লড়াই এখনো শেষ হয়নি বলে মন্তব্য করেছেন জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। তিনি বলেন, ‘‘সামনে এখনো অনেক লড়াই রয়ে গেছে। আমাদের সন্তানেরা ‘আবু সাঈদ মুগ্ধ, শেষ হয়নি যুদ্ধ’- যে স্লোগান দিয়েছে, আমরাও সেই একই স্লোগান দিব। সেই যুদ্ধে আমরা সবাই নিজের জন্য ও প্রিয় দেশের জন্য শরিক হবো। দেশ যদি ভালো থাকে, আমিও ভালো থাকব। দেশ যদি ভালো না থাকে, আমিও ভালো থাকব না।’’

বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) সকালে মাগুরা শহরের নোমানী ময়দানে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর জেলা কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ সব কথা বলেন।

দল নয়, ধর্ম নয়, সকল মানুষ সমান— এই নীতির ভিত্তিতে দেশ পরিচালিত হবে প্রতিশ্রুতি দিয়ে ডা.

শফিকুর রহমান বলেন, ‘‘আমরা কথা দিচ্ছি, যদি আপনাদের ভালোবাসায় সিক্ত হয়ে সমস্ত ইসলামিক দল, দেশপ্রেমিক দল, সামাজিক দলকে সঙ্গে নিয়ে সরকার পরিচালনার সুযোগ পাই, ইনশাআল্লাহ একটা মানবিক দেশ আমরা উপহার দেবো।’’

আরো পড়ুন:

সর্বদলীয় বৈঠকে বিএনপিসহ বিভিন্ন দলের প্রতিনিধি

কুষ্টিয়ায় জামায়াত-বিএনপির সংঘর্ষে আহত ৩০

তিনি দুঃখ প্রকাশ করে বলেছেন, ‘‘আমাদের সমাজ পেশাগত দায়িত্ব পালনকারী নারীদের দুটি জিনিস দিতে পারেনি। একটি হচ্ছে সম্মান, আরেকটি হচ্ছে নিরাপত্তা। আমরা কথা দিচ্ছি, মায়েরা নিরাপত্তা এবং সম্মানের সঙ্গে তাদের দায়িত্ব পালন করবেন। জাতি গঠনে তারাও সমানতালে অবদান রাখবেন।’’

জামায়াতে ইসলামীর আমির বলেন, ‘‘অনেকে বলেন আমরা নারীদের কোণঠাসা করে ঘরের ভিতরে রাখব। না, বরং রাসূল (স.) সকল কর্মক্ষেত্রে যেমন তাদের মর্যাদা ও নিরাপত্তার সঙ্গে কাজের সুযোগ সৃষ্টি করে দিয়েছিলেন, আমরাও সেভাবে তাদের প্রতি চরম সম্মান রেখে সেই ব্যবস্থা করে দেবো ইনশাআল্লাহ।’’

নারীদের মর্যাদা নিশ্চিত করার আশ্বাস দিয়ে তিনি বলেন, ‘‘এই দেশে একজন মা, তিনি ঘরের ভিতরে থাকবেন নিরাপদ, রাস্তায় বের হলে তিনি হবেন সম্মানিত, কাজের ময়দানে তিনি হবেন মর্যাদা প্রাপ্ত। তার যদি প্রয়োজন হয় সামাজিক ক্ষেত্রে বা কোনো কর্মক্ষেত্রে যোগদানের, সেই দক্ষতা-যোগ্যতা যদি তার থাকে, তবে তিনি অবশ্যই যোগ্য জায়গায় পৌঁছে যাবেন।’’ 

সবাইকে সালাম এবং অন্য ধর্মাবলম্বীদের আদাব জানিয়ে সবাই হাতে হাত রেখে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে আগামীতে বৈষম্যহীন সমাজ গড়ার প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন জামায়াতের আমির।

মাগুরা জামায়াতে ইসলামীর জেলা আমির অধ্যাপক এম বি বাকেরের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক সাইদ আহমেদ বাচ্চুর সঞ্চালনায় সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের যশোর-কুষ্টিয়া অঞ্চলের পরিচালক মোবারক হোসেন, যশোর জেলা শাখার সাবেক আমির আজিজুর রহমান, মাগুরা জেলা শাখার সাবেক আমির আব্দুল মতিন, জেলা জামায়াতে ইসলামীর সাবেক জেলা আমির ড. আলমগীর বিশ্বাস, কেন্দ্রীয় মজলিশে শুরার সদস্য মওলান বদরুউদ্দিনসহ অন্যান্য নেতা-কর্মীরা।

ঢাকা/শাহীন/বকুল

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ইসল ম র

এছাড়াও পড়ুন:

সাভারে চলন্ত যাত্রীবাহী বাসে ফের ছিনতাই, স্বর্ণালঙ্কার লুট

ঢাকার সাভারের ব্যাংক টাউন এলাকায় একটি চলন্ত যাত্রীবাহী বাসে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে ফের ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে।

