স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (অব.) বলেছেন, দেশে বর্তমানে আনসার-ভিডিপির সদস্য সংখ্যা প্রায় ৬১ লাখ। এ বিপুল সদস্যের আনসার বাহিনীকে আরও প্রশিক্ষিত করে দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নে কাজে লাগানো হবে। তাদের প্রশিক্ষণেও বৈচিত্র্য আনা হচ্ছে। মৌলিক অস্ত্র চালানোর প্রশিক্ষণসহ সবাইকে বিভিন্ন কর্মমুখী ট্রেডে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। এর মাধ্যমে আত্মকর্মসংস্থানের পাশাপাশি দেশের সংকটময় সময়ে তাদের সঠিকভাবে কাজে লাগানো সম্ভব হবে। এক্ষেত্রে জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, বাংলাদেশ শিল্প কারিগরি সহায়তা কেন্দ্রসহ (বিটাক) বিভিন্ন দক্ষতা উন্নয়নমূলক প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের সহায়তা নেওয়া হচ্ছে। 

রাজধানীর খিলগাঁওয়ে বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী সদর দপ্তরে বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে বুধবার সকালে মতবিনিময় শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন। উপদেষ্টা বলেন, আনসার সদস্যরা রাষ্ট্রের যেকোনো সংকট ও দুর্যোগে অন্যতম মুখ্য ভূমিকা পালন করে থাকে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সহায়তা প্রদান, নির্বাচনী দায়িত্ব পালন, কেপিআই স্থাপনার সুরক্ষাসহ দেশসেবায় আনসার সদস্যরা সর্বদা সচেষ্ট রয়েছে। 

তিনি বলেন, আনসার সদস্যদের সুযোগ-সুবিধায় কিছুটা ঘাটতি রয়েছে। আমরা সেগুলো সমাধানে সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছি। ইতোমধ্যে অঙ্গীভূত আনসারদের ৩ বছর চাকরির পর ৬ মাসের জন্য যে বিশ্রামে যেতে হত বা কর্মহীন হয়ে যেত সে প্রথা অর্থাৎ রেস্ট প্রথা বাতিল করা হয়েছে। 

ভারতীয় মিডিয়ার অপপ্রচার রোধে সাংবাদিকদের বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখায় ধন্যবাদ জানিয়ে লেফটেন্যান্ট জেনারেল জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (অব.

) বলেন, আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ (ভারত) আমাদের সম্পর্কে অনেক আজেবাজে কথা বলতো বা অপপ্রচার করতো। আপনারা (সাংবাদিক) সঠিক সংবাদ পরিবেশন করে ভারতীয় মিডিয়ার অপপ্রচারের ভালো জবাব দিয়েছেন। আপনাদের সঠিক ও সময়োপযোগী ভূমিকার কারণে তাদের অপপ্রচার অনেকটা বন্ধ হয়েছে। সেজন্য আপনাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই। উপদেষ্টা এ সময় অনুসন্ধানী সাংবাদিকতায় আরও মনোযোগী হওয়ার জন্য উপস্থিত সাংবাদিকদের অনুরোধ জানান। এটি করতে পারলে দেশ ও জনগণের জন্য উপকার হবে বলেও তিনি মন্তব্য করেন। এ সময় বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আবদুল মোতালেব সাজ্জাদ মাহমুদ উপস্থিত ছিলেন। 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: র সদস য উপদ ষ ট

এছাড়াও পড়ুন:

