Samakal:
2025-04-23@13:20:01 GMT

মাঘের শীতেও নেই কাঁপাকাঁপি

Published: 16th, January 2025 GMT

মাঘের শীতেও নেই কাঁপাকাঁপি

পৌষ শেষে গতকাল বুধবার শুরু হয়েছে মাঘ মাস। প্রচলিত আছে, মাঘের শীতে বাঘ কাঁপে। তবে শীতের সেই আমেজ নেই রাজধানীসহ দেশের অধিকাংশ এলাকায়। অবশ্য উত্তরাঞ্চলের কিছু এলাকায় রাতে শীত অনুভূত হচ্ছে।

আবহাওয়াবিদরা বলছেন, আগামীকাল শুক্রবার পর্যন্ত শীতের অনুভূতিতে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তনের সম্ভাবনা কম। তবে শনিবার থেকে তাপমাত্রা কমে একটানা পাঁচ-ছয় দিন শীত কিছুটা বেশি অনুভূত হতে পারে। 

সারাদেশের মধ্যে ব্যতিক্রম শুধু পঞ্চগড়। গত দু’দিন ধরে এ জেলায় চলছে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ। সর্বনিম্ন তাপমাত্রা আবারও নেমেছে এককের ঘরে। গতকাল সকাল থেকেই ঘন কুয়াশার চাদরে ঢেকে ছিল গোটা এলাকা। তবে দুপুর ১২টার দিকে ঘন কুয়াশা সরিয়ে দেখা দেয় সূর্য। 

আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, মাঘের প্রথম দিন দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৯ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করেছে তেঁতুলিয়া আবহাওয়া অফিস। মঙ্গলবার এটি ছিল ৯ দশমিক ৬ ডিগ্রি। দিনের তাপমাত্রাও (সর্বোচ্চ তাপমাত্রা) কমে রেকর্ড হয়েছে ২৫ দশমিক ৫ ডিগ্রি। এর আগে ৯ জানুয়ারি মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৭ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড হয় এই তেঁতুলিয়াতেই। তবে রাজধানীতে এবার শীতের দেখা তেমন মেলেনি। গতকালও ঢাকায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। 

অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ হাফিজুর রহমান বলেন, আগামী দু-তিন দিন তাপমাত্রা বাড়া বা কমার তেমন উল্লেখযোগ্য প্রবণতা নেই। কখনও কিছুটা বাড়তে পারে, আবার কখনও কমতে পারে। তবে আগামী শনিবার থেকে দিনের তাপমাত্রা কমার একটা প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। ফলে তখন শীতের অনুভূতি বাড়তে পারে। কোনো কোনো অঞ্চলে শৈত্যপ্রবাহও হতে পারে। তবে শৈত্যপ্রবাহ সম্পর্কে এখনই নিশ্চিতভাবে বলা সম্ভব নয়। দেশের উত্তরাঞ্চলে কুয়াশা কিছুটা বেশি থাকতে পারে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: দশম ক

এছাড়াও পড়ুন:

লেনিন কেন এখনও জরুরি

আজ ২২ এপ্রিল, ভ্লাদিমির ইলিচ লেনিনের জন্মদিন। ১৯১৭ সালে সংঘটিত রুশ বিপ্লবের অগ্রনায়ক লেনিন ছিলেন মার্ক্সের সফল উত্তরাধিকারী। তিনি প্রতিষ্ঠা করেন ইতিহাসের প্রথম সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্র। একটি পশ্চাৎপদ পুঁজিবাদী দেশে বিপ্লব সংঘটনের পথ বের করেন তিনি। চিন্তা ও প্রয়োগের মেলবন্ধন ঘটানোর দক্ষতাই ছিল তাঁর সাফল্যের অন্যতম কারণ। মার্ক্স সমাজতান্ত্রিক বিপ্লবের কথা বলেন। কিন্তু রাশিয়ার মতো দেশে যেখানে পুঁজিবাদের বিকাশ ঘটেনি, সেখানে শ্রমিক শ্রেণির নেতৃত্বে গণতান্ত্রিক বিপ্লব করে নতুন পথ দেখালেন। লেনিনের এই গণতান্ত্রিক বিপ্লবের পথ ধরেই চীনসহ পিছিয়ে পড়া পুঁজিবাদী দেশে বিপ্লব হয়েছে। ইতিহাসের কোনো পর্বকেই লাফ দিয়ে ডিঙিয়ে যাওয়া যায় না। বিপ্লবকে ইতিহাসের ভেতর দিয়েই যেতে হয়– এটি ছিল লেনিনের শিক্ষা।  

