জবির দ্বিতীয় ক্যাম্পাস নির্মাণে সেনাবাহিনী, প্রজ্ঞাপন জারি
Published: 16th, January 2025 GMT
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) দ্বিতীয় ক্যাম্পাস প্রকল্পের অবশিষ্ট কাজ বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর হাতে হস্তান্তর করার বিষয়ে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) রাতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের উপ-সচিব আহমেদ শিবলী স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানানো হয়।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন ‘জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন ক্যাম্পাস স্থাপন: ভূমি অধিগ্রহণ ও উন্নয়ন’ শীর্ষক প্রকল্পের অবশিষ্ট কাজ বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর মাধ্যমে সম্পন্ন করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে প্রকল্পের অবশিষ্ট কাজ এবং দ্বিতীয় ক্যাম্পাস নির্মাণের জন্য প্রকল্প প্রণয়ন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর মাধ্যমে বাস্তবায়ন করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
অবশিষ্ট কার্যক্রম সম্পন্ন করার লক্ষ্যে চলমান প্রকল্পের পুনর্মূল্যায়ন ও আরডিপিপি প্রণয়নে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অনুরোধ করা হয়েছে প্রজ্ঞাপনে।
২০১৬ সালের সেপ্টেম্বরে আবাসিক হলের দাবিতে শিক্ষার্থীদের মাসব্যাপী আন্দোলনের মুখে কেরানীগঞ্জের তেঘরিয়ায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন ক্যাম্পাস স্থাপনের সিদ্ধান্ত জানায় আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকার।
অ্যাকাডেমিক ভবন, প্রশাসনিক ভবন, আবাসন ব্যবস্থা, ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র, ক্যাফেটেরিয়া, খেলার মাঠ, চিকিৎসা কেন্দ্র, সুইমিংপুল, লেক নির্মাণসহ উন্নতমানের ক্যাম্পাস তৈরির মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নে তেঘরিয়ার পশ্চিমদি মৌজায় ২০০ একর ভূমি অধিগ্রহণের অনুমোদন দেওয়া হয়।
২০১৮ সালের ৩ অক্টোবর জমির চূড়ান্ত অনুমোদন দেয় ভূমি মন্ত্রণালয়। ৯ অক্টোবর নতুন ক্যাম্পাস স্থাপনে ভূমি অধিগ্রহণ ও উন্নয়নের জন্য প্রকল্প অনুমোদন করে একনেক। এক হাজার ৯২০ কোটি ৯৪ লাখ ৩৯ হাজার টাকার এ প্রকল্প বাস্তবায়ন হওয়ার কথা ছিল ২০২০ সালের অক্টোবরের মধ্যে।
পরের বছর ২০২০ সালের ২৩ জানুয়ারি মোট ২০০ একর জমির মধ্যে ১৮৮ দশমিক ৬০ একর জমি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় বুঝে পায়। কিন্তু এখনো অবশিষ্ট ১১ দশমিক ৪০ একর জমি বুঝে পায়নি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
গত অগাস্টে ক্ষমতার পালাবদলের পর দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের নির্মাণ কাজের দায়িত্ব সেনাবাহিনীর হাতে দেওয়াসহ তিন দাবিতে আন্দোলনে নামে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। গত ৫ নভেম্বর তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে দেন। এরপর ১১ নভেম্বর ইউজিসি প্রস্তাবিত পাইলট প্রকল্পে জগন্নাথের বিষয়টি অন্তর্ভুক্তিসহ ৫ দাবিতে সচিবালয় ‘ঘোরাও করেন’ আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।
সেদিন শিক্ষা সচিবের সঙ্গে দেখা করতে না পেরে তারা সচিবালয়ের বাইরে অবস্থান নেন। এরপর তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মো.
শিক্ষার্থীদের টানা আন্দোলনের মুখে পরদিন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের নির্মাণ কাজ সেনাবাহিনীকে হস্তান্তরে সায় দেন শিক্ষা ও পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ। এরপর দুই মাস পেরিয়ে গেলেও প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের কোনো অগ্রগতি না হওয়ায় তিন দফা দাবিতে অনশন কর্মসূচি দিয়ে আন্দোলনে নামেন শিক্ষার্থীরা।
গত রবিবার (১২ জানুয়ারি) সকাল সাড়ে ৮টায় শিক্ষার্থীরা অনশন শুরু করেন, যার ফলে প্রায় ১৪ জন শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন। উপাচার্যসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের বারবার অনুরোধের পরও অনশন ভাঙেনি শিক্ষার্থীরা। পরদিন সোমবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে লিখিত অঙ্গীকার পাওয়ার আশ্বাসে টানা ৩৫ ঘণ্টা পর অনশন প্রত্যাহার করে নেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
তবে বুধবার (১৫ জানুয়ারি) মন্ত্রণালয়ের সভায় সিদ্ধান্ত লিখিতভাবে না আসায় বিশ্ববিদ্যালয়ে শাট ডাউন কর্মসূচি চালু রাখার ঘোষণা দিয়েছিলেন তারা।
ঢাকা/লিমন/মেহেদী
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর প রকল প র অবশ ষ ট ক গ রহণ
এছাড়াও পড়ুন:
নারী চিকিৎসক দিয়ে নারীর মরদেহের ময়নাতদন্ত: নীতিমালা প্রণয়নে নিষ্ক্রিয়তা নিয়ে রুল
নারী চিকিৎসক ও নারী প্যারামেডিকেল স্টাফ দিয়ে নারীর মরদেহের ময়নাতদন্তে (পোস্টমর্টেম) প্রয়োজনীয় নীতিমালা প্রণয়নে নিষ্ক্রিয়তা কেন আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল দিয়েছেন হাইকোর্ট।
এক রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি ফাতেমা নজীব ও বিচারপতি শিকদার মাহমুদুর রাজীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ রোববার এ রুল দেন। স্বাস্থ্যসচিব, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকসহ (শিক্ষা) বিবাদীদের রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
এর আগে নারী চিকিৎসকের সঙ্গে নারী প্যারামেডিকেল স্টাফ দিয়ে নারীর মরদেহের ময়নাতদন্তে (পোস্টমর্টেম) প্রয়োজনীয় নীতিমালা প্রণয়নে নির্দেশনা চেয়ে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী জুয়েল আজাদ গত মাসে রিটটি করেন।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী কাজী আখতার হামিদ, সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী জুয়েল আজাদ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ ওসমান চৌধুরী।
রুলের বিষয়টি জানিয়ে পরে আইনজীবী জুয়েল আজাদ প্রথম আলোকে বলেন, পাকিস্তানে ইতিমধ্যে নারী চিকিৎক দিয়ে নারীর মরদেহের ময়নাতদন্ত হয়। সংবিধানের ৩২ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী শুধু জীবিত অবস্থায়ই নয়, মারা গেলেও মানুষের অধিকার ও মর্যাদা থাকে। ভারতের সুপ্রিম কোর্ট বিভিন্ন রায়েও এ বিষয় উল্লেখ করেছেন। এসব যুক্তিতে রিটটি করা হয়, শুনানি নিয়ে আদালত ওই রুল দিয়েছেন।