বরিশালের উজিরপুর উপজেলা বিএনপির কার্যালয়ে পাঁচ বছর আগে অগ্নিসংযোগের মামলায় দলটির চারজনকে আসামি করা হয়েছে। তবে এ মামলা সম্পর্কে কিছুই জানেন না উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদকসহ দায়িত্বশীল নেতারা।

গত ৩১ জানুয়ারি গুঠিয়া ইউনিয়ন বিএনপির ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সাধারণ সম্পাদক জাহিদ হোসেন উজিরপুর থানায় মামলাটি করেন। এতে আওয়ামী লীগের ৩৫ নেতাকর্মীর সঙ্গে জাসাসের জেলা সদস্য সচিব ও জিয়া শিশু-কিশোর মেলার আহ্বায়ক আহমেদুল কবির বিপ্লব মোল্লা, পৌর যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ইমরান বাবু, উপজেলা শ্রমিক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক খোকন ডাকুয়া ও সাবেক ছাত্রদল নেতা তাওহিদুল ইসলাম লাবিদকে আসামি করা হয়েছে।

এসব নেতার দাবি, তারা দলের মধ্যে ষড়যন্ত্রের শিকার। নাম উল্লেখ না করলেও এ মামলার নেপথ্যে উপজেলা বিএনপির সভাপতি সরদার শরফুদ্দিন সান্টুকে ইঙ্গিত করেছেন তারা। মামলার বাদী ও সান্টুর বাড়ি একই ইউনিয়নে।

জানা যায়, সান্টু আগামী নির্বাচনে বরিশাল-২ (উজিরপুর-বানারীপাড়া) আসনে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী। আসামি চারজন দলের আরেক মনোনয়নপ্রত্যাশী কাজী রওনকুল ইসলাম টিপুর অনুসারী।

এজাহারে বলা হয়, ২০২০ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি রাত ১০টা থেকে ১১টার মধ্যে উজিরপুর শহরের কার্যালয়ে ভাঙচুর শেষে আগুন দেওয়া হয়। এজাহারে উল্লেখ ৩৯ জনসহ অজ্ঞাতপরিচয়ের অন্তত ৯০ ব্যক্তি এ হামলা করেন। লাবিদ ও বিপ্লব মোল্লা পিস্তল এবং শটগান দিয়ে গুলি করেন, ককটেল বিস্ফোরণ ঘটান। খোকন ডাকুয়া জিয়াউর রহমান ও খালেদা জিয়ার ছবি ভাঙচুর করেন।

জানতে চাইলে বিপ্লব মোল্লা বলেন, ‘এর চেয়ে লজ্জার কিছু হতে পারে না। হাইকমান্ডের তদন্ত করা উচিত কার ইন্ধনে মামলা করে দলে বিভাজন সৃষ্টি করা হচ্ছে। বাদীকে উপজেলা বিএনপির কেউ চেনে না।’ 

ইমরান বাবু ও লাবিদ বলেন, ‘গত ১৫ বছর আমরা আওয়ামী লীগের হামলা-মামলায় হয়রানির শিকার হয়েছি। আমাদের দলের উপজেলার এক শীর্ষ নেতার অনুগত না হওয়ায় তিনি মামলাটি করিয়েছেন।’

মামলার ১ নম্বর সাক্ষী উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব হুমায়ুন বলেন, ‘বাদীকে আমি চিনি না। মামলার পর শুনেছি, আমাকে সাক্ষী রাখা হয়েছে। অভ্যন্তরীণ বিরোধের জেরে মামলাটি হয়েছে।’

বিএনপির কেন্দ্রীয় সদস্য কাজী রওনকুল ইসলাম টিপু বলেন, ‘গুঠিয়া ইউনিয়ন বিএনপি সভাপতি শাহীন হাওলাদার ও জাসাস নেতা বিপ্লব মোল্লার মধ্যে বিরোধ রয়েছে। এরই জেরে শাহিনের ইন্ধনে মামলাটি হয়েছে। ঘটনাটি ২০২০ সালের, সেখানে এখন কার্যালয় নেই। মামলার যৌক্তিকতা প্রশ্নবিদ্ধ।’

উপজেলার ঘটনায় ওয়ার্ডের নেতার মামলা প্রসঙ্গে গুঠিয়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি শাহীন হাওলাদার বলেন, ‘যে কেউ মামলা করার অধিকার রাখেন।’ এজাহারে জাহিদ মোবাইল নম্বরে ১২ ডিজিট উল্লেখ করেছেন। সঠিক নম্বর না পাওয়ায় কথা বলা সম্ভব হয়নি। শাহীনও দাবি করেন, তাঁর কাছে জাহিদের নম্বর নেই।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব এনপ বর শ ল ব এনপ র স উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

গণহত্যা মামলা: হাসিনার বিরুদ্ধে তদন্তের খসড়া রিপোর্ট প্রসিকিউশনে

জুলাই গণঅভ্যুত্থানের মধ্যে গণহত্যার অভিযোগের মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে তদন্তের খসড়া প্রতিবেদন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশনের হাতে এসেছে।

বুধবার (২ এপ্রিল) ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম এই বিষয়ে সাংবাদিকদের তথ্য দিয়েছেন।

তিনি বলেন, “একাধিকবার অপরাধ প্রমাণের তথ্য-উপাত্ত মিলেছে খসড়া তদন্ত রিপোর্টে। পার পাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। চূড়ান্ত তালিকা পেলে আমরা ব্যবস্থা নেব। তবে খসড়া তদন্ত প্রতিবেদনের ভিত্তিতে ফরমাল (আনুষ্ঠানিক) চার্জ গঠন প্রক্রিয়া শুরু হচ্ছে।”

আরো পড়ুন:

শেখ হাসিনাসহ ৭৩ জনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা

হাসিনা-রেহানা-জয়-পুতুলসহ ২০১ জনের নামে হত্যাচেষ্টা মামলার আবেদন

গত ২৭ মার্চ চিফ প্রসিকিউটর বলেছিলেন, ৫ আগস্ট রাজধানীর চাঁনখারপুলে পাঁচজনকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় তদন্ত প্রতিবেদনের খসড়া প্রসিকিউশনের হাতে এসেছে। এই প্রতিবেদন প্রস্তুত করে ঈদের পর ট্রাইব্যুনালে দাখিল করা হবে।২০২৪ সালে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মধ্যে ৫ আগস্ট রাজধানীর চাঁনখারপুলে গণহত্যা ও আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের গুলিতে দশম শ্রেণির ছাত্র আনাস হত্যার ঘটনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ২৫ জনের নামে ওই বছরের ২ অক্টোবর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ দায়ের করা হয়।

ঢাকা/মামুন/রাসেল

সম্পর্কিত নিবন্ধ