এক হাজার ১৯৭ কোটি টাকার তেল-ডাল-চিনি কিনছে সরকার
Published: 16th, January 2025 GMT
টিসিবির ফ্যামিলি কার্ডধারী প্রায় এক কোটি নিম্ন আয়ের পরিবারের কাছে ভর্তুকি মূল্যে বিক্রির লক্ষে ১০ হাজার টন মসুর ডাল, ৫ কোটি ৫০ লাখ লিটার ভোজ্য তেল এবং ১৫ হাজার টন চিনি কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এতে ব্যয় হবে ১ হাজার ১৯৭ কোটি ৫৪ লাখ টাকা।
এই মসুর ডাল, ভোজ্য তেল এবং চিনি কেনার অনুমোদন দিয়েছে সরকারি ক্রয়-সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি। বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) সচিবালয়ে অর্থ উপদেষ্টা ড.
সভা সূত্রে জানা গেছে, পৃথক তিন স্থানীয় দরপত্রের মাধ্যমে ৫ কোটি ৫০ লাখ লিটার ভোজ্য তেল কিনতে সরকারের ব্যয় হবে ৯২৫ কোটি ৪৩ লাখ টাকা। এর মধ্যে সোনারগাঁও সিডস ক্রাশিং মিলস লিমিটেড থেকে প্রতি লিটার ১৭১ টাকা ৯৫ পয়সা দরে ২ কোটি ২০ লাখ লিটার সয়াবিন তেল কেনা হবে। এতে মোট ব্যয় হবে ৩৭৮ কোটি ২৯ লাখ টাকা।
এ ছাড়া, সুপার অয়েল রিফাইনারি লিমিটেড থেকে প্রতি লিটার ১৭১ টাকা ৫০ পয়সা দরে এক কোটি ১০ লাখ লিটার সয়াবিন তেল এবং শবনম ভেজিটেবল অয়েল লিমিটেড থেকে প্রতি লিটার ১৬২ টাকা ৯৫ পয়সা করে ২ কোটি ২০ লাখ লিটার পাম অয়েল কেনা হবে। অর্থাৎ, সুপার অয়েল রিফাইনারি লিমিটেড থেকে ১৮৮ কোটি ৬৫ লাখ টাকার সয়াবিন তেল এবং শবনম ভেজিটেবল অয়েল থেকে ৩৫৮ কোটি ৪৯ লাখ টাকার পাম অয়েল কেনা হবে।
এ ছাড়া, দুটি স্থানীয় দরপত্রের মাধ্যমে ১৫ হাজার টন চিনি কিনতে ব্যয় হবে ১৭৪ কোটি ২০ লাখ টাকা। এর মধ্যে মেঘনা সুগার রিফাইনারি লিমিটেড থেকে প্রতি কেজি ১১৫ টাকা ২৫ পয়সা দরে ১০ হাজার টন চিনি কেনা হবে। এতে মোট ব্যয় হবে ১১৫ কোটি ২৫ লাখ টাকা।
বাকি ৫ হাজার টন চিনি কেনা হবে সিটি সুগার ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড থেকে। এই প্রতিষ্ঠানটি প্রতি কেজি চিনি ১১৭ টাকা ৯০ পয়সা দরে সরবরাহ করবে। ফলে এই ৫ হাজার টন চিনির জন্য ব্যয় হবে ৫৮ কোটি ৯৫ লাখ টাকা।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) ২০২৪-২৫ অর্থবছরে বার্ষিক ক্রয় পরিকল্পনায় এক লাখ ৪৪ হাজার টন চিনি কেনার লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। এ পর্যন্ত ২০ হাজার টন চিনি কেনার চুক্তি হয়েছে। এখন আরো ১৫ হাজার টন চিনি কেনার অনুমোদন মিললো।
জানা গেছে, স্থানীয়ভাবে ১০ হাজার টন চিনি কেনার জন্য পাবলিক প্রকিউরমেন্ট বিধিমালা অনুসরণ করে দরপত্র আহ্বান করা হলে একটি দরপত্র পাওয়া যায়। এতে মেঘনা সুগার রিফাইনারি লিমিটেড প্রতি কেজি চিনির দর ১১৫ টাকা ২৫ পয়সা উল্লেখ করে। উপদেষ্টা পরিষদ এই দামে চিনি কেনার অনুমেনদ দিয়েছে। ফলে ১০ হাজার টন চিনি কিনতে মোট ব্যয় হবে ১১৫ কোটি ২৫ লাখ টাকা।
