বাংলাদেশে দ্রুত ভোট দেখতে চায় যুক্তরাষ্ট্র ও ভারত
Published: 16th, January 2025 GMT
ভারত ও যুক্তরাষ্ট্র যত দ্রুত সম্ভব বাংলাদেশে নির্বাচন দেখতে চায় বলে মন্তব্য করেছেন ভারতে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত এরিক গারসেটি। তাঁর মতে, গণতন্ত্র ও গণতান্ত্রিক নির্বাচন বাংলাদেশে নতুন অধ্যায় খুলতে সহায়ক হবে। সম্প্রতি ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ডব্লিউআইওএনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এ মন্তব্য করেন।
ডব্লিউআইওএনের সাংবাদিক ধিরাজ প্যাটেল বলেন, শেখ হাসিনা সরকারের পতন ভারত সরকারের জন্য বড় আঘাত হিসেবে দেখা হচ্ছে। সেখানে বর্তমানে জামায়াতে ইসলামীর উত্থান ঘটছে। সেই সঙ্গে সম্পৃক্ততা বাড়ছে চীনের। এসব বিষয়ে আপনার মূল্যায়ন কী?
জবাবে এরিক গারসেটি বলেন, আমরা উভয়ই (ভারত ও যুক্তরাষ্ট্র) মৌলিক বিষয়গুলোর কথা বলছি। আমরা শান্তিপূর্ণ গণতান্ত্রিক পরিবেশের কথাও বলেছি। আমরা স্পষ্টভাবে বলেছি, বাংলাদেশ কিংবা যে কোনো দেশেই ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর কোনো ধরনের নির্যাতন চালানো যাবে না।
বাংলাদেশের পরবর্তী নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, একটা সুযোগ এসেছে। আমরা উভয় দেশই চাই, সেখানে যত দ্রুত সম্ভব গণতন্ত্র ও গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রতিষ্ঠা হোক। আমরা চাই, এর মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ তাদের অতীত পেছনে ফেলে ভবিষ্যতের জন্য নতুন অধ্যায় শুরু করবে। অতীত সম্পর্ক নিয়ে ভাবার সময় এটি নয়। বরং যুক্তরাষ্ট্র ও ভারত একসঙ্গে কী করতে পারে, তা নিয়ে ভাবতে হবে।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় একটি সুষ্ঠু নির্বাচন দরকার: তারেক রহমান
গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় সুষ্ঠু নির্বাচন দরকার বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনি বলেন, ৩১ দফা জনগণের জন্য তৈরি। জনগণের পক্ষ থেকে আসা প্রশ্ন নিয়েই ৩১ দফা প্রস্তুত করা হয়েছে। যেহেতু জনগণের বাকস্বাধীনতার জন্য আমরা লড়াই করেছি, গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করেছি। সেই জন্য আমাদের দায়িত্ব অনেক বেশি। দেশের সকল সংকটকালে বিএনপি পাশে এসে দাঁড়িয়েছে। মানুষও বিএনপির প্রতি আস্থা রেখেছে। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য দরকার একটি সুষ্ঠু নির্বাচন।
বুধবার সন্ধ্যায় যশোর জেলা বিএনপি আয়োজিত রাষ্ট্রকাঠামো সংস্কারের ৩১ দফা শীর্ষক প্রশিক্ষণ কর্মশালায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সকাল সাড়ে ১০টায় শহরের একটি অভিজাত হোটেলে কর্মশালার উদ্বোধন করেন বিএনপির খুলনা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত।
তারেক রহমান বলেন, জনগণ যদি আপনার পিছনে না থাকে, তাহলে আপনি কিসের নেতা? মানুষ আমাদের ওপর আস্থা রাখতে চাইছে। এই আস্থা নষ্ট করার জন্য যদি কেউ কোনো কাজ করে, তাহলে তাকে তো আমি টানবো না। এখানে দলকে স্বার্থপর হতেই হবে।
তিনি বলেন, কোনো ব্যক্তি, কর্মী, নেতার কারণে যদি মানুষের আস্থা নষ্ট হয়, তাকে আমরা ওন (নিজের) করতে পারবো না। আমরা বহু ঝড়-ঝঞ্ঝার মধ্যদিয়ে আজ এখানে এসে দাঁড়িয়েছি। বহু অত্যাচার-নির্যাতনের মধ্যদিয়ে আজকে এখানে এসে দাঁড়িয়েছি। কেউ নিজের স্বার্থ নিয়ে দলের স্বার্থ নষ্ট করলে তাকে আমাদের পক্ষে টানা সম্ভব নয়।
