ঢাকায় এনসিটিবি কার্যালয়ের সামনে গতকাল আদিবাসী শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে আজ সংক্ষুব্ধ ছাত্র জনতার বিক্ষোভ মিছিলে লাঠিচার্জ করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২১-২২ সেশনের আইন বিভাগের শিক্ষার্থী তাসমিয়া নেবুলা পুলিশের করা লাঠিচার্জে আহত হন। পরে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে সমকালের সঙ্গে কথা বলেন তিনি।

পুলিশের লাঠিচার্জে আহত হওয়া ঘটনা বর্ণনা করে নেবুলা বলেন, আমাদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে পুলিশ প্রথমে জলকামান নিক্ষেপ করে। আমরা যখন সেখান থেকে দৌড়ে পালিয়ে যাই, তখন টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে। একজন সাউন্ড গ্রেনেডের কারণে অলরেডি আহত হয়েছে। কিন্তু পুলিশ সেই অবস্থায়ও আমাদেরকে লাঠিচার্জ করেছে এবং আহত করেছে।

তিনি বলেন, আমি চোখমুখে অন্ধকার দেখছিলাম। ঠিক সেই মুহূর্তে আমার একদম পাশে সাউন্ডগ্রেনেড পড়ে। মনে হচ্ছিল আমি জ্ঞান হারিয়ে ফেলব। হাঁটতে পারছিলাম না। দৌড়াতেও পারছিলাম না। আমার বন্ধুরা পাশে দাঁড়ায়। তখনও পুলিশ লাঠিচার্জ করে। সেখান থেকে হাসপাতালে আসি। এমন পরিস্থিতিতে চব্বিশের জুলাই আর আজকের দিনের মধ্যে কোনো পার্থক্য আছে কি, প্রশ্ন রাখেন নেবুলা।

ঢাবির এই শিক্ষার্থী আরও বলেন, আসলেই কি আমরা স্বাধীনতা অর্জন করতে পেরেছি? কোনো পরিবর্তন কি এসেছে? আজকে আমাদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে যেভাবে হামলা করা হলো; জুলাই আর এটার মধ্যে কোনো পার্থক্য আছে কি?

নেবুলা বলেন, আমি যখন জ্ঞান হারিয়ে ফেলি আমাকে নিয়ে দুইজন হাসপাতালে যাচ্ছিল। সেই অবস্থায় পুলিশ আমাদের ওপর লাঠিচার্জ করে। তখন আমরা বারবার বলছিলাম একজন অলরেডি আহত হয়েছেন। তারপরও পুলিশ লাঠিচার্জ করতে ছাড়েনি।

প্রসঙ্গত, গতকাল বুধবার ‘সংক্ষুব্ধ আদিবাসী ছাত্র-জনতার’ ব্যানারে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর একদল লোক পাঠ্যবইয়ে গ্রাফিতিটি পুনর্বহালের দাবিতে এনসিটিবির সামনে কর্মসূচি পালন করতে যান। একই সময়ে পাঠ্যপুস্তকে ‘আদিবাসী’ শব্দ প্রবেশ এবং জুলাই গণ-অভ্যুত্থানবিরোধী অখণ্ড ভারতের কল্পিত গ্রাফিতি সংযোজনের সঙ্গে জড়িতদের শাস্তিসহ পাঁচ দফা দাবিতে ‘স্টুডেন্ট ফর সভরেন্টি’ নামে একটি সংগঠন বুধবার সকালে এনসিটিবি ভবন ঘেরাও এর কর্মসূচি দেয়। সকাল থেকেই ‘স্টুডেন্ট ফর সভরেন্টি’র ব্যানারে একদল লোক এনসিটিবির সামনে অবস্থান নিয়ে ছিলেন। দুপুর পৌনে ১২টার দিকে সেখানে যান ‘সংক্ষুব্ধ আদিবাসী ছাত্র-জনতা’র ব্যানারধারীরা।