৫ হাজার টন চিনি কেনার জন্য স্থানীয়ভাবে আর একটি উন্মুক্ত দরপত্র আহ্বান করা হলে সেখানেও একটি দরপত্র পাওয়া যায়। সিটি সুগার ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড দরপত্রে প্রতি কেজি চিনির দাম ১১৭ টাকা ৯০ পয়সা উল্লেখ করে। উপদেষ্টা পরিষদ এই দামে চিনি কেনার অনুমোদন দিয়েছে। ফলে এই ৫ হাজার টন চিনি কিনতে মোট ব্যয় হবে ৫৮ কোটি ৯৫ লাখ টাকা।
এদিকে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরে টিসিবির বার্ষিক ক্রয় পরিকল্পনায় ২ লাখ ৮৮ হাজার টন মসুর ডাল কেনার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এরই মধ্যে ৯২ হাজার ৯৫০ টন মসুর ডাল কেনার চুক্তি করা হয়েছে।
নতুন করে আরো ১০ হাজার টন মসুর ডাল স্থানীয়ভাবে উন্মুক্ত দরপত্র পদ্ধতিতে কেনার পরিকল্পনা নেওয়া হয়। তার আলোকে গত ৯ ডিসেম্বর উন্মুক্ত দরপত্র আহ্বান করা হয়। দরপত্র দাখিলের শেষ সময় ছিল ২৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত এবং বৈধতার মেয়াদ ধরা হয় চলতি বছরের ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত।
নির্ধারিত সময়ের মধ্যে শবনাম ভেজিটেবল অয়েল, নাবিল নাবা ফুডস লিমিটেড এবং ইজি জেনারেল ট্রেডিং দরপত্র জমা দেয়। এর মধ্যে ইজি জেনারেল ট্রেডিং ৫ হাজার টন মসুর ডালের জন্য দরপত্র জাম দেয়। প্রতিষ্ঠানটি প্রতি কেজি মসুর ডালের দাম ধরে ৯৯ টাকা ৪৮ পয়সা।
অপর দুই প্রতিষ্ঠানের মধ্যে নাবিল নাবা ফুডস প্রডাক্টস ১০ হাজার টনের জন্য দরপত্র জমা দেয়। এই প্রতিষ্ঠানটি প্রতি কেজি মসুর ডালের দাম প্রস্তাব করে ৯৮ টাকা ৭৫ পয়সা। এ ছাড়া শবনাম ভেজিটেবল অয়েল ১০ হাজার টন মসুর ডালের জন্য দরপত্র জমা দেয়। প্রতিষ্ঠানটি প্রতি কেজি মসুর ডালের দাম ৯৭ টাকা ৯১ পয়সা করে প্রস্তাব দেয়।
দরপত্র মূল্যায়ন কমিটির সভা ২৬ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হয়। মূল্যায়ন কমিটি জমা পড়া ৩টি দরপত্র পর্যালোচনা করে এবং তিনটি প্রস্তাবই রেসপনসিভ হিসেবে বিবেচিত হয়। রেসপনসিভ সর্বনিম্ন দরদাতা হিসেবে শবনাম ভেজিটেল অয়েল ইন্ডাস্ট্রিজ থেকে ৫০ কেজির বস্তায় ১০ হাজার টন মসুর ডাল কেনার সুপরিশ করেছে দরপত্র মূল্যায়ন কমিটি। এখন সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি প্রতি কেজি ৯৭ টাকা ৯১ পয়সা করে মোট ৯৭ কোটি ৯১ লাখ টাকা দিয়ে এই মসুর ডাল কেনার অনুমোদন দিলো।
ঢাকা/হাসনাত/এনএইচ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ৫ হ জ র টন চ ন দরপত র প দরপত র জ ন র জন য উপদ ষ ট সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
শাকিবের জন্মদিনে কী বার্তা দিলেন অপু-বুবলী?
