রেস্তোরাঁয় ভ্যাট ও শুল্ক বাড়ানোর প্রতিবাদে যশোরে মানববন্ধন
Published: 16th, January 2025 GMT
অর্থবছরের মাঝপথে এসে হঠাৎ রেস্তোরাঁ খাতে মূল্য সংযোজন কর-ভ্যাট ও সম্পূরক শুল্ক বাড়ানোর প্রতিবাদে সারা দেশের মতো যশোরেও মানববন্ধন ও স্মারকলিপি পেশ করেছে বাংলাদেশ রেস্তোরাঁ মালিক সমিতি যশোর শাখা।
বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) সকালে প্রেস ক্লাব যশোরের সামনে সমিতির যশোর শাখার সভাপতি শফিকুর আজাদের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন দিলসান, যুগ্ম সম্পাদক রানা চৌধূরী, সাজু খাদেম, আহসান কবির মামুন, হৃদয়, মনিরসহ রেস্তোরাঁ মালিক ও শ্রমিকেরা।
মানববন্ধন শেষে যশোরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক নাজিবুল আলমের কাছে স্মারকলিপি দেন মালিক সমিতির নেতারা।
আরো পড়ুন:
টাঙ্গাইলে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির চাল বাজারে বিক্রির অভিযোগ
গাইবান্ধায় ধান-গম চুরি, খাদ্য গুদাম কর্মকর্তা বরখাস্ত
স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়, সারা দেশে ৪ লাখ ৮৫ হাজার রেস্তোরাঁ রয়েছে। এর সঙ্গে প্রায় ২ কোটি মানুষ জড়িত। রেস্তোরাঁ ব্যবসার ওপর ভ্যাট ৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ করা হচ্ছে। এ ছাড়া সম্পূরক শুল্ক (এসডি) নামে আরো ১০ শতাংশ কর আগে থেকে আছে। অর্থাৎ ভ্যাট ১৫ শতাংশ ও সম্পূরক শুল্ক (এসডি) ১০ শতাংশ যোগ করা হলে ভোক্তাদের মোট ২৫ শতাংশ কর দিতে হবে। গুলশান ও বনানীর মানুষেরা এ ভ্যাট দিতে পারেন কিন্তু সাধারণ মানুষের পক্ষে এটা দেওয়া সম্ভব নয়, বিষয়টি অবাস্তব। পৃথিবীর কোথাও খাবারে এত ভ্যাট নেই।
মালিক সমিতি মনে করছে, গত দুই বছরের বেশি সময় ধরে দেশে যেখানে উচ্চ মূল্যস্ফীতি বিরাজ করছে, সেখানে ভোক্তার কাছ থেকে কোনোভাবেই ২৫ শতাংশ কর আদায় করা সম্ভব নয়। চাইলেই খাবারের দাম বাড়ানো যায় না। অথচ গত সরকারের আমলে পরিষেবার ব্যয় প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে; সেই সঙ্গে বেড়েছে শ্রমিকদের মজুরি। খাদ্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির জের তো আছেই। উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে এমনিতেই রেস্তোরাঁ ব্যবসা ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ কমে গেছে। এ অবস্থায় ভ্যাট বাড়লে পরিস্থিতির আরও অবনতি হবে।
এতে আরো উল্লেখ করা হয়, দেশের সব রেস্তোরাঁ ভ্যাটের আওতায় আনতে তারা এনবিআরকে সহায়তা করতে প্রস্তুত। বর্তমানে দেশে ভ্যাট নিবন্ধন নেওয়া প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ৫ লাখ ২৫ হাজার, যদিও নিয়মিত ভ্যাট দিচ্ছে সাড়ে তিন লাখ। ভ্যাটের হার না বাড়িয়ে সবাইকে ভ্যাটের আওতায় নিয়ে আসার দাবি জানিয়েছেন তারা।
ঢাকা/রিটন/বকুল
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
জবি শিক্ষার্থীদের উপর ছাত্রদল কর্মীর নেতৃত্বে হামলার অভিযোগ, প্রতিবাদে বিক্ষোভ
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা এ বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করে দ্রুত বিচার দাবি করেন।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা হলেন, জবির রসায়ন বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী আকাশ আলী, তামান্না তাবাসসুম ও আবুল বাসার। অপরদিকে, হামলার নেতৃত্ব দেওয়া অভিযুক্ত ছাত্রদল কর্মী অনিক কুমার দাশ মার্কেটিং বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ।
