লক্ষ্মীপুরের সড়কে ফিটনেস ও লাইসেন্সবিহীন গাড়ির বিরুদ্ধে অভিযান চালানোর সময় সিএনজি চালিত অটোরিকশা চালকদের হামলায় তিন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন।

বুধবার (১৫ জানুয়ারি) দুপুরে পৌর শহরের বাগবাড়ি এলাকার মেঘনা সড়কে ঘটনাটি ঘটে। আহদের লক্ষ্মীপর সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

জেলা ট্রাফিক পুলিশ পরিদর্শক (টিআই) প্রশান্ত কুমার দাস বলেন, “ফিটনেস ও লাইসেন্সবিহীন পরিবহনের বিরুদ্ধে অভিযান চালানোর সময় ট্রাফিক পুলিশের ওপর হামলা চালায় চালকরা। এতে তিন পুলিশ সদস্য আহত হন। তাদের উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।”

আরো পড়ুন:

রাজশাহীতে যুবদল নেতার বাড়িতে গুলিবর্ষণ, গুলিবিদ্ধ বাবার মৃত্যু

বরিশালে যুবলীগ নেতার পায়ের রগ কাটল দুর্বৃত্তরা

আহত পুলিশ সদস্যরা হলেন- ট্রাফিক পুলিশের সহকারী উপ-পরিদর্শক সবুজ মিয়া, ট্রাফিক পুলিশ কনস্টেবল ঝুটন ভট্টাচার্য ও টারজান বড়ুয়া। 

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ফিটনেস ও লাইসেন্সবিহীন সিএনজি চালিত অটোরিকশাসহ সড়কে বিভিন্ন পরিবহনের বিরুদ্ধে সকাল থেকে শহরের বাগবাড়ি এলাকার মেঘনা সড়কে পুলিশ চেকপোস্ট বসিয়ে অভিযান শুরু করে। এসময় বৈধ কাগজপত্র না থাকায় কয়েকটি সিএনজি চালিত অটোরিকশা জব্দ করে পুলিশ। এ ঘটনার জেরে দুপুরে সিএনজি চালিত অটোরিকশার চালকরা  ট্রাফিক পুলিশ সদস্যদের ওপর হামলা চালায়। এতে তিন পুলিশ সদস্য আহত হন। পরে সিএনজি চালিত অটোরিকশা চালকরা লক্ষ্মীপুর-রামগঞ্জ সড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন। এতে এক ঘণ্টা ওই সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকে। 

সিএনজি চালিত অটোরিকশা চালকদের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে সড়কে গাড়ি চালাতে তাদের মাসোহারা দিতে হয়। অভিযানের নামে সড়কে তাদের কাছ থেকে বিভিন্ন সময় গাড়ি আটকিয়ে টাকা আদায় করা হয়। আজ কয়েকটি সিএনজি চালিত অটোরিকশা আটক করে মামলা দেয় ট্রাফিক পুলিশ। এর জেরে হামলার ঘটনা ঘটে।

লক্ষ্মীপুরের পুলিশ সুপার মো.

আকতার হোসেন বলেন, “কি কারণে পুলিশের ওপর হামলা হয়েছে তা তদন্ত করা হচ্ছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

ঢাকা/জাহাঙ্গীর/মাসুদ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আহত প ল শ সদস য স এনজ

এছাড়াও পড়ুন:

ভারতে পুলিশ বাহিনীর সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সদস্যের ওপর হামলা

ধর্মীয় পরিচয়ের কারণে এবার ভারতে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের পুলিশের ওপর আক্রমণ শুরু হয়েছে। মধ্যপ্রদেশের ভোপালের রানি কমলাপতি রেলস্টেশনে (পুরোনো নাম হাবিবগঞ্জ স্টেশন) রেলওয়ে পুলিশের এক উর্দিধারী কর্মীর ওপরে হামলা হয়েছে।

