কুষ্টিয়ায় জেলা প্রশাসকের চালের বাজার তদারকি
Published: 16th, January 2025 GMT
কুষ্টিয়ায় জেলা প্রশাসক তৌফিকুর রহমান চালের লাগাতার দাম বৃদ্ধির কারণে বাজার তদারকি করেছেন। বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) বেলা ১২টার দিকে টাস্কফোর্স কমিটি শহরের বড়বাজার ঘুরে চালের দাম যাচাই ও মুনাফার হার তদারকি করেন। এর পাশাপাশি নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের পাইকারি ও খুচরা ক্রয়-বিক্রয় মূল্যের রশিদ মনিটরিং করেন।
গত ১৮ ডিসেম্বর কুষ্টিয়ার মোকামে উৎপাদিত সব ধরনের চাল মিলগেটে কেজি প্রতি এক টাকা করে কমিয়ে বিক্রির ঘোষণা দেন জেলা প্রশাসক। এর আগে মতবিনিময় সভায় মিলমালিকেরা এ দাম কমানোর সিদ্ধান্ত নেন কিন্তু তা পুরোপুরি বাস্তবায়ন হয়নি। মিলগেট থেকে খুচরা বাজারে আগের দামে সব রকম চাল বিক্রি হচ্ছে। বরং চালের বাজার আরো ঊর্ধ্বমুখী হচ্ছে।
খুচরা ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, আগের দামেই মিলগেটে চাল বিক্রয় হচ্ছে। এ নিয়ে বাজারে আসা সাধারণ ক্রেতারাও প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন। তবে ভরা মৌসুমে এভাবে চালের দাম বাড়ার যৌক্তিকতা নেই। ধানের দাম বৃদ্ধিকে দোষারোপ করছেন মিল মালিকরা।
আরো পড়ুন:
রাজশাহী বিভাগে আমন সংগ্রহ সফল হবে: খাদ্য বিভাগ
চাল ব্যবসায়ীদের সহযোগিতা নিশ্চিত করা হবে: বাণিজ্য উপদেষ্টা
বাজার তদারকি শেষে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে অতিরিক্ত দাম নিলে কঠোর ব্যবস্থা জানিয়ে জেলা প্রশাসক তৌফিকুর রহমান বলেন, ‘‘চালের বাজারের প্রকৃত চিত্র বের করতে চাচ্ছি। কোথায় অসামঞ্জস্য, কেন দাম বাড়ছে বলে অভিযোগ আসছে। সেজন্য খুচরা পর্যায়ে ও মিলগেটে তদারকির মাধ্যমে ক্রসচেক করা হচ্ছে।’’
তিনি জানান, বাজারে আমদানি করা চালের দাম কম। তাহলে আদৌও চালের দাম বাড়ার যৌক্তিকতা আছে কি-না খতিয়ে দেখা হচ্ছে। যদি তদারকিতে চালের দাম বাড়ার যৌক্তিকতা না থাকে তাহলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জেলা প্রশাসক আরো বলেন, ‘‘অনিয়ম আছে কি-না আমি এখনি তা বলতে চাচ্ছি না। ম্যাজিস্ট্রেটরা ভাউচার সংগ্রহ করেছেন। তারা ক্রসচেক করার পর আমরা বুঝতে পারব কেউ আসলে কারসাজি করেছে কি-না কিংবা কোনো সিন্ডিকেট আছে কি নেই? যদি প্রমাণ খুঁজে পাই, তাহলে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
এ সময় কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট জাহাঙ্গীর আলম, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পার্থ প্রতীম শীল, জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক আল ওয়াজিউর রহমান ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন।
ঢাকা/কাঞ্চন/বকুল
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র রহম ন ব যবস
এছাড়াও পড়ুন:
৩০০ বছরের পুরোনো মোগল ফৌজদারের মসজিদ
ছয়-গম্বুজের মসজিদ। পদ্মফুলের ওপর কলসের নকশায় সাজানো হয়েছে গম্বুজের চূড়া। কমলা রঙে রঙিন গম্বুজের জৌলুশ যেন কিছুটা ম্লান করে দেয় মসজিদটির বাইরের দেয়াল। বিবর্ণ হয়ে যাওয়া দেয়ালটিতে শেওলা জমেছে। যদিও মসজিদের ভেতরে সবকিছুই বেশ পরিপাটি। মসজিদটির ভেতরে-বাইরের নানা কারুকার্য আর স্থাপত্যশৈলী ছড়ায় মুগ্ধতা।
চট্টগ্রাম নগরের চকবাজারে অবস্থিত এই মসজিদটি। নাম ‘ওয়ালী বেগ খান জামে মসজিদ’। তবে পরিচিত ‘অলি খাঁ মসজিদ’ নামেও। মসজিদটির বয়স তিন শ বছরের বেশি। চট্টগ্রাম নগরে আঠারো শতকের আগে নির্মিত সাতটি পাকা মসিজদের বিবরণ বিভিন্ন ঐতিহাসিক সূত্রে পাওয়া যায়, যার এর একটি এই মসজিদ।
চট্টগ্রামের মুসলিমদের পুরাকীর্তির বিবরণসহ প্রথমবারের মতো বেশ কিছু শিলালিপির পাঠ পাওয়া যায় ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির সেনাবাহিনীর এক সদস্যের লেখা ভ্রমণবৃত্তান্তে। তাঁর নাম—ক্যাপ্টেন পগসন। ১৮৩১ সালে শ্রীরামপুর প্রেস থেকে প্রকাশিত হয় তাঁর ‘ক্যাপ্টেন পগসন্স ন্যারেটিভ ডিউরিং এ ট্যুর টু চাটিগাঁও’ নামের বই। এতে চট্টগ্রামের চারটি শিলালিপি সংবলিত মুসলিম পুরাকীর্তি এবং তিনটি শিলালিপিবিহীন মসজিদের নাম উল্লেখ করা হয়। যার মধ্যে রয়েছে ওয়ালী বেগ খান মসজিদের নামও।
ঐতিহাসিকদের মতে, এই মসজিদটি নির্মাণ করেন মোগল ফৌজদার (আঞ্চলিক শাসনকর্তা) ওয়ালী বেগ খান। তাঁকে চকবাজারের প্রতিষ্ঠাতাও বলা হয়। চট্টগ্রামবিষয়ক গবেষক আবদুল হক চৌধুরী তাঁর ‘বন্দর শহর চট্টগ্রাম’ বইয়ে উল্লেখ করেন, ১৭১৪ থেকে ১৭১৯ সালের মধ্যে মসজিদটি নির্মাণ করা হয়। মসজিদটির রক্ষণাবেক্ষণের খরচ মেটানোর জন্য জেলার রাউজান থানার কদলপুর, মিরসরাইয়ের নিজামপুর এবং সন্দ্বীপে ১২০ দ্রোণ (এক দ্রোনে ৮ একর) জমি ওয়াক্ফ করেছিলেন ওয়ালী বেগ খান। মসজিদের পাশে ‘কমলদহ’ নামের একটি দিঘি থাকার উল্লেখও বইটিতে রয়েছে।
আবদুল হক ছাড়াও আরও বেশ কিছু গবেষকের ইতিহাসবিষয়ক বইয়ে একই এলাকায় মোগল ফৌজদার ওয়ালী বেগ খানের আবাসসহ-কাছারি নির্মাণ আর দিঘি খননের উল্লেখ পাওয়া যায়। তবে এসব এখন নেই। কালের সাক্ষী হয়ে আছে কেবল মসজিদটি।
মসজিদের ওপর রয়েছে ছয়টি গম্বুজ