বিপিএলের দল দুর্বার রাজশাহীর ক্রিকেটাররা পারিশ্রমিক না পেয়ে বুধবার অনুশীলন বর্জন করেছিলেন। বৃহস্পতিবার তারা ৫০ শতাংশ অর্থ প্রাপ্তির আশ্বাসে পুনরায় অনুশীলনে নেমেছিল। শুক্র ও শনিবার ব্যাংক বন্ধ থাকায় ২৫ শতাংশ নগদ ও বাকি ২৫ শতাংশ চেকের মাধ্যমে পরিশোধ করার কথা ছিল। কিন্তু বৃহস্পতিবার রাত ৯টায় এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত রাজশাহীর ক্রিকেটাররা পারিশ্রমিক বুঝে পাননি। সমকালকে নিশ্চিত করেছেন রাজশাহীর অধিনায়ক এনামুল হক বিজয়।

বিপিএল শুরুর আগে পারিশ্রমিক নিয়ে নিয়ম বেধে দিয়েছিল বিসিবি। সেখানে টুর্নামেন্ট শুরুর আগে দেশি-বিদেশি ক্রিকেটার ও স্টাফদের ৫০ শতাংশ পারিশ্রমিক দিয়ে দেওয়ার কথা ছিল। ২৫ শতাংশ  পারিশ্রমিক টুর্নামেন্ট চলাকালীন দেওয়ার কথা ছিল। বাকি ২৫ শতাংশ পারিশ্রমিক টুর্নামেন্ট শেষে দেওয়ার নির্দেশনা ছিল। কিন্তু অধিকাংশ ফ্র্যাঞ্চাইজি ওই নিয়ম মানেনি।  

জানা যায়, রাজশাহীর খেলা দেখতে এসে রাজশাহী ফ্রাঞ্চাইজির মালিকের স্ত্রীর শরীরে একটা ছক্কার বল লাগে। যার জন্য তাকে নিয়ে চিকিৎসার জন্য থাইল্যান্ডে নিয়ে যান। যে কারণে রাজশাহী দলের ক্রিকেটারদের পারিশ্রমিক নির্ধারিত সময়ে দেওয়া সম্ভব হয়নি। এমনটাই জানানো হয়েছে দলের পক্ষ থেকে। 

এ প্রসঙ্গে অপারেশন ইনচার্জ জায়েদ বলেন, ‘চেক বাউন্সের ব্যাপারটা হলো, যেই ম্যাচে আমাদের দলের কর্ণধারের স্ত্রী মাঠে ছিলেন, ওই ম্যাচে সাইডলাইনে বসে থাকা অবস্থায় একটি বল আঘাত করে ওনার শরীরে। একটা হাড়ে চিড় ধরা পড়ে। তাই তৎক্ষণাৎ তাকে ব্যাংকক নিয়ে যেতে হয় চিকিৎসার জন্য। তিনি সেখানেই ছিলেন।’

তিনি আরো জানান, ‘চেকটা আমরা এর আগেই দিয়ে ফেলেছিলাম। আমরা চেকটা ওই তারিখে লিখে ফেলেছিলাম কিন্তু উনি দেশে নেই, তখন তিনি বললেন, “আমি তো দেশে নেই, তুমি দলকে বলো আমি আসার পরে যেন চেকটা জমা দেয়। না হয় ব্যাংক তো ফোন করে আমাকে পাবে না।” এই জিনিসটা প্রতিটা ক্রিকেটারকে বলা হয়েছিল। এর ভেতরে ২-১ জন ক্রিকেটার হয়তো চেক জমা দিয়ে ফেলেছিল। তাদের মনে ছিল না। পরে যোগাযোগ করি যে, “আপনাদের তো বলা হয়েছে চেকটা জমা না দিতে।” তখন তারা বলে যে, তাদের মাথায় ছিল না। তারা ভেবেছিল সমস্যা সমাধান হয়ে গেছে।’

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব প এল

এছাড়াও পড়ুন:

শেখ হাসিনার ফাঁসির দাবিতে চট্টগ্রামে অনশনে বৈষম্যবিরোধীরা

ছাত্র-জনতার আন্দোলনে হামলা ও হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ জড়িত সবার ফাঁসির দাবিতে অনশন করছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীরা।