লেনিন দেখিয়েছেন রাষ্ট্রযন্ত্র কোন প্রক্রিয়ায় বল প্রয়োগ করে টিকে থাকে এবং শাসক শ্রেণির স্বার্থ রক্ষা করে। তাঁর রাষ্ট্রচিন্তা পুঁজিবাদী রাষ্ট্রের ফ্যাসিস্ট রূপ বুঝতে সহায়তা করে। তিনি বল প্রয়োগের মাধ্যমে বুর্জোয়া রাষ্ট্রযন্ত্র উচ্ছেদের কথা বলেন। গ্রামসি বলেন, শুধু বল প্রয়োগ নয়; শাসক শ্রেণি সাংস্কৃতিক ও মতাদর্শিক আধিপত্য বজায় রাখার মধ্য দিয়েও টিকে থাকে। ব্যবস্থার পক্ষে সম্মতি উৎপাদন করে। ফুকোর মতে, ক্ষমতা শুধু রাষ্ট্রে কেন্দ্রীভূত নয়; সমাজের পরতে পরতে ছড়িয়ে থাকে। আধুনিক সমাজ শুধু বল প্রয়োগের মাধ্যমে শাসন করে না; তা মানুষের জীবন ও কর্তাসত্তার মনোজগৎ গঠনেরও নিয়ন্ত্রণ নেয়। ফুকো এর নাম  দিয়েছেন বায়োপলিটিকস–  জীবন ও মগজ দখল- নিয়ন্ত্রণের রাজনীতি। ফুকো ক্ষমতা কী করে কাজ করে তার বর্ণনা দিলেও ক্ষমতাকে কীভাবে প্রতিরোধ ও উচ্ছেদ করতে হয়, তা দেখাননি। সেটা দেখিয়েছেন লেনিন। তার মানে এই নয়, আমাদের বলশেভিক মডেলই অনুসরণ করতে হবে।

বাংলাদেশের রাষ্ট্র নিবর্তনমূলক ও দুর্নীতিবাজ। গণতন্ত্রের লোভ দেখানো নির্বাচন, উন্নয়ন, ধর্মরাষ্ট্র, স্বর্গ– এসব ফ্যান্টাসি তৈরি করে রেখেছে। এসব ফ্যান্টাসি ভাঙতে হবে। আমাদের মুক্তির বিকল্প বয়ান তৈরি করতে হবে। মানুষের কাছে সেটা তুলে ধরতে পারলে বর্তমান অবস্থার পরিবর্তন সম্ভব। বুর্জোয়া রাষ্ট্রের খোলনলচে না বদলে শুধু কিছু সংস্কার দিয়ে বিদ্যমান সংকটের সমাধান সম্ভব হবে না।
লেনিনের শিক্ষার একটা বড় দিক হলো, অসংগঠিত স্বতঃস্ফূর্ত আন্দোলন দিয়ে ব্যবস্থার অবসান ঘটানো যায় না। এ জন্য চাই বিপ্লবী মতাদর্শ ও সুসংগঠিত রাজনৈতিক সংগঠন। যাকে তিনি বলেছেন বিপ্লবী পার্টি। লড়াইকে তিনি স্বতঃস্ফূর্ততার ওপর ছেড়ে না দিয়ে সচেতন সংগঠিত রাজনৈতিক লড়াই চালানোর কথা বলেন। শুধু জীবনদান আর অভ্যুত্থান করলেই হবে না; সেই অভ্যুত্থানের রাজনীতি ও শ্রেণি প্রশ্নটি পরিষ্কার থাকতে হবে। অভ্যুত্থান-উত্তর পরিস্থিতির ওপর নিয়ন্ত্রণ রাখতে অভ্যুত্থানকারী শক্তির সংগঠন থাকতে হয়।  চব্বিশের অভ্যুত্থানে এর কোনোটাই নেই। নেই কোনো সুনির্দিষ্ট রাজনীতি ও শক্তিশালী সংগঠন। এ ধরনের ভয়ানক দুর্বলতার পরিণতিতে পর্বতের মূষিক প্রসব ঘটতে পারে। 

