পর্দানশীন নারীদের ধর্মীয় ও প্রাইভেসি (গোপনীয়তা) অধিকার অক্ষুণ্ণ রেখেই ছবি ছাড়া জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) দেওয়ার দাবি জানিয়েছে মহিলা আনজুমানে আল বাইয়্যিনাত। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে নির্বাচন কমিশনকে (ইসি) তাদের দাবী মেনে নেওয়ার আল্টিমেটাম দিয়েছে সংগঠনটি। 

আজ বুধবার আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনের সামনে আয়োজিত এক মানববন্ধন থেকে তারা এই দাবিপূরণের সময়সীমা বেধে দেয়। ‘১৬ বছর যাবত পর্দানশীন নারীদের এনআইডি বঞ্চিত করে মানবাধিকার হরণের প্রতিবাদ’ এ রাজারবাগ মহিলা আনজুমানে আল বাইয়্যিনাত বিক্ষোভ সমাবেশটি আয়োজন করে। এদিন প্রায় দুই শ’ নারী বোরকা পরে বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড হাতে ইসির সামনে হাজির হন। পরে তিন নারী সদস্য প্রধান নির্বাচন কমিশনারের কাছে তাদের দাবী সম্বলিত স্মারকলিপি হস্তান্তর করেন। 

পরে মহিলা আনজুমানের আহ্বায়ক শারমিন ইয়াসমিন বলেন, তিনটি দাবিতে তারা এই কর্মসূচি দিয়েছে। প্রথমত, গত ১৬ বছর যাবত পর্দানশীন নারীদের মানবাধিকার হরণকারী ইসি কর্মকর্তাদের বিচার করতে হবে। দ্বিতীয়ত, পর্দানশীন নারীদের ধর্মীয় ও প্রাইভেসির অধিকার অক্ষুণ্ন রেখেই এনআইডি প্রদান করতে হবে। তৃতীয়ত, পর্দানশীন নারীদের ফিঙ্গারপ্রিন্ট নেওয়া বাধ্যতামূলক করতে হবে। 

সমাবেশে আয়োজক সংগঠনের সদস্য সচিব সুমাইয়া আহমাদ মুনা, সদস্য মাশহুরাহ ফিরদাউসিসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।

বক্তারা বলেন, গত ১৬ বছর ধরে ইসির কতিপয় স্বৈরাচারী কর্মকর্তা শুধুমাত্র মুখচ্ছবির অজুহাতে পর্দানশীন নারীদের নাগরিকত্ব আটকে রেখেছে, যা এক ধরনের মানবতাবিরোধী অপরাধ। এতে পর্দানশীন নারীরা মৌলিক ও নাগরিক অধিকার বঞ্চিত হয়ে নিদারুণ কষ্ট করছেন। যারা গত ১৬ বছর ধরে পর্দানশীন নারীদের মানবাধিকার হরণ করেছে, তাদের বিচার চায়। মহিলা আনজুমানের সদস্যরা তাদের ধর্মীয় অধিকার এবং প্রাইভেসির অধিকার অক্ষুণ্ন রেখে এনআইডি চায়। সেটি দিতে হবে। আগামী ১ সপ্তাহের মধ্যে দাবি না মানলে দেশব্যাপী ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা মাঠে নামবে।

বক্তারা আরও বলেন, পর্দানশীন মহিলাদের এনআইডি প্রদানে আইনেও কোনো বাধা নেই। বিশেষ করে, পরিচয় নিবন্ধন আইন ২০১০ এবং ২০২৩-এ পরিচয় শনাক্তে চেহারার ছবির কথা উল্লেখ নাই। এমনকি বায়োমেট্রিক যাচাইয়ে ফেশিয়াল রিকগনিশনকেও বাধ্যতামূলক করা হয়নি। কিন্তু তারপরও পর্দানশীন নারীদের নাগরিকত্ব বঞ্চিত করে রেখেছিল সাবেক ইসি কর্মকর্তারা। পর্দানশীন নারীরা চান, নতুন ইসি কর্মকর্তারা আর সেই পথে না হাঁটুক।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: এনআইড স ব সদস য

এছাড়াও পড়ুন:

এনআইডি সংশোধনে ক্ষমতা পেলেন ইসির জেলা কর্মকর্তারা

জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) সংশোধনের অধিকতর জটিল আবেদন নিষ্পত্তি করার ক্ষমতা পেলেন জেলা নির্বাচন কর্মকর্তারা। আগে এই ক্ষমতার আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা ও এনআইডি মহাপরিচালকের ছিল।

মঙ্গলবার ইসির একাধিক সূত্রগুলো বিষয়টি জানিয়েছে। কর্মকর্তারা বলছেন, ঝুলে থাকা চার লাখ এনআইডি সংশোধন সংক্রান্ত আবেদন ক্রাশ প্রোগ্রামের মাধ্যমে নিষ্পত্তি করা হচ্ছে। তবে কার্যক্রমের অগ্রগতি কম। তাই অধিকতর জটিল আবেদন মাঠ পর্যায়ে নিষ্পত্তির জন্য এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
সম্প্রতি আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তাদের সতর্কতার সঙ্গে 'গ' ক্যাটাগরির আবেদন নিষ্পত্তি করার নির্দেশ দিয়েছিল ইসি। এক্ষেত্রে কেবল যে আবেদনগুলো তারা নিষ্পত্তি করতে পারবেন না বলে প্রতীয়মান হবে সেগুলো এনআইডি মহাপরিচালককে ফরওয়ার্ড করতে বলা হয়েছিল।

নির্বাচন কমিশন জটিলতা ধরণ অনুযায়ী 'ক' থেকে 'ঘ' ক্যাটাগরি পর্যন্ত আবেদন ভাগ করে নিয়ে নিষ্পত্তি করে থাকে। এক্ষেত্রে আগামী জুন মাসের মধ্যে সকল ঝুলে থাকা আবেদন নিষ্পত্তির লক্ষ্য নিয়ে এগুচ্ছে সংস্থাটি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • এনআইডি সংশোধনে ক্ষমতা পেলেন ইসির জেলা কর্মকর্তারা