বিএনপি-জামায়াতকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা বন্ধের আহ্বান মামুনুল হকের
Published: 16th, January 2025 GMT
বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির আল্লামা মোহাম্মদ মামুনুল হক বলেছেন, “ফ্যাসিবাদ মোকাবিলায় রাজপথে যে ঐক্য গড়ে উঠেছে, এ ঐক্যের বিরুদ্ধে কেউ ভূমিকা পালন করলে তাকে জবাবদিহি করতে হবে। যত দ্রুত সম্ভব প্রধান দুই দল বিএনপি ও জামায়াত ইসলামীর পারস্পরিক প্রতিদ্বন্দ্বিতা বন্ধ করুন। নিজেরা নিজেদের মধ্যে বাদানুবাদে জড়িয়ে পড়ছেন, এর সুবাদে ফ্যাসিবাদ আবারও বাংলাদেশে পুর্নবাসিত হলে আপনাদের বাংলাদেশের জনগণ কখনও ক্ষমা করবে না।”
বুধবার (১৫ জানুয়ারি) রাত ৯ টায় শহরের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার মাঠে পটুয়াখালী খেলাফত মজলিস আয়োজিত গণসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
মামুনুল হক আরও বলেন, “বাংলাদেশ রক্ষা ও বিদেশি আধিপত্যবাদ, ফ্যাসিবাদি অপশক্তি রুখে দিতে রাজপথে গড়ে ওঠা ঐক্য আরও দীর্ঘদিন সমুন্নত রাখতে হবে। শুধু বাংলাদেশ নয়-ভারতীয় উপমহাদেশেও একশ বছর খুঁজলেও শেখ হাসিনার মতো এতো ভিরু নেতা পাওয়া যাবে না। সে শুধু দেশের না আওয়ামী লীগেরও বারটা বাজিয়ে গেছে। এমন কাণ্ড ঘটিয়েছে এদেশে আর কেউ আওয়ামী লীগের নাম নিয়ে মাথা উঁচু করে রাজনীতি করতে পারবে না। দল ও নেতা কর্মীদের ভালোবাসলে হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ বা দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মতো কারাবরণ করতো, দেশ ছেড়ে পালিয়ে যেত না। শেখ হাসিনা চেয়েছিলো বাংলাদেশকে বিভক্ত করতে। রাজনীতির দর্শন ছিলো মুক্তিযুদ্ধের পক্ষ বিপক্ষ বলে বিভাজন রাজনীতি। তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করলেই তাদেরকে রাজাকারের ট্যাগ দিয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের কমান্ডার শহিদ জিয়াউর রহমানকেও রাজাকার ট্যাগ দিয়েছিলো। শেখ হাসিনার পক্ষে থাকলে মুক্তিযোদ্ধা আর বিপক্ষে গেলে রাজাকার।”
তিনি বলেন, “বাংলাদেশে ধর্ম নিরপেক্ষ মতবাদ সংবিধান থেকে বাতিল করে আল্লাহর উপর অবিচল আস্থা এবং রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। দেশে যে সকল গণহত্যা অন্যায় অবিচার হয়েছে তার বিচার ও শাস্তি নিশ্চিত করাসহ পাচারকৃত অর্থ ফিরিয়ে এনে দেশের মানুষের কল্যাণে ব্যয় করা এবং দেশ সংস্কার পূর্বক সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য অন্তবর্তীকালীন সরকারের প্রতি আহবান জানাচ্ছি।”
এছাড়া সমাবেশে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন ও শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের আন্দোলনের সময় ঘটে যাওয়া গণহত্যার বিচার দাবি জানান খেলাফল মজলিসের নেতারা।
খেলাফত মজলিস পটুয়াখালী জেলা শাখার সভাপতি মাওলানা আব্বাস আলীর সভাপতিত্বে সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের কেন্দ্রীয় মহাসচিব মাওলানা জালাল উদ্দীন।
সমাবেশে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের কেন্দ্রীয় জেলা এবং উপজেলা নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
ঢাকা/ইমরান/টিপু
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
আ. লীগের হরতাল-অবরোধ ঘিরে কঠোর হবে সরকার: প্রেস সচিব
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেছেন, আওয়ামী লীগ যদি গণহত্যা, হত্যাকাণ্ড ও দুর্নীতির জন্য ক্ষমা না চায়, যতক্ষণ না তাদের দোষী নেতাকর্মীদের বিচারের মুখোমুখি না হয় এবং যতদিন পর্যন্ত দলটির বর্তমান নেতৃত্ব ফ্যাসিবাদী আদর্শ থেকে বের হয়ে না আসে ততক্ষণ পর্যন্ত তাদের কোনো কর্মসূচি পালন করতে দেওয়া সম্ভব না।
তিনি প্রশ্ন রাখেন, মিত্রবাহিনী কি নাৎসিদের প্রতিবাদ করতে দিয়েছিল?
ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ আগামী ফেব্রুয়ারি মাসের শুরু থেকে হরতাল, অবরোধ ও বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘোষণার পরদিন নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পোস্টে এ কথা জানান প্রেস সচিব।
পোস্টে তিনি লিখেন, দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে অন্তর্বর্তী সরকার কোনো ন্যায়সঙ্গত প্রতিবাদ বন্ধ করেনি। গত সাড়ে পাঁচ মাসে শুধুমাত্র ঢাকাতেই অন্তত ১৩৬টি প্রতিবাদ হয়েছে। এর কিছু প্রতিবাদ ব্যাপক যানজটের কারণ হয়েছে। তবুও, অন্তর্বর্তী সরকার কখনো প্রতিবাদে কোনো বিধিনিষেধ আরোপ করেনি।
জুলাই অগাস্টের হত্যাকাণ্ডের উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, জুলাই ও আগস্ট মাসের ভিডিও ফুটেজ স্পষ্টভাবে দেখায় যে, আওয়ামী লীগের কর্মীরা শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদকারীদের হত্যাকাণ্ডে জড়িত। শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগই জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত গণহত্যা, হত্যাকাণ্ড ও সহিংসতার জন্য দায়ী। তিনি প্রশ্ন রাখেন ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগ দলকে কি প্রতিবাদের সুযোগ দেওয়া উচিত?
প্রেস সচিব লিখেন, বিশ্বের কোনো দেশই খুনি ও দুর্নীতিবাজদের পুনরায় ক্ষমতায় ফিরে আসার সুযোগ দেয় না। অন্তর্বর্তী সরকারও দেশের জনগণের ইচ্ছার প্রতিনিধিত্ব করে এবং হত্যাকারীদের নেতৃত্বে যে কোনো প্রতিবাদকে জনগণ প্রত্যাখ্যান করবে। আমরা দেশকে সহিংসতার দিকে ঠেলে দিতে পারি না। আওয়ামী লীগ ও তাদের ব্যানারে অন্য কেউ অবৈধ প্রতিবাদ করতে চাইলে আইন অনুযায়ী কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সূত্র: বিসিসি