অভিনেতা সাইফ আলি খান গতকাল রাতে তার নিজ বাড়িতে দুষ্কৃতিকারীর আক্রমণে গুরুতর আহত হন। গাড়ি না পেয়ে সময় নষ্ট না করে ইব্রাহিম তার আহত বাবাকে একটি অটোরিকশায় করে লীলাবতী হাসপাতালে পৌঁছে দেন।

৫৪ বছর বয়সী সাইফকে ছয়টি ছুরিকাঘাত করা হয়, যার একটি ছিল তার মেরুদণ্ডের কাছে। রক্তক্ষরণরত অবস্থায় তাকে হাসপাতালের উদ্দেশ্যে নিয়ে যান তার বড় ছেলে, ২৩ বছর বয়সী অভিনেতা ইব্রাহিম আলি খান। হাসপাতালটি সাইফের বান্দ্রার বাড়ি থেকে মাত্র দুই কিলোমিটার দূরে। ঘটনার পর প্রকাশিত একটি ভিডিওতে সাইফের স্ত্রী এবং অভিনেত্রী কারিনা কাপুর খানকে বাড়ির কর্মীদের সঙ্গে কথা বলতে দেখা যায়। খবর- এনডিটিভি

সাইফের বাড়ির পক্ষ জানা যায়,  চুরির করার চেষ্টা থেকে এমন ঘটনা ঘটতে পারে। যদিও মুম্বাই পুলিশ আক্রমণকারীকে "অনুপ্রবেশকারী" হিসেবে উল্লেখ করেছে, তবে এখনো চুরির উদ্দেশ্য নিশ্চিত করেনি।

সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে আক্রমণকারী বাড়ির ভেতরে দুই ঘণ্টা আগে প্রবেশ করে লুকিয়ে ছিল। পুলিশের সন্দেহ, আক্রমণকারী বাড়ির এক কর্মচারীর সাহায্যে প্রবেশ করেছিল। ওই কর্মচারীকে বর্তমানে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

ঘটনার পর বলিউড মহলে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে। অভিনেত্রী পূজা ভাট জানিয়েছেন, তিনি আগে কখনো এতটা অনিরাপদ অনুভব করেননি এবং বান্দ্রায় পুলিশের নিরাপত্তা জোরদার করার আহ্বান জানিয়েছেন।

এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিরোধী দল সরকারকে কড়া সমালোচনা করেছে। তারা প্রশ্ন তুলেছে, যদি সেলিব্রিটিরাই নিরাপদ না থাকেন, তবে সাধারণ মুম্বইবাসীদের নিরাপত্তা কোথায়?
 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ছ র ক ঘ ত আহত

এছাড়াও পড়ুন:

দেখে এলাম প্রকৃতির স্বর্গরাজ্য

বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বদিকে অবস্থিত বান্দরবান জেলা। এই জেলা প্রকৃতিপ্রেমীদের জন্য যেন এক স্বর্গরাজ্য। এখানে প্রকৃতিতে রূপের পসরা সাজিয়েছে পাহাড়, ঝরনা, নদী। শহুরে কোলাহল ছেড়ে বান্দারবানে পৌঁছালে প্রকৃতি আর সেখানকার ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সংস্কৃতি ভ্রমণকারীর মনে অবারিত শান্তির পরশ বুলিয়ে দেয়। সম্প্রতি সহকর্মীদের সঙ্গে উপভোগ করে এলাম নীলাচলের নয়নাভিরাম সূর্যাস্ত এবং নীলগিরি কুয়াশায় মোড়া ভোরে ভাসমান মেঘের খেলা আমাদের স্মৃতিতে অমলিন হয়ে থাকবে।

শুরুতেই আমরা গিয়েছিলাম নীলাচল পর্যটন কেন্দ্রে। বান্দরবান শহরের কাছেই অবস্থিত এই পাহাড়ি স্থানটি প্রকৃতির অপার সৌন্দর্যের প্রতীক। পাহাড়ের চূড়ায় দাঁড়িয়ে নিচে তাকালে মনে হয় পৃথিবী হাতের মুঠোয়। সূর্য তখন ঢলে পড়ছে পশ্চিমে। আকাশে রঙের খেলা, কমলা আর লাল রঙের অপূর্ব মিশ্রণ। এ সময় বাতাসে এক ধরনের প্রশান্তি। দূর পাহাড়ের সারি আর নীলাচলের চারপাশে মেঘের আনাগোনা আমাদের মুগ্ধ করে। ‘ইকোসেন্স’ নামক একটি স্পটে বসে চা খাওয়ার অভিজ্ঞতা ছিল সত্যিই স্বর্গীয়। প্রকৃতির এই অনবদ্য দৃশ্য জানিয়ে দেয় জীবন কতটা সুন্দর ও উপভোগ্য। 