সোনালি সময়ের স্বপ্ন দেখানো ট্রাম্পের জনসমর্থনে ভাটা তিন মাসেই

ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলে মূল্যস্ফীতি কমবে। এতে দেশের অর্থনীতি চাঙ্গা হবে। এমন আশাতেই ভূমিধস জয় পেয়ে দ্বিতীয়বার মার্কিন প্রেসিডেন্ট হয়েছিলেন ট্রাম্প। তবে তাঁর জনপ্রিয়তা দিন দিন কমতে শুরু করেছে। ভোটারদের আশা ভঙ্গ হওয়ায় হোয়াইট হাউসের মসনদে বসার প্রথম ১০০ দিন ঘনিয়ে আসতেই ট্রাম্পের সমর্থনে ভাটা পড়েছে। বুধবার প্রকাশিত রয়টার্স ও ইপসোসের এক জরিপে দেখা গেছে, মার্কিন অর্থনীতি সামলানোর ক্ষেত্রে ট্রাম্পের কর্মকাণ্ডে সন্তুষ্ট কেবল ৩৭ শতাংশ মানুষ। অথচ ক্ষমতায় আসার কয়েক ঘণ্টা পর, কেবল মার্কিন অর্থনীতির সোনালি যুগ ফিরিয়ে আনার অঙ্গীকার করেই ৪২ শতাংশ মানুষের সমর্থন আদায় করেছিলেন ট্রাম্প। অর্থনীতি এবং অভিবাসন নীতিতে ধাক্কা দেওয়ায় ট্রাম্পের সমালোচনা করছেন আমেরিকানরা। জরিপের ফলাফল বলছে, জানুয়ারিতে হোয়াইট হাউসে প্রত্যাবর্তন করেই ট্রাম্প যে নীতি গ্রহণ করেছেন, তা অনেক আমেরিকানের কাছেই তাঁকে অজনপ্রিয় করে তুলছে। 

মার্কিন চিন্তক সংস্থা, আমেরিকান এন্টারপ্রাইজ ইনস্টিটিউটের একজন জ্যেষ্ঠ ফেলো জেমস পেথোকুকিস বলেছেন, আমরা একজন প্রেসিডেন্টকে পেয়েছি, যিনি সোনালি সময়ের স্বপ্ন দেখিয়েছেন। অথচ যা থাকার কথা ছিল ওপরে, তা এখন নিম্নগামী। আর যে সূচক থাকা দরকার নিচে, তা এখন ঊর্ধ্বগামী।

দায়িত্ব গ্রহণের শুরু থেকেই আগ্রাসী অর্থনৈতিক এজেন্ডা গ্রহণ করেন ট্রাম্প। নতুন নীতির আওতায় গুরুত্বপূর্ণ আর্থিক অংশীদারদের ওপর শুল্কের বোঝা চাপিয়ে এবং সম্প্রতি মার্কিন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ওপর নিজের ক্ষমতা প্রয়োগের চেষ্টা করে দেশের শেয়ারবাজারে একটা লেজেগোবরে পরিস্থিতি তৈরি করেন তিনি। শেয়ারবাজারে সূচক এতটা নিম্নগামী শেষ দেখা গিয়েছিল পাঁচ বছর আগে, কভিড মহামারির সময়। অবশ্য, পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টায় শুল্কনীতিতে ট্রাম্প কিছুটা পিছু হটলেও, অর্থনীতিতে যে অস্থিরতা সৃষ্টি হয়েছে, সেটা স্বাভাবিক হতে দীর্ঘ সময় লাগবে বলে মনে করেন পেথোকুকিস।

ট্রাম্পের অভিষেকের পরই আয়োজিত এক জরিপে প্রায় ৫৫ শতাংশ অংশগ্রহণকারী বলেছিলেন, ট্রাম্পের প্রথম ১০০ দিনের প্রধান অগ্রাধিকার উচিত মুদ্রাস্ফীতি বা সামগ্রিক অর্থনীতির উন্নতি। আর ট্রাম্পের নিজের পছন্দের অভিবাসন ইস্যুর সপক্ষে মত দিয়েছিলেন মাত্র ২৩ শতাংশ অংশগ্রহণকারী।

সাম্প্রতিক জরিপে তিন-চতুর্থাংশ অংশগ্রহণকারী আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন, যুক্তরাষ্ট্র একটি মন্দার দিকে যাচ্ছে। আর ৫৬ শতাংশ অংশগ্রহণকারী মনে করেন, ট্রাম্পের অর্থনৈতিক পদক্ষেপ অত্যন্ত এলোমেলো।

অংশগ্রহণকারীদের কাছে আরও জানতে চাওয়া হয়, ট্রাম্পের কর্মকাণ্ডের ভবিষ্যৎ কী। এটা যাচাইয়ের জন্য বক্তব্য রাখা হয়, ‘ট্রাম্পের কর্মকাণ্ডের কারণে অবসর জীবনে আমার ভোগান্তি হবে’– এর সঙ্গে একমত হয়েছেন ৫২ শতাংশ মানুষ এবং দ্বিমত পোষণ করেছেন ৩১ শতাংশ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