যুবলীগ নেতা ও এএসআইর সঙ্গে তরুণীর নৃত্যের ভিডিও ভাইরাল
Published: 15th, January 2025 GMT
মাদারীপুরের রাজৈর থানা পুলিশের দুই উপ-সহকারী পুলিশ পরিদর্শকের (এএসআই) নারী নিয়ে অশ্লীল নৃত্যের কয়েকটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। এ ঘটনায় অভিযুক্তদের প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইন্সে ক্লোজড করা হয়েছে।
বুধবার (১৫ জানুয়ারি) ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন মাদারীপুরের পুলিশ সুপার মো. সাইফুজ্জামান।
অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যরা হলেন- রাজৈর থানার উপ-সহকারী পুলিশ পরিদর্শক মো.
আরো পড়ুন:
অটোরিকশা চালকদের মারধরে ৩ পুলিশ আহত
পুলিশকে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত করতে কাজ করছে কমিশন: আইজিপি
সম্প্রতি রাজৈর থানার দুই উপ-সহকারী পুলিশ পরিদর্শকের চারটি ভিডিও ক্লিপ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়। ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, দুই পুলিশ সদস্য একটি টিনশেট ঘরে একাধিক নারীকে নিয়ে অশ্লীলভাবে নাচছেন। ওই কক্ষের খাটে বসে নৃত্য উপভোগ করতে দেখা যায় রাজৈর উপজেলা যুবলীগ নেতা রাহাত হোসেনকে।
অভিযোগের বিষয়ে ভিন্ন ভিন্ন কথা বলেছেন অভিযুক্ত দুই উপ-সহকারী পুলিশ পরিদর্শক। অভিযুক্ত উপ-সহকারী পুলিশ পরিদর্শক স্বপন অধিকারী বলেন, “আমি বিনদাস মানুষ, মাঝে মধ্যে একটু আমোদ ফূর্তি করি। অনেক সময় আসামি ধরতে নানা কৌশল নিতে হয়। এতে যদি অন্যায় হয়, তাহলে আমি দোষী। আর অন্যায় না হলে কিছু করার নেই।”
অপর উপ-সহকারী পুলিশ পরিদর্শক মো. হাদিবুর রহমান বলেন, “আমার জন্মদিন উপলক্ষ্যে কিছুদিন আগে বন্ধু-বান্ধব মিলে একটু আনন্দ-ফূর্তি করেছি। সেটা ভিডিও করে কে ভাইরাল করল, বিষয়টি বুঝে আসছে না। আমাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রও হতে পারে। আমি ভুল শিকার করছি, এরকম কাজ আর কখনো করব না।”
যুবলীগ নেতা রাহাত হোসেনের উপস্থিতির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “কে কে ছিল, সেটা জানি না। আমার বন্ধুরা মিলে এমন আয়োজন করেছিল। তাই সেখানে গিয়েছি। তাছাড়া আমাদের শরীরে কোনো ইউনিফর্ম ছিল না। সবারই কম বেশি আনন্দ-ফূর্তি করার অধিকার আছে।”
যুবলীগ নেতা রাহাত হোসেন পলাতক থাকায় তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
রাজৈর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মাদ মাসুদ খান বলেন, “পুলিশ বাহিনী শৃঙ্খলা মেনে কাজ করে। কোনো অবস্থায় আইনের বাহিরে কিছু করতে পারে না। যদি অন্যায় বা শৃঙ্খলা ভঙ্গের কাজ বাহিনীর কেউ করেন, তার দায়ভার পুলিশ বিভাগ নেবে না। অভিযুক্তদের বিষয় জানতে পেরে তাৎক্ষণিক পুলিশ সুপারকে অবহিত করা হয়। তিনি তাদের ক্লোজড করেছেন।”
মাদারীপুরের পুলিশ সুপার মো. সাইফুজ্জামান বলেন, “পুলিশ বাহিনী অত্যন্ত শৃঙ্খলা মেনে কাজ করে। যে ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়েছে, সেটা অত্যন্ত নিন্দনীয়। কোনো ভাবেই এমনটি কোনো পুলিশের সদস্য করতে পারেন না। তাৎক্ষনিক অভিযুক্তদের পুলিশ লাইন্সে ক্লোজড করা হয়েছে। অচিরেই শৃঙ্খলা ভঙ্গ করায় বিভাগীয় মামলা করা হবে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে।”
