মাঠ কাঁপানো যুবদল নেতা সানোয়ারের পাশে কেউ নেই
Published: 15th, January 2025 GMT
জীবনের সবচেয়ে কঠিনতম সময় পার করছেন এক সময়কার মাঠ কাঁপানো যুবদল নেতা মোঃ সানোয়ার হোসেন।
রাজনীতি করতে গিয়ে জীবন-যৌবণ সবকিছু বিসর্জন দিলেও সময়ের আবর্তে আজ বিছানায় শায়িত হয়ে যেন ধুকে ধুকে মৃত্যুর দিকে ধাবিত হচ্ছেন বার বারের কারা নির্যাতিত এই নেতা। সানোয়ার হোসেন নারায়ণগঞ্জ মহানগরের বন্দর থানাধীন সোনাকান্দা চৌধুরীপাড়া এলাকার বাসিন্দা। সে ২ মেয়ের জনক।
মূলতঃ ১৯৮৯ সালের শুরুর দিকে নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপি নেতা আওলাদ হোসেনের হাত ধরেই বিএনপি রাজনীতিতে পর্দাপন করেন সানোয়ার হোসেন। এরপর থেকে সে আন্দোলন সংগ্রামে অগ্রণী ভূমিকা পালণ করে ২০০০২ সালে বন্দর থানা যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক,২০০৪/ ৫ সালে বন্দর থানা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে নির্বাচিত হয়ে অত্যন্ত নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালণ করেন।
সর্বশেষ ২০০৭ সালে নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলের যুগ্ম আহবায়কের দায়িত্ব পালন করেন। ২০১৫ সালে তিনি নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলের সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করে নানা কর্মকান্ডের মধ্য দিয়ে আলোচনায় উঠে আসেন। রাজনীতির স্রোতধারায় সানোয়ার হোসেন মামলায় জর্জরিত হয়ে জেল খেটেছেন অসংখ্যবার।
একের পর এক জেল জুলুমের পরও রাজনীতি থেকে বিন্দুমাত্র পিছপা হননি যুবদলের লড়াকু এই সৈনিক। অব্যাহত নীপিড়ন নির্যাতনের এক পর্যায়ে ২০১৯ সালে আকস্মিকভাবে ব্রেনস্ট্রোক করেন তিনি। এরপর থেকে উঠে দাড়ানোর ক্ষমতাটুকু হারিয়ে ফেলেন সানোয়ার হোসেন। সেই থেকে সানোয়ার হোসেন বিছানায় শায়িত হলেও একটি বারের জন্য খোঁজ নিতেও আসেনি কেউ। পুত্র সন্তান না থাকায় বিছানায় ধুকে ধুকেও পরিবার নামক সংসারের ঘানি টেনে যাচ্ছেন।
বর্তমান সময়ে নব্য বিএনপি নেতাদের অনেকেই নানাভাবে সুযোগ-সুবিধা ভোগ করলেও নিরবে নিস্তব্দে দিন পার করতে হচ্ছে জাতীয়তবাদী দলের দুর্দিনের কান্ডারী সানোয়ার হোসেন। তার পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ,দুর্দিনে জীবন বাজী রেখে যেই সানোয়ার হোসেনরা দলের অস্তিত্ব টিকিয়ে রেখেছে অথচ সুদিনে সেই সকল নেতাদেরকে বেমালুম ভুলে গেছেন বিএনপির নীতি নির্ধারকরা। সবাই সভা-মঞ্চে কর্মীদের গাল ভরা বুলি আওড়াতে পারেন কিন্তু বাস্তবে তার কিছুই হয়না। সানোয়ারদের মতো নেতাদের কারণে দল বেঁচে থাকলেও নেতার জন্য দলের কিছু করণীয় থাকেনা সেটা বর্তমান প্রেক্ষাপটই জানান দিচ্ছে।
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: য বদল ন র য়ণগঞ জ য বদল র র জন ত ব এনপ
এছাড়াও পড়ুন:
চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল, জিয়া-জলিলের বিরুদ্ধে অভিযোগের প্রমাণ মেলেনি
১৯৭৫ সালের নভেম্বরে পাল্টাপাল্টি অভ্যুত্থানের মধ্যে নিহত কর্নেল খন্দকার নাজমুল হুদা বীর বিক্রম হত্যাকাণ্ডের ৪৭ বছর পর করা মামলার তদন্ত শেষ করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। তাতে তৎকালীন সেনাপ্রধান ও সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান, মেজর (অব.) মো. আবদুল জলিল ও মেজর (অব.) আসাদ উজ্জামানের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি জানিয়ে তাঁদের মামলার দায় থেকে অব্যাহতি দেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে।
তবে এ হত্যাকাণ্ডে লেফটেন্যান্ট কর্নেল আবু তাহেরের (অব.) দায় পেলেও মৃত হওয়ায় তাঁর বিরুদ্ধেও অভিযোগপত্র দেননি তদন্ত কর্মকর্তা।
