মার্কিন মুলুকে তোপের মুখে পড়েছে সোশ্যাল মিডিয়া টিকটক। কয়েকটি মামলায় জড়িয়ে প্ল্যাটফর্মটি চলতি বছর যুক্তরাষ্ট্রে নিষিদ্ধ হতে পারে বলে আশঙ্কা বাড়ছে। এমন আবহে আলোচনার তুঙ্গে এখন প্রযুক্তি ধনকুব ইলন মাস্ক।
জানা গেছে, প্ল্যাটফর্মের চীনা মালিক এবারে এক্স ও টেসলার মালিক ইলন মাস্কের কাছে যুক্তরাষ্ট্রের টিকটক ব্যবসা বিক্রির কথা ভাবছে। কিছুদিন আগে ব্লুমবার্গের রিপোর্টে এমন আভাস পাওয়া যায়।
খবরে প্রকাশ, যুক্তরাষ্ট্রে নিষিদ্ধ হওয়া থেকে বাঁচতে ইলন মাস্কের সহায়তা চাইতে পারে টিকটক কর্তৃপক্ষ। বলা হচ্ছে, ইলন মাস্কের এক্স প্ল্যাটফর্ম টিকটক যুক্তরাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণে যৌথভাবে ব্যবসার উদ্যোগ নিতে পারে। যদিও ঠিক কীভাবে এমন উদ্যোগ কাজ করবে, তা নিয়ে চূড়ান্ত কোনো ধরনের সিদ্ধান্তের কথা জানায়নি সংস্থা দুটির কর্তৃপক্ষ।
টিকটকের প্রধান সংস্থা বাইটডান্স মূলত চীনা মালিকানাধীন ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম। টিকটকের নিয়ন্ত্রণ বাইটডান্স থেকে সরে যাক– এমনটা মূল সংস্থার কর্মীরা চাইছেন না। অনেকে আবার বিদ্রোহ করার প্রস্তুতি নিয়েছেন। ইতোমধ্যে টিকটককে ব্যান করার বিরোধিতা করে যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ আদালতে কয়েকটি মামলায় জড়িয়েছে নির্মাতা সংস্থা।
অবশ্য এসব কোনো বিষয়েই সদুত্তর থেকে বিরত থেকেছে টিকটক। মার্কিন মুলুকে টিকটকের ব্যবসা ইলন মাস্ককে বিক্রি করে দেওয়া হবে কিনা, তা নিয়ে কোনো সরাসরি বিবৃতি দেয়নি কর্তৃপক্ষ। কয়েকটি প্রতিবেদন সূত্রে জানা গেছে, প্রকাশিত রিপোর্টের প্রতিক্রিয়ায় টিকটকের পক্ষ থেকে জানানো হয়, একেবারে নিশ্চিত না হয়ে তারা কোনো প্রতিক্রিয়া সামনে আনবে না। অবশ্য ইলন মাস্ক নিজেও এ বিষয়ে উল্লেখযোগ্য কিছু জানাননি।
যুক্তরাষ্ট্রে এখন টিকটকের ১ কোটি ৭০ লাখ নিবন্ধিত গ্রাহক আছে। প্ল্যাটফর্মটি বিজ্ঞাপনদাতাদের আকৃষ্ট করার উদ্দেশ্যে এক্স-এর প্রচেষ্টাকে আরও বাড়িয়ে তুলতে পারে। ইলন মাস্ক আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স কোম্পানি ‘এক্সআই’ নামে আলাদা উদ্যোগ নিয়েছেন, যা টিকটক থেকে পাওয়া বিপুল পরিমাণ ডেটা থেকে লাভবান হতে পারে।
সুতরাং টিকটক নিয়ে ইলন মাস্ক কী ভাবছেন, তা জানতে আপাতত অপেক্ষায় থাকতে হবে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ইলন ম স ক প ল য টফর ম
এছাড়াও পড়ুন:
সরস্বতি পূজা উপলক্ষে গোপালগঞ্জে জমজমাট প্রতিমার হাট
আগামী ২ ও ৩ ফেব্রুয়ারি হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের বিদ্যার দেবী সরস্বতী পূজা। এ উপলক্ষে গোপালগঞ্জ জেলার বিভিন্নস্থানে বসেছে প্রতিমার হাট। এখন চলছে প্রতিমার বেচাকেনা। এবার প্রতিমার দাম নিয়ে ক্রেতাদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রীয়া থাকলেও কারিগররা বলছেন, জিনিস পত্রের দাম বাড়ায় প্রতিমার দামও কিছুটা বাড়তি।
