যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বুধবার হোয়াইট হাউসের ওভাল অফিস থেকে জাতির উদ্দেশে বিদায়ী ভাষণ দেন। ভাষণে তিনি ডোনাল্ড ট্রাম্পের অধীন বিকাশমান একটি ‘বিপজ্জনক’ অলিগার্কির (গোষ্ঠীতন্ত্র) বিরুদ্ধে প্রহরীর ভূমিকা নিতে আমেরিকানদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। আগামী ২০ জানুয়ারি মার্কিন প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নেবেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। এর পাঁচ দিন আগে বাইডেন তাঁর বিদায়ী ভাষণ দিলেন।

প্রাইমটাইমে দেওয়া ভাষণে ৮২ বছর বয়সী বাইডেন বলেন, বিপুল সম্পদ, ক্ষমতা, প্রতিপত্তি নিয়ে একটি গোষ্ঠীর শাসন প্রতিষ্ঠিত হতে যাচ্ছে, যা খুব অল্পসংখ্যক অতিধনী লোকের হাতে ক্ষমতার বিপজ্জনক কেন্দ্রীকরণ। অতি ধনিকদের নিয়ন্ত্রণের মধ্যে রাখার ওপর গুরুত্ব আরোপ করে বাইডেন বলেন, এটি দেশের অভ্যন্তরীণ গণতন্ত্রের জন্য হুমকি। আমাদের মৌলিক অধিকার, স্বাধীনতা রক্ষার জন্য সবাইকে এগিয়ে যেতে হবে। 

মার্কিনিদের মধ্যে ভুল তথ্য ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে বলে সতর্ক করেছেন বাইডেন। গণমাধ্যমের স্বাধীনতা খর্ব হচ্ছে বলেও জানিয়েছেন তিনি। মার্কিনিরা ভুল তথ্য, অপতথ্যের নিচে চাপা পড়েছে। এতে ক্ষমতার অপব্যবহারের সুযোগ তৈরি হবে।

করোনা মহামারির কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, চার বছর আগে আমরা এক বিপদের শীতকাল আর সম্ভাবনার শীতকালের মাঝে দাঁড়িয়েছিলাম। কিন্তু আমরা আমেরিকান হিসেবে ঐক্যবদ্ধ হই এবং আমরা বিপদ পার হই। আমরা আরও শক্তিশালী, আরও সমৃদ্ধ এবং নিরাপদ হিসেবে বেরিয়ে আসি। 

ভাষণে তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এআইর গভীর সম্ভাবনা এবং ঝুঁকি সম্পর্কে দেশবাসীকে সতর্ক করেন। তাঁর প্রশাসনের ভূয়সী প্রশংসা করেন এবং গত চার বছরের কৃতিত্ব তুলে ধরেন। তিনি তাঁর প্রশাসনের কৃতিত্বের জন্য গর্বিত বলেও জানান বাইডেন।

বিদায়ী প্রেসিডেন্ট বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় তাঁর অর্জনকে হুমকির মুখে ফেলেছে প্রভাবশালী শক্তি। ক্ষমতা ও মুনাফার স্বার্থে তারা এই কাজ করছে।
 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ক ষমত

এছাড়াও পড়ুন:

মতপার্থক্য থাকবে, ঐক্যের জায়গা চিহ্নিত করতে হবে: আলী রিয়াজ

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রিয়াজ বলেছেন, ‘সমাজে মতপার্থক্য থাকবে, ভিন্নমত থাকবে। কিন্তু সহিষ্ণুতা থাকতে হবে। ঐক্যের জায়গাটা চিহ্নিত করতে হবে।’ গতকাল মঙ্গলবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক প্রকাশনা উৎসবে তিনি এসব কথা বলেন।

যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত ‘সাপ্তাহিক বাংলাদেশ’-এর সম্পাদক ডা. ওয়াজেদ খান রচিত ‘বাংলাদেশের স্বপ্ন ও চব্বিশের গণঅভ্যুত্থান’ গ্রন্থের প্রকাশনায় আলী রিয়াজ বলেন, সবার মধ্যে ঐক্য বজায় রাখতে হবে যাতে এই পরিস্থিতির পুনরাবৃত্তি না ঘটে। এজন্য এমন একটা রাজনৈতিক ঐকমত্যের কাঠামোতে আসতে হবে, রাষ্ট্র তার নাগরিকের সঙ্গে একটি চুক্তি করবে। ফলে নাগরিকের অধিকার সুরক্ষিত হবে, তার অংশগ্রহণ নিশ্চিত হবে। রাষ্ট্র জবাবদিহির মধ্যে চলবে।

তিনি বলেন, রাজনৈতিক দলগুলো ভিন্ন কথা বলতে পারে, কারণ তারা ভিন্ন ভিন্ন রাজনৈতিক দল। একটি গণতান্ত্রিক সমাজে পার্থক্য থাকবেই। দেখতে হবে ঐক্যের জায়গাটা কোথায়। ঐক্যের জায়গাটা চিহ্নিত করতে হবে। সেই সনদ তৈরি করতে হবে যা আসলে সামাজিক চুক্তি হিসেবে ব্যবহৃত হবে, যেটি ভবিষ্যৎ বাংলাদেশের জন্য দিকনির্দেশনা দেবে। এটিই হবে বাংলাদেশের সনদ।

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের মানুষ চায় নিরাপত্তা, ভোটের অধিকার এবং সরকার যেন তাকে না জানিয়ে যা খুশি তা করতে না পারে। মতপার্থক্যকে শত্রুভাবাপন্ন ভাবলে হবে না।

প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশের (পিআইবি) মহাপরিচালক ফারুক ওয়াসিফ বলেন, ‘আজকেও যারা গৃহযুদ্ধের ভয় দেখাচ্ছে, সেটি আমার কাছে অমূলক মনে হয়। গৃহযুদ্ধ হতে হলে বিভিন্ন ধর্ম ও সম্প্রদায়ে বিভক্ত একটা দেশ লাগে।’

প্রকাশনা উৎসবে সভাপতিত্ব করেন আহমদ পাবলিশিং হাউসের প্রকাশক মেছবাহ উদ্দিন আহমদ। চ্যানেল আইয়ের সাংবাদিক আদিত্য শাহীনের সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য রাখেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার, সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম আব্দুল্লাহ, আমেরিকা বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্সের কো-চেয়ারম্যান হাসানুজ্জামান হাসান ও নিউইয়র্ক বাংলাদেশ প্রেস ক্লাব সভাপতি মনোয়ারুল ইসলাম প্রমুখ।


 

সম্পর্কিত নিবন্ধ