পণ্য আমদানিতে বিদেশি সরবরাহকারীর ক্রেডিট রিপোর্টের প্রয়োজনীয় ইনভয়েসের বিপরীতে ডলারের মূল্যসীমা বাড়িয়ে নতুন নির্দেশনা জারি করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। একই সঙ্গে ‘ব্যাক টু ব্যাক’ এলসি-সংক্রান্ত বিষয় অনলাইনে দেওয়া হবে। এর ফলে একদিকে এলসির লেনদেন জটিলতা কমবে, আমদানি সহজ হবে, এতে খরচ কমবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের পৃথক দুটি সার্কুলারের মাধ্যমে আমদানিতে এসব সুবিধা দেওয়া হয়েছে।
নতুন সার্কুলার অনুযায়ী, ইনভয়েসের বিপরীতে ডলারের মূল্যসীমা বাড়ানো হয়েছে। এখন থেকে সরাসরি বিদেশ থেকে ইস্যু করা প্রো ফর্মা ইনভয়েসের বিপরীতে ৩০ হাজার মার্কিন ডলার মূল্যের পণ্য আমদানির জন্য বিদেশি সরবরাহকারীর ক্রেডিট রিপোর্ট প্রয়োজন হবে না। স্থানীয় এজেন্টদের মাধ্যমে প্রাপ্ত ইনডেন্টের বিপরীতে ৪০ হাজার মার্কিন ডলার মূল্যের আমদানির জন্যও এসব রিপোর্ট লাগবে না। আগে প্রো ফর্মা ইনভয়েসের বিপরীতে ১০ হাজার মার্কিন ডলার এবং স্থানীয় এজেন্টদের মাধ্যমে প্রাপ্ত ইনডেন্টের বিপরীতে ২০ হাজার মার্কিন ডলার।
প্রো ফর্মা ইনভয়েসের হল প্রাথমিক বিল, যা পণ্য সরবরাহ বা রপ্তানি করার পূর্বে আমদানিকারক এবং রপ্তানিকারকের মধ্যে নির্দিষ্ট কোনো পণ্যের পরিমাণ, ইউনিট প্রাইজ, পেমেন্ট ও ডেলিভারি টার্মস, কান্ট্রি অব অরিজিন ইত্যাদি বিষয় নিয়ে আলোচনা সাপেক্ষে একমত হয়ে অর্থ লেনদেনের বিনিময়ে রপ্তানিকারক যে চালান তৈরি করে আমদানিকারকের নিকট পাঠায়।
নির্দেশনায় বলা হয়েছে, সরবরাহকারীর ক্রেডিট রিপোর্ট মেয়াদ থাকার মধ্যে একবার নেওয়া যাবে। ব্যাংকগুলো একটি রিপোর্টের জন্য একাধিকবার সংগ্রহ খরচ পরিশোধ করতে পারবে না। ব্যাংকগুলো ওই সরবরাহকারীর কাছ থেকে আমদানি করা সব আমদানিকারকের জন্য রিপোর্টটি ব্যবহার করতে পারবে।
নির্দেশনায়, ব্যাংকগুলোকে সংশ্লিষ্ট আমদানিকারকদের জন্য যুক্তিসঙ্গত সার্ভিস চার্জ নির্ধারণ করতে বলা হয়েছে। অন্য ব্যাংক থেকে আমদানিকারকরা যে ক্রেডিট রিপোর্ট নেবে, সেটিও গ্রহণযোগ্য হবে।
অপর এক সার্কুলারে বলা হয়েছে, ব্যাক টু ব্যাক এলসির মাধ্যমে অভ্যন্তরীণ লেনদেন পরিচালনার ক্ষেত্রে ব্যাংকগুলোকে এলসি সংক্রান্ত বিষয়ে যোগাযোগের জন্য ইলেকট্রনিক অপশন প্রবর্তনের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এতে করে এলসি ট্রান্সমিশন, অ্যাডভাইজিং, উপস্থাপন, বিলে সইসহ অন্যসব যোগাযোগ ইলেকট্রনিক ব্যবস্থায় করতে পারবে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, প্রতিটি ক্রেডিট রিপোর্ট সংগ্রহের জন্য ২০০ মার্কিন ডলারের অধিক ব্যয় হয়। ক্রেডিট রিপোর্ট সংগ্রহের লিমিট বাড়ানো এবং একই রিপোর্ট বারবার ব্যবহারের ফলে আমদানি ব্যয় কিছুটা কমবে। অন্যদিকে, ব্যাক টু ব্যাক ব্যবস্থায় ইলেকট্রনিক পদ্ধতি প্রবর্তনের ফলে লেনদেনের জটিলতা কমবে।
