বড় বড় চোখে গোলরক্ষক স্টিফান ওর্তেগার কাঁধ ঝাঁকিয়ে নিজের রাগ ঝাড়ছিলেন পেপ গার্দিওলা। ২-০ গোলে এগিয়ে থেকে অতিরিক্ত সময়ের দুই মিনিটে ম্যাচ ২-২-এ সমতা। ব্রেন্টফোর্ডের বিপক্ষে এই ফল ঠিক মেনে নিতে পারছিলেন না সিটির স্প্যানিশ কোচ। সে কারণেই ম্যাচের পর গোলরক্ষককে ক্ষিপ্ত হয়ে কিছু বলছিলেন। কী বলছিলেন? সেটা দূর থেকে শোনা যায়নি।

তবে ব্রিটিশ মিডিয়াগুলো লিপ রিডারদের কাছ থেকে সেই না শোনা কথাগুলো শুনে নিয়েছে। ‘টেক দ্যাট ইয়েলো’ গার্দিওলা আসলে ওর্তেগাকে বোঝাতে চাচ্ছিলেন, শেষের দিকে কেন সময়ক্ষেপণ করোনি, প্রয়োজনে হলুদ কার্ড পেতে! আসলে ম্যাচ জয়ের জন্য পেপ এতটাই মরিয়া, নেতিবাচক কৌশল নিতেও তিনি এখন পিছপা হন না।

তাঁর আক্ষেপ, দলের রক্ষণ দুর্বল হয়ে পড়েছে কিছু গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়ের অনুপস্থিতিতে। আর সে কারণেই ব্রাজিলের নতুন এক সেনসেশন বছর উনিশের সেন্টার ব্যাক ভেটর রেইসকে ৪ কোটি ইউরো দিয়ে দলে ভেড়াচ্ছেন। বাংলাদেশি টাকায় যা প্রায় ৪৯৮ কোটি ৩৬ লাখ।

বিসিবি স্পোর্টসের খবর, এরই মধ্যে সাও পাওলো থেকে ম্যানচেস্টারের পথে রয়েছেন তিনি। বৃহস্পতিবার মেডিকেলে সম্পন্ন করে সেরে ফেলতে পারেন চুক্তির কাজ। আগামী রোববার ইপসউইচের বিপক্ষেই হয়তো পেপ গার্দিওলা তাঁকে মাঠে নামিয়ে দেবেন।

এদিন ব্রেন্টফোর্ডের মাঠে ৬৬ এবং ৭৮ মিনিটে ফোডেনের জোড়া গোলে এগিয়ে যায় সিটি। আগের মৌসুমেও এই মাঠে ফোডেন হ্যাটট্রিক করেছিলেন। গ্যালারি যখন ধরেই নিয়েছে জিততে চলেছে সিটি, তখনই ৮২ মিনিটে প্রথম গোল খেয়ে যান ওর্তেগা। সিটি কোচ গার্দিওলার দুঃখ, রক্ষণের কিছু ভুলে তাদের বারবার খেসারত দিতে হচ্ছে ‘আমাদের এখন ভিন্ন ধরনের ফুটবলার নিয়ে খেলতে হচ্ছে। শেষ পর্যন্ত আমরা পরিস্থিতি সামলাতে পারিনি। প্রতিপক্ষ ছয়-সাত ফুটবলার বক্সে রেখেছে। তারা আমাদের চেয়ে শক্তিশালী ছিল।’

আসলে ২০২৪-২৫ মৌসুমে সব ম্যাচ মিলিয়ে এরই মধ্যে ৪২ গোল হজম করে ফেলেছে সিটি। চোটের কারণে দুই সেন্টার ব্যাক জন স্টোনস ও রুবেন দিয়াজ মাঠের বাইরে। কাইল ওয়াকারও ক্লাব ছাড়ার কথা জানিয়ে দিয়েছেন। তাই রেইসের মতো একজন প্রতিভাবানকেই খুঁজছিলেন গার্দিওলা।