তারেক রহমান আরও বলেন, কেউ কেউ বলে যারা অপরাধ করেছে, ভুল করেছে তাদের সঙ্গে আমাদের দলের সম্পর্ক ছিন্ন করেছি। এতে কী হবে। কী হবে সেটা পরের ব্যাপার। কিন্তু আমার অবস্থান পরিষ্কার করেছি। আমরা যতটুকু জানছি, সাথে সাথে ব্যবস্থা গ্রহণ করছি। যখন যেটা জানবো ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। আমাদের অবস্থান পরিষ্কার করছি।
দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তারেক রহমান বলেন, কেউ যদি বলে, আমরা খারাপ মানুষের সঙ্গে সম্পর্ক রাখতে চায় না। অন্তত এ ব্যাপারে আমরা পরিষ্কার থাকবো। মুখে বলব একটা, কাজে করব আরেকটা, তা নয়। আমরা যা মুখে বলছি, তা আমরা কাজে প্রমাণ করার চেষ্টা করবো। তার প্রতিফলন থাকবে। একটি রাজনৈতিক দল হিসেবে যাতে সর্বোচ্চ করতে পারি, আমরা সেটিই করছি। আমরা যদি সরকারে থাকতাম, তাহলে আমরা যেটা করতে পারতাম, দলের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করার পাশাপাশি দেশের আইন অনুযায়ী তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতাম। এই মুহূর্তে আমরা সেই অবস্থানে নেই। কাজেই সেই অবস্থানে যদি আমাদের যাওয়ার সুযোগ হয়, আজকে যেমন শুধু দলের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করছি। তেমন সরকারে থাকলে অন্যায়কারী যেই হোক না কেন, আমরা মুখে যেটা বলি, কাজেও সেটির প্রমাণ দেওয়ার চেষ্টা করব।
৫ আগস্ট থেকে দলের নেতাকর্মীদের শিক্ষা নিয়ে জনগণের সঙ্গে থাকার আহ্বান জানিয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেন, রাজনৈতিক কর্মী, নেতারা যদি জনবিচ্ছিন্ন হয়, জনগণের বিরুদ্ধে, দেশের বিরুদ্ধে কাজ করলে কী পরিণতি হয়, আমরা ৫ আগস্ট দেখেছি। ৫ আগস্ট থেকে আমাদের অনেক কিছুই শেখার আছে। রাষ্ট্রকাঠামো সংস্কারে ৩১ দফার প্রশিক্ষণ আমরা করছি। ৩১ দফা জনগণের কাছে নিয়ে যাবো। ৩১ দফা আমাদের অনুধাবন করতে হবে, বাস্তবায়ন করতে হবে। জনগণের পাশে থাকতে হবে। জনগণকে সঙ্গে রাখতে হবে। জনগণ থেকে যদি দূরে সরে যায় আমরা। তাহলে ওই ৫ আগস্টের পরিণতি আমাদের হবে। ৫ আগস্টের পরিণতি থেকে দূরে থাকতে হলে, জনগণের সঙ্গেই থাকতে হবে। আমরা সবাই কষ্ট করছি। আগামী দিনে যাতে দল সুফল পায়, আপনি আমি সুফল পায়, সেইজন্য আমাদের কাজ করতে হবে।
যশোর জেলা বিএনপির সভাপতি অধ্যাপক নার্গিস বেগমের সভাপতিত্বে কর্মশালায় বক্তব্য রাখেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ইসমাইল জাবিউল্লাহ, প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক এবিএম মোশারফ হোসেন, সহপ্রশিক্ষণ সম্পাদক রেহানা আক্তার রানু, কেন্দ্রীয় মিডিয়া সেলের সদস্য মাহমুদা হাবীবা, জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ফজলুর রহমান খোকন, ইকবাল হোসেন শ্যামল ও পররাষ্ট্র বিষয়ক কমিটির সদস্য ইসরাফিল খসরু চৌধুরী, জেলা বিএনপির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট সৈয়দ সাবেরুল হক সাবু প্রমুখ।
এ কর্মশালার দ্বিতীয়ার্ধে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। কর্মশালায় যশোর জেলা বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ অংশ নেন।