অনিয়ম-দুর্নীতি ও অর্থ কেলেঙ্কারির অভিযোগে ব্যাপক সমালোচনার মুখে যুক্তরাজ্যের অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থনীতি-বিষয়ক মন্ত্রীর পদ (সিটি মিনিস্টার) থেকে পদত্যাগ করেছেন টিউলিপ সিদ্দিক। গত মঙ্গলবার তিনি দেশটির প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেন।

টিউলিপের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠার পর এ নিয়ে মন্ত্রিসভার সদস্যদের নীতি উপদেষ্টা লাউরি ম্যাগনাস তদন্ত করেন। তিনি টিউলিপের বিরুদ্ধে নথিপত্রের ঘাটতি ও সময় স্বল্পতার কারণে অভিযোগ সম্পর্কিত সব তথ্য সংগ্রহে অপারগতার কথা উল্লেখ করেন। এ অবস্থায় টিউলিপের বিরুদ্ধে আরও তদন্তের আহ্বান জানিয়েছেন ব্রিটিশ ছায়া স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ক্রিস ফিলিপ। খবর ডয়চে ভ্যালের। 

টিউলিপ দেশটির আর্থিক খাতের অপরাধ-দুর্নীতি বন্ধের দায়িত্বে ছিলেন। তিনি বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বোন শেখ রেহানার মেয়ে। তাঁর বিরুদ্ধে কোনো অন্যায়ের প্রমাণ পাওয়া যায়নি বলেও উল্লেখ করেন ম্যাগনাস। স্টারমারকে দেওয়া চিঠিতে তিনি বলেন, দুঃখজনক বিষয় হলো, বাংলাদেশে তাঁর পরিবারের ঘনিষ্ঠজনদের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে সুনাম ক্ষুণ্ন হওয়ার সম্ভাব্য ঝুঁকির ব্যাপারে তিনি যথেষ্ট সচেতন ছিলেন না। 

ব্রিটিশ ছায়া স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ক্রিস ফিলিপ মনে করেন, সিটি মিনিস্টারের পদ থেকে সদ্য ইস্তফা দেওয়া টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে আরও তদন্ত হওয়া উচিত। এ বিষয়ে দেশটির প্রধানমন্ত্রী অত্যন্ত ধীরগতিতে এগিয়েছেন বলেও অভিযোগ করেন তিনি। 

কনজারভেটিভ পার্টির এই নেতা বলেন, টিউলিপের অত্যন্ত ব্যয়বহুল সম্পত্তির উৎস নিয়ে এখনও অনেক প্রশ্নের উত্তর পাওয়া যায়নি বলে নীতি উপদেষ্টা উল্লেখ করেছেন। আমি গণমাধ্যমে দেখেছি, বাংলাদেশ থেকে অর্থ পাচার হয়ে তা যুক্তরাজ্যে এসে পৌঁছেছে। এই পুরো বিষয় তদন্তের আওতায় আনা উচিত। যুক্তরাজ্যের জাতীয় অপরাধ সংস্থা এ বিষয়ে নজর দিতে পারে। অত্যন্ত ব্যয়বহুল এসব সম্পত্তি কিনতে ব্যয় করা অর্থের উৎস তদন্ত করে প্রকৃত ‘চেইন অব ক্যাশ’ খুঁজে বের করা উচিত। 

টিউলিপ পদত্যাগ করার পর নিজ দলের সদস্যদের তোপের মুখে পড়েছেন প্রধানমন্ত্রী স্টারমার। সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানকে এক লেবার এমপি বলেছেন, টিউলিপকে মন্ত্রী করার সিদ্ধান্ত ছিল আত্মঘাতী গোল। সবাই জানত বাংলাদেশের রাজনৈতিক ব্যক্তিদের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক ছিল, যাদের অনেক ক্ষমতা ও অর্থ আছে। তাঁকে 
এই দায়িত্ব দিয়ে এতসব কিছু করার বিষয়টি কী ভালো ছিল? 

