মাথার পেছনে পিস্তল ঠেকিয়ে গুলি করেন শাহরিয়ার
Published: 16th, January 2025 GMT
কক্সবাজারে খুলনার সাবেক কাউন্সিলর গোলাম রব্বানী হত্যা মামলার তিন আসামি আদালতে দায় স্বীকার করেছেন। গত বুধবার সন্ধ্যায় কক্সবাজার আদালতে তারা ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
জবানবন্দিতে হত্যাকাণ্ডে অংশ নেওয়া আসামিরা বলেন, গত ৯ জানুয়ারি সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা। কক্সবাজার হোটেল সিগাল পয়েন্টের সামনের বালুচরে সৈকতে বসানো চেয়ারে বসে আড্ডা দিচ্ছিলেন খুলনা সিটি করপোরেশনের সদ্য অপসারিত কাউন্সিলর গোলাম রব্বানী ওরফে টিপু (৫৪) এবং ঋতু নামের এক তরুণী। রাত ৮টার দিকে চেয়ার ছেড়ে তারা দু’জন সৈকত থেকে হেঁটে সিগাল হোটেলের দিকে যাচ্ছিলেন। ঋতু রব্বানীর আগে আগে আগে হাঁটছিলেন। পেছনে মুঠোফোনে কথা বলতে বলতে হাঁটছিলেন গোলাম রব্বানী।
জবানবন্দিতে তারা বলেন, ঋতুর ইশারায় আগ থেকেই গোলাম রব্বানীকে নজরদারিতে রাখেন শেখ শাহরিয়ার ইসলাম ওরফে পাপ্পুসহ চারজন। সৈকত থেকে পাকা সড়কে ওঠার জন্য গোলাম রব্বানী যখন ঝাউবাগানের ভেতরে চলে আসেন, তখন সামনে এগিয়ে যান শেখ শাহরিয়ার। তারপর রাতের অন্ধকার থেকে পেছন দিক থেকে রাব্বানীর মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে একটি গুলি করেন তিনি। সঙ্গে সঙ্গে মাটিতে লুটে পড়েন রব্বানী। এরপর গোলাম রসুলকে (২৫) সঙ্গে নিয়ে শেখ শাহরিয়ার রিকশায় উঠে চলে যান কক্স কুইন রিসোর্টে। আর ঋতু ও রিয়াজ নামের অপর দুজন সরে পড়েন অন্যদিকে।
জবানবন্দি দেওয়া তিনজন হলেন ঋতু (২৪), শেখ শাহরিয়ার ইসলাম (২৭) ও গোলাম রসুল (২৫)। আসামিরা সবাই খুলনার বাসিন্দা।
এর আগে গত সোমবার রাতে মৌলভীবাজার থেকে তাদের গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এরপর বুধবার সন্ধ্যায় তাদের আদালতে তোলা হয়।
গত বুধবার কক্সবাজারের পুলিশ সুপার রহমত উল্লাহ সংবাদ সম্মেলন করে জানান, চাচা শহীদুলের হত্যার প্রতিশোধ নিতে শাহরিয়ার ইসলাম ওরফে পাপ্পু সাবেক কাউন্সিলর গোলাম রব্বানীকে হত্যা করেছেন। অন্য দুই আসামি ঋতু ও গোলাম রসুলও হত্যাকাণ্ডে সরাসরি অংশ নিয়েছেন। হত্যার জন্য আসামিরা কক্সবাজারকে উপযুক্ত স্থান হিসেবে বেছে নেন।
আদালত সূত্র জানিয়েছে, গ্রেপ্তার ঋতু সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট হামীমুন তানজিনের আদালতে, শাহরিয়ার ইসলাম সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আখতার জাবেদের আদালতে এবং গোলাম রসুল সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আসাদ উদ্দিন মো.
জবানবন্দি দেওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন কক্সবাজার সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইলিয়াস খান। তিনি বলেন, ‘রাত ১০টার দিকে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়।’
উল্লেখ্য, গত ৯ জানুয়ারি রাতে কক্সবাজার সৈকতে সিগাল হোটেলের সামনে ঝাউবাগানে মাথায় গুলি করে হত্যা করা হয় রব্বানীকে। তাঁর বাড়ি খুলনা সিটি করপোরেশন এলাকার দৌলতপুরে। তিনি খুলনা সিটি করপোরেশনের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর এবং মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহসভাপতি।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: র ইসল ম
এছাড়াও পড়ুন:
স্ত্রীর হাত কেটে ‘প্রতিশোধ’ স্বামীর
পরকীয়ার সন্দেহে গত বছরের ১৬ এপ্রিল স্বামীর পুরুষাঙ্গ কেটে ফেলেন স্ত্রী। চলতি বছরের ২৬ জানুয়ারি রাতে স্ত্রীর ডান হাত কেটে প্রতিশোধ নিয়েছেন স্বামী। এ ঘটনায় স্বামী ফিরোজ মিয়াকে গ্রেপ্তার করে জেলহাজতে পাঠিয়েছে পুলিশ। তারা টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর উপজেলার বাসিন্দা।
স্বামী ফিরোজ মিয়া রাউৎবাড়ী গ্রামের মৃত শাহজাহান আলীর ছেলে এবং তার স্ত্রী জাকিয়া বেগম একই ইউনিয়নের পাশের জিগাতলা গ্রামের জামিলের মেয়ে।
গত বছর ১৬ এপ্রিল রাতে পরকীয়া সন্দেহে জাকিয়া তার স্বামী ফিরোজের পুরুষাঙ্গ ধারালো অস্ত্র দিয়ে কেটে ফেলেন। পরে ফিরোজের মা ফরিদা বেগম বাদী হয়ে জাকিয়ার বিরুদ্ধে ভূঞাপুর থানায় মামলা করেন। পরে পুলিশ জাকিয়াকে গ্রেপ্তার করে জেলহাজতে পাঠায়। এরপর কিছুদিন পর জাকিয়া জামিন পেয়ে ঢাকার আশুলিয়া এলাকার একটি পোশাক কারখানায় চাকরি নেন। এদিকে স্ত্রীর চাকরির সংবাদ পেয়ে ফিরোজ মিয়া প্রতিশোধ নিতে তার সঙ্গে যোগাযোগ করে। চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়ে আশুলিয়া গাজীরচর এলাকার বাসা ভাড়া নিয়ে আবারও সংসার শুরু করেন তারা। এরপর সুযোগ বুঝে সোমবার রাতে জাকিয়ার ডান হাত কেটে বিচ্ছিন্ন করেন ফিরোজ মিয়া। এসময় স্ত্রী জাকিয়ার চিৎকার শুনে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এসে তার স্বামীকে আটক করে পুলিশকে খবর দেন এবং জাকিয়াকে উদ্ধার করে ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালে পাঠান। পরে পুলিশ এসে ফিরোজকে গ্রেপ্তার করে।
এ ব্যাপারে আশুলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নূর আলম সিদ্দিকী জানান, স্থানীয়দের মাধ্যমে সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে ফিরোজকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠানো হয়। আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। এ ঘটনায় জাকিয়ার বাবা বাদী হয়ে ফিরোজের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেছেন।