শরীয়তপুরে আদালতে এজলাস সংকটে ব্যাহত হচ্ছে বিচারিক কার্যক্রম। ২৩ বিচারকের বিপরীতে এজলাস আছে ১৫টি। জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের নিজস্ব ভবন না থাকায় জেলা প্রশাসনের ছয়টি আলাদা ভবনে ভাগাভাগি করে চলছে বিচারকাজ। এজলাস আর অফিস কক্ষ সংকটে দিন দিন বাড়ছে মামলাজট। এ নিয়ে চরম ভোগান্তিতে পড়ছেন বিচারপ্রার্থীসহ সংশ্লিষ্টরা। বরাদ্দ পেলে নতুন ভবন নির্মাণ করা হবে বলে জানিয়েছে গণপূর্ত বিভাগ। 

সংশ্লিষ্ট অফিস সূত্রে জানা গেছে, বিচারিক কার্যক্রম সম্পন্ন করার জন্য ১৯৯৪ সালে নির্মাণ করা হয়েছে চার তলা বিশিষ্ট শরীয়তপুর জেলা ও দায়রা জজ আদালত ভবন। এ ভবনে বিচারকদের জন্য এজলাস সংকুলান না হওয়ায় জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের একটি ভবন এবং নারী ও শিশু আদলতসহ অপর তিনটি টিনশেড ভবনে চলছে কার্যক্রম। 

সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে, একই কক্ষের মধ্যে একদিকে চলছে বিচারকাজ; অন্যদিকে চলছে সেরেস্তা, কম্পিউটার অপারেটর ও রেজিস্ট্রারদের দাপ্তরিক কার্যক্রম। একজন বিচারকের কাজ শেষ হলে একই স্থানে শুরু হচ্ছে অন্য বিচারকের কাজ। 

শরীয়তপুরে আদালতে প্রতিদিন অন্তত ৮০ থেকে ১০০টি মামলার শুনানি ও নিষ্পত্তি হচ্ছে।

শরীয়তপুর জেলা জজ আদালতের নাজির মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন বলেছেন, “নারী ও শিশু আদালত বসছে ভাঙাচোরা টিনশেড ভবনে। ছয় জন জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট টিনশেড ভবনের এজলাস শেয়ার করে কাজ করছেন। এতে নথিপত্র খুঁজে পাওয়ার পাশাপাশি বিচারের কাজে বিঘ্ন ঘটছে। নতুন একটি ভবন নির্মাণের জন্য জমি অধিগ্রহণ করা হলেও ভবন এখনো কেন হচ্ছে না, তা আমাদের জানা নেই। সরকারের এমন গুরুত্বপূর্ণ সেক্টরের কাজ সঠিক ও সুন্দরভাবে করার জন্য দ্রুত ভবন নির্মাণের অনুরোধ জানাই।”

শরীয়তপুর আইনজীবী সমিতির সভাপতি হানিফ মিয়া বলেছেন, “জরাজীর্ণ ভবনে বিচারপ্রার্থীদের সেবা দেওয়ার জন্য নেই পর্যাপ্ত কক্ষ। বিচারকরা পান না চাহিদামতো এজলাস। কক্ষের স্বল্পতা ও জায়গা ছোট হওয়ায় আইনজীবীসহ বিচারপ্রার্থীরা স্বস্তি বোধ করছেন না। দ্রুত ভবন নির্মাণের দাবি জানায় জেলা আইনজীবী সমিতি।”

শরীয়তপুর গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো.

মাহবুবুর রহমান বলেছেন, “স্থান সংকট থাকায় নতুন ভবনের প্রয়োজন। সিজিএম কোর্ট না থাকা জেলাগুলোর জন্য পরিকল্পনা কমিশনে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। অনুমোদন পেলে ভবন নির্মাণ করা হবে।”

ঢাকা/আকাশ/রফিক

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ভবন ন র ম ণ র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

‘ফ্যাসিস্ট বিচারপতি’দের অপসারণ দাবিতে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সমাবেশ

‘ফ্যাসিস্ট বিচারপতি’দের অপসারণের দাবিতে সমাবেশ করেছে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম। সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি ভবনের সামনে আজ সোমবার দুপুরে এই সমাবেশ হয়।

‘ফ্যাসিস্ট বিচারপতিদের অপসারণ দাবিতে আইনজীবী সমাবেশ’: জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম, সুপ্রিম কোর্ট—ব্যানারে ওই সমাবেশ হয়।

সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন। তিনি বলেন, ‘আমরা ভেবেছিলাম, হাইকোর্টের যাঁরা বেগম খালেদা জিয়াকে বাড়ি ছাড়া করেছিলেন, দীর্ঘদিন আটকে রেখে তাঁকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিয়েছিলেন, আপনারা এখনো কীভাবে বসে আছেন? আমরা তো চিন্তা করেছিলাম, এই যে ফ্যাসিস্টের দোসররা পালিয়েছে, সেই সঙ্গে আপনারাও চলে যাবেন; কিন্তু অত্যন্ত পরিতাপের বিষয়, আপনারা এখনো যাননি। আপনাদের জন্য আবার আইনজীবী ফোরামকে রাস্তায় দাঁড়াতে হয়েছে। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব নিজেরা নিজে থেকে পদত্যাগ করে চলে যান।’