এরপর আমাদের গন্তব্য ছিল নীলগিরি, যা বান্দরবানের সবচেয়ে উঁচু পর্যটন কেন্দ্র। পথে পাহাড়ি আঁকাবাঁকা রাস্তা আমাদের ভ্রমণকে আরও দারুণ করে তোলে। নীলগিরির চূড়ায় পৌঁছে মেঘের ভেলায় ভেসে যাওয়ার মতো অনুভূতি হলো। মনে হলো যেন আকাশের কাছে চলে এসেছি। হিমেল হাওয়া আর মেঘের ভেতর দিয়ে হাঁটা সত্যিই এক অবিস্মরণীয় অভিজ্ঞতা।

নীলগিরি থেকে চিম্বুক যাওয়ার পথটা অসাধারণ। আঁকাবাঁকা পাহাড়ি রাস্তা ধরে যেতে যেতে চোখে পড়ে পাইন গাছের সারি। যা ভ্রমণকে আরও রোমাঞ্চকর করে তোলে। চিম্বুকের চূড়ায় দাঁড়িয়ে নিচের দিকে তাকালে মনে হয় সবুজ পাহাড়ের ঢেউ সমুদ্রের মতো দুলছে। ঠান্ডা বাতাসে ভেসে আসা প্রকৃতির মিষ্টি গন্ধ আর সূর্যের আলোয় ঝলমলে পাহাড়ি গ্রামের দৃশ্য এক অন্যরকম শান্তি দেয়। এখানকার স্থানীয় আদিবাসী সম্প্রদায়ের সরল জীবনযাত্রা আরও মুগ্ধ করে।চিম্বুকের সৌন্দর্য শুধু চোখ নয়, মনও ছুঁয়ে যায়। পাহাড়ের চূড়ায় দাঁড়িয়ে প্রকৃতির বিশালতা অনুভব করাই চিম্বুক ভ্রমণের সবচেয়ে স্মরণীয় অংশ।

সবশেষে আমরা যাই সাঙ্গু নদীর তীরে। পাহাড়ি স্রোতস্বিনী সাঙ্গু নদীতে নৌকা ভ্রমণ ছিল পুরো সফরের সবচেয়ে স্মরণীয় অংশ। পাহাড়ি নদীর শীতল স্রোতে ভেসে চলার সময় মনে হলো প্রকৃতির সাথে একাত্ম হয়ে গেছি। নদীর দুই পাশে সবুজের সমারোহ, পাহাড়ি গ্রামের চিত্র আর নদীর বয়ে চলার মৃদু শব্দ আর নদীর দুই পাড়ে স্থানীয় নৃ-গোষ্ঠীর কর্মব্যস্ততা দেখে চোখ জুড়িয়ে যায়। আমরা ছোট্ট নৌকায় নদীতে ভেসে প্রকৃতির নির্জনতা উপভোগ করি। সাঙ্গুর মায়াবী সৌন্দর্য যেন মনকে গভীর প্রশান্তি এনে দেয়।

এই ভ্রমণ শুধু পাহাড়, নদী আর প্রকৃতির সৌন্দর্য উপভোগের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল না এটি ছিল সহকর্মীদের সঙ্গে নতুন অভিজ্ঞতা আর বন্ধনের মুহূর্ত তৈরি করারও সুযোগ। বান্দরবানের এই সৌন্দর্যময় ভ্রমণ আমাকে বারবার মনে করিয়ে দেয়, প্রকৃতির মাঝে হারিয়ে যাওয়ার আনন্দে যে প্রশান্তি, তা আর কোথাও পাওয়া সম্ভব নয়।

ঢাকা/লিপি

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • রাজধানীতে ইনসাফ বারাকাহ হাসপাতালে হামলা, আহত ১১
  • দেখে এলাম প্রকৃতির স্বর্গরাজ্য