ঢাকা-দিল্লির চুক্তি দেখতে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে যেতে বললেন মুখপাত্র
Published: 16th, January 2025 GMT
ঢাকা ও দিল্লির মধ্যে যেসব দ্বিপক্ষীয় চুক্তিগুলো রয়েছে তা উন্মুক্ত। সবগুলো ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে রয়েছে। সেখান থেকে দেখে নিতে বললেন বাংলাদেশের জনকূটনীতি অনুবিভাগের মহাপরিচালক ও মুখপাত্র মোহাম্মদ রফিকুল আলম। বৃহস্পতিবার বিকেলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাপ্তাহিক ব্রিফিংয়ে এ কথা বলেন তিনি।
ভারতে অবস্থানরত বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশটির নাগরিকত্ব গ্রহণ করেছেন কিনা, সে বিষয়ে কোনো তথ্য জানা নেই বাংলাদেশ সরকারের। একইসঙ্গে শেখ হাসিনা দেশটিতে কোন বিবেচনায় থাকছেন তা ভারতের বিবেচনাধীন বিষয় হিসেবে দেখছে সরকার বলে জানিয়েছেন মোহাম্মদ রফিকুল আলম।
ভারতের সঙ্গে চুক্তি পর্যালোচনা নিয়ে তিনি বলেন, ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় চুক্তি বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও সংস্থার সঙ্গে হয়েছে। কোনো মন্ত্রণালয় ও সংস্থা পর্যালোচনা অনুভব করলে, করতে পারে। ভারতের সঙ্গে যেসব চুক্তি হয়েছে, তার সব চুক্তি প্রকাশিত। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে দেওয়া আছে, এগুলো জনগনের জন্য উন্মুক্ত।
বাংলাদেশ কি চুক্তিগুলো হারিয়ে ফেলেছে, কেনো ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে গিয়ে দেখতে হবে– উত্তরে রফিকুল আলম বলেন, বিষয়টি ছিল চুক্তিগুলো কবে উন্মোচিত করা হবে। এখানে উন্মোচনের বিষয় নেই, কারণ এগুলো উন্মোচিত। বাংলাদেশ উন্মোচন করেছে কি না, তা বিবেচ্য নয়। নথিগুলো ইতোমধ্যে উন্মুক্ত।
ভারতের সঙ্গে কোনো গোপন চুক্তি আছে কিনা-জানতে চাইলে মুখপাত্র বলেন, সেটা আমার জানা নেই।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে যা আছে সেটি কি সঠিক হিসেবে ধরে নিতে হবে, কারণ সম্প্রতি সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া নিয়েও নিজেদের সঠিক বলে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছিল। উত্তরে তিনি বলেন, আমি নিজে তাদের ওয়েবসাইটে যতগুলো চুক্তি দেখেছি, সেখানে উভয় পক্ষের স্বাক্ষর রয়েছে। সেখান থেকে ধরে নিতে পারি চুক্তিগুলো সঠিক। বাংলাদেশের ওয়েবসাইটে পৃথিবীর কোনো দেশের সঙ্গেই চুক্তিগুলো আপলোড করা নেই।
দিল্লিতে বাংলাদেশের নতুন হাইকমিশনার হিসেবে মনোনীত ব্যক্তির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা এগ্রিমো চেয়েছি এবং ভারত থেকে এটার উত্তরের জন্য অপেক্ষায় রয়েছি। সাধারণত এগুলোর নির্দিষ্ট কোনো সময়সীমা নেই। তবে দুই থেকে চার মাসের মধ্যে হয়ে যায়।
জাতিসংঘের তথ্যানুসন্ধান দলকে তথ্য দেওয়া নিয়ে এক প্রশ্নের উত্তরে রফিকুল আলম বলেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ বিভিন্ন সংস্থার কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ করে ইতোমধ্যে জাতিসংঘকে দেওয়া হয়েছে।
মুখপাত্র জানান, আগামী ২১-২৪ জানুয়ারি ওয়ার্ল্ড ইকোনোমিক ফোরামের (ডাবলুইএফ) বার্ষিক সম্মেলনে যোগ দেবেন প্রধান উপদেষ্টা। এ জন্য সুইজারল্যান্ডের ডাভোস সফর করবেন তিনি। সফরে প্রধান উপদেষ্টার সফরসঙ্গী হিসেবে প্রধান উপদেষ্টার আন্তর্জাতিক বিষয় সংক্রান্ত বিশেষ দূত এবং এসডিজি বিষয়ক প্রিন্সিপাল কোওর্ডিনেটর অংশগ্রহণ করবেন।
