ইউএনওর পদক্ষেপে নিরাপদ ৫ হাওরের বোরো জমি
Published: 16th, January 2025 GMT
তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বিচক্ষণতায় জলাবদ্ধতার সংকট থেকে রক্ষা পেল পাঁচটি হাওর। এতে চাষাবাদের জন্য উপযুক্ত পরিবেশ সৃষ্টির পাশাপাশি ফসলের নিরাপত্তা নিশ্চিত হলো।
বুধবার ইউএনও মো. আবুল হাসেমের নির্দেশে বনুয়া হাওরের নাওটানা এলাকার দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রকল্প কমিটি এক্সক্যাভেটর দিয়ে বাঁধ কেটে নালা তৈরি করে দেয়। এতে করে সংশ্লিষ্ট এলাকার হাওরের পানি দ্রুত পাটলাই নদীতে নেমে যাচ্ছে।
স্থানীয় কৃষক ও প্রশাসনিক দপ্তরের সংশ্লিষ্টদের ভাষ্যমতে, ইউএনওর বিচক্ষণ সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে জলাবদ্ধতা সংকট থেকে উপজেলা-সংলগ্ন বনুয়া, পালই, কাটুয়াউরা, ছিরিয়ারগাঁও ও নানদিয়ার হাওর মুক্ত হয়েছে। তাঁর পরিকল্পনা মতো পানি অপসারণের ব্যবস্থা করায় কোনো অংশের ক্ষতিও হয়নি।
স্থানীয় কয়েকজন বোরো চাষি জানান, জলাবদ্ধতার কারণে হাওরপারের কৃষকরা নিজেদের জমিতে বোরো চাষ করতে পারছিলেন না। পানির কারণে বোরো ধান রোপণের উপযুক্ত সময় পেরিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা বাড়ায় বিষয়টি ইউএনওকে অবগত করেন কৃষকরা। পরে ইউএনও ওই এলাকার বিস্তারিত অবস্থান সম্পর্কে তথ্য যাচাই করে করণীয় নির্দেশনা দেন। পরে বাঁধের কাজের দায়িত্বে থাকা কমিটি তা বাস্তবায়ন করেন।
গদবনুয়া হাওরপারের কৃষক আবুল ফজল জানান, ইউএনওর নির্দেশে বনুয়া হাওরের নাওটানা বাঁধটি কেটে দেওয়া হয়। এতে হাওরের পানি দ্রুত সরে যায়। কৃষকরা দুই হাজার একর জমিতে এখন নিরাপদে বোরো ধান চাষ করতে পারবেন।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপসহকারী প্রকৌশলী মনির হোসেন জানান, নাওটানা বাঁধটি কেটে বাঁওড়ের পানি অপসারণের ব্যবস্থা করার নির্দেশ দেন ইউএনও। সেভাবেই কাজ করা হয়েছে। পানি দ্রুত সরে যাচ্ছে।
ইউএনও আবুল হাসেম জানান, এমন পরিস্থিতি হাওর এলাকায় প্রায়ই হয়। কৃষকের সমস্যা সমাধানে সিদ্ধান্ত ও পদক্ষেপ দেরি হলে ফসলের আবাদ বিঘ্নিত হবে। নাওটানা বাঁধটি কেটে পানি সরানোর সিদ্ধান্ত নেওয়ায় পাঁচটি হাওরের দুই হাজার একর জমি চাষের উপযুক্ত হয়ে উঠেছে।
মাটিয়ান হাওরের বাঁধ এলাকার কাজের ব্যাপারে ইউএনও জানান, পানি থাকায় ২৯টি বাঁধের কাজ করা যাচ্ছিল না। এখন দ্রুত কাজ শুরু করে নির্ধারিত সময়ের শেষ করা হবে।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
রূপগঞ্জে আড়ত দখল নিয়ে সংঘর্ষ, গুলিবিদ্ধ ৬
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে একটি পাইকারি আড়তের দখল নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। এতে উভয় পক্ষের ছয়জন গুলিবিদ্ধসহ অন্তত ২৫ জন আহত হয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। সংঘর্ষ চলাকালে ১১টি যানবাহন অগ্নিসংযোগ করা হয়। পরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) সকাল সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলার সাওঘাট এলাকায় সংঘর্ষ হয়। আহতদের ঢাকা মেডিকেলসহ বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়েছে।
নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার (গ-সার্কেল) মো. মেহেদী ইসলাম বলেন, “দুই পক্ষের সংঘর্ষে কয়েকজন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন বলে শুনেছি। ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। জড়িতদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।”
আরো পড়ুন:
সাতক্ষীরায় বিএনপির ২ পক্ষের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, ১৪৪ ধারা জারি
৫ আগস্টের শক্তির মধ্যে ভুল বোঝাবুঝির কথা স্বীকার আদিলুরের
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক ব্যবসায়ী জানান, সাওঘাট এলাকায় বিসমিল্লাহ আড়তের দখল নিয়ে সেলিম প্রধান ও মজিবুরের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছে। বিষয়টি নিয়ে উত্তেজনা সৃষ্টি হলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কয়েকদিন আগে দুই পক্ষের লোকজনকে ডেকে আড়ত থেকে টাকা তুলতে নিষেধ করেন।
আজ সকাল সাড়ে ১১টার দিকে মজিবুরের লোকজন সেলিম প্রধানের অফিসের সামনে দিয়ে যাচ্ছিলেন। এসময় সেলিমের লোকজন তাদের লক্ষ্য করে ইট, ককটেল ও গুলিবর্ষণ করে। এক পর্যায়ে দুই পক্ষের লোকজন সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এতে স্বপন, রাজু, আলামিন, বাবু, রফিক ও সাগর নামে ছয়জন গুলিবিদ্ধসহ কমপক্ষে ২৫ জন আহত হন। পুরো এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সংঘর্ষের সময় সেলিম প্রধানের বাড়িতে হামলা, ভাঙচুরসহ ১০টি মোটরসাইকেল ও একটি প্রাইভেটকার আগুনে পুড়িয়ে দেয় প্রতিপক্ষের লোকজন। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের একটি ইউনিট গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে এবং আহতদের ঢাকা মেডিকেলসহ বিভিন্ন হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করে। রূপগঞ্জ থানা পুলিশ ও সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থতি নিয়ন্ত্রণে আনে। ঘটনাস্থল থেকে ১১টি গুলির খোসা ও একটি তাজা ককটেলসহ বিভিন্ন আলামত জব্দ করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
রূপগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) সাইফুল ইসলাম বলেন, “সংঘর্ষের খবর পেয়ে উপজেলা প্রশাসন, পুলিশ ও সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থতি নিয়ন্ত্রণে এনেছে।”
ঢাকা/অনিক/মাসুদ