ফোরামের মহাসচিব ও বিএনপির আইন বিষয়ক সম্পাদক আইনজীবী কায়সার কামাল বলেন, ‘পতিত ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা একদিনে ফ্যাসিস্টে পরিণত হননি। রাষ্ট্রের বিভিন্ন অঙ্গ তাকে ফ্যাসিস্টে পরিণত করতে কাজ করেছে প্রত্যক্ষভাবে। অনেক বিচারপতি নির্লজ্জভাবে দলীয় মতাদর্শকে ধারণ করে শেখ হাসিনার ফ্যাসিস্ট রেজিমকে প্রলম্বিত করার জন্য স্বেচ্ছায় স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে অনেক সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে রায়, তাকে কারাগারে প্রেরণ সব কিছু ছিল শেখ হাসিনার নির্দেশে, কিছু কিছু বিচারক সে কাজটা করেছিলেন।’

ফ্যাসিস্ট হাসিনা ৫ আগস্ট পালাতে বাধ্য হয়েছিলেন উল্লেখ করে কায়সার কামাল বলেন, ‘আজ এপ্রিল মাস শেষের পথে। আমরা আশা করেছিলাম, ধারণা করেছিলাম, সেসব বিচারক—যাঁরা নিজেরাও জানেন শেখ হাসিনার ফ্যাসিজমকে প্রলম্বিত করার জন্য দিনে–রাতে মেধা–মনন দিয়ে পরিশ্রম করেছেন, কোনো কোনো বিচারক স্বাধীনতার মহান ঘোষক শহীদ জিয়াকে তাদের রায়ে ডাকাত বলে সম্বোধন করেছিলেন, আমরা বলেছিলাম বিবেকের তাড়নায় স্বেচ্ছায় এই পবিত্র অঙ্গন থেকে তারা চলে যাবেন। দুঃখনজক হলেও সত্য তারা এখনো বাড়িতে যাননি; বরং কিছু কিছু বিচারক আরও প্রমোশনের আশায় বহাল তবিয়তে আছেন। অনতিবিলম্বে তাদের ব্যাপারে যেন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।’

জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সুপ্রিম কোর্ট ইউনিটের আহ্বায়ক জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এম বদরুদ্দোজা বাদলের সভাপতিত্বে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে অন্যদের মধ্যে ফোরামের কেন্দ্রীয় কমিটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব মো. রুহুল কুদ্দুস, যুগ্ম মহাসচিব মোহাম্মদ আলী, সাংগঠনিক সম্পাদক গাজী কামরুল ইসলাম এবং সুপ্রিম কোর্ট ইউনিটের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য জামিল আক্তার এলাহী ও মাহমুদুল আরেফিন বক্তব্য দেন। সুপ্রিম কোর্ট ইউনিটের সদস্য সচিব গাজী তৌহিদুল ইসলামের সঞ্চালনায় এ সমাবেশে বাংলাদেশ আইন সমিতির আহ্বায়ক মনির হোসেন, ফোরামের কেন্দ্রীয় কমিটির সহসম্পাদক মনিরুজ্জামান আসাদ, সহসাংগঠনিক সম্পাদক মোরশেদ আল মামুন ও মানবাধিকারবিষয়ক সম্পাদক মো. মাকসুদ উল্লাহ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মাগুরার শিশু ধর্ষণ-হত্যা মামলার চার্জ গঠন, ২৭ এপ্রিল সাক্ষ্যগ্রহণের দিন ধার্য
  • মামলাটি মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন ছিল: অধ্যাপক ইউনূসসহ ৭ আপিলকারীর আইনজীবী
  • অধ্যাপক ইউনূসসহ সাতজনের আপিল মঞ্জুর, দুদকের মামলা বাতিল
  • হত্যার ৩২ বছর পর রায়, ১ জনের যাবজ্জীবন
  • তদন্তে ‘অগ্রগতি’র কথা জানিয়ে সময় চাইল রাষ্ট্রপক্ষ
  • স্ত্রীর সঙ্গে কখনো ঝগড়া হয়নি অস্কারজয়ী অভিনেতার
  • রাজশাহীতে ভাই-বোনকে কুপিয়ে হত্যার মামলায় এক জনের মৃত্যুদণ্ড
  • পলকের সোয়েটার পাওয়া গেল
  • মৃত্যুদণ্ডের বিরুদ্ধে জামায়াত নেতা আজহারুল ইসলামের আপিল শুনানি আজ
  • ‘ফ্যাসিস্ট বিচারপতি’দের অপসারণ দাবিতে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সমাবেশ