Samakal:
2025-04-23@17:16:38 GMT

নতুন মাত্রা

Published: 16th, January 2025 GMT

নতুন মাত্রা

মুখে এক চিলতে হাসি। কখনও রাগী কিংবা অভিমানী চরিত্রে। কখনও ধরা দেন প্রান্তিক মানুষের প্রতিচ্ছবি হয়ে। নানা চরিত্রে তিনি বদলে যান ক্যামেরার সামনে। পর্দায় ভেসে ওঠা তাঁর চরিত্রই যেন বাস্তব। এভাবে অভিনয় দিয়ে একের পর এক সাফল্যের সিঁড়ি ভেঙেছেন তিনি। হয়ে উঠেছেন ছোটপর্দা ও ওটিটির উজ্জ্বল তারকা। সিনেমায় দেখিয়েছেন অভিনয়ের মুনশিয়ানা। বলছি, অভিনেত্রী ও মডেল তাসনিয়া ফারিণের কথা। 

সৌন্দর্য, মেধা, পরিশ্রমকে এ অভিনেত্রী বেঁধেছেন বিনি সুতোয়। বিদায়ী বছরে বেশ ফুরফুরে মেজাজেই ছিলেন তিনি। উপহার দিয়েছেন ভালো কিছু কাজ। হাজির হয়েছেন নতুন পরিচয়ে। চলতি বছরেও রয়েছে কিছু প্রত্যাশা। 

নতুন বছর, নতুন চমক
অতনু ঘোষের ‘আরও এক পৃথিবী’ সিনেমায় পশ্চিমবঙ্গের চলচ্চিত্রে অভিষেক হয়েছে ফারিণের। এতে সুঅভিনয়ের জন্য পুরস্কারও এসেছিল তাঁর ঝুলিতে। ওই সিনেমা দিয়ে সেখানকার ইন্ডাস্ট্রিতে তাঁর পরিচিতি বাড়ে; নতুন কাজের প্রস্তাবও আসে। গত বছর অভিজিৎ সেনের পরিচালনায় ‘প্রতীক্ষা’ সিনেমায় পশ্চিবমঙ্গের তারকা অভিনেতা দেবের সঙ্গে অভিনয়ের কথা ছিল। ভিসা জটিলতায় কলকাতা যাওয়া হয়নি ফারিণের। এ কারণে তাঁকে বাতিল করতে হয়েছে সিনেমার কাজ। একাধিক ভারতীয় সংবাদমাধ্যম খবর প্রকাশ করেছে, সিনেমাটি হবে।  প্রতীক্ষা নয়, ‘প্রজাপতি টু’ নামে। আগামী মার্চে লন্ডনে হবে এর দৃশ্য ধারণ। এতে দেবের সঙ্গে ফারিণ অভিনয় করছেন ওই সিনেমায়। সম্প্রতি এমন গুঞ্জন উঠেছে ফারিণকে নিয়ে। 

এ প্রসঙ্গ উঠতেই ফারিণ বলেন, ‘প্রজাপতি টু নিয়ে এখন চূড়ান্ত কিছু হয়নি। যতক্ষণ পর্যন্ত শুটিং ফ্লোরে কিছু না যায়, তা নিয়ে কথা বলা মুশকিল। নানা জটিলতা থাকে। ফলে কোনো কিছু কনফার্ম হিসেবে ধরে নিতে চাচ্ছি না। যখন শুটিং হবে তখন সবাই জানতে পারবেন।’

ভালোবাসা দিবসের আয়োজনে
ভালোবাসা দিবসে ফারিণের কাজ নিয়ে দর্শকের থাকে অন্যরকম আগ্রহ। কাজল আরেফিন অমির পরিচালনায় ‘হাউ সুইট’ নামে রোমান্টিক-কমেডি ওয়েব সিনেমায় তাঁকে দেখা যাবে। ভালোবাসা দিবস উপলক্ষে এটি মুক্তি পাবে ওটিটি প্ল্যাটফর্ম বঙ্গতে। সিনেমাটি নিয়ে বেশ আশাবাদ ব্যক্ত করে ফারিণ বলেন, ‘ফান কনটেন্টটি দেখে দর্শক খুব মজা পাবেন। কমার্শিয়াল ধাঁচে শুট করা হয়েছে। অসাধারণ গল্প নির্মাণে ছিল যত্নের ছাপ। ইউনিটের প্রত্যেকে খুব মজা করে শুটিং করেছি। সব মিলিয়ে উপভোগ্য কিছু হবে– এ প্রত্যাশা করাই যায়।’ 

সহকর্মীর প্রশংসায়.