শুক্রবার (১১ এপ্রিল) দুপুর ১২টার দিকে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের ব্যাংক টাউন এলাকা সংলগ্ন ব্রিজের উপর ঢাকামুখী সাভার পরিবহনের (ঢাকা মেট্রো-ব ১৩-০৭০৬) একটি যাত্রীবাহী বাসে এই ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে।

এ সময় বাসটিতে থাকা তায়েফুর রহমান নামে সাভারের স্থানীয় একজন জ্যেষ্ঠ সাংবাদিকও ছিনতাইয়ের শিকার হয়েছেন।

সাংবাদিক তায়েফুর রহমান মুঠোফোনে বলেন, “দুপুর ১২টার দিকে শ্যামলী যাওয়ার উদ্দেশ্যে স্ত্রী ও বাচ্চাকে সাথে নিয়ে ব্যাংক টাউন থেকে বাসটিতে উঠি আমরা। ব্যাংক টাউন পার হয়ে পুলিশ টাউনের আগের ব্রিজের উপর বাসটি উঠতেই বাসে আগে থেকেই অবস্থান করা ৩ থেকে ৪ জন যুবক ছুরি হাতে নারী যাত্রীদের কাছে থাকা চেইন, স্বর্ণালঙ্কার ছিনিয়ে নেয়। এ সময় তারা আমার স্ত্রীর গলায় থাকা লকেটসহ একটি স্বর্ণের চেইনও ছিনিয়ে নেয়।”

তিনি বলেন, “বাসে প্রায় ২০/২৫ জন যাত্রী ছিল। তবে ছিনতাইকারীরা কারো ফোন/ডিভাইস নেয়নি। শুধুমাত্র নারী যাত্রীদের টার্গেট করে তারা। ছিনতাইকারীরা বাসে থাকা অন্তত ৩ জন নারী যাত্রীর কাছ থেকে চেইন ছিনিয়ে নিয়েছে।

তায়েফুর রহমান আরও জানান,পরবর্তীতে বাসটি গাবতলীতে আসার পর যাত্রীরা বাসের চালককে একটি কাউন্টারে নিয়ে গিয়ে আটকে রাখে। পরে তিনি সেখান থেকে চলে যান।

যদিও ছিনতাইকারীরা ঠিক কোন জায়গা থেকে বাসটিতে উঠেছিল সেটি নিশ্চিত করে জানাতে পারেননি তিনি। তবে ছিনতাইয়ের সময় ছিনতাইকারীরা বাসটিকে ব্রিজের উপর দাঁড় করিয়ে ছিনতাই শেষে ওই ব্রিজের ওপরই নেমে যায় বলে জানিয়েছেন তিনি।

সাভার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জুয়েল মিয়া বলেন, “এমন কোনো সংবাদ আমি এখনও পাইনি। সেখানে তো আমাদেরও অলরেডি একটি চেকপোস্ট রয়েছে। বিষয়টি আমি খোঁজখবর নিচ্ছি।”

উল্লেখ্য, সম্প্রতি সাভারের মহাসড়ক ও চলন্ত বাসে ছিনতাই প্রতিরোধে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে, বিশেষ করে ব্যাংক টাউন এলাকাসহ ছিনতাইপ্রবণ যেসব এলাকা রয়েছে সেসব স্থানে বিশেষ চেকপোস্ট কার্যক্রম পরিচালনা করছে ঢাকা জেলা পুলিশ।

মহাসড়ক ও চলন্ত বাসে ছিনতাই প্রতিরোধে ৫ এপ্রিল থেকে পুলিশের পক্ষ থেকে এমন কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে বলে জানিয়েছিলেন ঢাকা জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সাভার সার্কেল) মো. শাহীনুর কবির।

পরবর্তীতে সাভারের ব্যাংক টাউনসহ বিভিন্ন এলাকায় সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সেসব এলাকায় অবস্থান নিয়ে সড়কে চলাচলরত বিভিন্ন যাত্রীবাহী বাস, বিশেষ করে লোকাল বাসগুলো থামিয়ে তল্লাশি কার্যক্রম পরিচালনা করছে সাভার মডেল থানা পুলিশ ও ঢাকা জেলা উত্তর ডিবি পুলিশের একাধিক টিম।

এ সময় বাসে উঠে যাত্রীদের কোনো ধরনের সমস্যা রয়েছে কিনা, সন্দেহজনক কিছু দেখছেন কিনা সেটি জিজ্ঞাসার পাশাপাশি যাত্রীদের উদ্দেশ্যে বিভিন্ন সচেতনতামূলক নির্দেশনা দিতে দেখা যায় পুলিশ কর্মকর্তাদের।

পুলিশের চলমান এই চেকপোস্ট এবং তল্লাশি কার্যক্রমের মধ্যেই আবারও আজ চলন্ত বাসে এই ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটলো।

ঢাকা/সাব্বির/টিপু 

সম্পর্কিত নিবন্ধ