গুচ্ছ পদ্ধতিতে স্নাতক প্রথম বর্ষে শিক্ষার্থী ভর্তি না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দিনাজপুরের হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (হাবিপ্রবি)।

বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) বিকেলে আয়োজিত বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কমিটির আলোচনা সভায় গুচ্ছে না থাকার চূড়ান্ত সিদ্ধান্তসহ ভর্তির তারিখ, আবেদনের যোগ্যতা এবং ভর্তি সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

জনসংযোগ ও প্রকাশনা শাখার ভারপ্রাপ্ত পরিচালক মো.

খাদেমুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।

জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ে স্বতন্ত্র ভর্তি পরীক্ষা নেওয়ার জন্য গত সোমবার (১৩ জানুয়ারি) ৬৮ তম একাডেমিক কাউন্সিলে উপস্থিত সদস্যবৃন্দ আলোচনা করেন। সেখানে সর্বসম্মতিক্রমে গুচ্ছতে না থাকার এবং স্বতন্ত্রভাবে নিজস্ব তত্বাবধানে ছাত্র-ছাত্রী ভর্তি কার্যক্রম পরিচালনা করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।  

এরপর গুচ্ছভুক্ত ২১টি বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েক ধাপ আলোচনা সভার পরিপ্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার বিকেল ৪টায় ভর্তি পরীক্ষা কমিটির সভা আহ্বান করা হয়। এ সভা শেষে চূড়ান্তভাবে গুচ্ছ থেকে বেরিয়ে স্বতন্ত্রভাবে পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে হাবিপ্রবি। 

জনসংযোগ ও প্রকাশনা শাখার বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, হাবিপ্রবি ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক পর্যায়ের লেভেল-১ সেমিস্টার-১ এ চারটি ইউনিটের অধীনে আটটি অনুষদের ভর্তি পরীক্ষা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় অনুষ্ঠিত হবে। এ লক্ষ্যে আগামী ৯ ফেব্রুয়ারি থেকে ৬ মার্চ পর্যন্ত ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য আবেদন করতে বলা হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়েছে, আগামী ২১, ২২, ২৩ ও ২৪ এপ্রিল বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ভর্তি পরীক্ষাগুলো অনুষ্ঠিত হবে। এ সংক্রান্ত বিস্তারিত তথ্যাদি পরবর্তীতে হাবিপ্রবি ওয়েবসাইট এবং বিভিন্ন জাতীয় ও স্থানীয় দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশের মাধ্যমে জানানো হবে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিজনেস স্টাডিজ অনুষদের ভারপ্রাপ্ত ডিন অধ্যাপক ড মো.আবুল কালাম বলেন, “আমরা আগে থেকেই ভাবছিলাম গুচ্ছ থেকে বের হয়ে যাব। গুচ্ছভুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর কয়েক ধাপ সভায় খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়, হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়,বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় বের হয়ে এসেছে। এখন থেকে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায় একটা উৎসবের সৃষ্টি হবে।”

হাবিপ্রবি কোষাধ্যক্ষ ও রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. এম জাহাঙ্গীর কবির বলেন, “আমরা ৬৮তম একাডেমিক কাউন্সিলে উপস্থিত সবার মতামতের প্রতি সম্মান রেখে ভালো-খারাপ সব দিক বিবেচনায় গুচ্ছে না থেকে স্বতন্ত্র ভর্তি পরীক্ষা নেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেই। বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনে স্বতন্ত্র ভর্তি পরীক্ষার কথা উল্লেখ রয়েছে।”

তিনি বলেন, “শিক্ষার্থীদের সুবিধার কথা বিবেচনা করে আমরা গুচ্ছে মত দিয়েছিলাম। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, এখানে ঝামেলাপূর্ণ কিছু বিষয় রয়ে গেছে। ফলে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের বেশিরভাগ শিক্ষক, কর্মকর্তারা চাচ্ছেন গুচ্ছ থেকে বের হয়ে আসতে। শিক্ষার্থীদেরও একটা প্রত্যাশা ছিল, যেন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন স্বতন্ত্রভাবে ভর্তি পরীক্ষা নেয়। তাই আমরা এককভাবে ভর্তি পরীক্ষার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছি।”

ঢাকা/সংগ্রাম/মেহেদী

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স বতন ত র পর ক ষ

এছাড়াও পড়ুন:

সুদানে বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীদের ওপর হামলার ঘটনায় জাতিসংঘ মহাসচিবের তীব্র নিন্দা

