৩০ সেকেন্ড হাঁটলে কী ক্যালোরি খরচ হয়?
Published: 16th, January 2025 GMT
এক থেকে তিরিশ পর্যন্ত গুণতে গুণতে একটু হেঁটে নিলে কেমন হয়?— চিকিৎসকেরা বলছেন দিনে ৩০ মিনিট হাঁটতে। কিন্তু একবারে ৩০ মিনিট হাঁটার সুযোগ বা সময় অনেকেরই হয় না। কেউ কেউ কাজের ফাঁকে একটু পায়চারি করেন কিন্তু তিরিশ মিনিট হাঁটতে না পারার মানসিক চাপ অনুভব করেন। তার মনে হতে পারে, নিয়ম মেনে হাঁটা হলো না। ৩০ মিনিট হাঁটতে না পারাকে ওজন বৃদ্ধির অন্যতম কারণ মনে হয়। যাদের একটানা ৩০ মিনিট হাঁটার সুযোগ নেই তাদের জন্য সুখবর হলো ৩০ সেকেন্ড হাঁটলেও ভালো ফল পাওয়া যায়।
নতুন একটি গবেষণায় দেখানো হয়েছে, একটানা হাঁটার চেয়ে মাঝেমধ্যে কাজের ফাঁকে ১০ বা ৩০ সেকেন্ড হাঁটাহাঁটি করলে ক্যালোরি খরচের ক্ষেত্রে বেশি কার্যকর হয়। এই হাঁটাকে বলা হচ্ছে ‘মাইক্রো ওয়াকিং’। এই সমীক্ষায় অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে কয়েক জনকে কয়েক মিনিট হাঁটানো হয়। বাকিদের সেকেন্ডের হিসাবে হাঁটতে বলা হয়। গবেষকরা দেখেন যে, যারা ১০ বা ৩০ সেকেন্ডে হেঁটেছেন কয়েক মিনিটের হাঁটার চেয়ে তাদের ক্যালোরি খরচ হচ্ছে অন্তত ৬০ শতাংশ বেশি।
ইংল্যান্ডের রয়্যাল সোসাইটির ‘বায়োলজিক্যাল সায়েন্স’ জার্নালে গবেষক ফ্র্যান্সিসকো লুসিয়ানো এবং তার সহকর্মীরা বলছেন, সারা দিনে সময় ভাগ করে হাঁটায় দৈনন্দিন জীবনে স্বাস্থ্যের উপর ইতিবাচক প্রভাব পড়ছে। এতে দৈনিক এনার্জি বা শক্তির খরচও এতে বেশি হচ্ছে। গাড়ির ক্ষেত্রে তেল খরচের উদাহরণ তুলে তিনি বলছেন, স্বল্প দূরত্বের যাত্রায় যেমন গাড়ির তেল খরচ বেশি হয়, অথচ দীর্ঘ এবং দ্রুত গতির যাত্রায় তেল খরচ অনেকটাই কমে যায়, বিষয়টি ঠিক তেমন।
আরো পড়ুন:
শীতে কুসুম গরম পানি পান করলে শরীরে যা ঘটে
এইচএমপি ভাইরাস নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সতর্কতা
এর আগেও হাঁটা নিয়ে একাধিক গবেষণালব্ধ তথ্য প্রকাশ হয়েছে। তাতেই বলা হয়েছে, ৩০ মিনিট হাঁটা শরীরের জন্য ভালো হলেও, তা যে এক বারেই হাঁটতে হবে এমন নয়। বরং তা ভাগে ভাগেও হাঁটা যায়।
ঢাকা/লিপি
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ৩০ স ক ন ড ৩০ ম ন ট হ
এছাড়াও পড়ুন:
কিশোর গ্যাংয়ের ছেলেরা দৌড়াচ্ছে, ভারী বুট পরা পুলিশ তার পিছনে দৌড়াতে পারে না
কিশোর গ্যাংয়ের অল্পবয়সী ছেলেদের সঙ্গে ভারী বুট পরা পুলিশ দৌড়ে পারছে না বলে মন্তব্য করেছেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব নাসিমুল গনি। তার জন্য বিকল্প ব্যবস্থা করছেন বলেও জানান তিনি।
সোমবার (৩ মার্চ) সচিবালয়ে নিজ দপ্তরের সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
দেশি-বিদেশি গণমাধ্যমে খুন-ধর্ষণের পরিসংখ্যান এসেছে- এ বিষয়ে সিনিয়র সচিব বলেন, “আমি অস্বীকার করছি না। আগে কী ছিল, এখন কী হচ্ছে, সেটা বলছি। আমরা একটা বিধ্বস্ত পুলিশ বাহিনী পেয়েছি। এই বাহিনীতে আমরা যাদেরকে নিয়ে এসেছি, তারা কোনোদিন ঢাকা শহর দেখেনি। তারা এই জায়গাগুলো চিনে এখন কাজকর্ম করছে। ধীরে ধীরে তারা নিয়ন্ত্রণ নিচ্ছে। প্রতিদিনই উন্নতি হচ্ছে। নতুন সমস্যা আসছে, আমরা নতুন কৌশল ব্যবহার করছি।”
আরো পড়ুন:
এবার জিনিসপত্রের দাম গতবারের চেয়ে কম: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
আইন-শৃঙ্খলার এত নাজুক অবস্থা স্মরণকালে নেই: জিএম কাদের
তিনি বলেন, “আগে কিশোর গ্যাংয়ের এরকম ব্যাপার ছিল না। অল্পবয়সী ছেলেরা দৌড়াচ্ছে, আমার ভারী বুট পরা পুলিশ তার পিছনে দৌড়াতে পারে না। এজন্য কী ব্যবস্থা করা যায়, সেই বিকল্প ব্যবস্থা আমরা করছি।”
সরকার আরো কঠোর হচ্ছে কি না এ বিষয়ে তিনি বলেন, “কঠোর হওয়ার কিছু নেই, কোমল হওয়ারও কিছু নেই। যেটুকু প্রয়োজন সেটুকুই করছি আমরা।”
