যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অভিষেক ঘিরে নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে ফেলা হয়েছে রাজধানী ওয়াশিংটনকে। ব্যাপক সতর্কতা হিসেবে স্থাপন করা হয়েছে কালো রঙের ৩০ মাইল (৪৮ কিলোমিটার) দীর্ঘ ও উঁচু অস্থায়ী বেড়া। মোতায়েন করা হয়েছে ২৫ হাজার আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী কর্মকর্তা। লাখ লাখ দর্শকের জন্য বসানো হয়েছে নিরাপত্তাচৌকি। সর্বোপরি ট্রাম্পের অভিষেক উপলক্ষে পুরোদমে প্রস্তুতি নিয়েছে ওয়াশিংটন। ২০ জানুয়ারি শপথ নেবেন তিনি।

যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেস ভবন ক্যাপিটল হিলের সিঁড়িতে শপথ নেবেন ট্রাম্প। এর পর হোয়াইট হাউসের উদ্দেশে কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠিত হবে। এমন এক সময় ট্রাম্পের অভিষেক হতে যাচ্ছে, যখন কয়েক মাসে বেশ কিছু হামলার সাক্ষী হয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকরা। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রচারাভিযানে দু’বার ট্রাম্পের ওপর প্রাণঘাতী হামলা হয়েছিল। এর মধ্যে এক হামলায় সম্ভাব্য গুপ্তঘাতকের ছোড়া গুলি ট্রাম্পের কান স্পর্শ করে চলে যায়। অন্যদিকে নববর্ষের দিন যুক্তরাষ্ট্রের সাধারণ নাগরিকদের ওপর দুটি হামলার ঘটনা ঘটে। সাবেক এক মার্কিন সেনাসদস্য নববর্ষের উৎসবে জড়ো হওয়া মানুষের ওপর একটি ট্রাক উঠিয়ে দেন। এ হামলায় ১৪ জন নিহত হন, আহত হয়েছেন কয়েক ডজন। সোমবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে গোয়েন্দা সংস্থার বিশেষ এজেন্ট ইনচার্জ ম্যাট ম্যাককুল বলেন, আমরা ব্যাপক হুমকিতে আছি।

অভিষেক অনুষ্ঠানে কংগ্রেস, সুপ্রিম কোর্ট ও নতুন প্রশাসনের সদস্য এবং লাখো মানুষের উপস্থিতিতে ওয়াশিংটন স্মৃতিস্তম্ভের দিকে মুখ করে ক্যাপিটল হিলের সিঁড়িতে শপথ নেবেন ট্রাম্প। ঠিক একই জায়গায় ২০২১ সালের ৬ জানুয়ারি ট্রাম্পের হাজারো সমর্থক ভাঙচুর চালান, পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ান এবং আইনপ্রণেতারা জীবন নিয়ে পালাতে বাধ্য হন। ২০২০ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জো বাইডেনের কাছে পরাজয় না মানতে পেরেই এসব কর্মকাণ্ড চলে।

এদিকে ট্রাম্পের শপথ অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন প্রযুক্তি জগতের শীর্ষ ধনী ইলন মাস্ক, জেফ বেজোস এবং মার্ক জাকারবার্গ। এনবিসি নিউজকে উদ্ধৃত করে এ খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা এএফপি। প্রযুক্তি খাতে ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হয়ে কাজ করতেই ২০ জানুয়ারি ট্রাম্পের সঙ্গে এক মঞ্চে থাকবেন তারা। ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র জানিয়েছে, অনুষ্ঠানের দিন ট্রাম্প প্রশাসনের বিশিষ্ট মন্ত্রীদের সঙ্গেই মঞ্চে উপবিষ্ট হবেন প্রযুক্তি খাতের ওই তিন মহারথী। 

অভিষেক অনুষ্ঠানে যাচ্ছেন না সাবেক ফার্স্টলেডি মিশেল ওবামা। গত সপ্তাহে ওয়াশিংটন ডিসিতে প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট জিমি কার্টারের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় তাঁর অনুপস্থিতি বেশ আলোচনার জন্ম দিয়েছিল।

এক বিবৃতিতে ওবামা পরিবার জানিয়েছে, সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা অভিষেক অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন। বারাক ও মিশেল ওবামার অফিস এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছে।