..
সহকর্মীরা ভালো কাজ করলে প্রশংসায় ভাসান ফারিণ। তারকা অভিনেত্রী মেহজাবীন অভিনীত সম্প্রতি মুক্তিপ্রাপ্ত চলচ্চিত্র ‘প্রিয় মালতী’র প্রশংসায় মাতলেন ফারিণ। চলচ্চিত্রটি কিছু অংশ দেখে মুগ্ধতা প্রকাশে দেরি করেননি। তিনি তাঁর নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজেও লিখেছেন।  মেহজাবীন ও ফারিণের মধ্যে ব্যক্তিজীবনেও রয়েছে সুসম্পর্ক। কোনো প্রতিদ্বন্দ্বিতা নয়, বরং রয়েছে পারস্পরিক সম্মান ও ভালোবাসার সম্পর্ক। সামাজিকমাধ্যমে মাঝেমধ্যেই দেখা যায় তাদের একসঙ্গে ভ্রমণের ছবি। ফারিণ বলেন, ‘‘মেহজাবীন আপুকে সিনিয়র হিসেবে খুব সম্মান করি। আমাকেও তিনি আদর করেন। সে জায়গা থেকে আমার সঙ্গে তাঁর খুব ভালো সম্পর্ক। তাঁর ‘প্রিয় মালতী’ কাজটি ভালো লেগেছে বলে সামাজিকমাধ্যমে লিখেছি।’’ 

হাসির জাদু
নিজেকে সবসময় হাসিখুশি রাখেন ফারিণ। এ কারণে প্রশংসাও পেয়ে থাকেন আপনজনদের কাছে। এ হাসিখুশি থাকার মন্ত্র কী? মুখে এক চিলতে হাসি নিয়ে উত্তরটা দিলেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘আমি সবসময় ভালো থাকার চেষ্টা করি। যদি মন থেকে ভালো থাকা যায় তাহলে শারীরিকভাবে অসুস্থ থাকলেও সমস্যা হয় না। সহকর্মীদের সঙ্গে দেখা হলেই হাসি দিয়ে কথা বলার চেষ্টা করি। এর মধ্যে আমি তৃপ্তি খুঁজে পাই।’ 

নতুন বছরের প্রত্যাশা
আলাপে আলাপে নতুন বছরের প্রত্যাশার কথাও জানালেন তিনি। তাঁর ভাষ্যে, ‘‘আমার ক্যারিয়ারের জন্য গত বছরটি খুব ভালো ছিল। শিহাব শাহীনের ছবি ‘কাছের মানুষ দূরে থুইয়া’, ওয়েবের জন্য ‘অসময়’ ও ‘চক্র’তে অভিনয় করেছি। সংগীতশিল্পী হিসেবে অভিষেক হয়েছে। ‘রঙে রঙে রঙিন হবো’ গানটি শ্রোতাপ্রিয়তা পেয়েছে। এ বছর আমার নতুন আরও একটি গান আসবে। ভালো কিছু কাজ করতে চাই। পরিবার নিয়ে যেন সুস্থ থাকতে পারি– এটিই প্রত্যাশা। আরও চ্যালেঞ্জিং চরিত্রে অভিনয় করতে চাই। চলতি বছরে হয়তো আরও ভালো কিছু যোগ হবে ক্যারিয়ারে। দেখা যাক কী হয়।’’