আজ বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে নগরীর জামালখানে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সামনে এ অনশন শুরু করেন তারা। পরে প্রেসক্লাবের সামনের সড়কে অবস্থান নেন। রাত সাড়ে ৮টা এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত অনশন চলছিল। এর আগে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সামনে বিক্ষোভ করেন তারা।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য রাসেল আহমেদ বলেন, ‘বিপ্লবের ছয়মাস পূরণ হতে যাচ্ছে। আমরা এখনও এ সরকারের কাছে কোনো দৃশ্যমান পদক্ষেপ দেখতে পাইনি। আমাদের ভাইদের রক্ত এখনও রাজপথে লেগে আছে। আমি এখানে বসলাম, যতক্ষণ পর্যন্ত সরকার কোনো দৃশ্যমান পদক্ষেপ নেবে না আমরা এখান থেকে উঠব না। আমাদের লড়াই চলছে, চলবে। আমরা আমাদের আমরণ অনশন চালিয়ে যাব। আমরা বিচার চাই। বিচার ছাড়া কোনো কথা নেই।’

তিনি আরও বলেন, ‘এ সরকার আমাদের রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে ক্ষমতায় বসেছে। ইউনূস সরকার কি করে। খুনি বাইরের দেশে বসে আছে। তাদের ধরে এনে ফাঁসির দড়িতে ঝুলাতে হবে। এটাই আমাদের শেষ কথা।’ 

রাসেল আহমেদ বলেন, ‘বিগত বছরগুলোতে যেভাবে ফ্যাসিবাদী কাঠামো গড়ে উঠেছিল, সেটাকে ভেঙে দিয়ে খুনি শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আমরা রাজপথে নেমে এসেছিলাম। এখন পর্যন্ত অন্তর্বর্তী সরকারের কাছ থেকে আমরা ন্যূনতম সংস্কার ও বিচার পাইনি। জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আমাদের দুই হাজারের অধিক ভাই জীবন দিয়েছে। তারা রাজপথে সাহসিকতার সঙ্গে আওয়ামী লীগের পেটোয়া বাহিনী প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিল।’

রাসেল আরও বলেন, ‘স্বাধীনতার পর এখনও আমাদের খুনি হাসিনা, আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগের বিচারের দাবিতে রাজপথে নামতে হয়। আমাদের এ মুক্ত বাতাসে এখনও লাশের গন্ধ ভেসে বেড়ায়। বারবার আমাদের তাদের বিচারের দাবিতে আওয়াজ তুলতে হচ্ছে। এ অন্তর্বর্তী সরকারকে সেসব খুনিদের বিচার করার জন্যই ক্ষমতায় বসানো হয়েছে। আজও ছাত্রলীগ-যুবলীগের গুণ্ডাবাহিনী বীর চট্টলার বুকে মিছিল করেছে। খুনি হাসিনাসহ আমাদের ভাইদের যারা খুন করেছে, তাদের বিচার ও ফাঁসি না হওয়া পর্যন্ত আমরা এখানে এখন থেকেই আমরণ অনশন পালন করব।’ 

আজ বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে নগর পুলিশের উপ-কমিশনার (দক্ষিণ) শাকিলা সোলতানা বলেন, ‘এখনো তারা সড়কে আছেন। তাদের দাবি দাওয়া নিয়ে আলোচনা চলছে।’ 

অনশনকারীদের অন্য দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে- দ্রুত বিচার আইনে বিভাগীয় ট্রাইব্যুনাল গঠন করে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে হত্যাকাণ্ডে জড়িত ও উস্কানিদাতাদের গ্রেপ্তার-বিচার করা, শেখ হাসিনাকে দেশে ফেরত এনে বিচার করা, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র রাষ্ট্রীয়ভাবে ঘোষণা করা, সব হত্যা, গুম, খুন, ধর্ষণ, অপরাধ ও নির্যাতনের বিচার করা, আওয়ামী লীগের রাজনীতি নিষিদ্ধ করা, আওয়ামী লীগ নেতাদের অবৈধভাবে অর্জিত সব অর্থ ও সম্পদ রাষ্ট্রীয়ভাবে বাজেয়াপ্ত করা, বিদেশে পাচার করা অর্থ ফেরত আনা, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের শহীদদের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দিয়ে শহীদ পরিবার ও আহত ব্যক্তিদের জীবনের দায়িত্ব রাষ্ট্রকে গ্রহণ করতে হবে ও নতুন সংবিধান প্রণয়ন করাসহ রাষ্ট্রের যাবতীয় গণতান্ত্রিক সংস্কারের রূপরেখা প্রদান করতে হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • এক সপ্তাহেও তদন্তে নেই কোনো অগ্রগতি
  • এই চিঠি পোস্ট করা হয়নি
  • গাজা: যুদ্ধবিরতি এলো মানুষগুলো ফিরল না
  • শেখ হাসিনার ফাঁসির দাবিতে চট্টগ্রামে অনশনে বৈষম্যবিরোধীরা
  • পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নেইনি: নাহিদ ইসলাম
  • কেরানীগঞ্জে বন্ধ হয়নি চাঁদাবাজি, শুধু হাত বদলেছে: সারজিস আলম