সম্প্রতি যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের অনুসন্ধানে উঠে এসেছে, টিউলিপ ও তাঁর পরিবার লন্ডনে আওয়ামী লীগের সদস্য বা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের কেনা পাঁচটি সম্পত্তি বিনামূল্যে পেয়েছেন বা ব্যবহার করেছেন। বাংলাদেশে অবকাঠামো নির্মাণ প্রকল্প থেকে টিউলিপের পরিবার ৩৯০ কোটি পাউন্ড (৫৮ হাজার ৫২৭ কোটি টাকা) পর্যন্ত অর্থ আত্মসাৎ করার যে অভিযোগ উঠেছে, সে-সংক্রান্ত তদন্তে তাঁর নামও আসে। 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: তদন ত

এছাড়াও পড়ুন:

জিনদের আবাস

হাদিসে আছে, মহানবী (সা.) ‘কার’-বিশিষ্ট ভূমিতে প্রবেশ করতে নিষেধ করছেন। কারণ সেটা জিনদের আবাসস্থল। তাঁকে জিজ্ঞাসা করা হলো, ‘কার’ কি? তিনি বলেন, ঘন ঝাড়-জঙ্গল, গাছপালা ঘেরা নিম্নাঞ্চল। এ ছাড়া জনবসতির শৌচাগার, গোসলখানা, নোংরা ও অপবিত্র স্থান, আবর্জনার স্তূপ এবং কবরস্থানে দুষ্ট জিন-শয়তান বিচরণ করে। তিনি বলেছেন, ‘নিশ্চয় শৌচাগারে দুষ্ট জিন-শয়তান উপস্থিত থাকে। তাই তোমরা যখন সেখানে প্রবেশ করবে তখন বলবে, ‘আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজুবিকা মিলান খুবুসি ওয়াল খবাইস।’ অর্থাৎ, আমি আল্লাহর কাছে যাবতীয় দুষ্ট পুরুষ ও নারী জিন ও শয়তান থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করছি।’ (আবু দাউদ, হাদিস: ৬)

হাদিস অনুযায়ী শৌচাগার হলো, যেখানে নাপাক থাকে বা শরীর বস্ত্রহীন করতে হয়, সেসব জায়গায় শয়তানের আনাগোনা থাকে। মানুষকে বিবস্ত্র করা শয়তানের অন্যতম একটি কাজ। কারণ আল্লাহর এবং বান্দার মধ্য আবরণ হলো লজ্জা। আদম ও হাওয়া (আ.) যখন আল্লাহর আদেশ অমান্য করেছিলেন, প্রথমেই তাদের শরীর থেকে জান্নাতের পোশাক খুলে গিয়েছিল।

আরও পড়ুনইবলিস কি জিন নাকি ফেরেশতা১৬ মার্চ ২০২৫

নবীজি (সা.) মাটির গর্তে প্রস্রাব করতে নিষেধ করেছেন। এতে জিনদের বসবাসের স্থান।’ (আবুদাউদ, হাদিস: ২৯)

কবরস্থানে জিনেরা সাধারণত মানুষের মতোই যাতায়াত করে। আবার কখনো অবস্থান করে দীর্ঘদিন। ভালো-মন্দ সব ধরনের—এমনকি সেখানে দুষ্ট প্রকৃতির জিন-শয়তানরাও অবস্থান করে।

একটা ভুল ধারণা লোকসমাজে প্রসিদ্ধ আছে, ‘বদকারদের কবরের আজাবের ভয়ে জিনেরা কবরস্থানে থাকে না।’ অথচ নবীজি বলেছেন, ‘অতঃপর তার জন্য লোহার বিশাল হাতুড়িধারী একজন অন্ধ ও বধির ফেরেশতা নিযুক্ত করা হয়। সেই ফেরেশতা ওই হাতুড়ি দিয়ে অবিশ্বাসীকে এমন জোরে আঘাত করে; যার আওয়াজ মানুষ ও জিন ছাড়া পূর্ব-পশ্চিমের সব সৃষ্টি শুনতে পায়।’ (আবু দাউদ, ৪,৭৫৩)

এ ছাড়া বাজার ও দোকানপাটে দুষ্ট জিন-শয়তানের আনাগোনা বেশি থাকে। আল্লাহর রাসুল (সা.) জানিয়েছেন, ‘বাজারে শয়তান তার যুদ্ধের পতাকা উত্তোলন করে।’ (মুসলিম, হাদিস: ২,৪৫১)

আরও পড়ুনএকদল জিন পবিত্র কোরআন শুনে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন২০ নভেম্বর ২০২৩

সম্পর্কিত নিবন্ধ