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

লেনিন কেন এখনও জরুরি

আজ ২২ এপ্রিল, ভ্লাদিমির ইলিচ লেনিনের জন্মদিন। ১৯১৭ সালে সংঘটিত রুশ বিপ্লবের অগ্রনায়ক লেনিন ছিলেন মার্ক্সের সফল উত্তরাধিকারী। তিনি প্রতিষ্ঠা করেন ইতিহাসের প্রথম সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্র। একটি পশ্চাৎপদ পুঁজিবাদী দেশে বিপ্লব সংঘটনের পথ বের করেন তিনি। চিন্তা ও প্রয়োগের মেলবন্ধন ঘটানোর দক্ষতাই ছিল তাঁর সাফল্যের অন্যতম কারণ। মার্ক্স সমাজতান্ত্রিক বিপ্লবের কথা বলেন। কিন্তু রাশিয়ার মতো দেশে যেখানে পুঁজিবাদের বিকাশ ঘটেনি, সেখানে শ্রমিক শ্রেণির নেতৃত্বে গণতান্ত্রিক বিপ্লব করে নতুন পথ দেখালেন। লেনিনের এই গণতান্ত্রিক বিপ্লবের পথ ধরেই চীনসহ পিছিয়ে পড়া পুঁজিবাদী দেশে বিপ্লব হয়েছে। ইতিহাসের কোনো পর্বকেই লাফ দিয়ে ডিঙিয়ে যাওয়া যায় না। বিপ্লবকে ইতিহাসের ভেতর দিয়েই যেতে হয়– এটি ছিল লেনিনের শিক্ষা।  

লেনিন দেখিয়েছেন রাষ্ট্রযন্ত্র কোন প্রক্রিয়ায় বল প্রয়োগ করে টিকে থাকে এবং শাসক শ্রেণির স্বার্থ রক্ষা করে। তাঁর রাষ্ট্রচিন্তা পুঁজিবাদী রাষ্ট্রের ফ্যাসিস্ট রূপ বুঝতে সহায়তা করে। তিনি বল প্রয়োগের মাধ্যমে বুর্জোয়া রাষ্ট্রযন্ত্র উচ্ছেদের কথা বলেন। গ্রামসি বলেন, শুধু বল প্রয়োগ নয়; শাসক শ্রেণি সাংস্কৃতিক ও মতাদর্শিক আধিপত্য বজায় রাখার মধ্য দিয়েও টিকে থাকে। ব্যবস্থার পক্ষে সম্মতি উৎপাদন করে। ফুকোর মতে, ক্ষমতা শুধু রাষ্ট্রে কেন্দ্রীভূত নয়; সমাজের পরতে পরতে ছড়িয়ে থাকে। আধুনিক সমাজ শুধু বল প্রয়োগের মাধ্যমে শাসন করে না; তা মানুষের জীবন ও কর্তাসত্তার মনোজগৎ গঠনেরও নিয়ন্ত্রণ নেয়। ফুকো এর নাম  দিয়েছেন বায়োপলিটিকস–  জীবন ও মগজ দখল- নিয়ন্ত্রণের রাজনীতি। ফুকো ক্ষমতা কী করে কাজ করে তার বর্ণনা দিলেও ক্ষমতাকে কীভাবে প্রতিরোধ ও উচ্ছেদ করতে হয়, তা দেখাননি। সেটা দেখিয়েছেন লেনিন। তার মানে এই নয়, আমাদের বলশেভিক মডেলই অনুসরণ করতে হবে।

বাংলাদেশের রাষ্ট্র নিবর্তনমূলক ও দুর্নীতিবাজ। গণতন্ত্রের লোভ দেখানো নির্বাচন, উন্নয়ন, ধর্মরাষ্ট্র, স্বর্গ– এসব ফ্যান্টাসি তৈরি করে রেখেছে। এসব ফ্যান্টাসি ভাঙতে হবে। আমাদের মুক্তির বিকল্প বয়ান তৈরি করতে হবে। মানুষের কাছে সেটা তুলে ধরতে পারলে বর্তমান অবস্থার পরিবর্তন সম্ভব। বুর্জোয়া রাষ্ট্রের খোলনলচে না বদলে শুধু কিছু সংস্কার দিয়ে বিদ্যমান সংকটের সমাধান সম্ভব হবে না।
লেনিনের শিক্ষার একটা বড় দিক হলো, অসংগঠিত স্বতঃস্ফূর্ত আন্দোলন দিয়ে ব্যবস্থার অবসান ঘটানো যায় না। এ জন্য চাই বিপ্লবী মতাদর্শ ও সুসংগঠিত রাজনৈতিক সংগঠন। যাকে তিনি বলেছেন বিপ্লবী পার্টি। লড়াইকে তিনি স্বতঃস্ফূর্ততার ওপর ছেড়ে না দিয়ে সচেতন সংগঠিত রাজনৈতিক লড়াই চালানোর কথা বলেন। শুধু জীবনদান আর অভ্যুত্থান করলেই হবে না; সেই অভ্যুত্থানের রাজনীতি ও শ্রেণি প্রশ্নটি পরিষ্কার থাকতে হবে। অভ্যুত্থান-উত্তর পরিস্থিতির ওপর নিয়ন্ত্রণ রাখতে অভ্যুত্থানকারী শক্তির সংগঠন থাকতে হয়।  চব্বিশের অভ্যুত্থানে এর কোনোটাই নেই। নেই কোনো সুনির্দিষ্ট রাজনীতি ও শক্তিশালী সংগঠন। এ ধরনের ভয়ানক দুর্বলতার পরিণতিতে পর্বতের মূষিক প্রসব ঘটতে পারে। 

