ঝিনাইদহে চিনি খেতে বাধা দেওয়ায় মারামারি, আটক ২
Published: 16th, January 2025 GMT
চিনি খেতে নিষেধ করায় মারামারিতে আবদার হোসেন নামে এক শ্রমিক আহত হয়েছেন। তাকে গুরুতর অবস্থায় যশোর হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়েছে। বুধবার দুপুরে ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ মোবারকগঞ্জ চিনিকলে এ ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় রাতেই আহত শ্রমিকের ছোটভাই আফজাল হোসেন চারজনের নামে থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন। পরে দুই জনকে আটক করেছে পুলিশ। আটককৃতরা হলো- উপজেলার পুকুরিয়া গ্রামের নাসির উদ্দিনের ছেলে আকাশ ও ইউনুস আলীর ছেলে রকি ইসলাম।
মামলার এজাহার ও প্রত্যক্ষদর্শী শ্রমিকরা জানান, ওইদিন মিলে আখ নিয়ে আসা কয়েকজন ট্রলি ড্রাইভার কারখানার ভেতরে প্রবেশ করেন। এ সময় তারা মিলের ওজনকৃত চিনির বস্তা থেকে চিনি খেতে গেলে শ্রমিকরা নিষেধ করেন। এ নিয়েই দুই পক্ষের মধ্যে বাকবিতণ্ডার একপর্যায়ে হাতাহাতি শুরু হয়। এরপর ট্রলি ড্রাইভাররা বাইরে বেরিয়ে এসে সংঘবদ্ধ হয়ে লোহার রড ও লাঠিসোটা নিয়ে পুনরায় কারখানাতে গিয়ে শ্রমিকদের ওপর হামলা চালিয়ে একজনকে গুরুতর জখম করে।
এ সময় সেখানে থাকা অন্যান্য শ্রমিকদের প্রতিরোধে এগিয়ে আসলে পালিয়ে যাওয়ার সময় আকাশ ও রকি নামে দুইজন ট্রলি ড্রাইভারকে ধরে ফেলে। তাদের টাইম অফিসে আটকে রাখা হয়। এ হামলায় গুরুতর আহত কারখানার বোয়িং হাউজের ফোরম্যান আবদার হোসেনকে প্রথমে কালীগঞ্জ ও পরে যশোর হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়।
এ ঘটনার কিছু সময় পর মিল প্রশাসন বিষয়টি কালীগঞ্জ থানা পুলিশে অবহিত করলে পুলিশ মিলে এসে ওই দু’জনকে আটক করে থানাতে নিয়ে যায়। আটক ওই দু’জনসহ চারজনের বিরুদ্ধে রাতেই থানাতে একটি এজাহার দায়ের হয়েছে।
মোবারকগঞ্জ চিনিকলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাইফুল ইসলাম মারামারি ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, আহত শ্রমিককে সু-চিকিৎসার ব্যবস্থা ও দোষীদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিয়েছেন।
কালীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শহিদুল ইসলাম হাওলাদার বলেন, মারামারির খবর শুনে তিনি পুলিশ ফোর্স নিয়ে তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করেন। ঘটনায় জড়িত দু’জনকে আটক করেছেন। এ ঘটনায় ৪ জনের নামে থানায় একটি অভিযোগ দিয়েছেন বলে জানান তিনি।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
গাঁজা সেবন করে ধর্ষণের পরিকল্পনা: পুলিশ
প্রবাসী বাবার খালার (দাদি) বাড়ি পাশের গ্রামে হওয়ায় প্রায়ই সেখানে যাওয়া-আসা করতো মেয়েটি। দাদির বাড়িতে মাঝেমধ্যে রাতেও থাকতো। পহেলা বৈশাখের দিন বিকেলেও দাদির বাড়িতে সেমাই খাওয়ার কথা বলে বের হয়। পরদিন সকালে মেয়েকে আনতে যান মা। কিন্তু তাকে আর পায়নি। দাদির ভাষ্য, আগের দিনই সে কিছুক্ষণ থেকে চলে গেছে। এরপরই উদ্বিগ্ন হয়ে মাসহ স্বজনরা খোঁজাখুঁজি শুরু করেন শিশুটিকে। একপর্যায়ে খোঁজ মেলে শিশুটির। কিন্তু ততক্ষণে তাঁর শরীরে প্রাণ নেই। এলাকার একটি ভুট্টা ক্ষেতে মুখ ঝলসানো অবস্থায় তার মরদেহ পাওয়া যায়।
পুলিশ তদন্তে বেরিয়ে এসেছে, পহেলা বৈশাখের দিন দাদির বাড়ি থেকে ফেরার পথে তাকে ধরে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করে চার কিশোরসহ পাঁচজন। পরে শ্বাসরোধ করে ঘাড় মটকে হত্যা নিশ্চিতের পর মুখে এসিড নিক্ষেপ করে মরদেহ ফেলে চলে যায়। এরপর বাংলা নববর্ষ উদযাপনে মেতে ওঠে তারা।
এ ঘটনায় গ্রেপ্তার পাঁচজন পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে জানায়, সোহেলসহ চারজন পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে আনন্দ-ফুর্তি করবে বলে পরিকল্পনা করেছিল। নিজেরা চাঁদা তুলে গাঁজা কিনে সেবন করে।
শিশুটির বাড়ি নাটোরের বড়াইগ্রামে। ঘটনাটি ঘটেছে পাবনার চাটমোহরে। দুই উপজেলার দুটি গ্রামই পাশাপাশি। শিশুটির বাবা মালয়েশিয়াপ্রবাসী। স্থানীয় একটি ক্যাডেট মাদ্রাসা পড়ত শিশুটি। ঘটনার পর শিশুটির মা চাটমোহর থানায় মামলা করেন। পাবনার পুলিশ সুপার মোরতোজা আলী খাঁনের নির্দেশে ওসি মনজুরুল আলমে নেতৃত্বে এসআই আওলাদ হোসাইনসহ অন্যরা তদন্ত শুরু করেন।
আজ রোববার সংবাদ সম্মেলনে বিস্তারিত জানান ওসি মঞ্জুরুল আলম। তিনি জানান, চাটমোহর ও বড়াইগ্রাম থানা এবং ডিবি পুলিশের যৌথ অভিযানে অভিযুক্তরা গ্রেপ্তার হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদে শিশুটিকে হত্যায় জড়িত থাকার কথা স্বীকারও করেছে। গ্রেপ্তার চার কিশোরের বাড়ি চাটমোহর ও বড়াইগ্রামে। তাদের সবার বয়স ১৩ থেকে ১৬ বছর। অপর আসামি সোহেল রানার বয়স ২৫ বছর।
পুলিশ জানিয়েছে, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পাঁচজনই হত্যাকাণ্ডে সরাসরি জড়িত বলে স্বীকার করেছে। ডিএনএ সংরক্ষণ ও পরীক্ষাসহ অন্যান্য আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
চাটমোহর থানার ওসি বলেন, রোববার আসামিদের পাবনার আদালতে তোলা হলে তারা ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়।