ঘোষণাপত্রকে ‘ভূতাপেক্ষিক’ দাবি করে বিপ্লবী পরিষদের বিরোধিতা
Published: 16th, January 2025 GMT
জুলাই বিপ্লবের ‘ভূতাপেক্ষিক’ ঘোষণাপত্র জারির উদ্যোগের বিরোধিতা করে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহম্মদ ইউনূসকে বিপ্লবী সরকার গঠন করে গণপরিষদ নির্বাচন দেওয়ার দাবি জানিয়েছে জাতীয় বিপ্লবী পরিষদ।
বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) জাতীয় বিপ্লবী পরিষদের সহকারী সদস্য সচিব গালিব ইহসান স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এ আহ্বান জানানো হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, জুলাই বিপ্লবের বিষয়ে জাতীয় নাগরিক কমিটি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন সংশ্লিষ্ট নেতারা জুলাইয়ের উত্তাল দিনগুলো থেকেই সীমাহীন বিভ্রান্তি ও ভাববাদী প্রবণতায় আক্রান্ত ছিলেন। এ কারণেই তারা ৩ ও ৫ আগস্ট বারবার তাগিদ দেওয়ার পরেও জাতীয় বিপ্লবের বিস্তারিত ইশতেহার ঘোষণা করেনি।
বরং বিপ্লব সংঘটিত হওয়ার পর তাদের ব্যবহার করে বিপ্লববিরোধীরা বিপ্লবী সরকারের বদলে উপদেষ্টা সরকার গঠন করতে সক্ষম হয়েছে। এর মাধ্যমে নোবেল বিজয়ী ড.
বিবৃতিতে আরো বলা হয়েছে, বিপ্লবের প্রায় ৬ মাসের মাথায় যখন স্পষ্ট হয়ে গেছে, দেশে কোন অর্থবহ সংস্কার, জুলাই গণহত্যার বিচার ও ফ্যাসিবাদ নিষিদ্ধ হচ্ছে না, তখন জনগণকে বিভ্রান্ত করতে জুলাই বিপ্লবের ‘ভূতাপেক্ষিক’ ঘোষণাপত্র জারির ইস্যু সামনে আনা হয়েছে। নাগরিক কমিটি ও বৈষম্যবিরোধীর সংশ্লিষ্ট নেতারা জানে, ৬ মাস ধরে উপদেষ্টা সরকারের নামে প্রতিবিপ্লবী তৎপরতা চলায় জুলাই বিপ্লব সমাজ ও রাষ্ট্র থেকে ধুয়ে মুছে গেছে। সারা দেশে চাঁদাবাজি, লুটপাট, হানাহানি চলছে।
এ অবস্থায় গণআন্দোলন গড়ে তুলে বিপ্লবী সরকার গঠন করতে হবে অথবা বড় বড় রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে আত্মসমর্পণ করতে হবে। কিন্তু জাতীয় নাগরিক কমিটি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন নতুন করে গণআন্দোলন না করেই আত্মসমর্পণ এড়ানোর বৃথা চেষ্টা করছে। এ ক্ষেত্রে চাতুর্য করে সরকারের সাংবিধানিক বৈধতার বিতর্ককে ব্যবহার করে বলছে, জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্র জারি করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
বিপ্লবের ‘ভূতাপেক্ষিক’ ঘোষণাপত্র জারির তৎপরতা বাদ দিয়ে ভুলপথে রাষ্ট্র পরিচালিত হওয়ায় দায়ভার স্বীকার করে জনগণের কাছে বিপ্লবী রূপরেখা পেশ করতে হবে। এছাড়া জাতীয় নাগরিক কমিটি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে গণমুখী রাজনীতি করার আহ্বান জানানো হয়েছে বিবৃতিতে।
গণঅভ্যুত্থানের পাঁচ মাস পেরিয়ে যাওয়ায় জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্র জারির উদ্যোগের বিরোধিতা করেছে জাতীয় বিপ্লবী পরিষদ। দলটি মনে করে এর মাধ্যমে দেশের রাজনৈতিক সঙ্কট কাটবে না। বরং ঘোষণাপত্র জারির কারণে বিদ্যমান সংবিধান পরিত্যক্ত হয়ে যাওয়ার পর এর অধীনে গঠিত অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় বহাল থাকলে সঙ্কট আরও ঘনীভূত হবে।
ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
ভারতের লোকসভায় ওয়াকফ বিল পাশে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির নিন্দা
ভারতের লোকসভায় বিতর্কিত ওয়াকফ বিল পাশ করার সিদ্ধান্তে নিন্দা ও ক্ষোভ জানিয়েছে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি। মুসলমানবিদ্বেষী ও বিভক্তি-বিভাজন সৃষ্টিকারী এসব অশুভ তৎপরতা থেকে সরে আসতে বিজেপি সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে দলটি।
শনিবার বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক এক বিবৃতিতে এই ক্ষোভ জানান।
তিনি বলেন, বিজেপি সরকারের এই মুসলিমবিদ্বেষী তৎপরতায় ভারতের মুসলমান জনগোষ্ঠী আরও নিরাপত্তাহীন হয়ে পড়বে। ভারতের মুসলমান জনগোষ্ঠীকে আরও ক্ষমতাহীন ও বিপদগ্রস্ত করতেই যে লোকসভায় এই বিল পাশ করানো হয়েছে তা স্পষ্ট। ভারতের বিরোধী দলগুলো ও মুসলমান জনগোষ্ঠীর প্রবল বিরোধিতার মুখে পাশ হওয়া এই বিলের মাধ্যমে জমি-জিরাত সংক্রান্ত মুসলমানদের শত শত বছর ধরে চলে আসা স্থাবর সম্পত্তির ওপর গুরুতর আঘাত।
তিনি বলেন, এই বিল একদিকে ভারতের সংবিধান বিরোধী, আর অন্যদিকে মুসলমান জনগোষ্ঠীর ধর্মাচরণের পরিপন্থী। এই বিল ভারতের যুক্তরাষ্ট্রীয় বা ফেডারেল কাঠামোর ওপরও বড় আঘাত। এই বিলের মধ্য দিয়ে রাজ্যের অধিকার খর্ব করা হলো। এই বিলের মাধ্যমে ওয়াকফ বোর্ডে অমুসলিমেরাও সদস্য হতে পারবেন, এমনকি তারা বোর্ডের প্রধান নির্বাহীও হতে পারবেন। এই বিলের মাধ্যমে ওয়াকফ সম্পত্তি ব্যবহারের ভিত্তিতে সত্ত্বাধিকারী হওয়ার বিধানও বাস্তবে বাতিল হয়ে যাবে।
সাইফুল হক বলেন, ওয়াকফ বিল হচ্ছে বিজেপি ও নরেন্দ্র মোদির সরকার কর্তৃক ভারতের মুসলমানদেরকে নিঃস্ব করার আগ্রাসী তৎপরতারই অংশ।