ভারত কোনভাবেই পাকিস্তানে যাবে না চ্যাম্পিয়নস ট্রফি খেলতে। ভারতীয় ক্রিকেট নিয়ন্ত্রণ বোর্ডের (বিসিসিআই) এই ঘোষণার পর লঙ্কাকাণ্ড ঘটে গিয়েছিল ক্রিকেট বিশ্বে। তবে এই সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসেনি তারা। চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে ভারত ঠিকই অংশগ্রহণ করবে। তবে সূচি এমনভাবে সাজানো হয়েছে যেখানে তাদের ম্যাচগুলো অনুষ্ঠিত হবে নিরপেক্ষ ভেন্যু আরব আমিরাতে। তবে এসবের মাঝে চোখ কপালে তোলার মত খবর হচ্ছে পাকিস্তানে যাচ্ছেন ভারত ক্রিকেট দলের অধিনায়ক রোহিত শর্মা।
ক্রিকেট ভক্তদের মাঝে আলোচনার খোরাক তৈরি করেছে এ সংবাদ। কেন পাকিস্তান যাবেন রোহিত? এমন কৌতুহলী প্রশ্ন এখন ভক্তদের মনে মনে।
জানা গেছে, ভারত ক্রিকেট দল যাচ্ছে না পাকিস্তানে। তবে চ্যাম্পিয়নস ট্রফির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দিতে রোহিত যাচ্ছেন প্রতিবেশী দেশটিতে। টুর্নামেন্টে অংশগ্রহণকারী ৮ দলের অধিনায়ক পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের (পিসিবি) আয়োজিত জাঁকজমকপূর্ণ এ অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন। সেখানে ভারতীয় দলের প্রতিনিধি হিসেবে থাকবেন রোহিতও।
আরো পড়ুন:
চট্টগ্রামে বিপিএল টিকিট কিনতে দীর্ঘ সারি, সেনাবাহিনী ও পুলিশের কঠোর নিরাপত্তা
‘সুপার’ সাদিয়ার জাদুতে সুপার ওভারে ইংল্যান্ডকে হারালো বাংলাদেশ
বিষয়টি নিশ্চিত করেছে ভারতের বেসরকারি নিউজ এজেন্সি ‘আইএএনএস’। নিজস্ব সূত্রের বরাতে সংস্থাটি প্রতিবেদনে লিখেছে, “ভারতীয় দলের অধিনায়ক চ্যাম্পিয়নস ট্রফির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দিতে পাকিস্তানে যাবেন। কারণ, পিসিবি ২৯ বছর পর পাকিস্তানে একটি বিশাল আন্তর্জাতিক ক্রিকেট আসরের আয়োজনকে স্মরণী করে রাখতে জাঁকজমকপূর্ণ অনুষ্ঠানের পরিকল্পনা করেছে।”
তথ্য অনুযায়ী রোহিত যদি সত্যিই পাকিস্তানের মাটিতে পা রাখেন, তবে তার ১৭ বছরের অপেক্ষা ফুরাবে। এর আগে ২০০৮ সালে ভারত দলের হয়ে এশিয়া কাপ খেলতে ভারতে গিয়েছিলেন ৩৭ বছর বয়সী ব্যাটসম্যান।
এবারের চ্যাম্পিয়নস ট্রফির হাইব্রিড মডেলের বিধিতে বলা হয়েছে, প্রথম সেমিফাইনাল ম্যাচও হবে আরব আমিরাতে। ভারত যদি ফাইনালে ওঠে, তাহলে শিরোপা নির্ধারণীও ম্যাচ হবে সেখানে। তবে ভারতীয়রা আগেভাগে বাদ পড়লে ফাইনাল অনুষ্ঠিত হবে পাকিস্তানের মাটিতেই।
আগামী ১৯ ফেব্রুয়ারি শুরু হবে চ্যাম্পিয়নস ট্রফির নবম আসর। তবে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের ক্ষণ এখনো চূড়ান্ত করেনি পিসিবি। ধারণা করা হচ্ছে, ১৬ কিংবা ১৭ ফেব্রুয়ারি এই অনুষ্ঠান আয়োজিত হতে পারে।
উল্লেখ্য, পাকিস্তানে সর্বশেষ আইসিসি টুর্নামেন্ট হয়েছিল ১৯৯৬ সালে। সেবার তাদের সঙ্গে যৌথভেবে আয়োজক ছিল শ্রীলঙ্কা এবং ভারতও। সুদীর্ঘ ২৯ বছর পর এই প্রথম কোনো আইসিসি টুর্নামেন্ট আয়োজন করছে পাকিস্তান।
ঢাকা/নাভিদ/আমিনুল
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
গাজায় পরিকল্পিত ধ্বংসযজ্ঞ চলছে, বন্ধ মানবিক সহায়তাও
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার ঘরবাড়ি ও তাঁবুর মতো আশ্রয়কেন্দ্রও ইসরায়েলি বর্বরতা থেকে রেহাই পাচ্ছে না। বেসামরিক ফিলিস্তিনিদের ওপর বিমান হামলা অব্যাহত রেখেছে দখলদার দেশটি। পাশাপাশি আট সপ্তাহ ধরে উপত্যকায় খাদ্য, ওষুধ ও ত্রাণসামগ্রী প্রবেশ বন্ধ করে রেখেছে। এ পরিস্থিতিকে জাতিসংঘ সবচেয়ে ভয়াবহ মানবিক সংকট হিসেবে বর্ণনা করেছে।
