নানক ও শামীম ওসমানের বিরুদ্ধে দুদকের ২ মামলা
Published: 16th, January 2025 GMT
অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে সাবেক মন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক, তাঁর স্ত্রী; সাবেক সংসদ সদস্য শামীম ওসমান, তাঁর স্ত্রী ও পরিবারের অন্য সদস্যদের বিরুদ্ধে দুটি মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
দুদক কর্মকর্তা জালাল উদ্দিন আহাম্মদ বাদী হয়ে গতকাল বুধবার কমিশনের ঢাকা-১ ও সমন্বিত জেলা কার্যালয় নারায়ণগঞ্জে আলাদাভাবে মামলা দুটি করেন। গতকাল দুদক মহাপরিচালক ও মুখপাত্র মো.
এজাহার থেকে জানা গেছে, আসামিরা দুর্নীতির মাধ্যমে সাড়ে ৪শ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন। প্রথম মামলায় নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের আলোচিত সাবেক এমপি শামীম ওসমানের সঙ্গে তাঁর স্ত্রী সালমা ওসমানকে আসামি করা হয়েছে। সালমা ওসমান কে টেলিকমিউনিকেশন্স লিমিটেডের চেয়ারম্যানের দায়িত্বে আছেন। প্রতিষ্ঠানের এমডি তানভীর আহমেদকেও মামলায় আসামি করা হয়েছে। এজাহারে ২ কোটি ৫১ লাখ ৮৩ হাজার ৩৫৮ ডলার, দেশীয় মুদ্রায় ১৯৩ কোটি ৯১ লাখ ১৮ হাজার ৬০৩ টাকা পাচার ও আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়েছে।
এজাহারে বলা হয়, আসামিরা মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন-২০১২ এর ২(ক) (২) ধারা লঙ্ঘন করে বিটিআরসির আইজিডব্লিউ লাইসেন্সধারী অপারেটর হিসেবে ৯১ কোটি ৫০ লাখ ৯২ হাজার ৮৬৫ টাকা, আন্তর্জাতিক ইনকামিং কল মিনিটের মূল্য বাবদ অর্জিত ১৯৩ কোটি ৯১ লাখ ১৮ হাজার ৬০৩ টাকা মূল্যের ২ কোটি ৫১ লাখ ৮৩ হাজার ৩৫৮ ডলার পাচার করে অথবা বিদেশ থেকে ফেরত আনার যোগ্য বৈদেশিক মুদ্রা না এনে মানি লন্ডারিং অপরাধ করেছেন।
অন্যদিকে দ্বিতীয় মামলায় জাহাঙ্গীর কবির নানক, তাঁর স্ত্রী ও রাতুল টেলিকমের চেয়ারম্যান সৈয়দা আরজুমান বানু, তাঁর মেয়ে ও ওই প্রতিষ্ঠানের পরিচালক এস আমরীন রাখিকে আসামি করা হয়েছে।
এ মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন-২০১২ এর ২(ক) ধারা লঙ্ঘন করে ২৫৯ কোটি ৬২ লাখ ৫ হাজার ১৫৮ টাকা বা ৩ কোটি ৩২ লাখ ৮৪ হাজার ৬৮১ ডলার পাচার করে কিংবা দেশের স্বার্থে আনয়নযোগ্য বৈদেশিক মুদ্রা বিদেশ থেকে বাংলাদেশে না এনে অপরাধ হয়েছে। তারা মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন-২০১২ এর ৪(২) ও ৪(৩) ধারা এবং দণ্ডবিধির ১০৯ ধারায় অপরাধ করেছেন।
শামীম ওসমান ২০২৪ সালের জাতীয় নির্বাচনের হলফনামায় একজন ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচয় দেন। তাঁর মোট ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ৫টি। জ্বালানি তেল আমদানি পরিবহন ও সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স জেড এন করপোরেশন, জেড এন শিপিং লাইনস লিমিটেড, মাইশা এন্টারপ্রাইজ লিমিটেড, খান ব্রাদার্স ইনফোটেক ও উইসজম নিটিং মিলসকে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান হিসেবে উল্লেখ করেছেন। বিগত দিনে শামীম ওসমানের বিরুদ্ধে দুদকের দুটি মামলাসহ ১৭টি মামলা হয়েছিল। এর মধ্যে কয়েকটি মামলা হাইকোর্টে স্থগিত, কিছু মামলা রাষ্ট্র প্রত্যাহার করেছে এবং কয়েকটিতে তিনি বেকসুর খালাস পেয়েছেন।
সাবেক বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাব ও লেনদেন স্থগিত করা হয় গত ২২ আগস্ট। তাঁর বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগও অনুসন্ধান করা হচ্ছে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: শ ম ম ওসম ন কর ছ ন ব যবস
এছাড়াও পড়ুন:
স্ত্রীকে হত্যা করে লাশের পাশেই বসেছিলেন স্বামী
স্ত্রীকে গলা কেটে হত্যার পর ছুরি হাতে লাশের পাশেই বসেছিলেন স্বামী। পরে স্থানীয়রা তাঁকে আটক করে গণপিটুনি দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করেছে।
বুধবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারের হাইজাদী ইউনিয়নের নারান্দী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহত সুলেখা বেগম (৩৫) ওই গ্রামের কাপড় ব্যবসায়ী আব্দুর রব মিয়ার (৫০) স্ত্রী।
পুলিশ ও এলাকাবাসী জানায়, প্রায় ২০ বছর আগে উপজেলার হাইজাদী ইউনিয়নের টোটারবাগ গ্রামের নয়াপাড়া এলাকার আবদুল মিয়ার মেয়ে সুলেখার সঙ্গে একই ইউনিয়নের নারান্দী গ্রামের মৃত চান্দু মিয়ার ছেলে রবের বিয়ে হয়। স্ত্রীর সঙ্গে রবের পারিবারিক কলহ দীর্ঘদিনের। বুধবার সকালে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে তর্ক হয়। পরে সকালে নাশতা খেয়ে সুলেখা ঘুমিয়ে পড়লে রব তাঁকে গলা কেটে হত্যা করেন। এর পর ছুরি হাতে লাশের পাশেই তাঁকে বসে থাকতে দেখা যায়। এ সময় এলাকাবাসী রবকে গণপিটুনি দিয়ে ঘরে আটকে রাখে। খবর পেয়ে নিহত সুলেখার স্বজনরা রবকে ঘর থেকে বের করে হত্যার চেষ্টা করেন। পরে পুলিশ গিয়ে ঘটনার সুষ্ঠু বিচারের আশ্বাস দিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করে।
আবদুর রব মিয়ার দাবি, সুলেখা তাঁকে দীর্ঘদিন ধরে মেরে ফেলার পরিকল্পনা করেছেন। তাই তিনি সুলেখাকে হত্যা করেন। পুলিশের কাছে তিনি হত্যার দায় স্বীকার করেছেন।
আড়াইহাজার থানার ওসি এনায়েত হোসেন জানান, স্থানীয়দের মাধ্যমে খবর পেয়ে আবদুর রব মিয়াকে গ্রেপ্তার করে থানায় নেওয়া হয়েছে। সুলেখার লাশ ময়নাতদন্তের জন্য নারায়ণগঞ্জ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ব্যাপারে মামলার প্রক্রিয়া চলছে।