অপারেশন ডেভিল হান্ট আরো সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যমুখী (ফোকাসড ওয়েতে) করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব নাসিমুল গনি।
তিনি বলেন, “কোথায় আমাদের ফোকাস বাড়ানো দরকার, কোথায় ফোকাস বাড়ানোর দরকার নাই, কোথায় লোকবলের অপচয়, রোজার মাসে জনবল সাশ্রয় করে আমরা সর্বোচ্চ কী কী কাজ করতে পারি, কোন কোন জায়গায় আমাদের যৌথ টহলের দরকার নেই-সেগুলো আমরা আলাপ-আলোচনা করেছি। মোর ফোকাসড ওয়েতে করার চেষ্টা করা হচ্ছে।”
মোর ফোকাসড ওয়ে মানে কী এ বিষয়ে তিনি বলেন, “আমাদের লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী আমরা কাজ করছিলাম। সেটা প্রতি মাসেই পরীক্ষা করা হয়, যে ফলাফল কী হচ্ছে, কোথাও নিষ্ফল পেট্রোলিং হচ্ছে কি না, দরকার আছে কি না এসব। যখন দেখা যায় সমস্যা নেই, তখন আমরা সেখান থেকে সরে আসছি। অন্য যেখানে প্রয়োজন হচ্ছে সেখানে কাজ করছি। এখন আমরা ঢাকা শহরের দিকে নজর দিচ্ছি। ছিঁচকে যেগুলো ঘটছে সেগুলো নিয়ন্ত্রণের মধ্যে আনার চেষ্টা করছি।”
অভিযানকে সংকুচিত করছেন কি না-এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্র সচিব বলেন- “না, তা নয়। এটাকে আমরা রেশনালাইজ করছি। কোনো জায়গায় হয়তো এতগুলো লোক পাঠানোর দরকার নেই, সেগুলো দেখছি। কোথায় কয়টা পেট্রোল হচ্ছে সেটা আমরা দেখছি।”
অপারেশন ডেভিল হান্টের নাম পরিবর্তন হচ্ছে, এ ধরনের কোনো সিদ্ধান্তের কথা জানা নেই বলেও জানান নাসিমুল গনি।
তিনি বলেন, “কোর কমিটিতে আমরা এই ধরনের (নাম পরিবর্তন) কোনো সিদ্ধান্ত নেইনি। নিয়মিত এ মিটিংটা হয় কাজকর্মের অগ্রগতি দেখার জন্য।”
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি এখন কেমন দেখছেন-জানতে চাইলে সিনিয়র সচিব বলেন, “আমি গতকাল ইফতার করেছি মোহাম্মদপুর থানায়। সেখানে গত ডিসেম্বর মাসে খুন হয়েছে দুটো। জানুয়ারি মাসে খুন হয়েছে একটি, গত ফেব্রুয়ারি মাসে একটি খুনও হয়নি। কিন্তু গত বছরের জুলাই এর আগে এখানে প্রতি মাসে দশটা করে খুন হতো।”
“এজন্য আমরা প্রতি সপ্তাহে পর্যালোচনা করি। যে ফোর্সের দরকার নেই, সেটা রেখে তো আমার লাভ নেই। একটা প্রসেস আছে। কোনো কিছুই তো আর সারাজীবন থাকে না। রোজা ও ঈদকে সামনে রেখে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নানা ধরনের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সেই অনুযায়ী অ্যাকশনে যাচ্ছে তারা,” বলেন তিনি।
এখনও মব চলছে, লালমাটিয়াতে দুইজন মেয়েকে হেনস্তা করা হয়েছে।এ বিষয়ে সিনিয়র সচিব বলেন, “মব অর্গানাইজডভাবে হয় না। কেউ একটা হুজুগ তুলে দেয়। মেয়েগুলো ওখানে অর্গানাইজড ওয়েতে বসেনি বলে আমার ধারণা। লোকগুলো যে সংগঠিত হয়ে সেখানে এসেছে তাও না। এগুলো তো আগে থেকে অনুমান করা সম্ভব না। আমাদের আরো একটু সময় লাগবে জাতিগতভাবে আরো একটু ওপরে যেতে। তখন এগুলো নিয়ে আর এত ঝামেলা হবে না।”
মবের ক্ষেত্রে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না, এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্র সচিব বলেন, “যেসব জায়গায় এ ঘটনাগুলো হচ্ছে, সেখানে যদি তথ্য-প্রমাণ থাকে, যেসব জায়গায় এগুলো নিয়ে সিরিয়াস ল অ্যান্ড অর্ডার সিচুয়েশন হয়, সেগুলো সংশ্লিষ্ট আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা অ্যাড্রেস করেন।”
“আমরা ছুটির দিনগুলোতেও বসে থাকি না। আমরা প্রতিদিন গড়ে ১২ থেকে ১৩ ঘণ্টা কাজ করি। আমাদের আন্তরিকতার কোনো ঘাটতি নেই। আমরা আমাদের চেষ্টার কোনো ত্রুটি রাখব না। এটুকু বলতে পারি, যাতে আগে যে অবস্থা ছিল তার থেকে আরো ভালো অবস্থায় যেতে পারি।”
ঢাকা/নঈমুদ্দীন/সাইফ