয়ামী লীগ অনুগত সাবেক ছাত্রীদের নিয়ে উদযাপন পরিষদ গঠন করা হয়। শেখ হাসিনার পতনের পর পরিষদের নেতৃত্বে আসেন গণঅভ্যুত্থানের সমর্থনকারী সাবেক ছাত্রীরা। এর পর শুরু হয় অর্থ আত্মসাৎ নিয়ে দুই পক্ষের পাল্টাপাল্টি অভিযোগ।

নতুন নেতৃত্বদানকারীরা গতকাল বৃহস্পতিবার বরিশাল প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে বলেন, নির্ধারিত সময়ে শতবর্ষ অনুষ্ঠান তারা করতে পারছেন না। এ জন্য প্রতিপক্ষ গ্রুপকে তারা দায়ী করেন। সাবেক আহ্বায়ক অধ্যাপক শাহ সাজেদার বিরুদ্ধে ১ কোটি টাকার মানহানি মামলা করেছেন বিএনপি নেত্রী বিলকিস জাহান শিরিন।

জানা গেছে, ২০২৩ সালে বিদ্যালয়ের শতবর্ষ পূর্ণ হয়েছে। জাঁকজমকভাবে শতবর্ষ উদযাপনে গত বছরের শুরু থেকে তৎপরতা শুরু হয়। তখন উদযাপন পরিষদের নেতৃত্ব নিয়ে আওয়ামী অনুগত সাবেক শিক্ষার্থীরা বিভক্ত হলে তাদের উদ্যোগ বেশিদূর এগোয়নি। গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বর্তমান নেতৃত্ব আগামী ২২ ও ২৩ ফেব্রুয়ারি শতবর্ষ উদযাপন উৎসবের দিন ধার্য করেন। 

পরিষদের আহ্বায়ক ফয়জুন নাহার শেলী বলেন, আওয়ামী লীগ আমলে অধ্যাপক শাহ সাজেদার নেতৃত্বাধীন কমিটি বিপুল সংখ্যক সাবেক ছাত্রীর নিবন্ধনের পরও শতবর্ষ উদযাপন করতে ব্যর্থ হয়েছে। গণঅভ্যুত্থানের পর তিনি বিএনপি নেত্রী বিলকিস জাহান শিরিনের দারাস্থ হন। তাঁর বাসায় গিয়ে উদযাপন পরিষদের নেতৃত্ব নেওয়ার অনুরোধ করেন। তবে ব্যস্ততার অজুহাত দেখিয়ে নেতৃত্ব নেননি শিরিন।

এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে শাহ সাজেদার মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল দিলেও তিনি রিসিভ করেননি। মঙ্গলবার সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, শেলীর নেতৃত্বাধীন আহ্বায়ক কমিটি চুক্তি ভঙ্গ করায় ওই চুক্তি বাতিল করা হয়েছে। ফেসবুক আইডিতে শাহ সাজেদা লেখেন, সংবাদ সম্মেলনে তিনি বিএনপি নেত্রী শিরিনের নাম নিয়ে কিছু বলেননি।

বিএনপি নেত্রী বিলকিস জাহান শিরিন বলেন, ‘আমি উদযাপন পরিষদের কমিটিতে নেই। শাহ সাজেদা অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ তুলে আমার সম্মানহানি করেছেন। মানহানির মামলা করেছি।’

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: বর শ ল ন র পর ব এনপ

এছাড়াও পড়ুন:

অষ্টগ্রামের বিস্তীর্ণ হাওরের বুকে ধান কাটার উৎসব

সময়টা শনিবার দুপুর। কিশোরগঞ্জের হাওর উপজেলা অষ্টগ্রামের নোয়াগাঁও গ্রামের বিস্তীর্ণ ফসলি মাঠে ২২ জন ধাওয়াল সবুজ রঙের জার্সি গায়ে বোরো ধান কাটছিলেন। তাঁদের কেউ আঁটি বেঁধে মাথায় তুলে দিচ্ছিলেন, কেউ সেগুলো মাথায় নিয়ে কৃষকের বাড়ির উঠানে পৌঁছে দিচ্ছিলেন। কড়া রোদে শরীরে বেশ ঘাম হচ্ছিল। তবে এর মধ্যেই কারও কারও কণ্ঠে ঝরছিল গানের সুর।

