শহীদ পরিবার ও আহতদের অর্থ সহায়তা এ মাস থেকে
Published: 15th, January 2025 GMT
জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে শহীদদের পরিবারকে এককালীন সহায়তা এবং আহতদের চিকিৎসা অনুদান-সংক্রান্ত অর্থ বরাদ্দ চূড়ান্ত করা হয়েছে। প্রত্যেক শহীদের পরিবারকে এককালীন ৩০ লাখ টাকা এবং চিকিৎসা অনুদান বাবদ আহতদের চার ক্যাটেগরিতে দুই লাখ টাকা থেকে ৫০ হাজার টাকা দেওয়া হবে। যারা গুরুতর আহত তাদের বিদেশে চিকিৎসার জন্যও অর্থ বরাদ্দ করা হচ্ছে। মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্প্রতি এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
জানা গেছে, এ বিষয়ে শিগগিরই অর্থ বরাদ্দের প্রস্তুতি সম্পন্ন হবে। দুই-এক কার্যদিবসের মধ্যে এ-সংক্রান্ত অফিস আদেশ জারি হওয়ার কথা। বাজেট প্রস্তাবনায় মোট বরাদ্দ ধরা হয়েছে ৩৯৭ কোটি ৮০ লাখ টাকা। চলতি অর্থবছরে এ খাতে ২৩৪ কোটি ৬০ লাখ টাকা বরাদ্দের জন্য অর্থ মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। চলতি মাসেই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে অর্থ সহায়তা প্রদান কার্যক্রম উদ্বোধন হতে পারে।
জানতে চাইলে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব ইশরাত চৌধুরী সমকালকে বলেন, অনুদান হস্তান্তর অনুষ্ঠানের বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে সারসংক্ষেপ পাঠানো হয়েছে। চলতি মাসেই অনুদান হস্তান্তরের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।
মন্ত্রণালয়ের বাজেট শাখার পৃথক মঞ্জুরিপত্র পর্যালোচনায় দেখা গেছে, শহীদদের পরিবারের সদস্যদের চলতি অর্থবছরে ১০ লাখ টাকা করে সোনালী ব্যাংকের সঞ্চয়পত্র দেওয়া হবে। অবশিষ্ট ২০ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র আগামী অর্থবছরে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এক্ষেত্রে ৮২৬ শহীদ পরিবারকে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। অর্থ বিভাগের বাজেটের অধীন ‘অপ্রত্যাশিত ব্যয় ব্যবস্থাপনা খাত’ থেকে চলতি অর্থবছরে শহীদ পরিবারের সদস্যদের সহায়তায় মোট বরাদ্দ ধরা হয়েছে ৮২ কোটি ৬০ লাখ টাকা।
এদিকে অভ্যুত্থানে আহতদের চিকিৎসা অনুদান হিসেবে বাজেটে ১২৫ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব চূড়ান্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে ‘এ’ ক্যাটেগরিতে অন্তর্ভুক্তদের ‘আজীবন সাহায্যের আওতায়’ আনা হবে। এতে উভয় হাত/পাবিহীন, দৃষ্টিহীন, সম্পূর্ণভাবে মানসিক বিকারগ্রস্ত এবং কাজ করতে অক্ষম বা অনুরূপ আহত ব্যক্তিরা অন্তর্ভুক্ত হবেন। বাজেট প্রস্তাবনা অনুযায়ী, এ ক্যাটেগরির এক হাজারজনকে দুই লাখ টাকা করে দেওয়া হবে। ‘বি’ ক্যাটেগরিতে তিন হাজার আহতকে অনুদান দেওয়া হবে। এক্ষেত্রে এক হাত/পাবিহীন, আংশিক দৃষ্টিহীন, মস্তিষ্কে গুরুতর আঘাতপ্রাপ্ত বা অনুরূপ আহত ব্যক্তিরা প্রত্যেকে এক লাখ টাকা করে সহায়তা পাবেন।