স্বৈরতান্ত্রিক জারের ভয়ানক নির্যাতনে লেনিনের জীবন কখনোই স্থির ছিল না। বন্দি ও পলাতক জীবন এবং নির্বাসনের মধ্যে স্ত্রী ক্রুপস্কায়াকে নিয়ে কেটেছে তাঁর জীবন। তবুও এক অমিত শক্তি নিয়ে তিনি অব্যাহত রেখেছেন বিপ্লবী কর্মযজ্ঞ। লিখেছেন অবিরাম ৫৫ খণ্ড।  বিতর্কে লিপ্ত থাকতে হয়েছে তাঁকে সারাক্ষণ দলের ভেতর ও বাইরে। অব্যাহতভাবে প্রকাশ করেছেন ইস্ক্রা পত্রিকা। এভাবে একদিন নতুন সূর্যের ভোর আসে ১৯১৭ সালে; অক্টোবর সমাজতান্ত্রিক বিপ্লবে। 
রুশ বিপ্লবের পরে বেশি দিন বাঁচেননি লেনিন। ১৯১৮ সালে আততায়ীর গুলিতে আহত হন। এরপর কখনোই পুরোপুরি সুস্থ হননি। ১৯২৪ সালে লেনিন মস্কো থেকে দূরে তাঁর নিজ গ্রাম গোর্কিতে মারা যান। 
১৯৪৮ সালে কার্ল মার্ক্স বলেছিলেন, ‘ইউরোপ ভূত দেখেছে; কমিউনিজমের ভূত।’ বিশ শতকজুড়ে  ইউরোপ ও আমেরিকাকে কমিউনিজমের এ ভূত তাড়িয়ে বেড়িয়েছে। সমাজতন্ত্র ধ্বংস করতে তারা চালিয়েছে কখনও সরাসরি যুদ্ধ, কখনও স্নায়ুযুদ্ধ। 

বামপন্থিদের ও সমাজতন্ত্রের বিরুদ্ধে সে যুদ্ধ এখনও জারি আছে। এ যুদ্ধে সমাজতান্ত্রিক শিবিরের আপাত পরাজয় হলেও তা নতুন এক অনিরুদ্ধ শক্তি নিয়ে আবারও ইতিহাসে আবির্ভূত হবে। পুঁজির শোষণ ও শাসনমুক্ত একটি সভ্য মানবিক সমাজ প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন দেখেছিলেন মার্ক্স ও লেনিন। সেটা এখনও আরাধ্য। তা অর্জনে লুটেরা পুঁজিতন্ত্রের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের কোনো বিকল্প নেই। এ সংগ্রামে লেনিন শুধু প্রাসঙ্গিক নন, জরুরিও বটে। লেনিনের জন্মদিনে তাঁর প্রতি আমাদের শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা। 

ড. আখতার সোবহান মাসরুর: লেখক ও নব্বইয়ের গণঅভ্যুত্থানের অন্যতম ছাত্রনেতা

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • নিজের যত্ন নিন
  • জনসমর্থন নেই-এমন কাজ করলে ব্যবস্থা: নেতাকর্মীকে তারেক রহমান
  • কীভাবে বুঝবেন আপনার ফ্যাটি লিভার
  • প্রস্রাবে প্রোটিন যাওয়া মানে কি কিডনি সমস্যা ?
  • লেনিন কেন এখনও জরুরি
  • নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের ‘বিতর্কিত সুপারিশ’ বাদ দেওয়ার আহ্বান এবি পার্টির।
  • দেশ ছাড়ছেন যুক্তরাষ্ট্রের ধনীরা
  • সঞ্চয়পত্র বিক্রির চেয়ে পরিশোধে ব্যয় বাড়বে ১২০০০ কোটি টাকা