দীর্ঘদিন ধরে ঢাকাই সিনেমা রাজ করছেন শাকিব খান। তার প্রকৃত নাম মাসুদ রানা। ভক্ত-অনুরাগীরা তাকে কখনো ‘কিং খান’, কখনো ‘ঢালিউড কিং’, কখনো ‘নাম্বার ওয়ান শাকিব খান’ বলে ডাকেন। ১৯৭৯ সালের ২৮ মার্চ গোপালগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। তবে তার শৈশব কেটেছে নারায়ণগঞ্জে। আজ ৪৬ পূর্ণ করে সাতচল্লিশে পা দিতে যাচ্ছেন এই তারকা।
শাকিব খানের জন্মদিনে ভক্তদের পাশাপাশি সহকর্মীরাও তাকে শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন। শুভেচ্ছা জানিয়েছেন তার প্রাক্তন দুই স্ত্রী অপু বিশ্বাস ও শবনম বুবলী। গতকাল দিবাগত রাতে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুকে পেজে একটি ছবি শেয়ার করেন অপু বিশ্বাস। মূলত, শাকিব-অপু অভিনীত সিনেমার দৃশ্য এটি। এ ছবির ক্যাপশনে অপু বিশ্বাস লেখেন— “শুভ জন্মদিন জীবন্ত মেগাস্টার শাকিব খান।” হ্যাশ ট্যাগ দিয়ে লেখেন, “আমার শাহরুখ খান।”
শবনম বুবলীও গতকাল দিবাগত মধ্যরাতে শাকিব খানকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানান। শাকিব খানের একটি ছবি শেয়ার করে এ নায়িকা লেখেন, “শুভ জন্মদিন শাকিব খান। বাংলা ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির মহারাজা।”
আরো পড়ুন:
শাকিবের সঙ্গে সম্পর্ক ভালো, এটা নষ্ট হতে দেবেন না: মারুফ
সাবিলা নূরকে নিয়ে শাকিবের ‘তাণ্ডব’
শাকিবের জন্মদিনে অপু-বুবলীর শুভেচ্ছা বার্তা নিয়ে নেটিজেনদের একটি অংশ সমালোচনা করছেন। কেউ কেউ দুই প্রাক্তনকে আক্রমণ করেও মন্তব্য করছেন।
১৯৯৯ সালে সোহানুর রহমান সোহান পরিচালিত ‘অনন্ত ভালোবাসা’ চলচ্চিত্র দিয়ে শাকিব খানের যাত্রা শুরু। সিনেমাটি বাণিজ্যিকভাবে খুব একটা সফল না হলেও নায়ক হিসেবে শাকিব খান চলচ্চিত্রসংশ্লিষ্টদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। অবশ্য এই বছরই আফতাব খান পরিচালিত তার প্রথম চুক্তিবদ্ধ হওয়া ‘সবাই তো সুখী হতে চায়’ চলচ্চিত্রের মাধ্যমে তিনি প্রথম ক্যামেরার সামনে দাঁড়িয়ে ছিলেন।
যাত্রা শুরুর পর থেকে আর পেছনে ফিরে তাকাননি শাকিব। তার সময়ের বহু নামকরা নায়ক এখন আর পর্দায় নেই। অথচ শাকিব এখনো হিরো, আগের চেয়ে যেন বেশি তারুণ্যে ভরপুর নায়ক। এই নায়কের জনপ্রিয়তা শুধু দেশেই সীমাবদ্ধ নয়, বিদেশেও ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে তার লাখ লাখ ভক্ত। কলকাতায়ও তৈরি হয়েছে তার পরিচিতি।
করোনার দুঃসময় পেরিয়ে ২০২৩ সালে ‘প্রিয়তমা’ সিনেমা দিয়ে শাকিব জানিয়ে দেন, এত বছর পরও ফুরিয়ে যাননি তিনি। বাণিজ্যিক সিনেমার বিবেচনায় শাকিব একজনই। তার সময়ে তার সমকক্ষ এখনো কেউ হতে পারেননি। তারপর শাকিব উপহার দেন ‘রাজকুমার’, ‘তুফান’ সিনেমা। এবারের ঈদুল ফিতরে আসছে তার আলোচিত সিনেমা ‘বরবাদ’। এতে দ্বিতীয়বারের মতো তার সঙ্গে জুটি বেঁধেছেন ওপার বাংলার ইধিকা পাল।
শাকিব খান অভিনীত উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্র হলো— ‘মাই নেম ইজ সুলতান’, ‘স্বপ্নের বাসর’, ‘মুখোশধারী’, ‘আমার প্রাণের স্বামী’, ‘ও প্রিয়া তুমি কোথায়’, ‘প্রাণের মানুষ’, ‘সাহসী মানুষ চাই’, ‘জানের জান’, ‘অনন্ত ভালোবাসা’, ‘ঠেকাও মাস্তান’, ‘বস্তির রানী সুরিয়া’, ‘খুনি শিকদার’, ‘সুভা’, ‘বাঁধা’, ‘পিতার আসন’, ‘ডাক্তার বাড়ি’, ‘তুই যদি আমার হইতি রে’, ‘১ টাকার বউ’, ‘প্রিয়া আমার প্রিয়া’, ‘ডেয়ারিং লাভার’, ‘দুই পৃথিবী’, ‘সিটি টেরর’, ‘আমার স্বপ্ন তুমি’ প্রভৃতি।
কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ শাকিব খান অসংখ্য সম্মাননা পেয়েছেন। অভিনয়ের স্বীকৃতি হিসেবে ২০১২ সালে ‘ভালোবাসলেই ঘর বাঁধা যায় না’, ২০১৪ সালে ‘খোদার পরে মা’, ২০১৬ সালে ‘আরও ভালোবাসব তোমায়’, ২০১৭ সালে ‘সত্তা’ সিনেমার জন্য শ্রেষ্ঠ অভিনেতা হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন শাকিব খান।
ঢাকা/শান্ত