সুদানে জাতিসংঘের এক ঘাঁটিতে ড্রোন হামলায় ছয় শান্তিরক্ষী নিহত হয়েছেন। তাঁরা সবাই বাংলাদেশের নাগরিক। এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস।

জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, ‘আমি সুদানের কাদুগলিতে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী বাহিনীর লজিস্টিক ঘাঁটি লক্ষ্য করে নৃশংস ড্রোন হামলার তীব্র নিন্দা জানাই। জাতিসংঘের শান্তিরক্ষীদের লক্ষ্য করে হামলা আন্তর্জাতিক আইনের আওতায় যুদ্ধাপরাধ হিসেবে গণ্য হতে পারে।’

সুদানের কোরদোফান অঞ্চলের কাদুগলি শহরে অবস্থিত জাতিসংঘের ভবনটিতে গতকাল শনিবার এ হামলা হয়।

গুতেরেসের বিবৃতিতে বলা হয়, হামলায় আরও আট শান্তিরক্ষী আহত হয়েছেন। হতাহত ব্যক্তিদের সবাই বাংলাদেশের নাগরিক। তাঁরা ইউএন ইন্টারিম সিকিউরিটি ফোর্স ফর আবেইয়ের (ইউএনআইএসএফএ) হয়ে দায়িত্বরত ছিলেন।

গুতেরেস বলেন, ‘দক্ষিণ কোরদোফানে আজ (শনিবার) শান্তিরক্ষীদের ওপর যে হামলা হয়েছে, তা অগ্রহণযোগ্য। এর জন্য দায়ী ব্যক্তিদের জবাবদিহি নিশ্চিত করতে হবে।’

হামলায় নিহত শান্তিরক্ষীদের সবাই বাংলাদেশি। তাঁরা ইউএন ইন্টারিম সিকিউরিটি ফোর্স ফর আবেইয়ের (ইউএনআইএসএফএ) হয়ে দায়িত্বরত ছিলেন। হামলায় আরও আট শান্তিরক্ষী আহত হয়েছেন।

সুদানের সেনাবাহিনী ওই হামলার দায় র‌্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস (আরএসএফ) নামে দেশটির আধা সামরিক বাহিনীর ওপর চাপিয়েছে।

সুদানে দুই বছরের বেশি সময় ধরে গৃহযুদ্ধ চলছে। দেশটির সেনাবাহিনী ও আরএসএফের মধ্যে এ লড়াই চলছে।

আরএসএফ তাৎক্ষণিকভাবে হামলার বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।

সুদানের সেনাবাহিনী এক বিবৃতিতে বলেছে, এ হামলা বিদ্রোহী মিলিশিয়া এবং এর পেছনে যাঁরা আছেন, তাঁদের ধ্বংসাত্মক কৌশলের স্পষ্ট প্রকাশ।

সুদান সেনাবাহিনী সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি ভিডিও পোস্ট করেছে। ভিডিওতে একটি স্থান থেকে ঘন কালো ধোঁয়া আকাশে উঠতে দেখা যাচ্ছে। তারা বলেছে, এটি জাতিসংঘের স্থাপনা।

বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী হতাহত হওয়ার এ ঘটনায় গভীর শোক ও উদ্বেগ জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।

দক্ষিণ কোরদোফানে আজ (শনিবার) শান্তিরক্ষীদের ওপর যে হামলা হয়েছে, তা অগ্রহণযোগ্য। এর জন্য দায়ী ব্যক্তিদের জবাবদিহি নিশ্চিত করতে হবে।.আন্তোনিও গুতেরেস, জাতিসংঘ মহাসচিব

যেখানে হামলা হয়েছে, সেই তেলসমৃদ্ধ অঞ্চল আবেই নিয়ে সুদান ও দক্ষিণ সুদানের মধ্যে বিরোধ রয়েছে। ২০১১ সালে সুদান থেকে আলাদা হয়ে দক্ষিণ সুদান একটি স্বাধীন দেশ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। এর পর থেকে সেখানে জাতিসংঘের শান্তি রক্ষা মিশন মোতায়েন রয়েছে।

দুই দেশের সীমান্তে অবস্থিত আবেই বিশেষ প্রশাসনিক মর্যাদার অঞ্চল।

সুদানের আবেই অঞ্চলে একটি সড়কে দায়িত্ব পালন করছেন জাতিসংঘের একজন শান্তিরক্ষী

সম্পর্কিত নিবন্ধ