চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির নতুন কমিটি চলতি মাসেই ঘোষণা হবে। বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের পর নেতৃত্বে ফিরতে মরিয়া আবু সুফিয়ান, এনামুল হক এনাম ও এস এম মামুন মিয়া।

২০১৯ সালের অক্টোবরে গঠিত কমিটিতে সুফিয়ান আহ্বায়ক ও সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক ছিলেন এনাম। আর কর্ণফুলী বিএনপির আহ্বায়ক ছিলেন মামুন। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত বছর ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার পতনের পর নগরীর কালুরঘাটের একটি ওয়্যার হাউস থেকে এস আলম গ্রুপের ১৪টি বিলাসবহুল গাড়ি বের করার ভিডিও ভাইরাল হয়। সুফিয়ান, এনাম ও মামুনের তদারকিতে গাড়িগুলো পার করার অভিযোগ এলে গত ১ সেপ্টেম্বর ৬৫ সদস্যের কমিটি ভেঙে দিয়ে তিনজনকে বহিষ্কার করে বিএনপি।

সূত্রের খবর, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপি কয়েকটি গ্রুপে বিভক্ত। নতুন কমিটি সামনে রেখে নতুন মেরূকরণ হচ্ছে। শীর্ষস্থানীয় পদ পেতে চেষ্টা চালাচ্ছেন বিভক্ত গ্রুপের সিনিয়র নেতারা। তারা হাইকমান্ডের কাছে সুফিয়ান, এনাম ও মামুনের অপকর্ম তুলে ধরছেন। এতে তিন নেতা ও তাদের বলয়ের নেতাকর্মী বিপাকে পড়েছেন। বিভক্তি আরও বাড়ছে। কমিটি ঘোষণার পর পদবঞ্চিতরা বড় ধরনের প্রতিক্রিয়া দেখাতে পারেন।

বিএনপির কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় একাধিক নেতা জানান, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি গঠনে কয়েকটি প্রস্তাবনা বিবেচনা করছে হাইকমান্ড। এর মধ্যে দলের সাবেক সহসভাপতি ইদ্রিছ মিয়াকে আহ্বায়ক, সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক আলী আব্বাসকে যুগ্ম আহ্বায়ক ও আনোয়ারা উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব লায়ন হেলাল উদ্দিনকে সদস্য সচিব করে সম্প্রতি একটি কমিটি ঘোষণার প্রস্তুতি নেয়। কিন্তু বিষয়টি জানাজানি হলে পদপ্রত্যাশী অন্যরা তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখান। ফলে কমিটি ঘোষণা আটকে যায়।

গত ২৫ ডিসেম্বর বহিষ্কারাদেশ তুলে নেওয়ার পর অনুসারীদের নিয়ে পুরোদমে মাঠে নেমেছেন এনাম। বড় একটি অংশ তাঁকে নতুন কমিটির আহ্বায়ক দেখতে চান। এনাম বলেন, ‘দলের দুঃসময়ে মাঠে ছিলাম। বিষয়টি দলের হাইকমান্ড ভালোই জানে। আশা করছি, আমাকে মূল্যায়ন করা হবে। যদিও একটি পক্ষ আমার ভাবমূর্তি ক্ষুণ্নের চেষ্টা করছে।’

জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক আলী আব্বাস ও জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি নাজিম উদ্দিন চৌধুরীকেও একই পদে চাইছেন পৃথক দুটি গ্রুপ। কর্ণফুলী উপজেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক মামুন মিয়াও পদটি পেতে চেষ্টা চালাচ্ছেন। দীর্ঘদিন পর সক্রিয় হয়েছেন পটিয়ার সাবেক এমপি গাজী শাহাজান জুয়েল। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সরাসরি কমিটির বিষয় তদারকি করছেন। তাঁর সঙ্গে আলোচনা করে কমিটি ঘোষণা করা হবে।

