কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারে সতর্ক ক‌রে নির্দেশনা দি‌য়ে‌ছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ফেসবুকে আপত্তিকর পোস্ট, কমেন্ট, শেয়ার বা অশ্লীল মন্তব্য কর‌লে আইন অনুযায়ী শা‌স্তির আওতায় আনা হ‌বে।

বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত নির্দেশনা জারি করা হয়।

নির্দেশিকায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারে সরকারি প্রতিষ্ঠান ও কর্মচারীদের করণীয় ও বর্জনীয় নির্ধারণ করা এবং এক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা ও গোপনীয়তা নিশ্চিত করার বিষয়ে উল্লেখ করা হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অপব্যবহারের জন্য নিজেদের দায়ী থাকতে হবে জানিয়ে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও বলা হয়েছে। বিশেষ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম অপব্যবহারকারী সংশ্লিষ্ট কর্মচারীর বিরুদ্ধে ২০০৩ এর ৪৪ (১) ধারা মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণের কথাও উল্লেখ করা হয়েছে। 

পরিপত্রে বলা হয়েছে, সম্প্রতি বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংকের কিছু কিছু কর্মকর্তা/কর্মচারী ইচ্ছা ও অনিচ্ছাকৃতভাবে বাংলাদেশ ব্যাংক সম্পর্কিত বিভিন্ন বিষয়ে বিভ্রান্তিমূলক তথ্য প্রকাশ করে‌ছে। এমনকি সহকর্মীদের বিরুদ্ধে অশ্লীল মন্তব্যও করা হয়েছে। এতে করে ব্যাংকের স্বাভাবিক কর্মপরিবেশ ক্ষুণ্ন হচ্ছে বলে দাবি করে উক্ত বিভাগ।

সামাজিক যোগাযোগের বিভিন্ন মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংক, সরকার বা রাষ্ট্রের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয় এমন কোনো পোস্ট, ছবি, অডিও বা ভিডিও আপলোড, কমেন্ট, লাইক, শেয়ার করা থেকে বিরত থাকতে হবে। জাতীয় ঐক্য ও চেতনার পরিপন্থি কোনো তথ্য-উপাত্ত, প্রকাশ করা হতে বিরত থাকতে হবে। কোনো সম্প্রদায়ের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত লাগতে পারে এমন বা ধর্মনিরপেক্ষতার নীতি পরিপন্থি কোনো তথ্য-উপাত্ত প্রকাশ করা যাবে না।

সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট বা আইন-শৃঙ্খলার অবনতি ঘটতে পারে এরূপ কোনো পোস্ট, ছবি, অডিও বা ভিডিও আপলোড, কমেন্ট, লাইক, শেয়ার করা থেকে বিরত থাকতে হবে। জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা অন্য কোনো সার্ভিস বা পেশাকে হেয় প্রতিপন্ন করে এমন কোনো পোস্ট দেওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।

এ ছাড়া লিঙ্গ বৈষম্য বা এ সংক্রান্ত বিতর্কমূলক কোনো তথ্য-উপাত্ত প্রকাশ করা যাবে না। যেমন- জনমনে অসন্তোষ বা অপ্রীতিকর মনোভাব সৃষ্টি করতে পারে এমন কোনো বিষয়ে লেখা, অডিও বা ভিডিও ইত্যাদি প্রকাশ বা শেয়ার করা। ভিত্তিহীন, অসত্য ও অশ্লীল তথ্য প্রচার হতে বিরত থাকা। অন্য কোনো রাষ্ট্র বা রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি সম্পর্কে বিরূপ মন্তব্য সম্বলিত কোনো পোস্ট, ছবি, অডিও বা ভিডিও আপলোড, কমেন্ট, লাইক, শেয়ার করা থেকে বিরত থাকা এবং বাংলাদেশ ব্যাংকে কর্মরত সহকর্মীদের সম্পর্কে অশালীন/বিরূপ, বিষোদ্‌গার বা উত্তেজনামূলক মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকতে হবে। বিশেষ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে কন্টেন্ট ও ফ্রেন্ড সিলেকশনে সবাইকে সতর্কতা অবলম্বন এবং অপ্রয়োজনীয় ট্যাগ, রেফারেন্স বা শেয়ার করা পরিহার করতে হবে।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অপব্যবহার বা নিজ অ্যাকাউন্টের ক্ষতিকারক কন্টেন্টের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মচারী ব্যক্তিগতভাবে দায়ী হবেন এবং সেজন্য প্রচলিত আইন ও বিধি বিধান অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে পরিপত্রে বলা হয়েছে।