‘সংক্ষুব্ধ আদিবাসী ছাত্র-জনতা’র ব্যানারধারীরা এনসিটিবির সামনে গেলে দুই পক্ষের মধ্যে হাতাহাতি হয়। পুলিশ গিয়ে দুই পক্ষকে সরিয়ে দিয়ে মাঝে অবস্থান নেয়। তখন দুই পাশ থেকে দুই পক্ষ পরস্পরবিরোধী স্লোগান দিতে থাকে। দুপুর ১টার দিকে কিছু লোক সংক্ষুব্ধ আদিবাসী ছাত্র-জনতার ব্যানারে আসা দলটির ওপর হামলা চালায়। এতে সাংবাদিক ও নারীসহ বেশ কয়েকজন আহত হন। তারই প্রতিবাদে আজকের এই কর্মসূচি ছিল।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ল ঠ চ র জ কর ছ ত র জনত এনস ট ব অবস থ

এছাড়াও পড়ুন:

ইউক্রেনে জেলেনস্কির বিকল্প নেতা খুঁজছে যুক্তরাষ্ট্র!

ইউক্রেনে শান্তিচুক্তির জন্য দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির পদত্যাগ করা লাগতে পারে বলে জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইক ওয়ালৎস। তিনি বলেছেন, ‘ইউক্রেনের একজন নেতা প্রয়োজন, তিনি আমাদের সঙ্গে কাজ করতে পারবেন। তিনি শেষ পর্যন্ত রাশিয়ার সঙ্গে কাজ করতে পারবেন এবং এই যুদ্ধ থামাতে পারবেন।’ খবর- সিএনএন

গণমাধ্যমের সামনেই যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির নজিরবিহীন বাগবিতণ্ডার পর এ কথা বললেন তিনি। বাগবিতণ্ডার এ ঘটনাটি নিয়ে নানা আলোচনা চলছে বিশ্বজুড়ে। ওই ঘটনার পর ইউক্রেনের খনিজ সম্পদ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যে ঐতিহাসিক চুক্তি হওয়ার কথা ছিল, সেটিও বাতিল হয়ে যায়। আর এর পরই ইউক্রেনের ভবিষ্যৎ কোন পথে, তা নিয়ে শুরু হয় আলোচনা।

এই প্রকাশ্য দ্বন্দ্ব ন্যাটোর ইউরোপীয় সদস্যদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বড় সংকটের ইঙ্গিত দিচ্ছে বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা। শুক্রবারের ওই ঘটনায় সাবেক ডেমোক্র্যাট প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের গড়া ওয়াশিংটন-কিয়েভ সম্পর্ক ভেঙে পড়েছে। এই প্রকাশ্য দ্বন্দ্ব ন্যাটোর ইউরোপীয় সদস্যদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বড় সংকটের ইঙ্গিত দিচ্ছে। 

যদিও ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের বিষয়ে আবারও এক টেবিলে বসার ইঙ্গিত দিয়েছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও। তিনি বলেছেন, ইউক্রেন ও রাশিয়া-দুই পক্ষই আলোচনায় না বসলে যুদ্ধ থামবে না। হোয়াইট হাউসে শুক্রবার ট্রাম্প-জেলেনস্কি বিতণ্ডার পর থেকে ইউক্রেনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের আর কথা হয়নি। যুদ্ধ থামানোর জন্য রাশিয়াকে আলোচনার টেবিলে আনতে হবে। তবে তাদের প্রতি বৈরী মনোভাব রাখলে, মস্কোকে আলোচনায় যুক্ত করা সম্ভব হবে না। কোনো চুক্তি করার ক্ষেত্রে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এই মনোভাবই দেখিয়ে আসছেন।

তিনি বলেন, ‘আমি আশা করি, সবকিছু আবার শুরু হতে পারে। আশা করি, তিনি (জেলেনস্কি) এটা বুঝতে পারবেন যে আমরা আসলে আরও হাজার হাজার মানুষের মৃত্যুর আগে, তাঁর দেশকে সাহায্যের চেষ্টা করছি।’
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