‘সি’ ক্যাটেগরিতে শ্রবণ/দৃষ্টিশক্তি ক্ষতিগ্রস্ত, গুলিতে আহত ব্যক্তিদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে যারা এখনও চিকিৎসাধীন, আরও চিকিৎসার প্রয়োজন এবং স্বাভাবিক কাজকর্ম করতে সক্ষম হবেন এমন চার হাজার আহতকে এক লাখ টাকা করে অনুদান দেওয়া হবে। ‘ডি’ ক্যাটেগরিতে সাধারণ আহতদের স্থান দেওয়া হয়েছে। এর আওতায় ৭ হাজার আহত ব্যক্তিকে ৫০ হাজার টাকা করে অনুদান দেওয়া হবে। গুরুতর আহতদের জন্য বাজেটে ২৫ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: জ ল ই গণহত য আহতদ র পর ব র র আহত
এছাড়াও পড়ুন:
সালিশে বাদী পক্ষের ওপর হামলা, সাবেক ইউপি সদস্যসহ আহত ৭
কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে সালিশ বৈঠকে হামলায় ৭ জন আহত হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
শুক্রবার সন্ধ্যায় উপজেলার ঢালুয়া ইউনিয়নে পুঁটিজলা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
সংঘর্ষের খবর পেয়ে নাঙ্গলকোট থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
হামলায় আহতরা হলেন পুঁটিজলা গ্রামের আব্দুল মান্নানের ছেলে রনি মজুমদার (২২), তার ভাই আনোয়ার হোসেন ভুট্টু (৪৫), বোন নূরুন নাহার টুনি (৫০), একই গ্রামের নাজির আহমেদ মজুমদারের ছেলে আব্দুর রাজ্জাক মজুমদার (৬০), রফিকুল ইসলাম মুজমদার (৫৫) ও রফিকের ছেলে রকি (৩০) ও ঢালুয়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক সদস্য আফাজ উদ্দিন কালাম (৫৬)।
হামলায় অভিযুক্তরা হলেন ওই গ্রামের খোকন মিয়া, শাহজাহান, মফিজুর রহমান, তজু মিয়া, ইলিয়াসসহ পাশের চৌদ্দগ্রাম উপজেলার ঝাটিয়ারখিল গ্রামের অজ্ঞাত ৫০-৬০ জন।
আহতদের নাঙ্গলকোট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি ও চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। আহতদের মধ্যে রনি মজুমদার অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
আহত আনোয়ার হোসেন ভুট্টু বলেন, আমার বোনের স্বামী আব্দুর রাজ্জাক তার জমিতে মাছ ধরতে গেলে পুঁটিজলা গ্রামের ইলিয়াস ও শাহজাহান তাকে পিটিয়ে মাথা ফাটিয়ে দেয়। এ ঘটনার বিষয়ে শুক্রবার বিকেলে সালিশ বসে। সালিশে মধ্যস্থতাকারীরা মাগরিবের নামাজ পড়তে গেলে আনু মিয়ার ছেলে খোকনের নেতৃত্বে তার ভাড়াটিয়াসহ ঝাটিয়ারখিল গ্রামের ৫০-৬০ জন সন্ত্রাসী ধারালো অস্ত্র নিয়ে আমাদের কোপাতে থাকে। পরে পুলিশ এসে আমাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে।
ভুট্টু বলেন, খোকন ও তার পরিবারের লোকেরা সবাই আওয়ামী লীগ করে। তারা ঝটিয়ারখিল গ্রামের যেসব সন্ত্রাসী নিয়ে এসেছে তারাও সবাই ছাত্রলীগের সন্ত্রাসী।
অভিযুক্ত খোকন মিয়া বলেন, আমাদের সঙ্গে তাদের সালিশ বৈঠক চলা অবস্থায় আমরা মাগরিবের নামাজ পড়তে যাই। এসময় সংঘর্ষ বেঁধে আমাদেরও কয়েকজন আহত হয়েছে, তাদের কজন আহত হয়েছে আমি জানি না।
নাঙ্গলকোট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ কে ফজলুল হক বলেন, সংঘর্ষের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়। এখন পরিবেশ শান্ত আছে। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।