ভর্তি পরীক্ষায় পোষ্য কোটা পুনর্বহাল না হলে ভবিষ্যতে পরীক্ষা, পরিবহনসহ জরুরি পরিষেবা বন্ধের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। কোটা পুনর্বহালের দাবিতে পূর্ণ দিবস কর্মবিরতি পালনকালে বৃহস্পতিবার এ ঘোষণা দেন তারা। এদিন বিশ্ববিদ্যালয়ের সৈয়দ নজরুল ইসলাম প্রশাসনিক ভবনের সামনে এ কর্মসূচি শুরু হয়।

কর্মকর্তা-কর্মচারীর কর্মবিরতিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় সব কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়েছে। জরুরি পরিষেবা বিদ্যুৎ, চিকিৎসা, পানি, পরিবহন ও নিরাপত্তা প্রহরী শাখায় কর্মরতরা দায়িত্ব পালন করেছেন।

প্রশাসন ভবন, আবাসিক হল এবং বিভিন্ন দপ্তর ঘুরে দেখা যায়, অধিকাংশ অফিস কক্ষের তালা খোলা হয়নি। কিছু কক্ষের দরজা খোলা থাকলেও ভেতরে কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারীকে দেখা যায়নি। প্রশাসনিক ভবনের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ও সনদ শাখা পুরোপুরি বন্ধ ছিল। ফলে জরুরি প্রয়োজনে নম্বর ও সনদপত্র উত্তোলন করতে আসা শিক্ষার্থীরা ভোগান্তিতে পড়েছেন।

কর্মসূচিতে বক্তারা বলেন, তারা সব ধরনের অযৌক্তিক কোটার বিরুদ্ধে। জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে তারাও আন্দোলন করেছেন। ভর্তি পরীক্ষায় তাদের সন্তানরা যে সুবিধা পেতেন, সেটি কোনো কোটা নয়। এটি তাদের প্রাতিষ্ঠানিক অধিকার। এ দাবিতেই তাদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলন। অন্য সব বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রাতিষ্ঠানিক অধিকার বহাল আছে। তারাও এ সুবিধা ফেরত চান। 

দাবি আদায় না হলে ভবিষ্যতে পরীক্ষা, পরিবহনসহ জরুরি পরিষেবা বন্ধ করে অসহযোগ আন্দোলনে যাওয়ার ঘোষণা দেন তারা। অফিসার সমিতির দপ্তর সম্পাদক মো.

রিয়াজউদ্দিন গণমাধ্যমকে বলেন, পূর্ণ দিবস কর্মবিরতির মাধ্যমে চলতি সপ্তাহের কর্মসূচি শেষ হবে। আগামী রোববার কর্মকর্তা-কর্মচারী নেতারা আলোচনায় বসে পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করবেন।

গত ১ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় শিক্ষক ও কর্মকর্তাদের সন্তানদের জন্য বরাদ্দ পোষ্য কোটা পুরোপুরি বাতিল করে প্রশাসন। শুধু সহায়ক ও সাধারণ কর্মচারীদের সন্তানদের জন্য ১ শতাংশ কোটা রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এতে অসন্তোষ প্রকাশ করেন শিক্ষার্থীরা। পোষ্য কোটা বাতিলের দাবিতে পরদিন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে দেন তারা। 

এতে অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই উপ-উপাচার্য, প্রক্টর, জনসংযোগ দপ্তরের প্রশাসকসহ দুই শতাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারী। প্রায় ১২ ঘণ্টা পর তারা অবরুদ্ধ অবস্থা থেকে মুক্তি পান। আন্দোলনের মুখে রাতেই পোষ্য কোটা পুরোপুরি বাতিল ঘোষণা করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সালেহ হাসান নকীব।

এর প্রতিবাদে এবং পোষ্য কোটা পুনর্বহালের দাবিতে গত ৬ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যারিস রোডে মানববন্ধন করেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। পরদিন তারা দুই ঘণ্টা অবস্থান ধর্মঘট পালন করেন। গত ৮ জানুয়ারি এবং গতকাল বৃহস্পতিবার পূর্ণ দিবস কর্মবিরতি পালন করেছেন তারা।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: পর ক ষ পর ষ ব

এছাড়াও পড়ুন:

সরকার বেশি দামে ধান কেনায় বাজারে দাম বাড়তে পারে: ভূমি উপদেষ্টা

খাদ্য ও ভূমি উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার বলেছেন, অন্য বছরের চেয়ে এবার কৃষকের কাছ থেকে বেশি দামে ধান কিনছে সরকার। অতীতে কেউ এই দাম দেয়নি। কৃষকরা এবার ধানের সঠিক মূল্য পেয়েছেন। এ জন্য বাজারে ধান-চালের দাম কিছুটা বাড়তে পারে।

আজ বৃহস্পতিবার সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জ উপজেলা খাদ্যগুদামে বোরো ধান সংগ্রহ কার্যক্রম উদ্বোধন অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। 

সরকারের কাছে ধান বিক্রিতে সিন্ডিকেট নিয়ে খাদ্য উপদেষ্টা বলেন, গত আমন মৌসুমে ধান কেনায় কোনো সিন্ডিকেট কাজ করতে পারেনি। এবারও পারবে না। এমন হলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্য বন্ধ করতে ধান বিক্রির টাকা সরাসরি কৃষকের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে দেওয়া হবে। গুদামে ধান দিতে এসে কোনো কৃষক হয়রানির শিকার হলেও দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ সময় অন্তর্বর্তী সরকার কতদিন দায়িত্বে থাকবে– জানতে চাইলে উপদেষ্টা বলেন, সেটা প্রধান উপদেষ্টা জানেন। এ বিষয়ে আমার বলার কিছু নেই। আমাকে খাদ্য ও ভূমি মন্ত্রণালয়ের বিষয়ে প্রশ্ন করতে পারেন।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ ইলিয়াস মিয়া, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তাপস রঞ্জন ঘোষ, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মোস্তফা ইকবাল আজাদ, জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক হুমায়ুন কবির, শান্তিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুকান্ত সাহা।

চলতি মৌসুমে সুনামগঞ্জের ১২ উপজেলা থেকে সরকার ১৪ হাজার ৬৪৫ টন ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে। আর সিদ্ধ চাল সংগ্রহ করা হবে ১৩ হাজার ৮১৬ টন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