নির্বাচন কমিশনার (ইসি) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ বলেছেন, সুন্দর, নির্ভুল ও হালনাগাদ ভোটার তালিকা প্রণয়ন এবং আগামী নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করাই বর্তমান কমিশনের প্রধান লক্ষ্য। কেবল নির্ধারিত স্থানে বসে নয়, বরং বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটারদের ফরম পূরণ করে তালিকা হালনাগাদ করতে হবে। তিনি বলেন, ভোটার হওয়ার যোগ্য, বিশেষ করে নারী ও তরুণ প্রজন্মের কেউ যেন তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হওয়া থেকে বাদ না পড়ে সেদিকে নজর দেওয়া প্রয়োজন। তথ্য গোপন করে একাধিক স্থানে ভোটার হওয়ায় চেষ্টা করা অপরাধের পর্যায়ে পড়ে। তথ্যপ্রযুক্তির এই যুগে তথ্য লুকিয়ে ভোটার হওয়া সম্ভব নয়।

আজ বৃহস্পতিবার খুলনা নগরীর সিএসএস আভা সেন্টারে ‘ভোটার নিবন্ধন প্রক্রিয়ায় চ্যালেঞ্জ এবং চ্যালেঞ্জ উত্তরণের উপায়’ শীর্ষক দিনব্যাপী কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। নির্বাচন প্রক্রিয়ায় আইসিটি ব্যবহারে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সক্ষমতা বৃদ্ধি (সিবিটিইপি) প্রকল্প এই কর্মশালার আয়োজন করে।

নির্বাচন কমিশনার বলেন, গণতন্ত্রের সুদীর্ঘ আন্দোলন, ছাত্র-জনতার আত্মত্যাগ ও পরিবর্তনের নতুন প্রত্যাশাই হলো ভোটাধিকার ফিরে পাওয়া। এই প্রত্যাশার মধ্যে রয়েছে একটি সুন্দর ও নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজন। ভোটাধিকার নাগরিকের একটি মৌলিক অধিকার। এ অধিকারের সঙ্গে অনেক কিছু জড়িত। আমাদের সার্বিকভাবে সামাজিক স্থিতিশীলতা, সৌহার্দ্য, সামাজিক সম্পর্ক, উন্নয়ন, রাষ্ট্র ও জাতি হিসেবে সম্মানের সঙ্গে টিকে থাকা নির্ভর করবে সুষ্ঠু, সুন্দর ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের উপরে। নির্বাচন আয়োজন একটি বিরাট কর্মযজ্ঞ। যেখানে আমরা সবাই সম্পৃক্ত। বিশেষ করে এই পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে দায়িত্বটা সঠিক ও নিরপেক্ষভাবে সম্পন্ন করতে হবে। 

তিনি বলেন, এটা শুধু ভোটার তালিকার তথ্য সংগ্রহ নয়, উপরন্তু জাতীয় পরিচয়পত্র প্রস্তুতের ক্ষেত্রে এই তথ্য কাজে লাগে। জাতীয় পরিচয়পত্র পাসপোর্ট প্রাপ্তি, নাগরিকসেবা গ্রহণ, সন্তানদের স্কুলে ভর্তিসহ বিভিন্ন কাজে লাগে। এতে ভুল থাকলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি পদে পদে ভোগান্তির শিকার হবেন। তাই তথ্য সংগ্রহকারীদের সঠিক তথ্য দিয়ে ভোটার হওয়া বাঞ্ছনীয়। এবারের ভোটার তালিকা হালনাগাদ বা যাচাইকরণ আগের চেয়ে একটু ভিন্নতর গুরুত্ব বহন করে। 

খুলনার বিভাগীয় কমিশনার মো.

