এমিলিয়া পেরেজ: মেক্সিকান নারীদের গল্প
Published: 16th, January 2025 GMT
মেক্সিকোর কুখ্যাত এক মাদকসম্রাট এমিলিয়া পেরেজ। তাঁর জীবনজুড়ে আছে অসংখ্য অপরাধ, ক্ষমতার লড়াই এবং প্রতিশোধের গল্প। হঠাৎ একদিন এমিলিয়া নিজের পুরুষ পরিচয় থেকে নারীতে রূপান্তরিত হওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। এমন গল্প নিয়ে ফরাসি নির্মাতা জ্যাক অঁদিয়ার বানিয়েছেন ‘এমিলিয়া পেরেজ’। এই রূপান্তরের পেছনে এমিলিয়ার লক্ষ্য ছিল নতুন পরিচয়ে জীবন শুরু করা এবং অপরাধ জগৎ থেকে বেরিয়ে আসা। কিন্তু তাঁর এ সিদ্ধান্ত একদিকে যেমন মুক্তির স্বাদ দেয়, অন্যদিকে তাঁকে আরও গভীর সংকটেও ফেলে। পুরোনো পরিচয় তাঁকে ছেড়ে যেতে চায় না এবং শত্রুরা তাঁর নতুন পরিচয় আবিষ্কারের চেষ্টা চালিয়ে যায়। এই চরিত্র ছাড়াও এ সিনেমায় দেখানো হয়েছে আরও তিন প্রতিষ্ঠিত নারীর গল্প। যারা নিজের মতো করে সুখী হতে চায়।
সিনেমাটি নিয়ে শুরুতে ততটা আলোচনা না হলেও, গত বছর কান উৎসবে ছবিটির প্রিমিয়ারের পর প্রশংসিত হয়েছিল। এ ছবির অন্যতম চার নারীর ভূমিকায় অভিনয়ের সুবাদে আদ্রিয়ানা পাজ, কার্লা সোফিয়া গাসকোন, সেলেনা গোমেজ ও জোয়ি সালদানা– এই চারজন কানের সেরা অভিনেত্রীর পুরস্কার পান। এরপর থেকেই ছবিটি নিয়ে আগ্রহ তৈরি হয়। কিন্তু এই মিউজিক্যাল কমেডি যে এতটা সমাদৃত হবে, কে ভেবেছিল! গোল্ডেন গ্লোবে সর্বোচ্চ ১০টি মনোনয়ন পায় সিনেমাটি। মনোনয়নের মতোই গোল্ডেন গ্লোবের মূল আসরে সর্বোচ্চ চার পুরস্কার জিতেছে ‘এমিলিয়া পেরেজ’।
হলিউডের একাধিক চলচ্চিত্র সমালোচকরা সিনেমাটিকে শুধু একটি অপরাধ জগতের গল্প নয়, এটি একজন মানুষের পুনর্জন্ম এবং নিজেকে খুঁজে পাওয়ার গল্প হিসেবেও বলেছেন। সিনেমায় নাম ভূমিকায় অভিনয় করেছেন কার্লা সোফিয়া গাসকোন। চলতি গোল্ডেন গ্লোবের ইতিহাসে প্রথম ট্রান্সজেন্ডার নারী হিসেবে সেরা অভিনেত্রী (মিউজিক্যাল অথবা কমেডি) বিভাগে মনোনীত হয়ে ইতিহাস গড়েছেন। তাই পুরস্কার বিতরণের মঞ্চে তিনি বলেন, ‘অন্ধকারকে দমিয়ে আলো সবসময়ই জয়ী হয়। আমাদের প্রাণ, অস্তিত্ব কিংবা পরিচয় কেড়ে নিতে পারবে না কেউই।’
চিত্রনাট্য, অভিনয় আর নির্মাণের কারণে রটেন টোমাটোজে ছবিটির গড় রেটিং ৭৬ শতাংশ। বেশির ভাগ সমালোচকই ছবিতে কার্লা সোফিয়া গাসকোনের অভিনয়কে অন্যতম সেরা বলে রায় দিয়েছেন। টাইম সাময়িকীর মতে, ‘এটা খ্যাপাটে একটা ছবি, নিঃসন্দেহে বছরের সেরা মিউজিক্যাল।’ কেবল পেশাদার সমালোচকরাই নন, গত বছর ছবিটির প্রশংসা করেছেন অভিনেত্রী মেরিল স্ট্রিপ, এমিলি ব্লান্ট, ইভা লঙ্গোরিয়া, গায়িকা ম্যাডোনা, নির্মাতা গিয়ের্মো দেল তোরো, মাইকেল মানরা। টাইম, সাইট অ্যান্ড সাউন্ডসহ বিভিন্ন সাময়িকী গত বছরের সেরা ছবির তালিকায় রেখেছিল ‘এমিলিয়া পেরেজ’কে।