সোনালি ধানের সঙ্গে রঙিন জার্সি—এ দুইয়ে মিলে হাওরের ফসলি মাঠে এক অন্য রকম সৌন্দর্য। ২২ সদস্যের দলটির প্রধান ছাহের উদ্দিন। রঙিন জার্সি গায়ে ধান কাটার কারণ জানান ছাহের। তিনি বলেন, ‘হাওরে ফসল হয় বছরে একবার। বোরো ধান। এরপর সারা বছর অপেক্ষা। ধান কাটা শুরু মানে একটা মাস ভালা থাকা। এবার ভালা ধান হইছে। ভালা ধান হইলে কৃষক খুশি। আবার আমরারও লাভ। শুধু কৃষক আনন্দ করব ক্যান? কষ্টের কাজেও মনে আনন্দ ধইরা রাখার লাইগা জার্সি কিনছি, নিজেদের টেহায়।’

ধান কাটা দলের সদস্যরা মনে করেন তাঁদের পরিহিত জার্সি সবাইকে জোটবদ্ধ রাখার প্রতীক। এটি মনে যেমন আনন্দ দেয়, তেমনি পরস্পরের সম্পর্ককেও মজবুত করে। সদস্য অলি আহমেদ বললেন, ‘ভাই ভাই সম্পর্ক বানায় এই জার্সি।’

কিশোরগঞ্জের হাওরে এবার বোরো ধানের ফলন ভালো হয়েছে। বিগত কয়েক বছরের তুলনায় এবার হেক্টরপ্রতি অন্তত ১০ মণ ধান বেশি হচ্ছে বলে ধারণা কৃষি বিভাগের। অষ্টগ্রামের সব হাওরের হিসাব একই। চিটা হয়নি। এখন পুরোদমে ধান কাটা শুরু হয়েছে। ধান ৮০ ভাগ পাকা হয়ে গেলে কেটে ফেলার কৃষি বিভাগের পরামর্শের পর কাটায় গতি এসেছে। এই অবস্থায় যেদিকে চোখ যায়, কেবল সোনালি ধানের শিষ দোল খাওয়ার দৃশ্য।

আঁটি বেঁধে ধান মাথায় করে কৃষকের বাড়িতে পৌঁছে দিচ্ছেন ধাওয়ালরা। শনিবার অষ্টগ্রামের বাঙ্গালপাড়া ইউনিয়নের নোয়াগাঁও এলাকায়

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • অষ্টগ্রামের বিস্তীর্ণ হাওরের বুকে ধান কাটার উৎসব
  • শতবর্ষী রাস্তার ওপর সবজি চাষ আওয়ামী লীগ নেতার
  • জুলাই আন্দোলনকে ‘তথাকথিত’ বলায় ঢাবি ছাত্রদল সভাপতির দুঃখপ্রকাশ
  • ঐক্য-অনৈক্যের রাজনীতি ও ক্ষমতার ভারসাম্য
  • সিদ্ধিরগঞ্জে মহাসড়কে বৈষম্য বিরোধী ও এনসিপির বিক্ষোভ 
  • প্রাইম এশিয়া শিক্ষার্থী হত্যা, ছাত্রদল মিডিয়া ট্রায়ালে লিপ্ত হয়েছে: উমামা ফাতেমা  
  • প্রয়োজন বহুপক্ষীয় সক্রিয়তা
  • অন্তর্বর্তী সরকারকে প্রতিদ্বন্দ্বী ভেবে রাজনীতিকদের কী লাভ?
  • হবিগঞ্জে শতবর্ষী গাছ কাটার প্রতিবাদে স্মারকলিপি 
  • যশোরে আত্মগোপনে থাকা আ’লীগ নেতাদের বাড়িতে পুলিশের অভিযান