ভারতের সেনাপ্রধান জেনারেল উপেন্দ্র দ্বিবেদী পাকিস্তানকে সন্ত্রাসবাদের 'এপিসেন্টার' হিসেবে উল্লেখ করার পর, পাকিস্তানের সেনাবাহিনী এই মন্তব্যের তীব্র সমালোচনা করেছে। বুধবার তার এই বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়ে একটি বিবৃতি দিয়েছে পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ দপ্তর (আইএসপিআর)। সেই সাথে প্রতিবেশী দেশের সেনাবাহিনীকে ‘রাজনীতি চর্চা’ থেকে মুক্ত থাকার আহ্বানও জানানো হয়েছে পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে।

সম্প্রতি নয়াদিল্লিতে এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে পাকিস্তানকে সন্ত্রাসবাদের ‘এপিসেন্টার’ উল্লেখ করে ভারতের সেনাপ্রধান বলেন, জম্মু ও কাশ্মিরে অস্থিরতা ও সন্ত্রাসী তৎপরতা উসকে দিচ্ছে পাকিস্তান। তিনি আরও বলেন, গত বছর ওই অঞ্চলে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর হাতে যেসব জঙ্গি নিহত হয়েছে, তাদের ৬০ শতাংশই পাকিস্তানের নাগরিক। সূত্র : জিও টিভি

আইএসপিআরের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “পাকিস্তানকে সন্ত্রাসবাদের এপিসেন্টার উল্লেখ করে যে বক্তব্য দিয়েছেন ভারতীয় সেনাবাহিনী, তা শুধু বাস্তবতা বিবর্জিতই নয়, বরং ভারতের অক্ষমতার বহিঃপ্রকাশ। যেখানে রাষ্ট্র জনগণের ওপর নিপীড়ন চালাচ্ছে, সেখানে জনগণের প্রতিবাদ-প্রতিরোধের জন্য প্রতিবেশী দেশের ওপর দোষ চাপানো দ্বিচারিতা ও কাপট্যের সেরা উদাহারণ।” 

আইএসপিআরের বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, “ভারতের বর্তমান সেনাপ্রধান যখন সেনা কর্মকর্তা হিসেবে জম্মু ও কাশ্মিরে কর্মরত ছিলেন, সে সময় কাশ্মিরিদের ওপর সবচেয়ে বেশি নির্যাতন-নিপীড়ন হয়েছে। সম্প্রতি তিনি যে বক্তব্য দিয়েছেন, তা পুরোপুরি রাজনৈতিক এবং ভারতের সেনাবাহিনীতে যে রাজনীতি ব্যাপকভাবে প্রবেশ করেছে— সেনাপ্রধানের বক্তব্য তারই প্রতিফলন।”

ভারতীয় সেনা ও নিরাপত্তা বাহিনী সন্ত্রাস দমনের নামে নিরস্ত্র কাশ্মিরিদের ওপর নিপীড়ন চালাচ্ছে— উল্লেখ করে আইএসপিআরের বিবিৃতিতে বলা হয়, “কাশ্মিরিরা আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার চায়। জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদেও রেজোল্যুশনের মাধ্যমে এ অধিকারকে স্বীকৃতি দিয়েছে। কাশ্মিরিদের ন্যায্য আন্দোলনকে ধূলিস্যাৎ করতেই জম্মু-কাশ্মিরে অভিযান চালাচ্ছে ভারতীয় সেনাবাহিনী।”

বিবৃতির শেষ পর্যায়ে বলা হয়, "একজন জ্যেষ্ঠ ভারতীয় সামরিক কর্মকর্তা পাকিস্তানের হেফাজতে আছেন, যিনি পাকিস্তানের ভেতরে নিরীহ বেসামরিক নাগরিকদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড পরিচালনা করার সময় হাতেনাতে ধরা পড়েছেন। এই গুরুতর সত্যটি ভারতীয় সেনাপ্রধান জেনারেল সহজেই উপেক্ষা করেছেন বলে মনে হচ্ছে।"