পঞ্জিকা মতে মাঘ মাসের শুক্লপক্ষের পঞ্চমী তিথিতে আশীর্বাদ লাভের আশায় বিদ্যার দেবী সরস্বতী পূজা করে থাকেন হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা। শুধু বাড়িতেই নয় বিদ্যার দেবী সরস্বতী পূজার আয়োজন করা হবে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে। দেবীর পায়ে অঞ্জলী দিয়ে অনেক শিশুর শিক্ষাজীবন শুরু হবে।
এ পূজার প্রধান অনুসঙ্গ হলো প্রতিমা। ফলে জেলা শহরের গোহাট সার্বজনীন কালীবাড়ী, সদর উপজেলার সাতপাড়, বৌলতলী, কোটালীপাড়া উপজেলার রাধাগঞ্জ, ভাঙ্গারহাট, ঘাঘর বাজারসহ অনেক স্থানে বসেছে প্রতিমার হাট। এসব হাটে আনা এক একটি প্রতিমা প্রকার ভেদে বিক্রি হচ্ছে ২৫০ থেকে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত দামে।
আরো পড়ুন:
লক্ষ্মীপুরে রাসপূর্ণিমা উৎসবের আনুষ্ঠানিকতা শুরু
পুটিয়ার কৃষ্ণপুরে চলছে কাত্যায়নী পূজা
এ বছর ক্রেতাদের মধ্যে প্রতিমার দাম নিয়ে রয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। ক্রেতাদের অনেকেই বলছেন, দাম সাধ্যের মধ্যে আবার কেউবা বলছেন দাম আগের চেয়ে বেশি নিচ্ছেন বিক্রেতারা। তবে, এর মধ্যেও বিভিন্ন বয়সের মানুষ এসব হাট থেকে কিনে নিচ্ছেন পছন্দমতো প্রতিমা। হাটে শুধু প্রতিমাই নয় বিক্রি হচ্ছে ফুল, মালা, মিষ্টিসহ পূজার অন্যান্য উপকরণও।
রীতি অনুযায়ী বিদ্যার দেবী সরস্বতি পূজার পাশাপশি বসন্ত পঞ্চমীতে গণেশ, লক্ষ্মী, নবগ্রহ, বই, খাতা, কলম ও বাদ্যযন্ত্রের পূজা করার রীতি প্রচলিত রয়েছে। এর মধ্য দিয়ে শীত ঋতুর অবসান হয়ে বসন্ত ঋতুর আগমন বার্তা ঘটবে।
প্রতিমা কিনতে আসা উত্তম সাহা বলেন, “শহরের গোহাট সার্বজনীন কালীবাড়ীতে সরস্বতী প্রতিমার হাট বসেছে। এবার বাড়িতে পূজা করাব। ছেলেকে নিয়ে হাটে প্রতিমা কিনতে এসেছি। ঘুরে ফিরে পছন্দমত প্রতিমা কিনেছি। আমি মনে করি, পূজা নির্বিঘ্নে অনুষ্ঠিত হবে।”
অপর ক্রেতা নারু গোপাল বলেন, “প্রতিবছর এখানে প্রতিমার হাট বসে। এবে এবার প্রতিমার আমদানি একটু কম। তারপরেও দেখে বুঝে দরদাম করে একটি প্রতিমা কিনেছি। এবার আমাদের বাড়িতে সরস্বতী পূজা হবে।”
অপর ক্রেতা পরিমল চন্দ্র ঢালী বলেন, “এক একটি প্রতিমা ২০০ তেকে ১০ হাজার টাকা পযর্ন্ত বিক্রি হচ্ছে। হাটে এসে প্রতিমা দেখছি। পছন্দ হলে কিনে নিয়ে যাব। গত বছরের তুলনায় এবার প্রতিমার দাম একটু বেশি।”
গোপালগঞ্জ শহরের গোহাট সার্বজনীন কালীবাড়ীর হাটে প্রতিমা বিক্রি করতে আসা উত্তম পাল বলেন, “এবার ২০টি প্রতিমা নিয়ে এসেছি। ইতোমধ্যে ১০টি বিক্রি করা হয়েছে। তবে এবার ক্রেতার সংখ্যা একটু কম। আশা করি, বাকি দুই দিনও বেচাকেনা হবে।”
কার্ত্তিক পাল বলেন, “কোটালীপাড়া উপজেলার হিরণ গ্রাম থেকে ৩০টি প্রতিমা নিয়ে এসেছি বিক্রির জন্য। চার থেকে পাঁচটি প্রতিমা বিক্রি করেছি। ক্রেতারা যে দাম বলছেন, তাতে প্রতিমা বিক্রি করা সম্ভব হচ্ছে না। কারণ প্রতিমা তৈরির অনুসঙ্গের যে দাম তাতে খরচও উঠছে না।”
স্বপন পাল নামে এক বিক্রেতা বলেন, “প্রতিমা তৈরিতে ব্যবহৃত ছোন, রংসহ বিভিন্ন সরঞ্জামের দাম প্রতিবছর বেড়েই চলছে। ক্রেতারা যে দাম বলছেন, সেই দামে বিক্রি করলে লোকসানের মুখে পড়তে হবে। তারপরেও বাব-দাদার পেশা আমরা ধরে রেখেছি।”
ঢাকা/বাদল/মাসুদ