নির্দেশনা না মানলে ‘সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের অপব্যবহার বা নিজ অ্যাকাউন্টের ক্ষতিকারক কন্টেন্টের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা/কর্মচারী ব্যক্তিগতভাবে দায়ী হবেন’। কর্মকর্তা/কর্মচারীদের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের বিভিন্ন পোস্ট, কমেন্ট শেয়ার ইত্যাদি হিউম্যান রিসোর্সেস ডিপার্টমেন্ট-২ কর্তৃক নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করা হবে।

ঢাকা/এনএফ/এনএইচ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর অপব যবহ র শ য় র কর ব যবহ র ব যবস থ

এছাড়াও পড়ুন:

দুর্ঘটনায় আহত অভিনেত্রী খুশি, চোখের ওপর পড়েছে ১০ সেলাই

দুর্ঘটনার শিকার হয়ে গুরুতর আহত হয়েছেন ছোটপর্দার অভিনেত্রী শাহনাজ খুশি। বুধবার সকালে রমনা পার্ক থেকে বাড়ি ফেরার সময় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার ধাক্কায় তিনি আহত হন। অভিনেত্রীর ছেলে সৌম্য জ্যোতি সমকালকে বিষয়টি জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, বুধবার সকালে আম্মু রমনা পার্কে হাটতে গিয়েছিলেন। সেখান থেকে বাসায় ফেরার সময় গলির মধ্যে একটি অটোরিকশা তাকে ধাক্কা দিলে আম্মু ছিটকে পড়ে যায় এবং তার ঠিক চোখের ওপর জখম হয়। পরে দ্রুত তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়। সিটি স্ক্যানসহ বিভিন্ন পরীক্ষা করা হয়েছে। এখন তিনি আপাতত ভালো আছেন।’

এদিকে কিছুটা সুস্থ হওয়ার পর শুক্রবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দুর্ঘটনার বিষয়টি জানান শাহনাজ খুশি। সেখানে তিনি বলেন, ‘বেশি না, মাত্র ১০টা সেলাই পড়েছে। এ আর এমন কি বলেন? চোখটা অন্ধ হয় নাই, হয় নাই ব্রেইন হ্যামারেজের মত শেষ অবস্থা! সেটাই তো অনেক বেশি পাওয়া! এ তেমন কিছু না, চোখের উপরের সেনসেটিভ জায়গায় মাত্র ১০ টা সেলাই লেগেছে! আমি যে প্রাণে বেঁচে আছি এ জন্য মহান সৃষ্টিকর্তা কাছে শুকরিয়া আদায় করছি!’

তিনি আরও লিখেছেন, ‘কিচ্ছু চাই না আমি, শুধু যে মায়েরা/বাবারা ছোট্ট বাচ্চাটার হাত ধরে রাস্তা পার হয়ে স্কুলে আসেন অথবা নানান প্রয়োজনে রাস্তায় যান, তাদের সতর্ক করতে পোস্টটা দিলাম। আমি হয়ত ভেঙেচুরে বেঁচে গেছি। কোন বাচ্চা এ আঘাত নিতে পারবে না! ব্যাটারি চালিত অসভ্য/বর্বর যানবাহনটি এবং তার অসভ্য চালক থেকে সর্বদা সতর্ক থাকবেন। যদিও আমি গলির ভেতরের রাস্তায়, প্রাতঃ ভ্রমণ শেষে অতি সর্তকতার সাথেই একেবারে কিনার দিয়ে হেঁটে ফিরছিলাম! ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিয়ে বীরদর্পে চলে গেছে! ওরা মেধাবী যান চালক, কারো জীবনের ক্ষতির তোয়াক্কা করে না! আপনার এবং আপনার সন্তানের দায়িত্ব একান্তই আপনার। আজ চারদিন পরও মাথার অর্ধেকে কোন বোধশক্তি নাই!

সবশেষে তিনি লিখেছেন, ‘জানি না স্বাভাবিক চেহারায় ফিরবো কিনা, সেটা যদিও ফিরি রক্তাক্ত সেই পথে পড়ে থাকা সকালের ট্রমা অনেককাল ভুলবো না! কাতর অবস্থায় বিছানায় পরে থেকে বারবার একটা প্রশ্ন মনে আসছে, এই যে যত্রতত্র কুপিয়ে জখম, ট্রেন-বাস, রিকশা কিংবা প্রাইভেট গাড়িতে দিনেরাতে ছিনতাই। কার কাছে চাইব আমাদের সন্তানদের নিরাপদ পথচলা।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