বহু স্তর বিপণন তথা মাল্টিলেভেল মার্কেটিং (এমএলএম) প্রতিষ্ঠান ডেসটিনির ট্রি প্লান্টেশন লিমিটেডের অর্থ আত্মসাৎ মামলায় গ্রুপটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) রফিকুল আমীন, কোম্পানির প্রেসিডেন্ট সাবেক সেনাপ্রধান এম হারুন-অর-রশীদসহ ১৯ জনের ১২ বছর কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। পাশাপাশি তাদের ৪ হাজার ৫১৫ কোটি টাকা অর্থদণ্ড দেওয়া হয়েছে। ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪-এর বিচারক রবিউল আলম গতকাল বুধবার এ রায় দেন। 

এদিকে রায়ের পর সাজার মেয়াদ শেষ হওয়ায় কারাগারে থেকে মুক্তি পেয়েছেন ডেসটিনির এমডি রফিকুল আমীন। গতকাল সন্ধ্যায় কেরানীগঞ্জে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে তাঁকে মুক্তি দেওয়া হয়। রফিকুলের বিরুদ্ধে আর কোনো মামলা না থাকায় তাঁকে সন্ধ্যা ৬টা ৩১ মিনিটে ছাড়া হয়। তাঁর আইনজীবী এহসানুল মাহবুব সমাজী সাংবাদিকদের জানান, রায়ের পর ১২ বছর পূর্ণ হওয়ায় রফিকুল আমীন মুক্তিলাভ করেন। তবে তাঁর স্ত্রী ফারাহ দিবার সাজার ১২ বছর পূর্ণ না হওয়ায় তিনি কারাগারে আছেন।

এর আগে ২০২২ সালের ১৫ মে অর্থ আত্মসাৎ ও পাচারের এক মামলায় রফিকুল আমীন, এম হারুন-অর-রশীদসহ ৪৬ আসামিকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেন আদালত।

আদালতে ট্রি প্লান্টেশন লিমিটেডের অর্থ আত্মসাৎ মামলায় দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পক্ষে মামলা পরিচালনা করেন পাবলিক প্রসিকিউটর মাহমুদ হোসেন জাহাঙ্গীর। রায়ের পর তিনি সাংবাদিকদের জানান, দণ্ডপ্রাপ্ত ১৯ জনের মধ্যে রফিকুল আমীন, মোহাম্মদ হোসেন ও হারুন-অর-রশীদকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। অন্যরা পলাতক। রায়ের পর আদালত তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন। 

কারাদণ্ড পাওয়া অন্য ১৭ জন হলেন– ডেসটিনির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ হোসেন, মোহাম্মদ গোফরানুল হক, মোহাম্মদ সাঈদ-উর-রহমান, মেজবাহ উদ্দিন, সৈয়দ সাজ্জাদ হোসেন, ইরফান আহমেদ, ফারাহ দিবা, জামসেদ আরা চৌধুরী, শেখ তৈয়েবুর রহমান, নেপাল চন্দ্র বিশ্বাস, জসীম উদ্দিন, জাকির হোসেন, এসএম আহসানুল কবির, জুবায়ের সোহেল, মোসাদ্দেক আলী, আবদুল মান্নান ও আবুল কালাম আজাদ। 

মামলার বিবরণে জানা যায়, ডেসটিনি মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটি ও ডেসটিনি ট্রি প্লান্টেশন লিমিটেডের নামে বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে তা আত্মসাৎ-পাচারের অভিযোগে ২০১২ সালের ৩১ জুলাই রফিকুলসহ ডেসটিনির কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে আলাদা দুটি মামলা হয়। রাজধানীর কলাবাগান থানায় এ মামলা করে দুদক। দুই মামলায় মোট ৪ হাজার ১১৯ কোটি ২৪ লাখ টাকা আত্মসাৎ ও পাচারের অভিযোগ আনা হয়। দুই বছর তদন্তের পর ২০১৪ সালের ৪ মে উভয় মামলায় আদালতে অভিযোগপত্র দেয় দুদক। মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটির মামলায় ৪৬ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়। ট্রি প্লান্টেশনের মামলায় অভিযোগপত্র দেওয়া হয় ১৯ জনের বিরুদ্ধে। দুই মামলায় মোট আসামি ৫৩ জন। রফিকুলসহ ১২ জনের নাম দুই মামলাতেই আছে। আসামিদের মধ্যে আগে থেকেই কারাগারে আছেন মোহাম্মদ হোসেন ও রফিকুল।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: র য় র পর

এছাড়াও পড়ুন:

টেকনাফে মুরগির টাকা নিয়ে বিরোধ, হামলায় ক্রেতা নিহত

কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার মুরগি বিক্রির বকেয়া টাকা আদায়কে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের ঘটনায় এক ক্রেতা নিহত হয়েছেন।

সোমবার (৩ মার্চ) দুপুরে উপজেলার হোয়াইক্যং ইউনিয়নের মনিরঘোনা মসজিদের সামনে এ ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছেন টেকনাফ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন।

নিহত দিলদার মিয়া (৪৮) টেকনাফের হোয়াইক্যং ইউনিয়নের মনিরঘোনা এলাকার আব্দুস সোবহানের ছেলে। তিনি মনিরঘোনা স্টেশনে মুরগির ব্যবসা করতেন।

আরো পড়ুন:

খাগড়াছড়িতে আঞ্চলিক দলের মধ্যে গোলাগুলি, গৃহবধূ নিহত

গাইবান্ধায় ট্রেনে কাটা পড়ে নিহত নারীর পরিচয় মিলেছে 

নিহতের স্বজন ও স্থানীয়দের বরাতে ওসি গিয়াস উদ্দিন জানান, কিছুদিন আগে একই এলাকার আবুল হাশেমের ছেলে আব্দুল হাকিম দিলদার মিয়ার দোকান থেকে বাকিতে মুরগি কেনেন। দিলদার মিয়া পাওনা টাকা আদায়ের জন্য কয়েকবার তাগাদা দিলেও আব্দুল হাকিম টাকা পরিশোধ করেননি।

সোমবার দুপুরে মনিরঘোনা মসজিদের সামনে আবারো পাওনা চাওয়াকে কেন্দ্র করে দিলদার মিয়া ও আব্দুল হাকিমের মধ্যে কথাকাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে আব্দুল হাকিম ও তার সঙ্গে থাকা লোকজন মিলে দিলদার মিয়াকে মারধর শুরু করেন। এতে তিনি গুরুতর আহত হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে উখিয়ার পালংখালী স্টেশনের একটি বেসরকারি ক্লিনিকে নিয়ে যান। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

ওসি মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন আরো জানান, ঘটনার পর থেকে আব্দুল হাকিমসহ অভিযুক্তরা পলাতক রয়েছে। তাদের গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান চলছে। নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।

ঢাকা/তারেকুর/বকুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