পুলিশের সূত্রকে উদ্ধৃত করে ভারতের দৈনিক ভাস্কর পত্রিকা জানিয়েছে, তিনজন তরুণ একজন রেলওয়ে পুলিশ কনস্টেবলের ওপর হামলা চালিয়েছেন। ওই তরুণেরা তাঁর ইউনিফর্ম ছিঁড়ে ফেলেছেন। তরুণেরা তাঁকে গালিগালাজ এবং আপত্তিকর ধর্মীয় মন্তব্য করেন। ওই পুলিশ সদস্যের নাম নজর দৌলত খান।

গত শনিবার দিবাগত রাত দুটার দিকে এ ঘটনা ঘটে বলে জানা গেছে। পুলিশ অভিযুক্ত তরুণদের মধ্যে একজনকে গ্রেপ্তার করেছে। বাকি দুজন এখনো পলাতক। তাঁরা নেশাগ্রস্ত ছিলেন বলে পুলিশ সূত্র জানিয়েছে।

স্থানীয় পুলিশ সূত্র জানায়, হেড কনস্টেবল নজর দৌলত এবং তাঁর দল দোকান ও রেস্তোরাঁ বন্ধ করতে স্টেশন চত্বরে গিয়েছিলেন। তাঁরা যখন এ কাজ করছিলেন তখন নজর দৌলত একটি থেমে থাকা গাড়ির মধ্যে একদল তরুণকে মদ্যপান করতে দেখেন। তিনি তাঁদের চলে যেতে বললে তর্ক-বিতর্ক শুরু হয়। একপর্যায়ে ওই তরুণেরা ওই পুলিশ সদস্যের ওপর হামলা চালায়।

গতকাল রোববার ঘটনার একটি ভিডিও ভারতের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এই ভিডিও পুলিশের কাছেও স্বাভাবিকভাবে পৌঁছায়। ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, তরুণেরা শুধু নজর দৌলতকে মারধরই করেননি, তাঁর ধর্ম উল্লেখ করে অবমাননাকর মন্তব্যও করেছেন।

সন্দীপ ও কমল রঘুবংশী নামের নজর দৌলতের অন্য দুই সঙ্গী কনস্টেবল তাঁকে বাঁচাতে হস্তক্ষেপ করলে অভিযুক্ত তরুণদের একজন তাঁদের বলে, ‘তোমরা হিন্দু ভাই, তোমরা এখান থেকে সরে যাও।’

ওই তরুণ আরও বলেন, ‘হিন্দু ভাইয়েরা বুদ্ধিমান আর এই লোক (দৌলত খান) তাদেরই বক্তৃতা দিচ্ছে।’

রেলওয়ে স্টেশনে আশপাশের প্রত্যক্ষদর্শীদের রেকর্ড করা ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, মদ্যপ তরুণেরা পুলিশের জিপের দরজা জোর করে খুলছেন এবং কনস্টেবলকে গাড়ির ভেতরে ঢুকে মারধর করছেন।

উপপরিদর্শক (এসআই) রামদয়ালকে উদ্ধৃত করে দৈনিক ভাস্কর পত্রিকা নিশ্চিত করেছে, অভিযুক্ত তিন তরুণের বিরুদ্ধে অভিযোগ নথিভুক্ত করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে জিতেন্দ্র যাদব নামে এক তরুণকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁর দুই পলাতক সহযোগীকে ধরতে অভিযান চলছে।

সাম্প্রতিক সময়ে বিশেষ করে পবিত্র রমজান মাস থেকে এখন পর্যন্ত মুসলিম সমাজের ওপরে ভারতের বিভিন্ন জায়গায় হামলা হয়েছে। কখনো ধর্মীয় সম্পত্তি, কখনো মাদ্রাসা বা অন্যান্য সংখ্যালঘু সমাজের স্কুল, কখনো তাঁদের ব্যবসা-বাণিজ্য থেকে সাধারণ মানুষের ওপরে হামলার ঘটনা প্রবলভাবে বেড়েছে। মুসলিম সম্প্রদায়ের কয়েকজনের মৃত্যুও হয়েছে।

তবে একজন পুলিশ কর্মীকে বেছে নিয়ে নির্দিষ্টভাবে হামলার ঘটনা সাম্প্রতিক সময়ে সম্ভবত এই প্রথম ঘটল।

সম্পর্কিত নিবন্ধ