মুন্সীগঞ্জে একটি তেলবাহী জাহাজ থেকে তিন কোটি টাকার ফার্নেস অয়েল লুটের ছয় দিনেও ডাকাতদের শনাক্ত করতে পারেনি পুলিশ। উদ্ধার হয়নি তেলও। তবে নৌ পুলিশ জানিয়েছে, লুণ্ঠিত ফার্নেস অয়েল উদ্ধার এবং ডাকাতদের গ্রেপ্তারে অভিযান চালাচ্ছে তারা।

মুন্সীগঞ্জের ধলেশ্বরী-শীতলক্ষ্যা মোহনায় ওটি বিন জামান-১ নামের তেলবাহী জাহাজের ৬ কর্মচারীকে জিম্মি করে ৩৫০ টন ফার্নেস অয়েল লুট করে ডাকাত দল। গত শুক্রবার সকাল সাড়ে ৬টার দিকে চর মুক্তারপুরের কাছে নদীতে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় সেদিনই মুন্সীগঞ্জ সদর থানায় মামলা করা হয়।

জানা গেছে, ওটি বিন জামান-১ জাহাজটি ৩৬০ দশমিক ০৩৬ টন ফার্নেস অয়েল নিয়ে নারায়ণগঞ্জের মদনগঞ্জের সামিট ঘাট থেকে গাজীপুরের কড্ডা পাওয়ার প্লান্টের উদ্দেশে রওনা হয়ে শুক্রবার ডাকাতের কবলে পড়ে। ইঞ্জিনচালিত একটি ট্রলারে করে ডাকাতদল পেছন দিক থেকে লাফিয়ে অয়েল ট্যাংকারে উঠে চালকসহ সবাইকে জিম্মি করে ফেলে। ডাকাতদল জাহাজের মাস্টার সহিদুল শিকদার (২৯), ইঞ্জিন ড্রাইভার জাকির হোসেন (৫০), সুকানি মোহাম্মদ কামাল (২৫), লস্কর মোহাম্মদ দিদার (৩৫), লস্কর মোহাম্মদ জসিম (৪৫) ও বাবুর্চি নিয়ামত উল্লাহকে (৫০) জাহাজের ক্যাবিনে নিয়ে কালো কাপড়ে মুখ ঢেকে প্লাস্টিকের টাই দিয়ে হাত বেঁধে ফেলে। এরপর জাহাজটি এক স্থানে থামিয়ে ফার্নেস অয়েল লুট করে ডাকাতরা। রাত ৮টার দিকে মেঘনা সেতুর কাছে পুলিশ ওয়েল ট্যাংকারটির সন্ধান পায়। পুলিশ কাছাকাছি যেতেই ডাকাত দল দ্রুত তাদের ট্রলারযোগে পালিয়ে যায়। পরে পুলিশ জাহাজে ঢুকে ছয়জনকে উদ্ধার করে।

পুলিশ জানায়, জাহাজটির মালিকানা প্রতিষ্ঠান কিংফিশার শিপিং লাইন্স। দেশীয় অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে কর্মচারীদের জিম্মি করে ডাকাতি করার অভিযোগে ওই প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজার (অপারেশন) ফজলে খোদা বাদী হয়ে অজ্ঞাত পরিচয় ৭-৮ জন ডাকাতকে আসামি করে মুন্সীগঞ্জ সদর থানায় মামলা করেন।

মুন্সীগঞ্জ সদর থানার ওসি এম সাইফুল আলম জানান, মামলাটি সদর থানায় রেকর্ড করা হয়েছে। যেহেতু এটি নৌপথের ঘটনা, তাই নৌ পুলিশ মামলার তদন্ত করছে।
মুন্সীগঞ্জের মুক্তারপুর নৌ পুলিশের ইনচার্জ লুৎফর রহমান জানান, লুণ্ঠিত ফার্নেস অয়েল উদ্ধার এবং ডাকাতদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে। তবে এখনও ডাকাতদের শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। জড়িতদের গ্রেপ্তার করতে পারলেই লুণ্ঠিত তেল উদ্ধার করা সম্ভব হবে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: সদর থ ন

এছাড়াও পড়ুন:

ইতালির কথা বলে লিবিয়ায় নিয়ে দুইজনকে গুলি করে হত্যা

ইতালির কথা বলে লিবিয়ায় নিয়ে ফরিদপুরের দুই যুবককে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। এমনকি হত্যার পর পরিবারের সদস্যদের হোয়াটসঅ্যাপে তাদের ছবি পাঠানো হয়। 

নিহত দুই যুবক হলেন- ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার ঘারুয়া ইউনিয়নের কুমারখালী গ্রামের মিন্টু হাওলাদারের ছেলে হৃদয় হাওলাদার (২৪) ও মজিবর হাওলাদারের ছেলে রাসেল হাওলাদার (২৬)। 
 
হৃদয়ের বাবা মিন্টু হাওলাদার বলেন, দু’মাস আগে স্থানীয় আবু তারা মাতুব্বর, আলমাছ ও আনোয়ারের মাধ্যমে ১৬ লাখ টাকা দিয়ে ছেলেকে বিদেশ পাঠাই। ছেলেকে প্রথমে দুবাই সেখান থেকে সৌদি আরব তারপর লিবিয়া নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে হৃদয়কে হত্যা করা হয়েছে।

হৃদয়ের বড় ভাই মোখলেছুর রহমান বলেন, ৪/৫ দিন ধরে হৃদয়ের কোন খোঁজ পাচ্ছিলাম না। দালালরা শুক্রবার দুপুরে আমার ভাইয়ের লাশের ছবি পাঠিয়েছে। ১৬ লাখ টাকা দেওয়ার পরও বিদেশ থেকে ফোন করে আরও টাকা দাবি করছিল পাচারচক্র। টাকা না দেওয়ায় ওরা আমার ভাইকে খুন করেছে। 

একই গ্রামের ফয়সাল হোসেন বলেন, রাসেল নামের আরও একজনকেও লিবিয়াতে হত্যা করা হয়েছে। ওরা একই গ্রামের বাসিন্দা। ওই মানবপাচার চক্র এভাবে মানুষকে জিম্মি করে টাকা আদায় করে কোটি কোটি টাকার মালিক হয়েছে। টাকা না দিলেই তাদের সাথে খারাপ কিছু ঘটানো হয়। কখনও নির্যাতন করে আবার কখনও হত্যা করে।

ফরিদপুরের ভাঙ্গা থানার ওসি মো. মোকসেদুর রহমান বলেন, ভাঙ্গার দুটি ছেলেকে লিবিয়ায় গুলি করে হত্যা করা হয়েছে বলে শুনেছি। তবে পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় এখনও লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়নি। ওই পরিবারের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করছি। তাদের সঙ্গে  আলোচনা করে দালালচক্রের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