এর আগে, গতকাল বুধবার (২৯ জানুয়ারি) জবির কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে মার্কেটিং বিভাগের দুই শিক্ষার্থী জুতা পায়ে উঠলে রসায়ন বিভাগের দুই শিক্ষার্থী তার প্রতিবাদ করে। এতে তাদের ওপর হামলা চালায় মার্কেটিং বিভাগের কয়েকজন শিক্ষার্থী।
এ হামলার নেতৃত্ব দেন জবি ছাত্রদল কর্মী ও মার্কেটিং বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী অনিক কুমার দাশ। এতে আরো যুক্ত ছিলেন, মাহফুজুর রহমান চৌধুরী মাহী, আয়ান, আরিফ, রাতুল, আসিফসহ আরো ১৫ জন।
এ হামলার প্রতিবাদে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে শিক্ষার্থীরা বলেন, গত ৫ আগস্ট পরবর্তী বাংলাদেশে আমরা আর কোন দমন-পীড়ন বরদাস্ত করব না। আর কাউকে ফ্যাসিস্ট হয়ে ওঠার সুযোগ দেওয়া হবে না। এর আগের হামলাগুলোর ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হলে আজ আমাদের এখানে দাঁড়াতে হত না। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এসব ঘটনার দ্রুত বিচারের ব্যবস্থা করুক। আমরা এ ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।
রসায়ন বিভাগের ভুক্তভোগী নারী শিক্ষার্থী ২০২০ -২০২১ সেশনের তামান্না তাবাসসুম বলেন, “আমরা প্রক্টরের কাছে গিয়েছিলাম। তারা আমাদের কোন সহযোগিতা করেনি। আমরা তাহলে কার কাছে যাব? আমরা এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই।”
একই বিভাগের শিক্ষার্থী আকরাম হোসেন বলেন, “গতকালের ঘটনার পর আমরা প্রক্টরের কাছে যাওয়ার পর তিনি আমাদের বলেন, ২০০৫ সালের নীতিমালা পড়ার জন্য। এ বিষয়ে তারা কি পদক্ষেপ নেবে, সে ব্যাপারে তিনি আমাদের কিছু জানাতে পারেননি। বরং আমাদের বিভাগের শিক্ষকের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেন। যদি এ ঘটনায় প্রশাসন কোন ব্যবস্থা না নেয়, তাহলে আমরা প্রশাসন ও যে দলের প্রশ্রয়ে এ ঘটনা ঘটেছে, তাদের বিরুদ্ধে সাধারণ শিক্ষার্থীরা আন্দোলন গড়ে তুলবে। সেই সঙ্গে আমরা ক্লাস বর্জনের ডাক দেব।”
আব্দুল কাহহার জামিল বলেন, “গতকালের ঘটনায় প্রক্টর স্যার আমাদের কোন খোঁজ নেননি। রাত ১০টার পর একজন সহকারী প্রক্টরকে পাঠান। তিনি চিকিৎসার জন্য কিছু টাকা দেন। কিন্তু প্রক্টর স্যারের সঙ্গে আমরা কথা বলতে গেলে তিনি দুর্ব্যবহার করেন। গত ১ বছরে আামদের বিভাগের শিক্ষার্থীরা তিনটি হামলার অভিযোগ করলেও সুষ্ঠু বিচার পাননি। যদি ওই ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হত, তাহলে আজ আমাদের এখানে দাঁড়াতে হত না। আমরা এ ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।”
তিনি বলেন, “বিচারের নামে টালবাহানা করা হয়। আমাদের প্রক্টর অফিস থেকে ভয় দেখিয়ে অভিযোগ তুলে নেওয়ার জন্য চাপ দেওয়া হয়। এছাড়া আমাদের নানা হুমকি দিয়ে ভয় দেখনো হয়। বলা হয়, যদি ক্যাম্পাসের বাইরে কেউ হামলা করে, তাহলে সে দায় প্রক্টর অফিস নেবে না।”
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ তাজাম্মুল হক বলেন, “সবকিছুর জন্য সময় দরকার। রসায়ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা যেভাবে বিচার চাচ্ছে, সেটা এত দ্রুত সম্ভব না। আগের একটা কমিটি আছে, সে কমিটির কাছেই আমি এটার তদন্ত হস্তান্তর করেছি।”
তিনি বলেন, “হ্যাঁ, আমি তাদের ২০০৫ সালের নীতিমালা পড়তে বলেছি। আমার বিশ্ববিদ্যালয়ে আগামীকাল ভর্তি পরীক্ষা আছে। সব মিলিয়ে ব্যস্ততার মধ্যে আছি।”
ঢাকা/লিমন/মেহেদী