সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের একই উপজেলা বা থানার ভেতরে অনলাইন বদলি কার্যক্রম শুরু হতে চলেছে। আগামী ২০ জানুয়ারি থেকে শুরু হয়ে এ বদলি চলবে ১০ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত।

বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) রাতে এ-সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। এ ছাড়া, সম্প্রতি এ সংক্রান্ত একটি বিজ্ঞপ্তিও জারি করে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর।

বিজ্ঞপ্তির তথ্য অনুসারে, বদলির জন্য শিক্ষকদের অনলাইনে আবেদনের সময়সীমা ২০ থেকে ২৪ জানুয়ারি পর্যন্ত। এরপর ২৫ জানুয়ারি প্রধান শিক্ষকের মাধ্যমে সহকারী শিক্ষকের আবেদন যাচাই করা হবে। ২৬ থেকে ২৯ জানুয়ারির মধ্যে সহকারী উপজেলা বা থানা শিক্ষা অফিসার যাচাই সম্পন্ন করবেন এবং আগামী ৩০ জানুয়ারি থেকে ৩ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত উপজেলা বা থানা শিক্ষা অফিসারের মাধ্যমে যাচাই ও অগ্রায়ন সম্পন্ন করা হবে। এরপর ৪ থেকে ১০ ফেব্রুয়ারির মধ্যে সহকারী শিক্ষকের আবেদন যাচাই ও অনুমোদন সম্পন্ন করবেন জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার।

বদলির শর্তের বিষয়ে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, শিক্ষকরা পছন্দের ক্রমানুসারে সর্বোচ্চ ৩টি বিদ্যালয় নির্বাচন করবেন। কোনো শিক্ষকের একাধিক পছন্দ না থাকলে শুধুমাত্র এক বা দুটি বিদ্যালয়ও পছন্দ করতে পারবেন। তবে আবেদনের পর বদলির আদেশ জারি হয়ে গেলে তা বাতিল করতে পরবর্তীতে কোনো আবেদন গ্রহণ করা হবে না।

যাচাইকারী কর্মকর্তারা প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে ২০২৩ সালের ১০ অক্টোবর জারি করা সর্বশেষ ‘সমন্বিত অনলাইন বদলি নির্দেশিকা, ২০২৩’ অনুযায়ী আবেদনকারীর আবেদন ও অন্যান্য কাগজপত্র যাচাই করে অগ্রায়ণ করবেন।

যাচাইয়ের ক্ষেত্রে কর্মকর্তাদের অবশ্যই সতর্কতার সঙ্গে কাজ করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কারণ যাচাইয়ের পর কাগজপত্র পাঠিয়ে দিলে তা পুনর্বিবেচনা করার আবেদন গ্রহণ করা হবে না।

আবেদনকারীর পছন্দক্রম অনুসারেই যে বদলি হবে, সেই নিশ্চয়তা নেই বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে। এর ব্যাখ্যায় বলা হয়েছে, একাধিক আবেদনকারী যদি একই বিদ্যালয় নির্বাচন করে থাকেন, সেক্ষেত্রে সফটওয়‍্যারের মাধ্যমে নির্বাচন করা হবে। এক্ষেত্রে কোনোরকম ব্যক্তিগত হস্তক্ষেপের সুযোগ নেই।

ঢাকা/হাসান/এনএইচ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর করব ন সহক র পছন দ

এছাড়াও পড়ুন:

হিজরতের ৫টি শিক্ষা

সাহাবিদের হিজরতের ঘটনাবলি কেবল ইতিহাসের অংশ নয়, বরং তা মুমিন জীবনের জন্য পূর্ণাঙ্গ জীবনবিধান। তাদের হিজরতের ঘটনা ও ত্যাগের আদর্শ থেকে কয়েকটি মৌলিক শিক্ষা উঠে আসে:

১. হিজরত প্রথমত আল্লাহর আদেশ পালন

হিজরত কেবল কৌশলগত পরিকল্পনা ছিল না, বরং ছিল আল্লাহর পক্ষ থেকে আসা এক ইবাদতমূলক নির্দেশ। এই কারণে সাহাবিরা সবচেয়ে প্রিয় বস্তু—ঘরবাড়ি, সম্পদ, আত্মীয়স্বজন—সহজে ত্যাগ করতে পেরেছিলেন। (মুহাম্মদ সাইদ রমাদান আল-বুতি, ফিকহুস সিরাহ, পৃষ্ঠা: ১৫৬, দারুল ফিকর, দামেস্ক, ২০০৪)

২. ইমানের জন্য সর্বোচ্চ আত্মত্যাগ

হিজরত শেখায় যে একটি জাতির ভিত্তি স্থাপন এবং সত্য প্রতিষ্ঠা করার জন্য চরম মূল্য দিতে হয়। সুহাইব তাঁর সব সম্পদ, আবু সালামা তাঁর পরিবার এবং বনু জাহশ (রা.) জন্মভূমি ত্যাগ করে এই মূল্য পরিশোধ করেছিলেন। এই ত্যাগ বিনা মূল্যে অর্জিত হয়নি।

আরও পড়ুনমদিনায় হিজরত: ইসলামের ৬টি মাইলফলক০২ জুলাই ২০২৫৩. ইমানের সম্পর্ক অন্য সব সম্পর্ক থেকে ঊর্ধ্বে

ওমর (রা.) আইয়াশকে যখন তার মায়ের দোহাইয়ের ফিতনা থেকে সতর্ক করেছিলেন, তা প্রমাণ করে যে আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের প্রতি আনুগত্যের বন্ধন অন্য সব জাগতিক সম্পর্ক (গোত্র, পরিবার, রক্ত) থেকে অনেক বেশি শক্তিশালী।

৪. ঐকান্তিক প্রচেষ্টার সঙ্গে আল্লাহর ওপর ভরসা

হিজরত মোটেই বিশৃঙ্খল ছিল না। ওমর (রা.)-এর পরিকল্পনা, কাফেলাবদ্ধ হয়ে যাত্রা এবং কৌশল অবলম্বন—সবই প্রমাণ করে যে আল্লাহর ওপর নির্ভরতার পাশাপাশি মানবীয় প্রচেষ্টা ও সুচিন্তিত পরিকল্পনা গ্রহণ করাও আবশ্যক।

আরও পড়ুনমহানবী (সা.)–র হিজরত মদিনায় হলো যে কারণে২৯ জুন ২০২৫৫. আল্লাহর দয়ার বিশালতা

এই ঘটনা আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে ফিতনা ও দুর্বলতা মানুষের জীবনে আসতে পারে। কিন্তু যখন তারা মক্কায় বন্দী হয়ে নিজেদের পাপী মনে করছিলেন, তখন আল্লাহ তাআলা এই আয়াতটি নাজিল করে আশার দরজা খুলে দেন, ‘বলো, “হে আমার বান্দাগণ, যারা নিজেদের ওপর বাড়াবাড়ি করেছ (পাপ করেছ), তোমরা আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হয়ো না। নিশ্চয়ই আল্লাহ সব গুনাহ মাফ করে দেন।”’ (সুরা জুমার, আয়াত: ৫৩)

এই আয়াতটি ছিল তাঁদের জন্য এক ঐশী ক্ষমা ও নতুন সুযোগের বার্তা।

হিজরত কেবল একটি ঐতিহাসিক ঘটনা নয়; এটি একটি অক্ষয়–দর্শন—যেখানে ইমান, ধৈর্য এবং আত্মত্যাগের সমন্বয়ে একটি আদর্শ সমাজ গঠনের বীজ নিহিত ছিল। এই দর্শনই মুসলমানদের নতুন এক দিগন্তে পৌঁছে দেয়।

আরও পড়ুনআবিসিনিয়ায় নারী সাহাবিদের দ্বিতীয় হিজরত১৪ নভেম্বর ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