একসময় লাইট-ক্যামেরা-অ্যাকশনে সরগরম ছিল বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশন (বিএফডিসি)। কিন্তু এখন সিনেমার অধিকাংশ শুটিং এফডিসির বাইরে হয়। এর কারণ ব্যাখ্যা করে চলচ্চিত্র নির্মাতা-প্রযোজকরা জানান, এফডিসিতে শুটিং খরচ বেশি।

দীর্ঘদিন ধরে চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্টরা দাবি করে আসছেন, শুটিং ফ্লোরসহ যন্ত্রাংশের ভাড়া কমিয়ে আনার। অবশেষে এফডিসিতে শুটিং ফেরানোর নানা উদ্যোগ নিয়েছেন বিএফডিসি কর্তৃপক্ষ।

চলচ্চিত্র নির্মাণে শুটিংয়ের যন্ত্রপাতি ও স্থাপনা ভাড়ার হার পরীক্ষমূলকভাবে ৬ মাসের জন্য পুনর্নির্ধারণ করা হয়েছে। বছরের শুরুতেই এফডিসির পরিচালক (প্রকল্প) মো.

রেজাউল হক স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।

আরো পড়ুন:

ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করলেন অভিনেতা সাহিল খানের স্ত্রী

সৃজিত-ঋতাভরী কেন আলোচনায়?

প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ১ ও ৬ নম্বর ফ্লোর সেট নির্মাণ ও শুটিংকালীন ভাড়া ছিল যথাক্রমে— ২৫৫০ ও ৬৫০০ টাকা। নতুন বিজ্ঞপ্তির ফলে এ ভাড়া কমে দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে, ২০০০ ও ৫০০০ টাকায়।

২ নম্বর ফ্লোর (এসি ছাড়া) সেট নির্মাণ ও শুটিংকালীন ভাড়া ছিল যথাক্রমে, ৫১০০ ও ১৩০০ টাকা। এটি কমে দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে ৪০০০ ও ৯০০০ টাকা। ২ নম্বর ফ্লোর (এসিসহ) সেট নির্মাণ ও শুটিংকালীন ভাড়া ছিল যথাক্রমে ৫১০০ ও ১৮৫৪০ টাকা। এটি কমে দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে ৪০০০ ও ১১৫০০ টাকায়।

তথ্য অনুযায়ী, সেট নির্মাণের সময়ে এফডিসির খালি জায়গা, ছাদ ও সুইমিংপুলের ভাড়া ছিল ১০০০ থেকে ৩০০০ টাকা; যা অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে।

ইনডোরে রেড ড্রাগন ক্যামেরার শুটিং ভাড়া ছিল প্রতি শিফট ৬ হাজার ১২০ টাকা। এখন সেটি করা হয়েছে ৩ হাজার টাকা। একই ক্যামেরায় আউটডোর শুটিংয়ে আগে ছিল ৬ হাজার ৬৩০ টাকা। এখন সেটি করা হয়েছে সাড়ে ৩ হাজার টাকা। একই ক্যামেরায় দেশের বাইরে শুটিং করতে আগে লাগত ১৯ হাজার ৫০০ টাকা, তা কমিয়ে এখন করা হয়েছে ১০ হাজার টাকা।

সনি ক্যামেরায় ইনডোরে আগে শুটিং ভাড়া ছিল ৫ হাজার ১০০ টাকা, এখন ২ হাজার টাকা। একই ক্যামেরায় আউটডোরে শুটিং ভাড়া ছিল ৫ হাজার ৬১০ টাকা; এখন আড়াই হাজার টাকা। এ ছাড়াও দেশের বাইরে একই ক্যামেরায় শুটিংয়ের জন্য প্রতিদিন গুনতে হতো ১৬ হাজার ৫০০ টাকা। এখন ১০ হাজার টাকা।

সনি ক্যামেরায় ইনডোরে আগের শুটিং ভাড়া ছিল ৫ হাজার ১০০ টাকা, এখন সেটা করা হয়েছে ২ হাজার টাকা। একই ক্যামেরায় আউটডোরে শুটিং ভাড়া ছিল  ৫ হাজার ৬১০ টাকা। এখনে সেটা করা হয়েছে আড়াই হাজার টাকা। এছাড়াও দেশের বাইরে একই ক্যামেরায় শুটিংয়ের জন্য প্রতিদিন গুনতে হতো ১৬ হাজার ৫০০ টাকা। এখন সেটা করা হয়েছে ১০ হাজার টাকা।

ডিজিটাল সম্পাদনা মেশিন চার্জ (প্রতি শিফট) আগে ছিল ২ হাজার ১০০ টাকা। এখন সেটা করা হয়েছে দেড় হাজার টাকা। ডিজিটাল কালার গ্রেডিং (প্রতি শিফট) আগে ছিল ৩ হাজার ১৫০ টাকা। এখন সেটা কমিয়ে হয়েছে আড়াই হাজার টাকা।

তা ছাড়াও শুটিংয়ের নানা যন্ত্রাংশের ভাড়া কমানোর পাশাপাশি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বা দাতব্য প্রতিষ্ঠানের শুটিংয়ে সর্বোচ্চ ২০ শতাংশ ভাড়া ছাড় দেয়া হবে বলেও এ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।