ফিরোজ সরকারের সভাপতিত্বে কর্মশালায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের অতিরিক্ত সচিব কে এম আলী নেওয়াজ, খুলনার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম, আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মো. হুমায়ুন কবির ও সিবিটিইপির প্রকল্প পরিচালক মুহাম্মদ মোস্তফা হাসান। স্বাগত বক্তব্য দেন খুলনা জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ফারাজী বেনজীর আহম্মেদ। কর্মশালায় প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন প্রকল্পের ডিপিডি মো. মিজানুর রহমান। 

কর্মশালায় অতিরিক্ত আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা, সিনিয়র জেলা ও জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা, অতিরিক্ত জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা, উপজেলা এবং থানা নির্বাচন কর্মকর্তা, স্কুল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় ও মাদ্রাসার শিক্ষক, প্রোগ্রামার, সিস্টেম এনালিস্ট, নারী ভোটার, মহিলা সংগঠক, নতুন ভোটার, সমাজকর্মী, এনজিওকর্মী, ধর্মীয় নেতা ও গণমাধ্যমকর্মীরা অংশ নেন।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ভ ট র হওয়

এছাড়াও পড়ুন:

জগন্নাথপুরে নির্বাচন কর্মকর্তাসহ দু’জন গ্রেপ্তার

অবৈধ লেনদেনের মাধ্যমে জাতীয় পরিচয়পত্রের (এনআইডি) তথ্য জালিয়াতির অভিযোগে সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তাসহ দু’জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গত সোমবার রাতে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। মঙ্গলবার আদালতের মাধ্যমে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

গ্রেপ্তার দু’জন হলেন– উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ মজিবুর রহমান ও ডাটা এন্ট্রি অপারেটর জুবায়ের আলম। তাদের বিরুদ্ধে আজ জগন্নাথপুর থানায় মামলা করেছেন জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা শুকুর মাহমুদ।

জানা গেছে, সোমবার সন্ধ্যায় নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) নিবন্ধন শাখার উপপরিচালক তকবির আহমদ ও সহকারী প্রোগ্রামার আমিনুল ইসলামের নেতৃত্বে একটি তদন্ত দল জগন্নাথপুর নির্বাচন কার্যালয়ে আসেন। তারা বিভিন্ন নথিপত্র পর্যবেক্ষণ করে এনআইডি-সংক্রান্ত তথ্য সংযোজন-বিয়োজন এবং বায়োমেট্রিক্স জালিয়াতির তথ্য-প্রমাণ পান। পরে তদন্ত কর্মকর্তারা থানায় খবর দিলে পুলিশ এসে দু’জনকে গ্রেপ্তার করে।

জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা শুকুর মাহমুদ বলেন, সুনির্দিষ্ট অনিয়ম দুর্নীতির অভিযোগ এনে জগন্নাথপুর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তাসহ দু’জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছি।

উপজেলা নাগরিক ফোরামের নেতা নুরুল হক বলেন, জগন্নাথপুর নির্বাচন কার্যালয় অনিয়ম-দুর্নীতির আখড়া ছিল। জন্মতারিখ পরিবর্তন করতে, কম বয়সী মেয়েদের বয়স বাড়াতে, নাম-ঠিকানা পরিবর্তন করতে বা বায়োমেট্রিক জালিয়াতি করতে আলাদা আলাদা ঘুষের রেট নির্ধারণ ছিল। এই অফিসের দুর্নীতির ‘মহাজন’ ছিলেন মজিবুর রহমান। তাঁর গ্রেপ্তারের খবরে জগন্নাথপুরের মানুষ খুশি।

জগন্নাথপুর থানার ওসি রুহুল আমীন জানান, উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা দু’জন সোমবার মধ্যরাত থেকে তাদের হেফাজতে ছিলেন। মঙ্গলবার বিকেলে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা বাদী হয়ে তাদের নামে মামলা করেন। দু’জনের বিরুদ্ধে জালিয়াতি এবং চাকরিবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ আনা হয়েছে। তাদের সুনামগঞ্জ আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। যারা জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে উপকৃত হয়েছে, তাদেরও এ মামলায় আসামি করা হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • জাতীয় পরিচয়পত্র টেম্পারিং, বাবাসহ ২ মেয়েকে কারাদণ্ড
  • দুই তহবিল থেকে সঞ্চয়পত্রের বেশি মুনাফা পাবেন সরকারি চাকরিজীবীরা 
  • জগন্নাথপুরে নির্বাচন কর্মকর্তাসহ দু’জন গ্রেপ্তার