এবারের সম্মেলনের প্রতিপাদ্য ‘শেপিং দ্যা ইন্টিলিজেন্ট এজ’ এর আলোকে আয়োজিত বিভিন্ন সেশনে বাংলাদেশ অংশগ্রহণ করবে। এছাড়াও প্রধান উপদেষ্টা সম্মেলনে অংশগ্রহণকারী বিভিন্ন সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধানসহ গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক সংস্থা এবং আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম প্রতিনিধিদের সাথে সাক্ষাত করবেন বলে আশা করা যাচ্ছে।
জুলাই বিপ্লবে আহতদের স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করতে সরকার নিজস্ব অর্থায়নে গুরুতর আহত রোগীদের বিভিন্ন দেশে উন্নত চিকিৎসার জন্য প্রেরণে একটি সমন্বিত উদ্যোগ নিয়েছে বলে জানান মুখপাত্র। তিনি বলেন, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এবং বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশ মিশনসমূহ নিরলস পরিশ্রম করে এই প্রক্রিয়ায় দ্রুত ভিসা পাচ্ছে। এ পর্যন্ত ১৩ জন আহতকে দেশের বাইরে উন্নত চিকিৎসা প্রদানের জন্য পাঠানো সম্ভব হয়েছে। এর মধ্যে ২ জন চিকিৎসা সেবা গ্রহণ করে দেশে ফেরত এসেছে। এছাড়াও ৮ জানুয়ারি থেকে ১৬ জানুয়ারি তারিখ পর্যন্ত মোট ১৯ জনের ভিসা প্রক্রিয়া করা হয়েছিল। ইতোমধ্যে ১৪ জন ভিসা পেয়েছে। এই ১৪ জনকেও উন্নত চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে দ্রুত পাঠানো সম্ভব হবে। উল্লেখ্য, মুমূর্ষু ৪ জনকে এয়ার এ্যাম্বুলেন্সে পাঠানো হয়েছে।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
সামারিক শক্তিতে মিয়ানমারের চেয়ে ২ ধাপ এগিয়ে বাংলাদেশ
চলতি বছর সামরিক শক্তির দিক থেকে মিয়ানমারের চেয়ে দুই ধাপ এগিয়েছে বাংলাদেশ। চলতি সপ্তাহে সামরিক শক্তি পর্যবেক্ষক প্রতিষ্ঠান গ্লোবাল ফায়ার পাওয়ার প্রকাশিত সূচকে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
সংস্থাটি তাদের প্রতিবেদনে জানিয়েছে, এই র্যাংকিংয়ের ক্ষেত্রে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে সংশ্লিষ্ট রাষ্ট্রের সামরিক বাজেট। সেনাবাহিনীর আকার, নৌবাহিনী এবং বিমানবাহিনীর শক্তিকেও বিবেচনা করা হয়েছে সমীক্ষায়।
গ্লোবাল ফায়ারপাওয়ারের সূচক অনুযায়ী, বিশ্বে সামরিক শক্তির ক্ষেত্রে শীর্ষে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, এরপরে পরে রয়েছে রাশিয়া, চীন, ভারত ও দক্ষিণ কোরিয়া। পরমাণু শক্তিধর হলেও পাকিস্তানের অবস্থান ১২ নম্বরে। তালিকায় বাংলাদেশ রয়েছে ৩৫তম অবস্থানে। বাংলাদেশের আগে রয়েছে উত্তর কোরিয়া ও আর্জেন্টিনা। আর বাংলাদেশের প্রতিবেশী মিয়ানমার রয়েছে ৩৭তম অবস্থানে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যা ১৬ কোটির বেশি। এর মধ্যে প্রায় ৬ কোটি ৬১ লাখ মানুষ সামরিক বাহিনীতে যুক্ত হওয়ার যোগ্য। বাংলাদেশের সামরিক বাহিনীতে মোট সেনা সংখ্যা ১ লাখ ৬৩ হাজার। বাংলাদেশ বিমানবাহিনীতে রয়েছে ১৭ হাজার ৪০০ সদস্য এবং নৌবাহিনীতে রয়েছে ২৫ হাজার ১০০ সেনা।
অন্যদিকে, মিয়ানমারের মোট জনসংখ্যা ৫ কোটি ৭৫ লাখ। এর মধ্যে প্রায় ২ কোটি ২০ লাখ মানুষ সামরিক বাহিনীতে যুক্ত হওয়ার যোগ্য। মিয়ানমারের সক্রিয় সৈন্য সংখ্যা ১ লাখ ৫০ হাজার। মিয়ানমারের রিজার্ভ সৈন্য রয়েছে ২০ হাজার। দেশটির বিমানবাহিনীতে রয়েছে ১৫ হাজার সদস্য এবং নৌবাহিনীতে রয়েছে ১৬ হাজার সেনা।
ঢাকা/শাহেদ