কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলার কুলিয়ারা ইউনিয়নের কৃষ্ণপুর গ্রামে চার বছরের শিশু নাবিলাকে ধর্ষণ ও হত্যা মামলার আসামি মেহরাজ হোসেন তুষারকে মৃত্যদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে আসামিকে এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

বুধবার (১৫ জানুয়ারি) বিকেলে কুমিল্লা জেলা নারী ও শিশু ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক নাজমুল হল শ্যামল এ রায় দেন। সাজাপ্রাপ্ত মেহরাজ একই গ্রামের আলী আশরাফের ছেলে।

বাদী পক্ষের আইনজীবী মো শরীফুল ইসলাম জানান, ২০১৮ সালের ১৭ ডিসেম্বর চকলেট দেওয়ার প্রালোভন দেখিয়ে নাবিলাকে ধর্ষণের পর হত্যা করেন প্রতিবেশী যুবক মেহেরাজ। তিনি পরে শিশুটির মরদেহ নির্মাণাধীন একটি বাড়ির কার্নিশে সিমেন্টের ব্যাগে লুকিয়ে রাখেন। সেদিন নাবিলাকে খোঁজাখুঁজি করে না পেয়ে এলাকায় মাইকিং করেন তার পরিবারের সদস্যরা।

আরো পড়ুন:

মানিকগঞ্জে বৃদ্ধাকে গলাকেটে হত্যা

ঝিনাইদহে জামায়াত নেতা হত্যা মামলার আসামিকে কুপিয়ে খুন

পরদিন সকালে নাবিলার মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নিয়ে যায় পুলিশ। এই ঘটনায় নাবিলার দাদা আবদুল আজীজ বাদী হয়ে কুমিল্লা সদর দক্ষিণ থানায় নাম না জানা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মামলা করেন। পুলিশী তদন্তের পর আসামি মেহরাজ হোসেন তুষারকে গ্রেপ্তার করে। দীর্ঘ শুনানির পর আজ নারী ও শিশু ট্র্যাইব্যুনাল-১ এর বিচারক আসামি মেহরাজকে মৃত্যুদণ্ড দেন। 

নিহত নাবিলার মা  হালিমা আক্তার বলেন, ‍“গত সাত বছর ধরে মেয়ে হত্যার বিচারের জন্য আমি আদালতে ঘুরেছি। অবশেষে আসামি মেহরাজের ফাঁসির আদেশ হয়েছে। আমি সন্তুষ্ট। দ্রুত সময়ের মধ্যে এই রায় কার্যকর চাই।” 

কুমিল্লা নারী ও শিশু ট্রাইব্যুনালের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) বদিউল আলম সুজন জানান, ১৮ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে বিচারক আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন। আসামি মেহরাজ জবানবন্দীতে নাবিলাকে ধর্ষণ ও হত্যার কথা স্বীকার করেছেন। যে রায় হয়েছে এতে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। 

ঢাকা/রুবেল/মাসুদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

দেশে তামাকের ব্যবহার কমেছে

বাংলাদেশে গত ১৩ বছরে তামাকের ব্যবহার কমেছে ৭ শতাংশ। তামাক নিয়ন্ত্রণে এমন অগ্রগতি থাকলেও ২০৩০ সালের মধ্যে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা অর্জন এখনও চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছেন খাত সংশ্লিষ্টরা।

আজ বুধবার বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএমইউ) আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এসব তথ্য জানানো হয়। অনুষ্ঠানে ‘বাংলাদেশে তামাক ব্যবহারের প্রবণতা ও পূর্বাভাস’ শীর্ষক গবেষণার ফলাফল তুলে ধরেন বিএমইউর জার্নালের এক্সিকিউটিভ এডিটর অধ্যাপক ড. এম মোস্তফা জামান। সভাপতিত্ব করেন বিএমইউর প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (গবেষণা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. মো. মুজিবুর রহমান হাওলাদার। প্রধান অতিথি ছিলেন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব শেখ মোমেনা মনি। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের যুগ্ম-সচিব (বিশ্ব স্বাস্থ্য) মো. মামুনুর রশিদ।

গবেষণায় দেখা গেছে, ২৫-৬৯ বছর বয়সী বাংলাদেশীদের তামাক ব্যবহার (ধূমপান ও ধোঁয়াবিহীন) ২০০৯ সালে ৫৪ শতাংশ থেকে কমে ২০২২ সালে ৪৭ শতাংশে নেমেছে। ধূমপানের হার ২৭ শতাংশ থেকে ২২ শতাংশ এ মেনেছে। ধোঁয়াবিহীন তামাকের ব্যবহার ৩৬ শতাংশ থেকে ৩১ শতাংশ। লিঙ্গভিত্তিক বিশ্লেষণে পুরুষদের মধ্যে তামাক ব্যবহারের হ্রাস নারীদের তুলনায় কিছুটা বেশি। শহর ও গ্রামীণ এলাকায় তামাক ব্যবহার কমলেও শহুরে অঞ্চলে হ্রাসের হার বেশি স্পষ্ট।

এম মোস্তফা জামান বলেন, বর্তমান যে হারে তামাক ব্যবহার কমছে, এই গতিতে এগোলে ২০৩০ সালের মধ্যে তামাকের ব্যবহার ৩০ শতাংশ কমানোর বৈশ্বিক লক্ষ্য পূরণ সম্ভব নয়। তথ্য বিশ্লেষণে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এনসিডি (অসংক্রামক রোগ) প্রতিরোধ রোডম্যাপ অনুযায়ী, ২০৩০ সালের মধ্যে তামাক ব্যবহার ৩০ শতাংশ কমানোর লক্ষ্য অর্জন করতে হলে বর্তমান নীতিমালার গতি দ্বিগুণ করতে হবে।

গবেষণায় সুপারিশ তুলে ধরে তিনি বলেন, তামাক নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি জোরদার করে বর্তমান হ্রাসের হার ত্বরান্বিত করতে হবে। ব্যবহারিক গবেষণা পরিচালনা করা প্রয়োজন, বিশেষ করে নীতি ও আইনের দিকে বিশেষ নজর দিয়ে, যাতে অপর্যাপ্ত হ্রাসের কারণ চিহ্নিত করা যায়।

ডা. মো. মুজিবুর রহমান হাওলাদার বলেন, তামাক ব্যবহার বাংলাদেশের মানুষের স্বাস্থ্য ঝুঁকির জন্য দায়ী এবং উদ্বেগজনক। এই ঝুঁকি কমানোর ক্ষেত্রে গণমানুষকে সম্পৃক্ত ও সচেতন করতে হবে। গণমাধ্যম এক্ষেত্রে বড় ভূমিকা রাখতে পারে। তামাক ব্যবহারের মাত্রা ও ঝুঁকি শহর ও গ্রাম পর্যায়ে আলাদাভাবে তুলে ধরা জরুরি।

বিশেষজ্ঞদের মন্তব্যে জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, তামাক ব্যবহার হ্রাসে বাংলাদেশের অগ্রগতি প্রশংসনীয়, তবে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য (এসডিজি) অর্জনে আরও কঠোর নীতি ও সামাজিক সচেতনতা প্রয়োজন। ধোঁয়াবিহীন তামাকের ব্যবহার কমাতে বিশেষ উদ্যোগ নিতে হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