৯ বছর পর প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃত্ব ফিরে পেল চসিক
Published: 16th, January 2025 GMT
৯ বছর আগে বেহাত হওয়া প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃত্ব ফিরে পেল চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক)। বৃহস্পতিবার মেয়রকে চেয়ারম্যান করে ৯ সদস্যের বোর্ড অব ট্রাস্টিজ পুনর্গঠন করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অফিস আদেশ অনুযায়ী, বোর্ড অব ট্রাস্টিজে চেয়ারম্যান হবেন মেয়র। সদস্য হিসেবে থাকবেন সদ্য সাবেক মেয়র, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও সচিব, সিটি করপোরেশনের শিক্ষাবিষয়ক স্থায়ী কমিটির সভাপতি, হিসাব ও নিরীক্ষাবিষয়ক স্থায়ী কমিটির সভাপতি এবং দুই প্যানেল মেয়র।
মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়-১ এর উপসচিব মোছা.
সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তাদের অভিযোগ, আওয়ামী লীগ সরকারের শিক্ষামন্ত্রী হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়টি দখলে নিয়েছিলেন মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল। পরে প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের ১১ সদস্যের ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যানও হন তিনি। বোর্ডের অন্যতম দু’জন সদস্য হচ্ছেন তাঁর মা হাসিনা মহিউদ্দিন ও ছোট ভাই বোরহানুল হাসান চৌধুরী সালেহীন। অন্য সদস্যরাও তাঁর পরিবারের ঘনিষ্ঠ।
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলাম বলেন, ‘শিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড অব ট্রাস্টিজের অনুমোদন দিয়েছে। মন্ত্রণালয় থেকে এ-সংক্রান্ত চিঠি পেয়েছি।’
এদিকে উপাচার্য, উপ-উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষ পদে নিয়োগ দিতে তিনজন করে ৯ জনের নামের তালিকা গত সোমবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন। গত বছরের ৬ ডিসেম্বের বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের পদ থেকে পদত্যাগ করেন অধ্যাপক ড. অনুপম সেন। পদত্যাগ করেছিলেন উপ-উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষও। এখনও কাউকে নতুন করে এসব পদে কাউকে নিয়োগ দেওয়া হয়নি।
সিটি করপোরেশনের তথ্য অনুযায়ী, ২০০১ সালে ৪০ কাঠা জমিতে প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করে চসিক। ব্যয় হয় ৪৭ কোটি টাকা। তখন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র ছিলেন আওয়ামী লীগ নেতা এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী। পদাধিকার বলে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়টির ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান ছিলেন। ২০১০ সালে মহিউদ্দিন চৌধুরীকে হারিয়ে বিএনপির সমর্থন নিয়ে মেয়র নির্বাচিত হন এম মনজুর আলম। পরবর্তী সময় তিনিও ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান হন। ২০১৫ সাল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন তিনি। সাবেক মেয়র হিসেবে বোর্ডের সদস্য ছিলেন এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী। তখনও পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়টির কর্তৃত্ব নিয়ে কোনো আপত্তি ছিল না তাঁর।
২০১৫ সালে আ জ ম নাছির উদ্দীন মেয়র নির্বাচিত হওয়ার পর বিশ্ববিদ্যালয়টির কর্তৃত্ব নিয়ে মহিউদ্দিন চৌধুরীর সঙ্গে আইনি লড়াই শুরু হয়। তখন চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ছিলেন মহিউদ্দিন চৌধুরী, আর সাধারণ সম্পাদক ছিলেন আ জ ম নাছির উদ্দীন। এক পর্যায়ে প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃত্ব হারায় চসিক। সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তাদের অভিযোগ, আইনগতভাবে বিশ্ববিদ্যালয়টির কর্তৃত্ব নিতে ব্যর্থ হন মহিউদ্দিন চৌধুরী ও তাঁর পরিবার। তাঁর ছেলে মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল শিক্ষা উপমন্ত্রী হওয়ার পর নিজেই ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়টি দখলে নেন। অন্যদিকে নওফেল দাবি করে এসেছেন, এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী নিজ উদ্যোগে বিশ্ববিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করেছেন। এখানে সিটি করপোরেশনের কোনো আর্থিক অনুদান নেই।
গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর থেকে চট্টগ্রাম থেকে আওয়ামী লীগ-ছাত্রলীগের অনেক নেতা আত্মগোপনে গেছেন। এর মধ্যে মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলও রয়েছেন।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: র কর ত ত ব সদস য আওয় ম
এছাড়াও পড়ুন:
ইউক্রেনে জেলেনস্কির বিকল্প নেতা খুঁজছে যুক্তরাষ্ট্র!
ইউক্রেনে শান্তিচুক্তির জন্য দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির পদত্যাগ করা লাগতে পারে বলে জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইক ওয়ালৎস। তিনি বলেছেন, ‘ইউক্রেনের একজন নেতা প্রয়োজন, তিনি আমাদের সঙ্গে কাজ করতে পারবেন। তিনি শেষ পর্যন্ত রাশিয়ার সঙ্গে কাজ করতে পারবেন এবং এই যুদ্ধ থামাতে পারবেন।’ খবর- সিএনএন
গণমাধ্যমের সামনেই যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির নজিরবিহীন বাগবিতণ্ডার পর এ কথা বললেন তিনি। বাগবিতণ্ডার এ ঘটনাটি নিয়ে নানা আলোচনা চলছে বিশ্বজুড়ে। ওই ঘটনার পর ইউক্রেনের খনিজ সম্পদ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যে ঐতিহাসিক চুক্তি হওয়ার কথা ছিল, সেটিও বাতিল হয়ে যায়। আর এর পরই ইউক্রেনের ভবিষ্যৎ কোন পথে, তা নিয়ে শুরু হয় আলোচনা।
এই প্রকাশ্য দ্বন্দ্ব ন্যাটোর ইউরোপীয় সদস্যদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বড় সংকটের ইঙ্গিত দিচ্ছে বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা। শুক্রবারের ওই ঘটনায় সাবেক ডেমোক্র্যাট প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের গড়া ওয়াশিংটন-কিয়েভ সম্পর্ক ভেঙে পড়েছে। এই প্রকাশ্য দ্বন্দ্ব ন্যাটোর ইউরোপীয় সদস্যদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বড় সংকটের ইঙ্গিত দিচ্ছে।
যদিও ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের বিষয়ে আবারও এক টেবিলে বসার ইঙ্গিত দিয়েছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও। তিনি বলেছেন, ইউক্রেন ও রাশিয়া-দুই পক্ষই আলোচনায় না বসলে যুদ্ধ থামবে না। হোয়াইট হাউসে শুক্রবার ট্রাম্প-জেলেনস্কি বিতণ্ডার পর থেকে ইউক্রেনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের আর কথা হয়নি। যুদ্ধ থামানোর জন্য রাশিয়াকে আলোচনার টেবিলে আনতে হবে। তবে তাদের প্রতি বৈরী মনোভাব রাখলে, মস্কোকে আলোচনায় যুক্ত করা সম্ভব হবে না। কোনো চুক্তি করার ক্ষেত্রে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এই মনোভাবই দেখিয়ে আসছেন।
তিনি বলেন, ‘আমি আশা করি, সবকিছু আবার শুরু হতে পারে। আশা করি, তিনি (জেলেনস্কি) এটা বুঝতে পারবেন যে আমরা আসলে আরও হাজার হাজার মানুষের মৃত্যুর আগে, তাঁর দেশকে সাহায্যের চেষ্টা করছি।’