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: র ওপর

এছাড়াও পড়ুন:

ডিসেম্বরের মধ্যে স্থানীয় না সংসদ নির্বাচন হবে সেটা বিরাট প্রশ্ন: গয়েশ্বর চন্দ্র

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য বাবু গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, ‌‌‌‌কে কে যেন ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচনের কথা বলছে। এটা কতটুকু সত্য আমি জানি না। মাঝখানে জামায়াতে ইসলামী ঢুকে স্থানীয় সরকার নির্বাচন চায়। ডিসেম্বরের মধ্যে স্থানীয় সরকার নির্বাচন হবে, না জাতীয় সংসদ নির্বাচন হবে সেটা বিরাট প্রশ্ন। আমরা ইউনিয়ন পরিষদ, উপজেলা পরিষদ ও পৌরসভা নির্বাচনের জন্য আন্দোলন করিনি। আমরা আন্দোলন করেছি জনগণের ভোটের অধিকারের মধ্য দিয়ে স্বচ্ছতার সঙ্গে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের একটি পার্লামেন্ট, একটি সরকার। সেটি এখনও হয়নি। আমরা আন্দোলন করেছি একটি জনপ্রতিনিধিত্বমূলক সরকারের জন্য। জনগণের ভোটের অধিকার আদায়ের জন্য। মঙ্গলবার বিকেলে গাজীপুর জেলা শহরের রাজবাড়ি ময়দানে জেলা বিএনপির সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। 

তিনি বলেন, আমরা নির্বাচনের কথা শুনি না। সকাল-বিকাল সংস্কারের কথা শুনি। ১৭ বছর যাবৎ সংস্কারের কথা শুনছি। মইনুদ্দিন-ফখরুদ্দিন সংস্কার শুরু করেছে। সে সংস্কারের যা অসমাপ্ত আছে সেটা সমাপ্ত করার দায়িত্ব কি এ সরকার নিয়েছে কিনা আমি জানি না। আমরা ১৭ বছর ধরে আন্দোলন করছি নির্বাচনের জন্য। এটা নতুন কোনো দাবি না। এ নির্বাচনটা এখনও দেয়নি। 

গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, শান্তিপূর্ণ অবস্থায় আমরা একটি সঠিক নির্বাচন চাই। নিরপেক্ষ, নির্দলীয় নির্বাচন। যে নির্বাচনে জনগণ হাসতে হাসতে ভোট কেন্দ্রে যাবে। একটা উৎসবের মধ্যে যার যার ভোট সে সে দেবে। যার ভোট সে দেবে। যাকে খুশি তাকে দেবে এবং দিনের ভোট দিনে দেবে রাতে দেবে না। 

তিনি বলেন, নতুন রাজনৈতিক দল আত্মপ্রকাশ করবে শুক্রবার। সেটা ভালো। দলটা করে মাঠে নামেন আর আপনার দলের যারা মন্ত্রিসভায় আছেন তাদেরকে নামিয়ে আনেন। গাছেরটাও খাবেন আর নিচেরটাও খাবেন দুইটা এক সাথে খেতে পারবেন না। একটা খাবেন। হয় রাজনৈতিক দল করবেন রাস্তায় নামবেন আর না হয় সরকারেরটা খাচ্ছেন খান, চুপ করে বসে থাকেন। ডিক্লারেশন অব ৫ আগস্ট তাদের লেখাটা পড়লাম, কোনো জায়গায় মুক্তিযুদ্ধের কথাটা নেই। একাত্তরে নাকি জনযুদ্ধ হয়েছে, মুক্তিযুদ্ধ হয়নি। অর্থাৎ যারা ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধকে স্বীকার করে না তারা রাষ্ট্রীয়ভাবে রাষ্ট্রদ্রোহী। 

