আলোচিত ও বিতর্কিত সাবেক এমপি ফাহমী গোলন্দাজ বাবেল ও তাঁর স্ত্রীর বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। বৃহস্পতিবার দুদকের প্রধান কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. আশিকুর রহমান বাদী হয়ে বাবেলের বিরুদ্ধে এবং সহকারী পরিচালক মো. ফেরদৌস রহমান বাদী হয়ে বাবেলের স্ত্রী শারমিন গোলন্দাজ তুষ্টির বিরুদ্ধে কমিশনের ঢাকা-১ কার্যালয়ে মামলা দুটি করেন।    
   
ফাহমী গোলন্দাজ ময়মনসিংহ-১০ আসনে আওয়ামী লীগের এমপি নির্বাচিত হয়ে নানা বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে জাড়িয়ে পড়েন। সরকারিভাবে বিশেষ বরাদ্দের কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎসহ নানা অনিয়ম-দুর্নীতি করেছেন। সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে মদদ দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। নিজে প্রকাশ্যে গুলি করে বিতর্কিত হয়েছেন। তাঁর নির্বাচনী এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছিলেন। বর্তমানে তিনি পলাতক। 

এজাহারে ফাহমী গোলন্দাজের বিরুদ্ধে ২০ কোটি ১১ লাখ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ করা হয়েছে, যা তাঁর বৈধ আয়ের সঙ্গে অসংগতিপূর্ণ। তাঁর নামে ১৬টি ব্যাংক হিসাবে ২০১২ সালের এপ্রিল থেকে গত বছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৩৭ কোটি ৩৬ লাখ টাকা জমা এবং ২৩ কোটি ৬১ লাখ ৯৭ হাজার টাকা উত্তোলন করা হয়। মোট ৬০ কোটি ৯৮ লাখ টাকার সন্দেহজনক ও অস্বাভাবিক লেনদেনের রেকর্ডপত্র রয়েছে দুদকের হাতে। একই সময়ে ৮৬ হাজার ৭৯ মার্কিন ডলার জমা ও ৮৫ হাজার ৫৬৭ মার্কিন ডলার উত্তোলন করা হয়। 

শারমিন গোলন্দাজের নামে ১ কোটি ২ লাখ ৯৭ হাজার টাকার অবৈধ সম্পদ পাওয়া গেছে। তাঁর নামে তিনটি ব্যাংক হিসাবে ২ কোটি ২৭ লাখ টাকা জমা এবং ৯০ লাখ ৬৯ টাকা উত্তোলন করা হয়, যা সন্দেহজনক লেনদেন।
 
সাবেক মন্ত্রী জিল্লুল হাকিমের নামে মামলা

বৃহস্পতিবার দুদকের উপপরিচালক মোজাম্মিল হোসেন বাদী হয়ে সাবেক রেলমন্ত্রী জিল্লুল হাকিমের বিরুদ্ধে এবং সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ জিন্নাতুল ইসলাম বাদী হয়ে জিল্লুল হাকিমের স্ত্রী সাঈদা হাকিমের বিরুদ্ধে দুটি মামলা করেন। জিল্লুল হাকিমের ছেলে আশিক মাহমুদ মিতুলের বিরুদ্ধে মামলা করেন দুদকের উপসহকারী পরিচালক মো.

ফারুক হোসেন।  

জিল্লুল হাকিমের নামে মামলার এজাহারে বলা হয়, তাঁর ২৪ কোটি ২৯ লাখ টাকার অবৈধ সম্পদ রয়েছে। তাঁর ১৯টি ব্যাংক হিসাবে ২৭৮ কোটি ৮১ লাখ টাকার অস্বাভাবিক ও সন্দেহজনক লেনদেন হয়। সাঈদা হাকিম ওরফে সাইদা সুলতানা চৌধুরীর নামে ৪ কোটি ২৭ লাখ ৭২ হাজার টাকার অবৈধ সম্পদ পাওয়া গেছে। ছয়টি ব্যাংক হিসাবে মোট ২০ কোটি ২৪ লাখ টাকার সন্দেহজনক লেনদেন করা হয়। 

আশিক মাহমুদ মিতুলের নামে ২ কোটি ৬২ লাখ টাকার অবৈধ সম্পদের তথ্য পেয়েছে দুদক। তাঁর ব্যাংক হিসাবে মোট ১৫ কোটি ৫০ লাখ ৮৬ হাজার টাকার লেনদেন হয়, যা অস্বাভাবিক।

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

ইউক্রেনে জেলেনস্কির বিকল্প নেতা খুঁজছে যুক্তরাষ্ট্র!

ইউক্রেনে শান্তিচুক্তির জন্য দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির পদত্যাগ করা লাগতে পারে বলে জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইক ওয়ালৎস। তিনি বলেছেন, ‘ইউক্রেনের একজন নেতা প্রয়োজন, তিনি আমাদের সঙ্গে কাজ করতে পারবেন। তিনি শেষ পর্যন্ত রাশিয়ার সঙ্গে কাজ করতে পারবেন এবং এই যুদ্ধ থামাতে পারবেন।’ খবর- সিএনএন

গণমাধ্যমের সামনেই যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির নজিরবিহীন বাগবিতণ্ডার পর এ কথা বললেন তিনি। বাগবিতণ্ডার এ ঘটনাটি নিয়ে নানা আলোচনা চলছে বিশ্বজুড়ে। ওই ঘটনার পর ইউক্রেনের খনিজ সম্পদ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যে ঐতিহাসিক চুক্তি হওয়ার কথা ছিল, সেটিও বাতিল হয়ে যায়। আর এর পরই ইউক্রেনের ভবিষ্যৎ কোন পথে, তা নিয়ে শুরু হয় আলোচনা।

এই প্রকাশ্য দ্বন্দ্ব ন্যাটোর ইউরোপীয় সদস্যদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বড় সংকটের ইঙ্গিত দিচ্ছে বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা। শুক্রবারের ওই ঘটনায় সাবেক ডেমোক্র্যাট প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের গড়া ওয়াশিংটন-কিয়েভ সম্পর্ক ভেঙে পড়েছে। এই প্রকাশ্য দ্বন্দ্ব ন্যাটোর ইউরোপীয় সদস্যদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বড় সংকটের ইঙ্গিত দিচ্ছে। 

যদিও ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের বিষয়ে আবারও এক টেবিলে বসার ইঙ্গিত দিয়েছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও। তিনি বলেছেন, ইউক্রেন ও রাশিয়া-দুই পক্ষই আলোচনায় না বসলে যুদ্ধ থামবে না। হোয়াইট হাউসে শুক্রবার ট্রাম্প-জেলেনস্কি বিতণ্ডার পর থেকে ইউক্রেনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের আর কথা হয়নি। যুদ্ধ থামানোর জন্য রাশিয়াকে আলোচনার টেবিলে আনতে হবে। তবে তাদের প্রতি বৈরী মনোভাব রাখলে, মস্কোকে আলোচনায় যুক্ত করা সম্ভব হবে না। কোনো চুক্তি করার ক্ষেত্রে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এই মনোভাবই দেখিয়ে আসছেন।

তিনি বলেন, ‘আমি আশা করি, সবকিছু আবার শুরু হতে পারে। আশা করি, তিনি (জেলেনস্কি) এটা বুঝতে পারবেন যে আমরা আসলে আরও হাজার হাজার মানুষের মৃত্যুর আগে, তাঁর দেশকে সাহায্যের চেষ্টা করছি।’
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