গত সপ্তাহে কার্টারের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় ট্রাম্পের পাশে বসেছিলেন সাবেক প্রেসিডেন্ট ওবামা। সেখানে তাদের একসঙ্গে হাসতে ও কথোপকথনে দেখা গেছে।

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

সোনারগাঁয়ে চীনা নববর্ষ উদযাপন, বিনিয়োগ বাড়ানোর আহ্বান

সোনারগাঁয়ে মোগড়াপাড়া চৌরস্তা ঢাকা চট্টগ্রাম মহাসড়কে বুধবার (২৯ জানুয়ারি) বিকেলে চীনা নববর্ষ ২০২৫ উদযাপন উপলক্ষে বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে।

ইএসএডিএস, ক্লিন এবং বিডব্লিউজিইডি-এর সহযোগিতায় আয়োজিত এই অনুষ্ঠানটি সাংস্কৃতিক বিনিময়কে উৎসাহিত করার পাশাপাশি বাংলাদেশে নবায়নযোগ্য শক্তিতে বিনিয়োগ বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছে।

"নবায়নযোগ্যতা, সমৃদ্ধি এবং স্থায়িত্ব" শীর্ষক এই বিশেষ উদযাপনে স্থানীয় সম্প্রদায়, নীতিনির্ধারক এবং পরিবেশবাদীরা অংশ নেন। তারা নবায়নযোগ্য শক্তির ব্যবহার ও প্রসারের গুরুত্ব নিয়ে আলোচনা করেন। চীনের নবায়নযোগ্য শক্তি উন্নয়নে অগ্রগামী ভূমিকার ফলে বাংলাদেশও জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় একটি বিশেষ সুযোগ পেতে পারে বলে আলোচকরা মত প্রকাশ করেন।

অনুষ্ঠানে আয়োজিত আলোচনাসভায় নবায়নযোগ্য শক্তি সংক্রান্ত বিভিন্ন সমাধান নিয়ে আলোচনা করা হয়। বক্তারা নবায়নযোগ্য শক্তি প্রযুক্তি কীভাবে জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব কমাতে এবং বাংলাদেশের টেকসই উন্নয়নে অবদান রাখতে পারে, তা তুলে ধরেন।

ইএসএডিএস এর চেয়ারম্যান মোহাম্মদ হোসাইন বলেন, "চীনা নববর্ষ পুনর্নবীকরণের ও আশার প্রতীক। নারায়ণগঞ্জে এটির উদযাপনের মাধ্যমে আমরা এই ঐতিহ্যকে সম্মান জানাচ্ছি এবং নবায়নযোগ্য শক্তিতে বিনিয়োগ বৃদ্ধির জন্য কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানাচ্ছি, যাতে আমাদের ভবিষ্যৎ আরও উজ্জ্বল হয়।"

ইডএঊউ-এর পরিচালক বলেন, "এই গুরুত্বপূর্ণ সাংস্কৃতিক উদযাপনটি আমাদের পরিবেশ ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য নবায়নযোগ্য শক্তির দিকে দ্রুত অগ্রসর হওয়ার জরুরি প্রয়োজনীয়তা স্মরণ করিয়ে দেয়।"

অনুষ্ঠান শেষে চীনা সরকারের প্রতি একটি যৌথ আবেদন পেশ করা হয়, যাতে বাংলাদেশে সবুজ বিনিয়োগের সুযোগ বৃদ্ধির জন্য তারা সহায়তা করে।

এই আয়োজনের মাধ্যমে নারায়ণগঞ্জে শুধুমাত্র একটি উৎসব উদযাপন করা হয়নি, বরং এটি নবায়নযোগ্য শক্তিতে বিনিয়োগ বাড়ানোর জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ আহ্বান হিসেবেও চিহ্নিত হয়েছে।

এই সময় উপস্থিত ছিলেন পরিবেশ রক্ষা ও উন্নয়ন সোসাইটির মহাসচিব মীযানুর রহমান,সহভাপতি ফজলুল হক ভূঁইয়া, অভিনেতা শিশির, বোরহান বকুল প্রমুখ।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • চীনের বসন্ত উৎসবের গালা উপভোগ করল বাচসাস
  • সোনারগাঁয়ে চীনা নববর্ষ উদযাপন, বিনিয়োগ বাড়ানোর আহ্বান