আলজাজিরার সংবাদদাতারা জানিয়েছেন, বুধবার রাতভর এবং বৃহস্পতিবার ভোরে ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ১৩ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। মধ্য গাজার নুসেইরাতের কাছে একটি তাঁবুতে তিন শিশু এবং গাজা শহরের একটি বাড়িতে এক নারী ও চার শিশু নিহত হয়েছেন। সাম্প্রতিক এক হামলায় স্থানীয় সাংবাদিক সাঈদ আবু হাসানাইনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এ নিয়ে গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনে কমপক্ষে ২৩২ সাংবাদিক নিহত হলেন।
গাজার দেইর এল-বালাহ থেকে আলজাজিরার তারেক আবু আযুম বলেন, অবরুদ্ধ উপত্যকা স্পষ্টতই ইসরায়েলি সেনা বৃদ্ধি এবং ক্রমবর্ধমান মানবিক সংকটের সাক্ষী হচ্ছে। এখানকার অক্ষত ও আংশিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত ভবনগুলোও গুঁড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। বেশির ভাগ সরঞ্জাম ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে যাওয়ায় উদ্ধারকারীরাও অসহায় হয়ে পড়েছেন। ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকা পড়াদের কাছে পৌঁছানোর জন্য তাদের হিমশিম খেতে হচ্ছে।
অধিকৃত পশ্চিম তীর পরিচালনাকারী ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ বলছে, ‘ইসরায়েলের আক্রমণের কোনো বিরতি নেই, কোনো করুণা নেই, কোনো মানবতা নেই।’
প্রায় দুই মাস ধরে ইসরায়েল ত্রাণ সহায়তা অবরোধ করে রাখায় গাজার মানবিক সংকট আরও তীব্র হয়েছে। এটিকে জাতিসংঘের মানবিকবিষয়ক সমন্বয় অফিসের ভারপ্রাপ্ত প্রধান ‘ফিলিস্তিনি জীবনের ইচ্ছাকৃত ধ্বংসাবশেষ’ বলে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, গাজা উপত্যকা এখন সম্ভবত ২০২৩ সালের অক্টোবরে হামলা শুরুর পর ১৮ মাসের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ মানবিক সংকটের মুখোমুখি হচ্ছে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় অপুষ্টির সম্মুখীন নারী ও শিশুদের বিপজ্জনক ও বিপর্যয়কর ক্ষতির কথা তুলে ধরেছে। তারা অনেকেই পর্যাপ্ত খাবার, পানীয় জল এবং শিশুর খাবারের অভাবের মুখোমুখি হয়েছে। ইসরায়েলের গাজায় সাহায্য পাঠাতে অব্যাহত অস্বীকৃতি ২০২৪ সালের মে মাসে আন্তর্জাতিক আদালতের একটি আদেশকে লঙ্ঘন করে। সেই আদেশে দুর্ভিক্ষ ও অনাহার রোধে জরুরি ভিত্তিতে উপত্যকায় সাহায্য পৌঁছানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।
গাজায় ত্রাণ সরবরাহ বন্ধ করে রাখা নিয়ে আন্তর্জাতিক ন্যায়বিচার আদালত (আইসিজে) আগামী সপ্তাহে হেগে অনুষ্ঠিত গণশুনানির একটি সূচি প্রকাশ করেছে। সেখানে গাজা ও অধিকৃত পশ্চিম তীরে জাতিসংঘ, এনজিওর কার্যকলাপকে অনুমতি দেওয়ার বিষয়ে ইসরায়েলের আইনি বাধ্যবাধকতা নিয়ে আলোচনা করা হবে। আগামী সোমবার শুরু হতে যাওয়া এ শুনানির আগে প্রায় ৪৫টি দেশ ও আন্তর্জাতিক সংস্থা লিখিত বিবৃতি জমা দিয়েছে।
হাসপাতাল সূত্র আলজাজিরাকে জানিয়েছে, বুধবার গাজায় ইসরায়েলি হামলায় কমপক্ষে ৪৫ জন নিহত এবং ১০০ জনেরও বেশি আহত হয়েছেন। এ নিয়ে গত ১৮ মাসে ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ৫১ হাজার ৩০৫ জন নিহত এবং ১ লাখ ১৭ হাজার ৯৬ জন আহত হয়েছেন।