ঢাকা/বেলাল/মাসুদ
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
‘অবৈধ অভিবাসন ও মানবপাচার দমনে বাংলাদেশকে সহযোগিতা করবে ইতালি’
অবৈধ অভিবাসন ও মানবপাচার প্রতিরোধ এবং আন্তঃদেশীয় অপরাধ দমনসহ বাংলাদেশ পুলিশের দক্ষতা ও সক্ষমতা বৃদ্ধিতে ইতালি সহায়তা করবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে নিজ কার্যালয়ে ঢাকায় নিযুক্ত ইতালির রাষ্ট্রদূত আন্তোনিও আলেসান্দ্রোর সঙ্গে সাক্ষাৎকালে তিনি এ কথা জানান।
সাক্ষাতে আসন্ন ৫-৬ মে ইতালির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মাতেও পিয়ান্তেদোসির বাংলাদেশ সফর, অবৈধ অভিবাসন ও মানবপাচার প্রতিরোধ, নিরাপত্তা খাতে পারস্পরিক সহায়তা; পুলিশ ও বর্ডার গার্ড বাংলাদেশকে উন্নত প্রশিক্ষণ প্রদান এবং জনশৃঙ্খলা রক্ষা ও আন্তঃদেশীয় অপরাধ দমনে পুলিশের দক্ষতা বৃদ্ধি সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়।
বৈঠকের শুরুতে রাষ্ট্রদূতকে স্বাগত জানিয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, “ইতালি বাংলাদেশের পরীক্ষিত বন্ধু।” তিনি উল্লেখ করেন, ইতালিতে প্রায় ২ লাখ ৫০ হাজার বাংলাদেশি দক্ষ কর্মী কর্মরত আছেন, যারা রেমিট্যান্স প্রেরণের মাধ্যমে দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছেন। উপদেষ্টা আশা প্রকাশ করেন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সফরের মাধ্যমে এই সংখ্যাটি আরো বাড়বে এবং দুদেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক আরো দৃঢ় হবে।
রাষ্ট্রদূত জানান, সফরকালে ইতালির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস, পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন এবং আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক ও প্রবাসী কল্যাণ এবং বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ নজরুলের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন।
এ সময় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জানান, ৫ মে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সম্মানে ‘গার্ড অব অনার’ প্রদান করা হবে এবং একটি দ্বিপাক্ষিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। এতে উভয় দেশের সম্মতিক্রমে অবৈধ অভিবাসন রোধ, আন্তঃদেশীয় অপরাধ দমন এবং পুলিশ বিভাগের মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতা নিয়ে ঘোষণা, সমঝোতা স্মারক বা চুক্তি স্বাক্ষর হতে পারে।
তিনি আরো বলেন, “বাংলাদেশ সব সময় আন্তর্জাতিক নিয়ম মেনে বৈধ চ্যানেলে জনশক্তি রপ্তানিতে আগ্রহী। আমরা অবৈধ অভিবাসনের বিপক্ষে এবং যারা দালালের মাধ্যমে বিদেশে যাওয়ার চেষ্টা করে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
বৈঠকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (নিরাপত্তা ও বহিরাগমন) মো. শামীম খান, জননিরাপত্তা বিভাগের যুগ্মসচিব (রাজনৈতিক-১) মো. জসীম উদ্দিন খান এবং ঢাকাস্থ ইতালি দূতাবাসের অভিবাসন সংযুক্ত কর্মকর্তা জিউসেপ্পে দি জিওভান্নি উপস্থিত ছিলেন।
ঢাকা/নঈমুদ্দীন/এনএইচ