ব্রাজিলের ক্লাব পালমেইরাসের হয়ে মাঠ দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন এই রেইস। ব্রাজিলের অনূর্ধ্ব-১৬ ও ১৭ দলের হয়ে ১৬ ম্যাচ খেলেছেন। পালমেইরাসের হয়ে এরই মধ্যে ২২ ম্যাচ খেলেছেন যেখানে ১৮ ম্যাচেই ছিলেন শুরুর একাদশে। দুর্দান্ত ফুটবলশৈলীর এই ব্রাজিলিয়ানের দিকে রিয়াল মাদ্রিদেরও চোখ ছিল, কথা হচ্ছিল ম্যানইউর সঙ্গেও। কিন্তু তাদের সবাইকে টেক্কা দিয়েই অবশেষে রেইসকে পেয়েছে সিটি।

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

সিলেটে ছাত্রলীগের মিছিলের পর দুই আ.লীগ নেতার বাসায় হামলা

সিলেটে সকালে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ ঝটিকা মিছিল করার পর বিকাল ও সন্ধ্যায় আওয়ামী লীগের দুই নেতার এবং ছাত্রলীগের এক নেতারা বাসায় হামলা ও ভাঙচুর হয়েছে।

বুধবার (২ এপ্রিল) সন্ধ্যায় সিলেটে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এবং মৌলভীবাজার-২ (কুলাউড়া) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য  শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল এবং সিলেট সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীর বাসায় বিকালে হামলা হয়েছে। প্রায় একই সময়ে ৩২ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর ও সিলেট সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি রুহেল আহমদের বাসায়ও হামলা চালানো হয়েছে।

আরো পড়ুন:

নোয়াখালীতে বিনোদনকেন্দ্রে হামলা, পুলিশসহ আহত ৭

রাঙ্গুনিয়ায় আহত আ.লীগ নেতার মৃত্যু

হামলাকারীরা আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগ নেতাদের বাসার জিনিসপত্র ভাঙচুর করেছে।

সিলেট নগরীর শুভেচ্ছা আবাসিক এলাকায় অবস্থিত কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরীর (নাদেল) বাসভবনের ‘ফ্ল্যাট অ্যাপার্টমেন্টের কার্যালয়ে’ হামলা চালায় একদল মানুষ। তারা মিছিল নিয়ে তার বাসায় ঢুকে পড়েন।

প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় লোকজন সূত্রে জানা গেছে, বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে নগরের পাঠানটুলা এলাকায় আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীর বাসায় ৭০ থেকে ৮০টি মোটরসাইকেলে করে শতাধিক তরুণ-যুবক গিয়ে এ হামলা চালান। এ সময় হামলাকারীরা বাসায় ঢুকে আসবাবপত্র ভাঙচুরের পাশাপাশি লুটপাট চালান। বাসাটিতে আনোয়ারুজ্জামানের পরিবারের কেউ থাকেন না। দুজন তত্ত্বাবধায়ক বাসার দেখাশোনা করেন।

মেজরটিলা এলাকায় অবস্থিত ৩২ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর ও সিলেট সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি রুহেল আহমদের বাসায় হামলা চালায় দুর্বৃত্তদের একটি দল। সন্ধ্যা সাতটায় রুহেলের বাসায় হামলার সময় তাঁর মা ও বোন বাসায় ছিলেন বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

অবশ্য এসব হামলায় হতাহতের কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।

বুধবার সকাল থেকে সিলেট নগরীতে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের একটি মিছিলের ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। এরপর বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা মাঠে নামে। তারা ভিডিওতে দেখা যাওয়া চার-পাঁচজন মিছিলকারীকে ধরে পুলিশে হাতে তুলে দেয়।

প্রত্যক্ষদর্শীদের বর্ণনা অনুযায়ী, সকাল সাড়ে ৭টার দিকে ছাত্রলীগের ব্যানারে ৩০ থেকে ৪০ জন তরুণ নগরের ধোপাদিঘিরপাড় এলাকায় ঝটিকা মিছিল করেন। এতে ছাত্রদলের কিছুসংখ্যক নেতা-কর্মী বিক্ষুব্ধ হয়ে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের তিন নেতার বাড়িতে হামলা-ভাঙচুর চালান।

এয়ারপোর্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সৈয়দ আনিসুর রহমান বলেন, বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা নাদেলের বাসায় হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করেছেন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।

জালালাবাদ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ হারুনুর রশিদ চৌধুরী বলেন, হামলার খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। শুনেছি, বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা এই হামলা চালিয়েছে।

তিনি বলেন, মিছিলকারীদের চিহ্নিত করে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