এ বিজ্ঞপ্তিতে বেশ কিছু শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে—
* কোনো যন্ত্রপাতি এফডিসি ব্যতীত অন্যকোনো উৎস থেকে এনে ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিতে হবে এবং সে ক্ষেত্রে শিফট ভিত্তিক বিদ্যুৎ বিল প্রযোজ্য হবে।
* শুটিং স্পটে বা শুটিংয়ের ক্ষেত্রে কোনো ল্যাম্প বা বাল্ব ফেটে গেলে/ হারানো গেলে সংশ্লিষ্ট নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের নিকট থেকে আদায় যোগ্য, তবে ফিউজ হলে যৌক্তিকতা নির্ণয় সাপেক্ষে বিলের বিষয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন।
* সকল প্রকার ভাড়া/বরাদ্দ শিডিউলের মাধ্যমে প্রদান করা হবে।
* প্রচলিত অন্যান্য নিয়মকানুন অপরিবর্তিত থাকবে।
* শুটিং ও পিকনিক ব্যতীত পর্যটকগণ কক্ষ ব্যবহার করলে শুটিংয়ের নির্ধারিত রেট প্রযোজ্য হবে।
* যে সকল যন্ত্রপাতি/যন্ত্রাংশের সেবার হার এ রেট কার্ডে অন্তর্ভুক্ত হয়নি তা পূর্বের ন্যায় বহাল থাকবে।
* বিএফডিসির বাইরে নির্মিত চলচ্চিত্রের অনাপত্তি গ্রহণের ক্ষেত্রে বিএফডিসি বরাবর ২০,০০০/- টাকা অনাপত্তি ফি জমা দিতে হবে।
* করপোরেশনের ফ্লোর, চত্ত্বর, বিভিন্ন কক্ষ, স্টোর রুম, মেকআপ রুমসহ স্থাবর স্থানে বা কোনো শুটিং স্পটে শুটিং ও সেট নির্মাণ করলে উক্ত স্পটের ভাড়া সার্ভিস চার্জের আওতায় থাকবে। ক্যামেরা এবং অন্যান্য যন্ত্রপাতি, যন্ত্রাংশ, গ্যাস, বিদ্যুৎ, পানি সার্ভিস চার্জের আওতার বহির্ভূত থাকবে
* সরকারি বিধিমালা মোতাবেক ভ্যাটসহ অন্যান্য কর্তন প্রযোজ্য হবে।
* সেবার হার পুনর্নির্ধারণ, পুনর্মূল্যায়ন, সংযোজন, পরিবর্তন, পরিবর্ধন বা যেকোনো ধরনের সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা বিএফডিসি কর্তৃপক্ষ সংরক্ষণ করেন।

ঢাকা/রাহাত/শান্ত

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর চলচ চ ত র একই ক য ম র য় চলচ চ ত র ব এফড স এফড স র এখন স ট

এছাড়াও পড়ুন:

সামারিক শক্তিতে মিয়ানমারের চেয়ে ২ ধাপ এগিয়ে বাংলাদেশ

চলতি বছর সামরিক শক্তির দিক থেকে মিয়ানমারের চেয়ে দুই ধাপ এগিয়েছে বাংলাদেশ। চলতি সপ্তাহে সামরিক শক্তি পর্যবেক্ষক প্রতিষ্ঠান গ্লোবাল ফায়ার পাওয়ার প্রকাশিত সূচকে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

সংস্থাটি তাদের প্রতিবেদনে জানিয়েছে, এই র‌্যাংকিংয়ের ক্ষেত্রে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে সংশ্লিষ্ট রাষ্ট্রের সামরিক বাজেট। সেনাবাহিনীর আকার, নৌবাহিনী এবং বিমানবাহিনীর শক্তিকেও বিবেচনা করা হয়েছে সমীক্ষায়।

গ্লোবাল ফায়ারপাওয়ারের সূচক অনুযায়ী, বিশ্বে সামরিক শক্তির ক্ষেত্রে শীর্ষে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, এরপরে পরে রয়েছে রাশিয়া, চীন, ভারত ও দক্ষিণ কোরিয়া। পরমাণু শক্তিধর হলেও পাকিস্তানের অবস্থান ১২ নম্বরে। তালিকায় বাংলাদেশ রয়েছে ৩৫তম অবস্থানে। বাংলাদেশের আগে রয়েছে উত্তর কোরিয়া ও আর্জেন্টিনা। আর বাংলাদেশের প্রতিবেশী মিয়ানমার রয়েছে ৩৭তম অবস্থানে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যা ১৬ কোটির বেশি। এর মধ্যে প্রায় ৬ কোটি ৬১ লাখ মানুষ সামরিক বাহিনীতে যুক্ত হওয়ার যোগ্য। বাংলাদেশের সামরিক বাহিনীতে মোট সেনা সংখ্যা ১ লাখ ৬৩ হাজার। বাংলাদেশ বিমানবাহিনীতে রয়েছে ১৭ হাজার ৪০০ সদস্য এবং নৌবাহিনীতে রয়েছে ২৫ হাজার ১০০ সেনা। 

অন্যদিকে, মিয়ানমারের মোট জনসংখ্যা ৫ কোটি ৭৫ লাখ। এর মধ্যে প্রায় ২ কোটি ২০ লাখ মানুষ সামরিক বাহিনীতে যুক্ত হওয়ার যোগ্য। মিয়ানমারের সক্রিয় সৈন্য সংখ্যা ১ লাখ ৫০ হাজার। মিয়ানমারের রিজার্ভ সৈন্য রয়েছে ২০ হাজার। দেশটির বিমানবাহিনীতে রয়েছে ১৫ হাজার সদস্য এবং নৌবাহিনীতে রয়েছে ১৬ হাজার সেনা। 

ঢাকা/শাহেদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