চট্টগ্রাম-৮ আসনে ২০১৮ সালে দলীয় মনোনয়ন পান আবু সুফিয়ান। পরে উপনির্বাচনেও অংশ নেন তিনি। বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের পর তিনিও মাঠে আছেন। অনুসারীদের নিয়ে সভা-সমাবেশ করছেন সুফিয়ান। এ আসনে নির্বাচন করতে আগ্রহী চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এরশাদ উল্লাহও। আবু সুফিয়ান বলেন, ‘চট্টগ্রাম নগর বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক থাকাকালে আমাকে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির দায়িত্ব দেওয়া হয়। আমি চেষ্টা করেছি, দল পুনর্গঠনে। এখন আমি দায়িত্ব নিতে আগ্রহী নই। তবে দল চাইলে ভিন্ন কথা।’

বিএনপির বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম বলেন, ‘দ্রুত দক্ষিণ জেলা বিএনপির নতুন কমিটি ঘোষণা করা হবে। ত্যাগী, পরীক্ষিত ও যোগ্য নেতাকর্মীকে কমিটিতে গুরুত্ব দেওয়া হবে।’

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব এনপ ব এনপ র স

এছাড়াও পড়ুন:

সামারিক শক্তিতে মিয়ানমারের চেয়ে ২ ধাপ এগিয়ে বাংলাদেশ

চলতি বছর সামরিক শক্তির দিক থেকে মিয়ানমারের চেয়ে দুই ধাপ এগিয়েছে বাংলাদেশ। চলতি সপ্তাহে সামরিক শক্তি পর্যবেক্ষক প্রতিষ্ঠান গ্লোবাল ফায়ার পাওয়ার প্রকাশিত সূচকে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

সংস্থাটি তাদের প্রতিবেদনে জানিয়েছে, এই র‌্যাংকিংয়ের ক্ষেত্রে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে সংশ্লিষ্ট রাষ্ট্রের সামরিক বাজেট। সেনাবাহিনীর আকার, নৌবাহিনী এবং বিমানবাহিনীর শক্তিকেও বিবেচনা করা হয়েছে সমীক্ষায়।

গ্লোবাল ফায়ারপাওয়ারের সূচক অনুযায়ী, বিশ্বে সামরিক শক্তির ক্ষেত্রে শীর্ষে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, এরপরে পরে রয়েছে রাশিয়া, চীন, ভারত ও দক্ষিণ কোরিয়া। পরমাণু শক্তিধর হলেও পাকিস্তানের অবস্থান ১২ নম্বরে। তালিকায় বাংলাদেশ রয়েছে ৩৫তম অবস্থানে। বাংলাদেশের আগে রয়েছে উত্তর কোরিয়া ও আর্জেন্টিনা। আর বাংলাদেশের প্রতিবেশী মিয়ানমার রয়েছে ৩৭তম অবস্থানে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যা ১৬ কোটির বেশি। এর মধ্যে প্রায় ৬ কোটি ৬১ লাখ মানুষ সামরিক বাহিনীতে যুক্ত হওয়ার যোগ্য। বাংলাদেশের সামরিক বাহিনীতে মোট সেনা সংখ্যা ১ লাখ ৬৩ হাজার। বাংলাদেশ বিমানবাহিনীতে রয়েছে ১৭ হাজার ৪০০ সদস্য এবং নৌবাহিনীতে রয়েছে ২৫ হাজার ১০০ সেনা। 

অন্যদিকে, মিয়ানমারের মোট জনসংখ্যা ৫ কোটি ৭৫ লাখ। এর মধ্যে প্রায় ২ কোটি ২০ লাখ মানুষ সামরিক বাহিনীতে যুক্ত হওয়ার যোগ্য। মিয়ানমারের সক্রিয় সৈন্য সংখ্যা ১ লাখ ৫০ হাজার। মিয়ানমারের রিজার্ভ সৈন্য রয়েছে ২০ হাজার। দেশটির বিমানবাহিনীতে রয়েছে ১৫ হাজার সদস্য এবং নৌবাহিনীতে রয়েছে ১৬ হাজার সেনা। 

ঢাকা/শাহেদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