গত ৩০ নভেম্বর ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলাটির চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দেন তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির ঢাকা মেট্রোর পরিদর্শক সিকদার মহিতুল আলম। তাঁর এই প্রতিবেদন আদালতে গৃহীত হলে দৃশ্যত এ মামলার যবনিকাপাত হবে।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর অস্থিরতার মধ্যে ৩ নভেম্বর সামরিক বাহিনীতে এক অভ্যুত্থান ঘটে মেজর জেনারেল খালেদ মোশাররফের নেতৃত্বে। তখন বন্দী করা হয়েছিল তৎকালীন সেনাপ্রধান জিয়াউর রহমানকে। চার দিন পর ৭ নভেম্বর আবু তাহেরের নেতৃত্বে পাল্টা অভ্যুত্থানে মুক্ত করা হয় জিয়াউর রহমানকে। সেদিনই দশম ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট অফিসে (বর্তমানে জাতীয় সংসদ ভবন প্রাঙ্গণ) নিহত হন খালেদ মোশাররফ, নাজমুল হুদা ও লেফটেন্যান্ট কর্নেল এ টি এম হায়দার।
কর্নেল খন্দকার নাজমুল হুদা হত্যাকাণ্ডের ৪৭ বছর পর ২০২৩ সালে মামলা করেন তাঁর মেয়ে নাহিদ ইজাহার খান। মামলায় প্রধান আসামি করা হয় মেজর জলিলকে। হুকুমের আসামি করা হয় জিয়াউর রহমান ও কর্নেল তাহেরকে।নাজমুল হুদা মুক্তিযুদ্ধে ৮ নম্বর সেক্টরে একটি সাবসেক্টরের অধিনায়ক ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধের আগে ১৯৬৮ সালে পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী বঙ্গবন্ধুসহ ৩৫ জনকে অভিযুক্ত করে যে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা করেছিল, সে মামলার আসামিদের একজন ছিলেন তিনি।
৪৭ বছর পর মামলা
নাজমুল হুদা হত্যাকাণ্ডের ৪৭ বছর পর ২০২৩ সালে রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানায় মামলা করেন তাঁর মেয়ে সংসদ সদস্য নাহিদ ইজাহার খান। মামলায় মেজর (অব.) জলিলকে প্রধান আসামি করা হয়। হুকুমের আসামি করা হয় তৎকালীন সেনাপ্রধান জিয়াউর রহমান ও জাসদ নেতা আবু তাহেরকে।
মামলায় নাহিদ ইজাহার অভিযোগ করেন, তাঁর বাবা (নাজমুল হুদা) নিহত হওয়ার সময় তিনি ও তাঁর ভাই ছোট ছিলেন। তাঁরা বড় হয়ে বাবার কোর্সমেট, সহকর্মী ও বিভিন্ন সূত্র থেকে অনুসন্ধানে জানতে পারেন, ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর সকালে দশম ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট অফিসে নাজমুল হুদার সঙ্গে অপর দুই সেক্টর কমান্ডার খালেদ মোশাররফ এবং এ টি এম হায়দার অবস্থান করছিলেন। নাজমুল হুদা সকালে নাশতা করার সময় দশম ইস্ট বেঙ্গলের সিও লেফটেন্যান্ট কর্নেল নওয়াজেশের কাছে দ্বিতীয় ফিল্ড আর্টিলারি থেকে একটি ফোন আসে। এরপর দশম ইস্ট বেঙ্গলের কর্মকর্তারা নাজমুল হুদাসহ তিন কর্মকর্তাকে বাইরে নিয়ে যান।
গত ৩০ নভেম্বর মেজর নাজমুল হুদা হত্যা মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হয়েছে। মামলার সঙ্গে তিনজনের সম্পৃক্ততা না পাওয়ায় তাঁদের অব্যাহতির সুপারিশ করা হয়েছে।সিকদার মহিতুল আলম, তদন্ত কর্মকর্তাএরপর তৎকালীন সেনাপ্রধান জিয়াউর রহমান ও জাসদ নেতা আবু তাহেরের নির্দেশে দশম ইস্ট বেঙ্গলের কর্মকর্তা, জেসিও ও সৈনিকেরা সংঘবদ্ধভাবে ঠান্ডা মাথায় নাজমুল হুদাসহ তিনজনকে হত্যা করেন বলে এজাহারে দাবি করা হয়।
শেখ হাসিনা ক্ষমতায় থাকাকালে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানকে আসামি করে এ মামলা করার সময় নাহিদ ইজাহার সংসদে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে সংসদে সংরক্ষিত আসনের সদস্য ছিলেন। বিএনপি তখন মামলার উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন তুলে বলেছিল, এর পেছনে সরকারের কারসাজি থাকতে পারে।
মেজর এম এ জলিল ও জিয়াউর রহমান