জেলা বিএনপির আহ্বায়ক সাবেক এমপি একেএম ফজলুল হক মিলনের সভাপতিত্বে সদস্য সচিব চৌধুরী ইশরাক আহমেদ সিদ্দিকীর সঞ্চালনায় সমাবেশে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় আরও বলেন, ড. ইউনুস বলেছেন, ছাত্ররা তাকে ক্ষমতায় এনেছে। উনি এখন ছাত্রদের খেদমত নিয়ে ব্যস্ত। জনগণ জাহান্নামে যাক। তাদের মাত্র দায়বদ্ধতা আছে ছাত্রদের কাছে। ছাত্রদের প্রতিনিধি ডানে বামে তিনজন বসিয়ে নিয়েছেন আর সারা রাত বসে তারা দল বানাচ্ছেন। এখন প্রশাসনে যাবেন, যেখানেই যাবেন সব আওয়ামী লীগ জামায়াত হয়ে গেছে। মনে করে জামায়াত ক্ষমতায় এসে গেছে। আজকে বর্তমান সরকারের প্রধান উপদেষ্টা এবং সকল উপদেষ্টার কাছে বিনীতভাবে বলবো, জনগণের আকাঙ্খা এবং প্রত্যাশার বাইরে আপনারা পথ চললে আপনারা হোঁচট খেতে পারেন। 

সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক কাজী ছাইয়্যেদুল আলম বাবুল, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য ওমর ফারুক শাফিন, জেলা বিএনপির যুগ্ন আহবায়ক  অধ্যাপক ডা. রফিকুল ইসলাম বাচ্চু, শাহ রিয়াজুল হান্নান, আক্তারুল আলম মাস্টার, আবু তাহের মুসল্লী, বিল্লাল হোসেন বেপারী প্রমুখ।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে গয়েশ্বর রায় আরও বলেন, ২৪ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট ছাত্ররা কোটা বাতিলের দাবিতে নেমেছিল আমরা তাদের প্রথম দিনই নৈতিক সমর্থন দিয়েছি। তারপর আমরা সর্বাত্বক সমর্থন দিয়েছি। তারপর আমরা ছদ্ববেশে সে আন্দোলনে ঢুকে গেছি। জুলাই বিপ্লবের বিজয়ের ফসলের শিরোপা তোমাদের মাথায় তুলে দিয়েছি। অবহেলা, অযত্ন, অহংকার বোধে সে শিরোপা যেন মাথা থেকে না পড়ে যায়। তোমরা কষ্ট না পেলেও জাতি কষ্ট পাবে। সম্প্রতি যে অহমিকাসুলভ কথাবার্তা, রাজনৈতিক নেতাদের নিয়ে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করা এটা অত্যন্ত গর্হিত কাজ। তিনি বলেন, এ মূহূর্তে দরকার নির্বাচিত সরকার। নির্বাচিত সরকার ছাড়া জনগণের কাছে কেউ দায়বদ্ধ থাকে না। বর্তমান অন্তবর্তীকালীন সরকার জনগণের কাছে দায়বদ্ধ না। 
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • জাতীয় নাগরিক পার্টির লক্ষ্য ‘সেকেন্ড রিপাবলিক’ প্রতিষ্ঠা
  • এমন রাজনীতি চাই যেখানে পারিবারিক আধিপত্য থাকবে না: তাসনিম জারা
  • যারা জুলুম নির্যাতনের শিকার হয়েছেন তাদেরকে মূল্যায়ন করবো : সজল
  • দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি রোধের দাবিতে রাজশাহীতে জামায়াতের বিক্ষোভ
  • টাঙ্গাইলে বাড়ছে খুন-ডাকাতি-চুরি
  • বাংলাদেশের শত্রুরা এখনো গভীর চক্রান্তে লিপ্ত রয়েছে: খালেদা জিয়া
  • রাজনীতিতে নতুনত্বের ছাপ প্রত্যাশিত
  • সরকার টিকে আছে জনগণের সমর্থনে: আসিফ মাহমুদ
  • জাতীয় নির্বাচনমুখী যাত্রা শুরু হচ্ছে বিএনপির
  • ডিসেম্বরের মধ্যে স্থানীয় না সংসদ নির্বাচন হবে সেটা বিরাট প্রশ্ন: গয়েশ্বর চন্দ্র