স্বৈরতান্ত্রিক জারের ভয়ানক নির্যাতনে লেনিনের জীবন কখনোই স্থির ছিল না। বন্দি ও পলাতক জীবন এবং নির্বাসনের মধ্যে স্ত্রী ক্রুপস্কায়াকে নিয়ে কেটেছে তাঁর জীবন। তবুও এক অমিত শক্তি নিয়ে তিনি অব্যাহত রেখেছেন বিপ্লবী কর্মযজ্ঞ। লিখেছেন অবিরাম ৫৫ খণ্ড।  বিতর্কে লিপ্ত থাকতে হয়েছে তাঁকে সারাক্ষণ দলের ভেতর ও বাইরে। অব্যাহতভাবে প্রকাশ করেছেন ইস্ক্রা পত্রিকা। এভাবে একদিন নতুন সূর্যের ভোর আসে ১৯১৭ সালে; অক্টোবর সমাজতান্ত্রিক বিপ্লবে। 
রুশ বিপ্লবের পরে বেশি দিন বাঁচেননি লেনিন। ১৯১৮ সালে আততায়ীর গুলিতে আহত হন। এরপর কখনোই পুরোপুরি সুস্থ হননি। ১৯২৪ সালে লেনিন মস্কো থেকে দূরে তাঁর নিজ গ্রাম গোর্কিতে মারা যান। 
১৯৪৮ সালে কার্ল মার্ক্স বলেছিলেন, ‘ইউরোপ ভূত দেখেছে; কমিউনিজমের ভূত।’ বিশ শতকজুড়ে  ইউরোপ ও আমেরিকাকে কমিউনিজমের এ ভূত তাড়িয়ে বেড়িয়েছে। সমাজতন্ত্র ধ্বংস করতে তারা চালিয়েছে কখনও সরাসরি যুদ্ধ, কখনও স্নায়ুযুদ্ধ। 

বামপন্থিদের ও সমাজতন্ত্রের বিরুদ্ধে সে যুদ্ধ এখনও জারি আছে। এ যুদ্ধে সমাজতান্ত্রিক শিবিরের আপাত পরাজয় হলেও তা নতুন এক অনিরুদ্ধ শক্তি নিয়ে আবারও ইতিহাসে আবির্ভূত হবে। পুঁজির শোষণ ও শাসনমুক্ত একটি সভ্য মানবিক সমাজ প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন দেখেছিলেন মার্ক্স ও লেনিন। সেটা এখনও আরাধ্য। তা অর্জনে লুটেরা পুঁজিতন্ত্রের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের কোনো বিকল্প নেই। এ সংগ্রামে লেনিন শুধু প্রাসঙ্গিক নন, জরুরিও বটে। লেনিনের জন্মদিনে তাঁর প্রতি আমাদের শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা। 

ড. আখতার সোবহান মাসরুর: লেখক ও নব্বইয়ের গণঅভ্যুত্থানের অন্যতম ছাত্রনেতা

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • নিজের যত্ন নিন
  • জনসমর্থন নেই-এমন কাজ করলে ব্যবস্থা: নেতাকর্মীকে তারেক রহমান
  • সৌন্দর্যের সন্ধানে সুন্দরবনের গহীনে : প্রথম পর্ব
  • কীভাবে বুঝবেন আপনার ফ্যাটি লিভার
  • প্রস্রাবে প্রোটিন যাওয়া মানে কি কিডনি সমস্যা ?
  • লেনিন কেন এখনও জরুরি
  • প্রতিটি পরিচয়েই ভালো কাজকে প্রাধান্য দিতে চাই: ফাহমিদা নবী
  • স্বাধীনতা পেলেও কখনো স্রোতে গা ভাসাব না: ফাহমিদা নবী