Samakal:
2025-04-24@16:47:17 GMT

জমির দাম বাড়ায় রেজিস্ট্রি বন্ধ

Published: 15th, January 2025 GMT

জমির দাম বাড়ায় রেজিস্ট্রি বন্ধ

নাটোরের লালপুরে মৌজার দাম বেড়ে যাওয়ায় জমি রেজিস্ট্রি বন্ধ রয়েছে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন জমি বেচাকেনায় ইচ্ছুক সাধারণ মানুষ। এদিকে ৪৪ দিন ধরে সার্ভার জটিলতায় নামজারি, কর আদায়সহ বন্ধ রয়েছে ভূমিসংক্রান্ত বহুবিধ কাজ। এতে কমেছে সরকারের রাজস্ব আয়। 

ভুক্তভোগী নাজমুল হক জানান, তিনি আগের দামে জমি কিনেছেন। নতুন দাম নির্ধারণ করায় তাঁর রেজিস্ট্রি খরচ অনেক বেড়ে যাবে। এ কারণে জমি কিনেও রেজিস্ট্রি করতে পারছেন না। 

সৈয়দ আলী জানান, অসুস্থতার কারণে জমি বিক্রি করতে হচ্ছে। খাজনা ও জমি রেজিস্ট্রি বন্ধ থাকায় ক্রেতার কাছ থেকে টাকা নিতে পারছেন না। এ অবস্থা কতদিন চলবে কে জানে? 

ভূমি অফিস সূত্রে জানা গেছে, জমি কেনাবেচার ক্ষেত্রে নিবন্ধনের স্ট্যাম্প দেড় শতাংশ, নিবন্ধন মাশুল ১ শতাংশ, স্থানীয় সরকার কর ৩ শতাংশ ও এলাকাভেদে ১ থেকে ৫ শতাংশ মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) দিতে হয়। আবার কোনো প্রতিষ্ঠানের জমি-ফ্ল্যাট কেনাবেচা হলে যোগ হয় আরও ৪ শতাংশ উৎসে কর। মধুবাড়ি মৌজার এক শতক জমির সরকার নির্ধারিত বাজার দাম আগে ছিল ৩৪ হাজার ৭১৫ টাকা। নতুন করে দাম নির্ধারণ হয়েছে ৬ লাখ ৩০ টাকা; যা আগের বাজার দামের প্রায় ১৯ গুণ বেশি। গত ১ জানুয়ারি থেকে মধুবাড়ি মৌজাসহ আরও ৭টি মৌজায় নতুন বাজার দাম কার্যকর হয়েছে। 

সূত্র আরও জানায়, বর্তমানে মৌজাদর অনুযায়ী জমি কেনাবেচা বা নিবন্ধন করা হয়। চাইলেই কেউ কম বা বেশি দাম দেখিয়ে জমি কেনাবেচা করতে পারবেন না। মৌজাদর নির্ধারণের কাজটি হয় ‘সর্বনিম্ন বাজারমূল্য বিধিমালা’ অনুযায়ী। এর জন্য একটি কমিটি করা হয়। কমিটির মাধ্যমে দুই বছর পরপর বাজারদর হালনাগাদ করা হয়। পরে দাম চূড়ান্তভাবে নির্ধারণ করেন ভূমি নিবন্ধন অধিদপ্তরের মহাপরিদর্শক। 

উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রার মো.

নাঈম উদ্দিন বলেন, ২০১০ সালের ভূমি বাজারদর বিধিমালা অনুযায়ী, দুই বছর পর পর জমির দাম নির্ধারণ করা হয়। এ দুই বছরের গড় দাম হিসাবে নতুন দাম নির্ধারণ হয়েছে। বিধিমালার বাইরে কিছু করার নিয়ম নেই। ক্রেতাকে নতুন দাম অনুযায়ী ফি দিতে হবে।

জেলা রেজিস্ট্রার আব্দুল মোতালেব বলেন, ‘ডিসেম্বরের মাঝামাঝি থেকে জমি রেজিস্ট্রেশন হয় না বললেই চলে। সার্ভার জটিলতায় নামজারি, রাজস্ব আদায় হচ্ছে না। এর সঙ্গে নতুন করে যোগ হয়েছে জমির দাম নির্ধারণ। কেউ আবেদন করলে পুনর্বিবেচনা করা যায়। তিনি আরও বলেন, দলিল রেজিস্ট্রি কমলে রাজস্ব তো কমবেই।’

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

ঋণাত্মক ঋণ হিসাবের নিরাপত্তা সঞ্চিতি সংরক্ষণের সময় বাড়ল

শেয়ারবাজারের নেগেটিভ ইকুইটি বা ঋণাত্মক ঋণ হিসাবের বিপরীতে নিরাপত্তা সঞ্চিতি সংরক্ষণের সময় বাড়ানো হয়েছে। শর্তসাপেক্ষে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত শেয়ারবাজারের ব্রোকারেজ হাউস ও মার্চেন্ট ব্যাংকগুলো ঋণাত্মক ঋণ হিসাবের বিপরীতে নিরাপত্তা সঞ্চিতির ক্ষেত্রে ছাড় পাবেন।

পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) এক জরুরি সভায় আজ বৃহস্পতিবার এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এত দিন বিষয়টি নিয়ে জটিলতা দেখা দিয়েছিল। এ কারণে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সদস্যভুক্ত ব্রোকারেজ হাউসের মালিকদের সংগঠন ডিএসই ব্রোকারস অ্যাসোসিয়েশন (ডিবিএ) ও মার্চেন্ট ব্যাংকারদের সংগঠন বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমবিএ) আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিএসইসি এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বিএসইসির জরুরি সভা শেষে এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বিএসইসি জানিয়েছে, এই সুবিধা নিতে হলে প্রত্যেক ব্রোকারেজ হাউস ও মার্চেন্ট ব্যাংককে তাদের ঋণাত্মক ঋণ হিসাব বা অনিরূপিত (আনরিয়ালাইজড) লোকসানের বিপরীতে নিরাপত্তা সঞ্চিতির সুনির্দিষ্ট ও গ্রহণযোগ্য পরিকল্পনা তৈরি করতে হবে। সেই পরিকল্পনা সংশ্লিষ্ট ব্রোকারেজ হাউস ও মার্চেন্ট ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের অনুমোদনসহ ৩০ জুনের মধ্যে কমিশনে জমা দিতে হবে। যারা এই পরিকল্পনা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে জমা দেবে, তারা নিরাপত্তা সঞ্চিতির ক্ষেত্রে এই সুবিধা পাবে।

শর্তসাপেক্ষে এই সুবিধা দেওয়ার কারণ হিসেবে জানা যায়, ঋণাত্মক ঋণ হিসাব নিয়ে একেক প্রতিষ্ঠানের সমস্যা একেক রকম। কারও নিরাপত্তা সঞ্চিতি সংরক্ষণ বা প্রভিশনিং করতে হবে বেশি, কারও কম। এই বাস্তবতায় শর্তসাপেক্ষে এ সুবিধা দেওয়া হয়েছে। অতীতে সর্বজনীনভাবে বারবার সময় বাড়ানোর পরও প্রতিষ্ঠানগুলো এই সমস্যার সমাধানে কোনো উদ্যোগ নেয়নি। এ কারণে প্রতিষ্ঠানগুলো যেন নিজে থেকে এই সমস্যা সমাধানের পরিকল্পনা গ্রহণ ও তা বাস্তবায়নে পদক্ষেপ নেয়, সে জন্য শর্ত আরোপ করেছে বিএসইসি।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সার্বিকভাবে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত নিরাপত্তা সঞ্চিতি সংরক্ষণে সময় বাড়ানো হলেও পরবর্তী সময়ে প্রতিষ্ঠানগুলোর পরিকল্পনাসাপেক্ষে প্রতিষ্ঠানভেদে এই সময়সীমা আরও বাড়তে পারে।

ঋণাত্মক ঋণ হিসাবের এই সমস্যা তৈরি হয় মূলত ২০১০ সালে শেয়ারবাজার ধসের পর। ওই ধসের পর শেয়ারের ব্যাপক দরপতনের কারণে শেয়ারের বিপরীতে দেওয়া বিপুল ঋণ আর আদায় করতে পারেনি প্রতিষ্ঠানগুলো। আবার শেয়ারের বাজার মূল্য কমে যাওয়ায় শেয়ার বিক্রি করেও পুরোপুরি ঋণ সমন্বয়ের সুযোগ নেই। সে জন্য এসব ঋণাত্মক ঋণ হিসাবের বিপরীতে এত দিন নিরাপত্তা সঞ্চিতি বা প্রভিশনিংয়ে ছাড় পেয়ে আসছিল প্রতিষ্ঠানগুলো। সর্বশেষ গত ডিসেম্বরে এই সময় শেষ হয়। ফলে নিয়ম অনুযায়ী, ব্রোকারেজ হাউস ও মার্চেন্ট ব্যাংকগুলোকে ঋণাত্মক ঋণের বিপরীতে শতভাগ নিরাপত্তা সঞ্চিতি সংরক্ষণের বাধ্যবাধকতা দেখা দেয়। আবার ঋণ সমন্বয় করতে গিয়ে ঋণাত্মক ঋণ হিসাবে থাকা শেয়ার বিক্রির চাপও তৈরির সম্ভাবনা তৈরি হয়। উভয় ক্ষেত্রেই বাজারে নেতিবাচক প্রভাব পড়ার শঙ্কা রয়েছে। এ কারণে ঋণাত্মক ঋণ হিসাব সমন্বয়ে আরও সময় চায় ব্রোকারেজ হাউস ও মার্চেন্ট ব্যাংকগুলো। ডিবিএ ও বিএমবিএর পক্ষ থেকে এ বিষয়ে বিএসইসির হস্তক্ষেপ চাওয়া হয়। এ নিয়ে শেয়ারবাজারের শীর্ষ ২০ ব্রোকারেজ হাউসের শীর্ষ নির্বাহীরা গত মঙ্গলবার বিএসইসির সঙ্গে বৈঠকও করেন।

বিএসইসিতে অনুষ্ঠিত ওই বৈঠকের পর এ বিষয়ে বিএসইসির পক্ষ থেকে সময় বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তবে বিএসইসির সঙ্গে বৈঠকে শীর্ষ ব্রোকারেজ হাউসের প্রতিনিধিরা ২০৩০ সাল পর্যন্ত ঋণাত্মক ঋণ হিসাব ও লোকসানে থাকা ডিলার হিসাবের বিপরীতে নিরাপত্তা সঞ্চিতিতে ছাড়ের দাবি জানিয়েছিলেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