ছবিটি নিয়ে বিতর্কও কম হয়নি। বিশেষ করে মেক্সিকোতে। দেশটির নানা নেতিবাচক বিষয় তুলে ধরায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক রোষের মুখে পড়েন নির্মাতা। দেশটির অনেক চিত্রসমালোচকও মনে করেন, ছবিতে মেক্সিকোর বিষয়গুলো খুব হালকাভাবে উঠে এসেছে। এ ছাড়া মেক্সিকোর পরিপ্রেক্ষিতে ছবি হলেও প্রায় সব অভিনেত্রীই অন্য দেশের, এটা নিয়েও সমালোচনা হয়েছে।
সমালোচনার পাশাপাশি এত প্রশংসা, পুরস্কার আর মনোনয়ন অঁদিয়ারের জন্য বাড়তি প্রাপ্তি বলে মনে করছেন। এ প্রসঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে নির্মাতা বলেন, ‘এটা খুবই সময়োপযোগী কাজ, সমসাময়িক নানা বিষয় নিয়ে বক্তব্য আছে। এটা এমন একটা কাজ, যা আমি চাইলে ১০ বছর আগে বানাতে পারতাম না।’ তিনি আরও বলেন, ‘এই অস্থির সময়ে আশা করি ‘এমিলিয়া পেরেজ’ হবে আলোর বাতিঘর।’
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
‘১৮ বছর বয়সে পালিয়ে বিয়ে করি, জীবন আলুথালু হয়ে গিয়েছিল’
কলকাতার জনপ্রিয় অভিনেত্রী সমতা দাস। ‘এক আকাশের নিচে’ টিভি ধারাবাহিকের মাধ্যমে জনপ্রিয়তা লাভ করেন। অভিনয় করেছেন চলচ্চিত্রেও। কিন্তু মাঝে তাকে সেভাবে টিভি পর্দায় দেখা যায়নি।
‘চিরসখা’ শিরোনামে নতুন ধারাবাহিকের মাধ্যমে টিভি পর্দায় ফিরছেন সমতা। অভিনয়ে না থাকার কারণ হিসেবে সমতা দাস বলেন, “একই ধরনের চরিত্রে কাজের প্রস্তাব আসছিল। অবশেষে মনের মতো একটা চরিত্র পেয়েছি।”
বুদ্ধদেব দাসগুপ্ত নির্মিত ‘মন্দ মেয়ের উপাখ্যান’ সিনেমা জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছে। এতে ‘লতি’ চরিত্রে অভিনয় করেন সমতা। তাছাড়া ‘এক মুঠো ছবি’, ‘হিরো’, ‘নাগরদোলা’ প্রভৃতি সিনেমায় দেখা গেছে তাকে। তবে নায়িকা হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করতে পারেননি এই অভিনেত্রী।
আরো পড়ুন:
‘কাউকে চড় মারলে অসুবিধা নেই, চুমু খেলেই যত দোষ’
‘মেয়েরা ৬টা প্রেম করলে বেশ্যা, ছেলেরা করলে লোকে বলে— এলেম আছে’
এ বিষয়ে সমতা দাস বলেন, “১৮ বছর বয়সে পালিয়ে বিয়ে করি। পরিবারের কেউ সেই সময়ে মেনে নেয়নি আমার সম্পর্ক। যার ফলে ব্যক্তিগতজীবন আলুথালু হয়ে গিয়েছিল। নিজের ক্যারিয়ারে মন দিতে পারিনি।”
খানিকটা ব্যাখ্যা করে সমতা দাস বলেন, “এতটাই সমস্যার মধ্যে ছিলাম, তখন নিজের ক্যারিয়ারে মন দেওয়া সম্ভভ হয়নি। তারপর যখন ফিরলাম তখন অনেকটা সময় পেরিয়ে গিয়েছে। চেহারাও সেভাবে ধরে রাখতে পারিনি। এটা হয়তো আমারই দোষ।”
নায়িকা না হতে পারলেও আফসোস নেই সমতার। কারণ জীবনের কোনো সিদ্ধান্তে অখুশি নন। তিনি একটা সুন্দর সংসার পেয়েছেন। তাদের দু’বছরের একটি পুত্রসন্তান রয়েছে। তাই কোনো কিছু নিয়ে আক্ষেপ করতে রাজি নন এই অভিনেত্রী।
ঢাকা/শান্ত