ঢাকা/এনএফ/এনএইচ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর সরবর হ র জন য
এছাড়াও পড়ুন:
গাজায় মানবিক সহায়তা প্রবেশ বন্ধ করল ইসরায়েল
গাজায় সব মানবিক সহায়তা প্রবেশ বন্ধ করে দিয়েছে ইসরায়েল। রোববার দেশটি হুঁশিয়ার দিয়ে বলেছে, হামাস যুদ্ধবিরতির মেয়াদ বৃদ্ধির নতুন প্রস্তাব মেনে না নিলে ‘আরও পরিণতি’ ভোগ করতে হবে। তাদের অবশ্যই যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবিত যুদ্ধবিরতি সম্প্রসারণ পরিকল্পনায় রাজি হতে হবে।
বিবিসি জানিয়েছে, ইসরায়েলের এই বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় দেশটির বিরুদ্ধে ভঙ্গুর যুদ্ধবিরতিকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার চেষ্টার অভিযোগ তুলেছে ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র সংগঠন হামাস। তারা বলেছে, গাজায় ত্রাণ প্রবেশ বন্ধ করে দেওয়া নির্যাতনের এক সহজ উপায়, যুদ্ধাপরাধ ও চুক্তির (যুদ্ধবিরতি) ঘোরতর লঙ্ঘন। এই ঘটনায় মধ্যস্থতাকারীদের সহায়তাও চেয়েছে হামাস।
নেতানিয়াহুর দপ্তর এক বিবৃতিতে বলেছে, প্রথম ধাপের বন্দিবিনিময় চুক্তি শেষ হয়েছে এবং হামাস উইটকফের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করায় প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, আজ (রোববার) সকাল থেকে গাজায় সব ধরনের পণ্য ও সরবরাহ প্রবেশ বন্ধ থাকবে।
ইসরায়েলের সঙ্গে হামাসের সম্পাদিত যুদ্ধবিরতি চুক্তির আওতায় এক মাসের কিছু বেশি সময় ধরে গাজা উপত্যকায় মানবিক সহায়তা প্রবেশের সুযোগ পাচ্ছিল। কিন্তু রোববার সকাল থেকে গাজায় আর কোনো পণ্যবাহী ট্রাক প্রবেশ করেনি। এতে গাজায় হঠাৎ করে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে বলে জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা। সেখানকার মানুষ ময়দা, রুটি যা পারছে তাই খুঁজছেন। যেন সারাদিন রোজা রাখার পর অন্তত ইফতার করা যায়। পণ্য সরবরাহ বন্ধ করায় আবারও না খেয়ে থাকায় শঙ্কায় পড়েছেন গাজাবাসী।
এদিকে আনুষ্ঠানিকভাবে গাজার যুদ্ধবিরতির প্রথম ধাপের ৪২ দিনের মেয়াদ শেষ হয়েছে। ইসরায়েল জানিয়েছে, দ্বিতীয় ধাপ নিয়ে কোনো ঐকমত্য না হলেও, এখনই হামলায় যাচ্ছে না তারা। যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাব মেনে রমজান মাসে যুদ্ধ বন্ধ রাখার বিষয়ে প্রাথমিক সম্মতি দিয়েছেন নেতানিয়াহু। তবে হামাস গাজার যুদ্ধবিরতির চুক্তির দ্বিতীয় ধাপ বাস্তবায়নের দাবি জানিয়েছে।
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে ধ্বংসস্তূপের ভেতর থেকে আরও ২৩ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এর ফলে অবরুদ্ধ এই উপত্যকাটিতে নিহতের মোট সংখ্যা প্রায় ৪৮ হাজার ৪০০ জনে পৌঁছেছে।